Golperjogot

Golperjogot

opurno valobasha sad love story 5

Heart Touching Bangla Sad Love Story Opurno Valobasha Part 5. Bitas Pramanik

অপূর্ণ ভালোবাসা

Bitas Pramanik { Part 5 }


চর মারার পর চারপাশের লোকজন তাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। জনি অপমান বোধ করে, চর মারার জন্য জনির আরও বেশি রাগ হয়। সে মনে মনে ভাবে এই অপমানের প্রতিশোধ নিবে। এইদিকে নাদিয়া রেগে বলে.......

নাদিয়াঃ তোর সাহস হয় কি করে আমাই বিয়ে করতে চাস? আমি তোকে জীবনেও বিয়ে করবো না। তোর মতো ফালতু, গুণ্ডা ছেলেকে কোনো দিনও আমার জীবনসাথী করবো না।

এই বলে রাগে অনিকার হাত ধরে বাড়ি চলে আসে। জনি তো রেগে আগুন। সে মনে মনে ভাবছে কিভাবে এই অপমানের প্রতিশোধ নেওয়া যায়। বাড়িতে এসে নাদিয়া সব কিছু বলে দেয়। বাড়ির সবাই কিছু দিন বাহিরে যেতে নিষেধ করে। এভাবে কিছুদিন যায়। সবাই মিলে নাদিয়ার ফুফুর বাসায় বেড়াতে যাবে। নাদিয়াও সাথে যাবে কিন্তু যাওয়ার একটু আগে নাদিয়ার খুব শরীর খারাপ করে। সে সবার সাথে যেতে পারে না। নাদিয়ার আম্মু ওর সাথে বাড়িতে থাকতে চায় কিন্তু ওই দিকে ফুফুর বাড়ি না গেলেও মন খারাপ করবে। তাই নাদিয়া আম্মু চলে যায় আর নাদিয়া বাড়িতে একা থাকে।

জনি কয়েক দিন থেকেই নাদিয়ার বাড়ির দিকে নজর রাখে। কিভাবে নাদিয়াকে একা পাবে আর তার অপমানের প্রতিশোধ নিবে। আজ জনির এক চামচা নাদিয়ার পুরো পরিবারকে বাহিরে জেতে দেখে শুধু নাদিয়া বাদে। সাথে সাথে জনিকে সেই খবরটা দিয়ে দেয়। জনি এই খবর শুনে মহাখুশি এমনই সুযোগ সে চেয়েছিল। কিন্তু দিনের বেলা তো কেউ দেখতে পারবে তাই সে সন্ধ্যা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে। এই দিকে নাদিয়ার আম্মুদের আসতে রাত হয়ে যাবে।

সন্ধ্যা হয়ে যায়। জনি সুযোগ বুঝে নাদিয়ার বাড়িতে ঢুকে যায়। নাদিয়া বুঝতেই পারে না। নাদিয়া কলিং বেল এর শব্দ পায় সে ভাবে তার আম্মুরা চলে আসছে তাই সে দরজা খুলে দেয়। দরজা খোলার সাথে সাথেই জনি জোর করে রুমে চলে যায়। নাদিয়া খুব ভয় পেয়ে যায়। একদিকে বাড়িতে কেউ নাই অন্য দিকে এই ছেলে কি করতে এসেছে।

নাদিয়াঃ (ভয় পেয়ে বলে) তু...তু...তুমি এখানে কেন এসেছো? এখনি চলে যাও।
জনিঃ (রাগী কন্ঠএ বলে) এই একদম চুপ। চিৎকার করবি না। আর আমি চলে যেতে আসি নি এসেছি আমার অপমানের প্রতিশোধ নিতে।

এই বলে সে নাদিয়াকে রুমে নিয়ে যায় আর তার সাথে জবরদস্তি করে। নাদিয়ার চিৎকার বাহিরের একটা মানুষ একটু একটু শুনতে পারে তাই সে দরজা ধাক্কা দেয়। নাদিয়া বুঝতে পারে কেউ এসেছে তাই সে আরও জোরে চিৎকার করে। জনি বুঝতে পারে এখন ধরা পরবে কিন্তু পালানোর মতো আর কোনো উপায়ও নেই। তাই সে বাধ্য হয়ে নাদিয়াকে ছেরে দিয়ে দরজা খুলে দেয়।

লোকঃ এই বাড়ি থেকে কিসের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে?
জনিঃ ও তেমন কিছু না।

এর মাঝেই নাদিয়া দৌড়ে এসে লোকটাকে বলে আমাকে বাচান এই শয়তান জোর করে আমার বাড়িতে ঢুকেছে।

জনিঃ আমি ওর সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য এসেছি।
নাদিয়াঃ মিথ্যা বলছে এই শয়তান। জোর করে বাড়িতে ঢুকেছে।


এর মাঝেই বাড়ির সামনে লোকজন জোরো হয়। এসব দেখে জনি সুযোগ পেয়ে যায়।

জনিঃ (মনে মনে বলে) এই সুযোগে ওকে এমন অপমান করব যেনো সারাজীবন ওকে আফসোস করতে হয়।

এর মাঝেই নাদিয়ার বাড়ির পাশের এক কাকি বলে..


