Golperjogot

Golperjogot

অনুরাগে তুমি - অনুগল্প | Bangla Romantic Short Love Story

অনুরাগে তুমি – অনুগল্প | Bangla Romantic Short Love Story

অনুরাগে তুমি

রুশাঃ আপনাকে আমি বলছি তো, যা বলার।
বারবার কেনো এক কথা বলছেন।
বলছি তো আপনাকে আমি ভালোবাসি না।

রিকঃ ভালোবাসো না? আচ্ছা ভালোবাসতে হবে না। আমি বাসি তাহলেই হয়, কি বলো? চোখেমুখে যার ভালোবাসা তাকে ভালোবাসাই যায়।( চোখ টিপ মেরে এগোতে রুশার দিকে)
রুশাঃ কা.. কার চোখেমুখে ভালোবাসা? কাছে আসবেন না একদম বলে দিলাম।

[ রিক একদম রুশার কাছে চলে যায় একজনের নিশ্বাস আরেকজনের জনের উপর আঁছড়ে পড়ছে। রুশার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। চোখ বন্ধ করে ফেলে রুশা]

রিকঃ কিহ? ভালোবাসোনা…?( কানের কাছে গিয়ে)
রুশাঃ……(চুপ.. কাঁপছে)
রিকঃ আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো।( কানের ফিসফিসিয়ে বলে)

[রুশা কেঁপে উঠে। রুশাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রিক চলে যায়। রুশা অবাক পানে তাকিয়ে থাকে।
রিককে যে রুশার ভালো লাগে না তা না। ছয় মাস আগে রুশার সাথে রিকের পরিচয় বই মেলায়। সেই থেকে রুশার পিছে পিছে ঘুরছেহ রিক। এমনকি নিজের ভার্সিটি থেকে ট্রান্সফার হয়ে রুশার ভার্সিটিতে চলে আাস। অনেকভাবে রুশাকে ভালোবাসে তা বুঝানোর চেষ্টা করছে কিন্তু রুশা তো বুঝতেই চাইছে না। রিক দেখতে মাশাল্লাহ। রুশারও রিককে ভালোলাগে, কিন্তু ভালোবাসে কিনা জানে না।]

রুশাঃ আজব লোক 😒।

রুশাদের বাড়িতে…

আদিবঃ আপু আমাল তকলেত আনছো?
রুশাঃ আসলেই খালি চকলেট। ( গাল টেনে)
আদিবঃ হু, এখন তকলেত দাও তো।
রুশাঃ চকলেট তো আনি নাই, হুহ।
আদিবঃ আমি তোমাল সাতে আল কতাই বলবো না। (কাঁদো কাঁদো হয়ে)
রুশাঃ তত্যি…?
আদিবঃহুহ তত্যি।😒

রেহানাঃ কিরে ভাইবোনে কি করছিস?
আদিবঃ আম্মু দেখো আপু আমাল তকলেত আনে নাই।
রেহানাঃ শুধু চকলেট। খেয়ে খেয়ে দাঁতে পোকা ধরেছে।
রুশাঃ আদিব শোন….
আদিবঃ……
রুশাঃ ওমা,রাগ করেছে আমার ভাইটা।
আদিবঃ …….

[ রুশা অনেকগুলো চকলেট ওর ব্যাগ থেকে বাহির করে আদিবের সামনে ধরলো]

আদিবঃ ইয়াহু, আপু তুমি কত্তো ভালো।(জড়িয়ে ধরে)
রুশাঃ হয়েছে হয়েছে।
রেহানাঃ যা রুশা ফ্রেশ হয়ে আয় খাবার দিচ্ছি, মা।
রুশাঃ হুম যাচ্ছি।

…………রাতে..

