Golperjogot

Golperjogot

opurno valobasha sad love story 3

Opurno Valobasha Sad Love Story Bangla Part 3. Bitas Pramanik

অপূর্ণ ভালোবাসা

Bitas Pramanik { Part 3 }


শুভ নাম্বার নিয়েও নাদিয়া কে কোন কল বা এসএমএস দেয় না। ওর ফোনে মেসেজ পাঠায়।

শুভঃ হাই।

নাদিয়ার কাছেই ফোন ছিল। অচেনা নাম্বার থেকে মেসেজ দেখে নাদিয়া কৌতূহল হলো কে হতে পারে? সে ভাবছে তার কোনো বন্ধু হবে না তো... সে এসব ভেবে রিপ্লাই দিলো।

নাদিয়াঃ হাই। কে বলছেন?

নাদিয়ার রিপ্লাই পেয়ে শুভর হার্ট বিট বেরে গেল। সে কি বলবে এবার ভাবছে মনে মনে ভয় ও করছে। সে মনে মনে বলে না শুভ এতো ভয় পাওয়ার কিছু নাই। ফ্রেন্ডলি কথা বল। এই বলেই সাথে সাথে রিপ্লাই দেয়...

শুভঃ আমি শুভ।
নাদিয়াঃ কোন শুভ? আমি তো আপনাকে চিনতে পারছি না।


এবার শুভর আরও ভয় বেরে গেল। পরিচয় জানার পর যদি রাগ করে কথা না বলে তাইলে ওর কি হবে। নাদিয়াকে যে খুব পছন্দ করেছে। পছন্দ করলে ভুল হবে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসেছে। ওর মায়াবী চোখের প্রেমে পরেছে। তবুও শুভ সব ভয় কাটিয়ে নাদিয়ার রিপ্লাই দিল।

শুভঃ আমি রনির বন্ধু।

রনি ওর সব বন্ধুদের কথা নাদিয়াকে বলছে। কিন্তু কখনো কারো সাথে পরিচয় হয় নি। এমনকি সেদিন এর অনুষ্ঠানেও না। শুভর কথা শুনে নাদিয়া চিনতে পারলো। সেও নরমালি কথা বলল

নাদিয়াঃ হুম ভাইয়া, এবার চিনতে পারছি। তো কি মনে করে আমাই স্মরণ করলেন জানতে পারি কি?

এবার শুভ কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। সে তো নাদিয়াকে পছন্দ করে কিন্তু এখন বললে নাদিয়া হয়তো রাগ করে আর কথাই বলবে না। তার থেকে ভালো এখন না বলাই ভালো। কিন্তু কি জন্য সে নাদিয়াকে মেসেজ দিল এর উত্তর কি দেবে এসব ভাবছে। এর মাঝে নাদিয়া আর একটা মেসেজ দিল।

নাদিয়াঃ কি হলো ভাইয়া? কই হারালেন?
শুভঃ না মানে...... আমরা তো একই ক্লাসএ পরি। তো আমরা কি বন্ধু হতে পারি না?
নাদিয়াঃ (সহজ সরল ভাবেই বলল) হ্যাঁ, হতেই পারি।

তারপর থেকেই তারা ফ্রেন্ডলি কথা বলতে থাকে। কিছুদিন যাওয়ার পর একদিন শুভ নাদিয়াকে বলে...