কাকিঃ কি হইছে নাদিয়া? জনি তোর বাড়িতে কি করে?
নাদিয়াঃ কাকি ও জোর করে রুমে ঢুকে যায়।


নাদিয়া খুব শান্ত আর ভদ্র মেয়ে তাই সবাই নাদিয়ার কথা মেনে নেয়। সবাই মিলে জনিকে মারার জন্য যায় তখনই জনি বলে...

জনিঃ সবাই নাদিয়ার কথা কেন মেনে নিচ্ছেন? ও নিজের দোষ আমার উপর দিচ্ছে সবার কাছে আমাই ছোটো করছে। দয়া করে আমার সব কথা শুনুন।

গ্রামের এক মুরুব্বি সবাই কে থামিয়ে বলে। জনি কি বলতে চায় শোনা হোক। এর মাঝেই নাদিয়ার আম্মুদের কাছে এসব খবর চলে গেছে তারা আসতিছে।

মুরুব্বিঃ কি হইছে বল?

জনিঃ আসলে আমি আর নাদিয়া একে অপরকে ভালোবাসি। আর আজ নাদিয়ার আম্মু আব্বু না থাকাতে ও নিজে আমাকে ওর বাড়িতে আসতে বলে। এতে আমার দোষ কি বলেন? এই মেয়ের চরিত্র ভালো না।

নাদিয়াঃ সব কিছু মিথ্যা বলছে?

কাকিঃ তোর নামে কেন মিথ্যা বলবে? নিশ্চয় তোদের মাঝে কিছু আছে তাই তো একলা বাড়ি পেয়ে জনিকে ডেকেছিস?

নাদিয়াঃ তোমরা সবাই বিশ্বাস করো। এই ছেলে আমাকে সবার সামনে খারাপ বানাতে চাইছে। তাই এসব মিথ্যা বলছে। আমাদের মাঝে কোনো প্রেম ভালোবাসা নাই।

কিন্তু কেউ নাদিয়ার কথা বিশ্বাস করে না। সবাই জনির কথা মেনে নাদিয়াকে অনেক অপমান করে। চরিত্রহীন মেয়ে বলে। নাদিয়া কেদেই যাচ্ছে কেউ তার কথা বিশ্বাস করছে না। এর মাঝেই নাদিয়ার আম্মুরা চলে আসে।

নাদিয়াঃ (কান্না কন্ঠে বলে) আম্মু আমি কিছু করি নি সবাই আমাকে বাজে অপবাদ দিচ্ছে। এই শয়তান জোর করে বাড়িতে ঢুকেছে।

নাদিয়ার আম্মুঃ আমি জানি মা তুই কিছু করিস নি। তুই কখনো খারাপ কাজ করতেই পারিস না। আমরা তোকে বিশ্বাস করি মা।

কাকিঃ দেখেন ভাবি। আপনার মেয়ে নিজের দোষ ঢাকতে জনির উপর অপবাদ দেয়। মেয়ে ডাকলে তো ছেলেরা তার কাছে যাবেই। নাদিয়ার চরিত্র ভালো না। আমরা কতো ভালো মেয়ে ভাবতাম। কিন্তু এই মেয়ের তো পেটে এতো শয়তানি। যেখানে পরতে গেছে সেখানে যে কি করে কে দেখতে গেছে। ছি.... ছি...ছি... এই মেয়ে এতো খারাপ হয়ে গেছে।


সবাই নাদিয়াকে ভুল বোঝে। সব মানুষেরা অনেক বাজে বাজে কথা বলে। জনি মনে মনে খুব খুশি। তার মনে আজ আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে।

নাদিয়াকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যায়। নানা লোকে নানা কথা বলছে। নাদিয়াকে অনেক কষ্টএ তার আম্মু সামলাছে। সেদিন এর পর থেকে নাদিয়ার পরিবারকে গ্রামের মানুষ খুব ভালো চোখে দেখে না। তাদের দেখলেই বাজে কথা বলে। নাদিয়া তো বাহিরে বের হয় না। নিজেকে শেষ করার কথা ভাবে। কিন্তু অনেক কষ্ট এ তার মা তাকে কিছুটা স্বাভাবিক করতে পেরেছে।

কয়েকদিন পর নাদিয়ার কলেজ খুলবে। তার আব্বু আম্মুর জোরাজোরিতে সে কলেজ এ জেতে রাজি হয়।
নাদিয়া হোস্টেলে গিয়ে সব কিছু ভুলে পড়াশোনা আবার শুরু করে।

নাদিয়ার ঘটনার কথা শুভ জেনে গেছে। তাই এই কদিনে শুভ নাদিয়াকে অনকে বার ফোন দিয়েছে। কিন্তু নাদিয়া কথা বলে নি। কলেজে আসার কথা শুনে শুভ নাদিয়ার সাথে দেখা করতে চায়। কলেজে গিয়ে দেখে নাদিয়াও এসেছে। শুভ নাদিয়ার কাছে গিয়ে একটু রেগে বলে..

