Golperjogot

Golperjogot

অর্কিড – পর্ব ১ রোমান্টিক প্রেমের গল্প | মনা হোসাইন

Orkid

Mona Hossain { Part 1 }

এমন চেহারার মেয়ের সাথে ফুর্তি করার জন্য কাস্টমার টাকা খরচ করবে বলে আপনার মনে হয় মিস নিঝুম? আমার তো মনে হয় না কোন ছেলে ফিরেও তাকাবে কিনা।

অন্ধকার রাস্তায় এমন একটা কথা শুনামাত্র আঁতকে উঠল নিঝুম। গলার আওয়াজ টা তার পরিচিত তবুও ভয় লাগছে।অফিস বসকে ভয় পাওয়া দোষের কিছু না কিন্তু ভয় লাগাম ছাড়া হওয়াটা দোষের। এই ভয় পাওয়া পিছনে যথাযথ কারন আছে। শীতের রাত,চারদিকে শুনশান নীরবতা । গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।

নিঝুম কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,–“আপনি এখানে কেন ? স্যার আপনি আমার সাথে এমন কেন করছেন?

নিঝুমের কথা শুনে অর্কিড নিজের ফোন থেকে মুখ তুলে তাকাল। রাস্তার মাঝখানে দামী গাড়িতে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে ফোন ঘাঁটছিল সে। বড় লোক ছেলেদের এই এক সমস্যা তারা নিজেদের ব্যাপারে এতটাই আত্মবিশ্বাসী হয় যে অন্যদের মতামত নিতে পারে না। নিঝুম চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছে। অর্কিড হয়ত এটা মানতে পারে নি।তাই এখন এখানে দাঁড়িয়ে আছে। অর্কিড অবুঝ হওয়ার অভিনয় করে জবাব দিল,

–“রাস্তাটা আপনার বাবার জানা ছিল না তো এখানে দাঁড়ানো যাবে না কেউ আমাকে বলেনি তাই দাঁড়িয়ে আছি আপনার অসুবিধা হবে জানলে আপনার বাসায় দাঁড়াতাম।

–“স্যার আমরা কিন্ডারগার্টেনের এর বাচ্চা নই আমাদের এভাবে ঝগড়া করা মানায় না।আমি জেনে বুঝে নিজের ইচ্ছায় চাকরিটা ছেড়েছি।

–“তা কি বুঝে চাকরিটা ছাড়লেন শুনি একটু? কি যেন বলছিলেন দরকার হলে সেজেগুজে হোটেলে যাবেন তবুও আমার অফিসে চাকরি করবেন না তাই তো? বেশ বলুন এক রাতের ফি কত? প্রথম কাস্টমার না হয় আমিই হব।

নিঝুম চেঁচিয়ে উঠল,–“আপনার লজ্জা বলতে কিছু নেই? আমাকে এভাবে বিরক্ত করছেন কেন?

অর্কিড হাত উঁচিয়ে কানে আংগুল দিয়ে চোখ মুখ খিচে বলল,-“এটা মেয়ে নাকি ঝিঁঝিপোকা? চেঁচিয়ে কানের পোকা মেরে ফেলল উফফ এভাবে কেউ চেঁচায়?

-“স্যার আমি ফাজলামি করছি না। রাস্তা ছাড়ুন নাহলে আমি সিনক্রিয়েট করতে বাধ্য হব।

-‘প্লিজ করুন বহুদিন ড্রামা দেখা হয় না।

-“আপনি কি সামনে থেকে সরবেন?

অর্কিড হটাৎ রেগে গেল এগিয়ে এসে নিঝুমের চোয়াল চেপে ধরদাঁতে দাঁত কামড়ে বলল,

–“চিনিস আমাকে? অর্কিড চৌধুরীকে তুই রিজেক্ট করিস এত সাহস তোর? আমি চাইলে তোর মত হাজারটা মেয়েকে নিজের রুমে সাজিয়ে রাখতে পারি বুঝেছিস?