শুভঃ নাদিয়া একটা কথা বলব?
নাদিয়াঃ হুম বলো।
শুভঃ আসলে আমি একটা মেয়েকে পছন্দ করি। পছন্দ মানে অনেক ভালবেসেছি।
নাদিয়াঃ এটা তো খুশির খবর। তাকে তোমার মনের কথা বলে দেও।
শুভঃ কিভাবে বলবো? তাছাড়া ভয় হয় যদি কথা বলা বন্ধ করে দেয়।
নাদিয়াঃ এতো ভয় পেলে তো সারাজীবন মনের কথা মনেই থেকে যাবে। কোনো দিনও বলতে পারবে না।
রনিঃ............. (কোনো রিপ্লাই দেয় না)
নাদিয়াঃ এতো ভয় পেয়ো না। আমার মনে হয় তোমাই ফেরাবে না। বলে দেও তাকে।
রনিঃ Are you sure? সে আমাকে এক্সেপ্ট করবে।
নাদিয়াঃ হুম। মনে হয়।
রনিঃ ওকে। নাদিয়া I love you.....
নাদিয়াঃ (অবাক হয়ে বলল) মানে তুমি কি বলছো এসব?
রনিঃ (একটু ভয়ে ভয়ে বলে) না মানে প্রাক্টিস করছিলাম। কিভাবে বলবো?
নাদিয়াঃ সেটা বলো। আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম।
রনিঃ হুম।

তারপর দুজন আরও কথা বলে ঘুমাই পরে। দুদিন পর নাদিয়া শুভকে বলে..

নাদিয়াঃ কি প্রেমিক পুরুষ, বলতে পারছেন?
শুভঃ না। ভয় করছে যদি না করে দেয়।
নাদিয়াঃ আরে বাবা, এতো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মনে সাহস নিয়ে বলে দিয়ো।

শুভ অনেক সাহস নিয়ে নাদিয়াকে তার মনের কথা বলে..

শুভঃ নাদিয়া আসলে যে মেয়েকে আমি পছন্দ করি সে আর কেউ না তুমি। আমি ভয়ে বলতে পারি না। যদি তুমি বন্ধুত্ব নষ্ট কর৷
নাদিয়াঃ............ (কোনো রিপ্লাই দিচ্ছে না)।
শুভঃ রনির বাসাই সেই দিন দেখেই তোমার প্রেমে পড়ে যাই। রনিকে বলেছিলাম তোমাকে বলতে কিন্তু সেও আমার মতো ভয়ে বলতে পারে নি। তাই বাধ্য হয়ে তোমার নাম্বার নেই। আজ অনেক সাহস করে বললাম। তুমি বলেছিলে মনের কথা বললে সে রাজি হয়ে যাবে। এখন কি সে রাজি হবে?( রনির ভয়ে পুরা শরীর ঘামছে)

নাদিয়াঃ.............(আবারও চুপ)
শুভঃ নাদিয়া I really love you.. এই কয়দিনে তোমায় অনেক ভালোবেসে ফেলেছি। কিছু বলছো না কেনো?
নাদিয়াঃ আমার ভাবার জন্য সময় লাগবে।
শুভঃ আচ্ছা। তোমাই সময় দিলাম। (মন খারাপ করে বলল)


নাদিয়া আর কিছু বলল না। সে ভাবছে কি করবে। শুভ ছেলেটা আসলেই অনেক ভালো। ওর কথা বলা নাদিয়াকে মুগ্ধ করে। শুভর ব্যবহার আর ছেলে হিসেবে যেমন ভালো তেমনি সে দেখতেও অনেক সুন্দর। হিরোদের মতো। এসব ভাবতে ভাবতে নাদিয়া ঘুমিয়ে পরে। আর অন্যদিকে শুভর টেনশনে চোখে ঘুম নেই। সে রনিকে শুধু বার বার জিজ্ঞেস করছে নাদিয়ার উত্তর কি হবে....

পরের দিন সকালে নাদিয়া স্কুলে গিয়ে বান্ধবীদের সব কথা বলে। নাদিয়া চাপা স্বভাবের মেয়ে। ওর কিছু হলে বাড়িতে কাউকে বলে না। শুধু কিছু কিছু কথা ওর বান্ধবীদের বলে। সবাই সব শোনার পর নরমালি যেমন হয় আর কি শুরু করে দিল। সবাই যেন নাদিয়াকে মেরে ফেলে। মজা করছে এসব নিয়ে। আর তাদের একটাই কথা হ্যাঁ বলে দে। আমরাও একটা জিজু পাবো।