[রিক রুশাকে ফোন করে দুই তিনবার তারপরে রুশা ধরে]

রুশাঃ সমস্যা টা কি আপনার? হ্যাঁ?এতোবার ফোন করছেন কেনো? দেখছেন না ফোন ধরছিহ না।
রিকঃ রুশা পাখি…..
রুশাঃ কিহ, কথা বলছেন নাহ কেনো?
রিকঃ আমাকে তোমার অসহ্য লাগে? ঠিকআছে তোমাকে আর বিরক্ত করবো না। আল্লাহ হাফেজ। ভালো থেকো।

পড়ুন  লাভার নাকি ভিলেন সিজন ২ – পর্ব ২৮ থ্রিলার গল্প | মনা হোসাইন

[ রুশা কিছু বলার আগেই ফোন কেটে যায়। রুশার খারাপ লাগে। ]

রুশাঃ ধূর এমন করে নাহ বললেও পারতাম। এখন নিজেকে নিজের গালি দিতে ইচ্ছে করছে। ধ্যাত।

পরেরদিন……..

আরুহিঃ কিরে রুশা মন খারাপ নাকি?
রুশাঃ কই নাতো.
আরুহিঃ নাহ রে তোর মন খারাপই। আচ্ছা রিক ভাইয়াকে দেখছিহ ইদানীং তোকে ইগনোর করছে।
রুশাঃ আর বলিস নাহ, আমিই তো বারণ করলাম,অপমান করলাম আমাকে বিরক্ত নাহ করতে।( মন খারাপ করে)
আরুহিঃ যাহ, ঠিক করিস নাই। রিক ভাইয়া তোকে অনেক ভালোবাসে। এজন্যই বুঝি মন খারাপ, বুঝছি

রুশাঃ কিহ, জানি 😒। সত্যিই আমার এখন ভালো লাগছে না। কিন্তু কেন?
আরুহিঃ কারণ তুমি যে প্রেমে পড়ছোহ রিক ভাইয়ার।
রুশাঃ ধ্যাত তা হবে কেনো?
আরুহিঃ তা ই হয়েছে।🥱

[এভাবে কিছুদিন কেটে যায়। রিক আগের মতো এখন আর রুশাকে বিরক্ত করে নাহ, কিন্ত দূর থেকে ঠিকই পর্যবেক্ষণ করে। রুশার রিকের জন্য ভালোলাগা শুরু করে।]

একদিন……
.
রুশাঃ কে কে? আরে কে চোখ ধরলো?

[আরুহি বলতে যাবে তার আগেই নিশান চুপ করিয়ে দেয়]
রুশাঃ আজব তো। কষিয়ে একটা থাপ্পড় দিতে ইচ্ছে করছে। চোখ ধরে আছে কথা নেই।
[ নিশান রুশার চোখ ছেড়ে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়]

নিশানঃ ট্যানটানা….😉।
রুশাঃ আরেহ…. নিশান তুই?
নিশানঃ হুহ🥱।
রুশাঃ কবে আসলি ভাই আমার। একেবারে তো ভুলেই গেলি আমায়।
নিশানঃ আমার প্রেমিকাকে কি আমি ভুলতে পারি।
রুশাঃ হয়েছে ফাজলামো রাখ।
নিশানঃ হা হা। চল তোকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাই।( রুশার পিঠে গাত দিয়ে ধরে)

[ নিশান রুশার খালাতো ভাই। রুশার এক বছরের ছোট। নিশান এর পনেরো বছর এর সময় ওরা অস্ট্রেলিয়া চলে যায়। এর মাঝে নিশান দেশে কয়েকবার আসেও। রুশা ওর সবচেয়ে কাছের। দূর থেকে রুশা আর নিশানের কান্ড দেখে একজনের মাথা গরম হয়ে যায়। রেগে তেড়ে এসে নিশানের থেকে রুশার হাত টান মেরে নিয়ে যায়। নিশান বাঁধা দিতে নিলে আরুহি থামিয়ে দেয়।]

রুশাঃ আরেহ আপনি? আপনার সমস্যা কিহ? কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?
রিকঃ….
রুশাঃ আজব লোক তো।

[ রিক রুশাকে অন্ধকার রুমে এনে দরজা বন্ধ করে। রুশার দিকে এগুতে থাকে রক্তচক্ষুনিয়ে।]

পড়ুন  রাগি মেয়ে যখন গার্লফ্রন্ড – অনুগল্প | Bangla Short Story

রুশাঃ কা.. কাছে আসবেন নাহ একদম।

[রিক রুশার কাছে চলে আসে রুশার দুই পাশে দেওয়ালে হাত রাখে। রুশা ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে। রিক রুশার গাল ধরে রুশার গালে চুমু খায়। রুশা অবাক হয়ে যায়। কেঁপে উঠে।]

রিকঃ কিহ? কিছু ফিলিংস হচ্ছে? (রেগে)
রুশাঃ…….