শুভঃ কি ভেবেছো নিজেকে? এতো বার কল করেছি রিসিভ করো না এমনকি মেসেজ এর রিপ্লাই দেও না।

নাদিয়াঃ আমার কারো সাথে কথা বলতে ভালো লাগে না।

শুভঃ কেন? একটা সামান্য ঘটনা নিয়ে কেনো তুমি নিজেকে এভাবে একা করে রাখবে?

নাদিয়াঃ (অবাক হয়ে বলে) তুমি কিভাবে জানলে?

শুভঃ আমি যেভাবেই জানি না কেনো সেটা পরের কথা। আগে তুমি নিজেকে সামলাও। তোমাকে এভাবে আমি দেখতে পারছি না। প্লিজ সব ভুলে যাও।

নাদিয়াঃ (কান্না করে বলে) কিভাবে ভুলে যাবো? সবাই আমার চরিত্রের উপর আঙুল তুলেছে। ওই শয়তানের কথা শুনে আমায় চরিত্রহীন বলেছে। কেউ আমাকে বিশ্বাস করে নি।

শুভঃ কেউ বিশ্বাস করুক বা না করুক আমি তো জানি আমার পাগলিটাকে। এসব কান্নাকাটি ছারো নইলে তোমার বর কিন্তু খুব রাগ করবে। আর এসব নিয়ে একদম ভাবতে যাবে না। সামনে আমাদের এক্সাম আছে তো তার প্রিপারেশন নিতে হবে। এখন একটা স্মাইল দেও।

নাদিয়াঃ (একটু মুচকি হেসে বলে) ঠিক আছে।

শুভঃ এই হাসিটা সারাজীবন দেখতে চাই। এটা কখনো মুছে ফেলো না। আর আমি তো আছি। সব সময় এই পাগলীটার কাছে থাকবো। বুঝেছেন ম্যাম?

নাদিয়াঃ হুম।

নাদিয়ার একটু স্বস্তি মিললো। এসব ঘটনা জানার পরেও তার ভালোবাসার মানুষটি তাকে ভুল বুঝলো না। তাকে আপন করে নিলো। এই মানুষটির জন্য তাকে স্বাভাবিক হতেই হবে। তারপর তারা দুজন অনেক গল্প করে যে যার বাসাই যায়।

বাসায় যাওয়ার পর রাতে শুভ নাদিয়াকে কল করে।

শুভঃ কি করছে আমার বউ?
নাদিয়াঃ আমি এখন ঘুমাবো। খুব ঘুম পাইছে বাই।
শুভঃ এই ফোন কাটবে না। অনেক কথা আছে আজ সারারাত কথা বলব।
নাদিয়াঃ জ্বি না। ঘুমাবো আর তুমিও ঘুমাও।
শুভঃ আচ্ছা শোনো তো, কাল আমায় বাড়ি যেতে হবে। আম্মু আরজেন্টলি বাড়ি যেতে বলেছে।
নাদিয়াঃ কিন্তু কেন? তুমি তো কয়েকদিন আগেই আসলে তাইলে হঠাৎ যেতে বলছে কেন?
শুভঃ সেটা তো আমিও বুঝতে পারছি না। আচ্ছা দুদিনের মধ্যেই চলে আসবো।
নাদিয়াঃ (মন খারাপ করে বলে) আচ্ছা ঠিক আছে। সাবধানে যেয়ো।
শুভঃ হুম বাবা।

অনেক রাত পর্যন্ত তারা কথা বলে। শুভ চলে যাওয়ার কথা শুনে নাদিয়ার মন খারাপ। পরের দিন সকালে শুভ বাড়ি চলে যায়। শুভ আজ কলেজে আসে নি তাই নাদিয়ার কলেজে গিয়ে ভালো লাগছে না। নাদিয়ার মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করছে। ওর এসব কথা শুনে শুভর পরিবার ওকে কি আর মেনে নেবে। কিন্তু শুভ ওর পাশে আছে তো। এসব ভাবতে থাকে সে।

শুভ বাড়িতে পৌঁছে যায়। ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নেয়। তারপর ওর আম্মুকে বলে..

শুভঃ মা হঠাৎ এভাবে আসতে বললে কেনো?..........................

পড়ুন  তোমাতে আমি – ইমোশনাল লাভস্টোরি পর্ব 2 | Tomate Ami
পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- বিতাস প্রামানিক

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top