স্কুল থেকে ফিরে নাদিয়া ফ্রেশ হয়ে শুয়ে আছে। সময় ফোন তা টুং করে বেজে ওঠে। ফোন হাতে নিতেই দেখে শুভর মেসেজ। সে কোন রিপ্লাই না দিয়ে ফোনটা রেখে দিলো। একটু পর আবার ফোন বেজে উঠল নাদিয়া ফোন নিয়ে দেখে রনি ফোন করেছে। তাই সে ফোন রিসিভ করলো।

নাদিয়াঃ হ্যালো। (মন খারাপ এর সুরে)
রনিঃ কি করছো?
নাদিয়াঃ কিছু না শুয়ে আছি।
রনিঃ শুভ মেসেজ দিছে তুমি নাকি রিপ্লাই দেও নি?
নাদিয়াঃ হুম।
রনিঃ শুভ অনেক ভালো ছেলে তুমি চাইলে রাজি হতে পারো। সরি তোমাই এসব কিছু বলি নি( অপরাধী সুরে বলল)।
নাদিয়াঃ ঠিক আছে। রাখলাম।

এই বলেই নাদিয়া ফোন কেটে দেয়। রনিকে আর কিছু বলার সুযোগ দেয় না। রাত সাড়ে ১০ টাই শুভ আবার মেসেজ দেয়।

শুভঃ হাই।
নাদিয়াঃ হুম।
শুভঃ কিছু বললে না তো।
নাদিয়াঃ কি বলব?
শুভঃ আমার উত্তর?
নাদিয়াঃ হুম রাজি।
শুভঃ সত্যি বলছো?
নাদিয়াঃ হুম সত্যি।

রনি তো খুব খুশি। সে বিশ্বাসই করতে পারছে না নাদিয়া রাজি হইছে। আর নাদিয়া নিজেও জানে না কি ভেবে রাজি হয়ে গেলো। যাই হক সেদিন রাতে তারা ১২ টা পর্যন্ত কথা বলে। নাদিয়া এতো রাত পর্যন্ত জেগে থাকে না এই প্রথম সে রাত জেগেছে।

এ ভাবেই তাদের সম্পর্ক দিন দিন আরও গভীর হয়। এখন শুধু শুভ না নাদিয়াও শুভকে অনেক ভালোবাসে। রাগ অভিমান, দুষ্টু মিষ্টি ঝগড়া সবমিলিয়ে তাদের দিন ভালোই কাটছিল। এভাবে ১ বছর চলে যায়। তারপর তাদের এসএসসি পরীক্ষা আসে। এই কয় মাস তাদের খুব বেশি একটা কথা হয় না। পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এসএসসি পরীক্ষা শেষ হয়। রনি নাদিয়াদের বাড়ি আসে বেড়াতে। বাসায় যাওয়ার সময় সে নাদিয়াকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। এই ১ বছরে শুভ আর নাদিয়ার দেখা হয় নি। লং ডিস্টেনস সম্পর্কগুলা এমনি মন চাইলেও দেখা করা যায় না। তাদের প্রপোজ যেমন এসএমএস এ করে তেমনি তাদের কথা এসএমএস এই হয়। মাঝে মাঝে শুধু ভয়েস কল এ কথা বলতো। রনির বাড়িতে গিয়ে তাদের আবার দেখা হয়। কয়েকদিন খালামনির বাসাই থেকে নাদিয়া বাড়ি চলে আসে। রেজাল্ট বের হয়। নাদিয়া আর শুভ একই কলেজে ভর্তি হয়। কিন্তু বিভাগ আলাদা নাদিয়া সাইন্স এ আর শুভ কমার্স এ।