[ রিক এবার রুশার অন্য গালেও চুমু খায়। রুশার কথা বন্ধ হয়ে যায়। হৃৎস্পন্দন অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে।]

রিকঃ এবার? এবার কিছু ফিলিংস হলো?
রুশাঃ..

[রিক রুশার ওড়না এক পাশ থেকে ফেলে দিয়ে চুল সরিয়ে ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে দেয়। রুশা বাঁধাও দিতে পারছে না। সে শকড হয়ে যায়। রিক সরে এসে রুশাকে একটানে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।]

রিকঃ ভালোবাসি রুশাপাখি..

.[ রুশা এক ধাক্কা দিয়ে ফেলে রিক চলে যায়। রুশা বসে কেঁদে দেয়। ]

কেটে যায় আরো কিছুদিন…

[রিক পাগলের মতো ছুটছে। কিছুক্ষণ আগে একটা লোক ফোন করে বললো রুশাকে যদি বাঁচাতে চায়। তাহলে তাদের বাংলোতে চলে আসতে। সাথে কাউকে আনলে রুশাকে জীবিত পাবে না। রিক বাংলোর কাছে চলে আসে। সে আস্তে আস্তে বাংলোতে ঢুকে। সব অন্ধকার।]

রিকঃ রুশা… রুশা.. কই তুমি? আমি এসে গেছি রুশা।(চিৎকার করে)

[ হঠাৎ করে ঘরটা আলোকিত হয়ে যায়। অনেক সুন্দর করে সাজানো কিন্তু কেউ নেই।]

রিকঃ রুশা……কোথায় তুমি?

[ রিক পিছনে পিরতেই দেখে রুশা এক তোড়া গোলাপ হাতে হাঁটু গেড়ে বসে আছে। সাথে সাথে হাত তালিতে ঘরটা শব্দময় হয়ে উঠলো। রিক অবাক হয়ে যায়।]

রুশাঃ জানিনা তোমাকে আমি ভালোবাসি কিনা। তবে তোমাকে না দেখতে পেলে সত্যিই ভালো লাগে না। তোমার অবহেলায় সত্যিই প্রচুর কষ্ট পাই। ইচ্ছে করে না চোখের আড়াল করতে। তারপরেও জানিনা ভালোবাসি কিনা। তবে তোমার সাথে রাতের আকাশ দেখার খুব ইচ্ছে। রাতের শহরে হাত ধরে হাঁটার জন্য একটা তুমি চাই। বুকে মাথা রাখার জন্য একটা তুমি চাই। সুখ দুঃখ ভাগাভাগির জন্য একটা তুমি চাই। সারাজীবন হাত ধরে রাখার জন্য একটা তুমি চাই। যে তুমি কখনো আমায় ছেড়ে দিবে না। শত ঝড় ঝাপটার মাঝেও আমার হাত শক্ত করে ধরবে। এনে দিবে কি একটা তুমি?

পড়ুন  ভিলেন - থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 48 | Romance Love Story

[ রিক নির্বাক হয়ে যায়। সে রুশার হাত থেকে ফুলের তোড়া নিয়ে রুশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।]

রিকঃ অনেক ভালোবাসি রুশাপাখি। জীবন থাকতে কখনো তোমাকে ছাড়বো না।
আরুহিঃ আমরাও আছি কিন্তু এখানে।( গলা খাকারি দিয়ে)

[ রিক রুশাকে ছেড়ে দেয়]

নিশানঃ আহারে আমার প্রেমিকা আমারে ছ্যাকা দিলো(ন্যাকা কান্না করে)।
আসিফঃ তুই তোর ঢং রাখ।
রুশা আর রিক ওদের কথা শুনে হেসে দেয়।

……………..সমাপ্ত……………

About The Author

1 thought on “অনুরাগে তুমি – অনুগল্প | Bangla Romantic Short Love Story”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top