–“আমি অস্বীকার করছি না আপনি চাইলে অবশ্যই পারেন। তবুও আমার মত একটা মেয়ে পিছনে কেন পড়ে আছেন?

–“কি ভেবেছিস তোর প্রেমে পাগল হয়ে গিয়েছি? নিজেকে কি ভাবিস তুমি? তোর সাথে সংসার করার জন্য বিয়ে করতে চাইনি। আমি দেখাতে চাই আমি চাইলে কি পারি। তোকে তো আমি বিয়ে করবই। চাকরি ছাড়লেই কি আমার হাত থেকে রেহাই পাবি?

–“স্যার আপনি কিন্তু সীমা পেরিয়ে যাচ্ছেন। তুই তুকারি করছেন এমনকি গায়েও হাত দিচ্ছেন।

–“তুই এখন আর আমার কর্মচারী না তাই সম্মান করার প্রয়োজন মনে করছি না।চাকরিটা ছেড়ে কি ভুল করেছিস সেটা এখন থেকে হাড়েহাড়ে বুঝবি। অর্কিডের আসল রুপটা তোর দেখা দরকার।

–“দেশে আইন কানুন আছে..আপনি আমার সাথে যা খুশি করতে পারেন না।

-“আমি কি পারি কি পারিনা সেটা বাসায় গেলেই বুঝতে পারবি।

বলেই নিজের পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে দু টুকরো করে নিঝুমের হাতে ধরিয়ে দিল।নিঝুম কাগজের দিকে তাকাতেই অর্কিড বলল,

Related Story

-“শেষ বারের মত আপনার উপর দয়া করে,রিজাইন লেটারটা এক্সেপ্ট করলাম না। আমি লেটার টা এক্সেপ্ট করলে, চাকরিটা ছাড়া মামা মামী বাসায় থাকতে দিবে না। মামাত বোনের বিয়েটা হবে না। ছোট ভাইটার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে।

তাছাড়া অর্কিড না চাইলে শহরের কোন অফিসে নতুন করে চাকরি মিলবে না। এমনকি ভাড়া বাসা থেকেও বেড়িয়ে যেতে হবে। তার উপর অর্কিড আর একটু রেগে গেলে বিয়ে ছাড়াই সংসার শুরু করে দিতে পারে তাই আমাকে আর না রাগিয়ে নিজের ইচ্ছায় সময় মত অফিসে চলে আসবেন না হলে তুলে নিয়ে যেতে বাধ্য হব।

আপনি হয়ত জানেন না, অর্কিড চোধুরী আসলে কে? আমার প্রথম পরিচয় এলাকার সবচেয়ে বখাটে আর অভদ্র ছেলে। সুট টাই পরে ২ দিন অফিসে গিয়ে আমি ভদ্র হয়ে যায় নি।অফিসে আমার যে আচারন দেখেছেন সেটা শুধুই অভিনয়, এলাকার সবাই অর্কিডকে ভয় পায়। আমি সেটাই করি যা আমার করতে ইচ্ছা হয়।

কথাগুলো বলে অর্কিড গাড়িতে স্টার্ট দিতেই ফুফিয়ে কেঁদে উঠল নিঝুম। তার সাথেই কেন এমন হয়। অজান্তেই মনে প্রশ্ন জাগল সুন্দরী হওয়াটাও কি তাহলে অপরাধ?

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মনা হোসাইন

11 thoughts on “অর্কিড – পর্ব ১ রোমান্টিক প্রেমের গল্প | মনা হোসাইন”

  1. অসাধারণ হয়েছে আপুনি 👌👌👌
    পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম

    Reply
    • আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। গল্পের জগৎ এর পাশেই থাকবেন।

      Reply
    • আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।গল্পের জগৎ এর সাথেই থাকবেন

      Reply

Leave a Comment