নাদিয়া গার্লস হোস্টেলে আর শুভ বয়েস হোস্টেলে থাকে। সেখানেও তাদের দিন খুব ভালো কাটে। একই কলেজে পড়া, কলেজ শেষে সবাই মিলে আড্ডা দেওয়া। আর মাঝে মাঝে তো ঘুরতে যাওয়া আছেই। সেখানে শুভ আর নাদিয়ার অনেক নতুন বন্ধু হয়। সব মিলিয়ে তাদের সম্পর্কটা অনেক কিউট আর সুন্দর।

একদিন শুভ নাদিয়াকে ফোন দেয়।
শুভঃ নাদিয়া এখনি রেডি হয়ে নিচে আসো?
নাদিয়াঃ (অবাক হয়ে বলে) হঠাৎ কেন? কোনো সমস্যা হইছে কি?
শুভঃ কোনো সমস্যা না। এখনি নিচে আসো।
নাদিয়াঃ আচ্ছা।

নাদিয়া আর কথা বারালো না। সে বোরকা হিজাব পরে নিচে গেল। নিচে শুভ একটা বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নাদিয়া অবাক হলো কারণ শুভর বাইক বাড়িতে আছে তাইলে এইটা কার?

নাদিয়ার ভাবনাই জল ঢেলে শুভ নাদিয়াকে ডাক দিল।

শুভঃ কি ভাবছেন এতো?
নাদিয়াঃ না মানে। তোমার বাইক তো বাড়িতে আছে তাইলে এইটা কই পেলে?
শুভঃ ওও এই বাইক আমার খালাতো ভাইয়ের। তোমায় তো বলেছিলাম অনিক ভাইয়া আসবে।
নাদিয়াঃ মনে পরেছে।
শুভঃ এতো ভাবা লাগবে না। চলো তো বাইকে উঠো।

নাদিয়া কিছু না বলে বাইকে বসে। রনি বাইক চালাচ্ছে।

নাদিয়াঃ আচ্ছা আমরা কোথাই যাচ্ছি?
শুভঃ সারপ্রাইজ। বলা যাবে না।
নাদিয়াঃ বুঝলাম কিন্তু কোথাই যাচ্ছি সেটা তো বলো।
শুভঃ আমার উপর বিশ্বাস আছে তো।
নাদিয়াঃ হুম নিজের থেকেও বেশি।
শুভঃ তাহলে আর কোনো কথা না চুপচাপ থাকো।

নাদিয়াও কোনো কথা বলছে না। শুভ একটা পার্লারের সামনে বাইক থামালো। নাদিয়া অবাক হয়ে বলল...
নাদিয়াঃ এখানে থামালে কেন?
শুভঃ (নাদিয়ার হাতে একটা ব্যাগ দিয়ে বলে) এখানে শাড়ি আছে। এই পার্লার থেকে শাড়িটি পরে এসো। আমি বাহিরে অপেক্ষা করছি।
নাদিয়াঃ কিন্তু আমি তো শাড়ি পরে চলতে পারি না।
শুভঃ আমি জানি তুমি শাড়ি পরতে পারো না তাই পার্লারে নিয়ে আসলাম। এরা তোমাই সুন্দর করে পরায় দেবে। আর আজকের দিনের জন্য শুধু মেনেজ করে নেও। আমার জন্য প্লিজ।
নাদিয়াঃ আচ্ছা। কিন্তু তুমি কি করতে চাইছো কিছুই বুঝতে পারছি না।
শুভঃ এতো কিছু বোঝা লাগবে না। তুমি রেডি হয়ে এসো তারপর আমরা এক জায়গায় যাব।

নাদিয়া কথা না বাড়িয়ে পার্লারে ভেতর গেল। একটু পর সে শাড়ি পরে বাহিরে আসলো। শাড়ি পরার সাথে হালকা সেজেওছে। শুভ নাদিয়ার দিকে তাকাতেই আবার প্রেমে পরে গেল। সে নাদিয়াকে দেখে চোখের পাতা ফেলছেই না।.................

পড়ুন  ভিলেন – এ্যাকশন লাভস্টোরি পর্ব 8 | Villain Bangla Golpo
পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- বিতাস প্রামানিক

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top