Golperjogot

Golperjogot

প্রেম কাহিনী – স্কুল জীবনের প্রেমের গল্প পর্ব 14 | Golpo

Prem Kahini

Raj { Part 14 }

ইউনিভার্সিটিতে সেদিন শিরীনের কথা ভালাে লাগলেও অন্যদের মত ঝর্ণাও মেনে নিতে পারে নি। কিন্তু শিরীনের মধুর ব্যবহারে আকৃষ্ট হয়ে তর সঙ্গে বন্ধুত্ব করে। সেই শিরীনের বাসায় কয়েকদিন থেকে বুঝতে পারল, এদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কত সুন্দর। সংসারটা যেন শান্তির নীড়। একদিন কথায় কথায় শিরীন বলল, জানিস, শিক্ষিত অশিক্ষিত নারী-পুরুষ ধর্মের জ্ঞান না পেয়ে এবং যারা কিছু কিছু তা পেয়েও সেই মতাে অনুশীলন করছে না বলেই সমাজের এত অবক্ষয়। তােকে অনুরােধ করছি, আমাদের।

অনেক ধর্মীয় বই রয়েছে, সেগুলাে পড়। দেখবি, তুই যেন অন্য জগতে চলে গেছিস। আল্লাহ ও তার রাসূল (দঃ) প্রত্যেক নর-নারীর জ্ঞান অর্জন করাকে অবশ্য কর্তব্য। বলেছেন। কিন্তু সেই জ্ঞান কি জ্ঞান, সেটা চিন্তা করা প্রত্যেকের কর্তব্য। জ্ঞান অর্জন বলতে কেউ যদি শুধু স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানকে বােঝে, তবে সে যেমন ভুল করবে, আবার যদি কেউ শুধু ধর্মীয় শিক্ষাকে বােঝে, তা হলে সেও তেমনি ভুল করবে। কারণ জ্ঞানের কোনাে সীমাবদ্ধতা নেই।

Short Story

মানুষ যে কোনাে বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে। তবে সে জ্ঞান যেন মানুষের কল্যাণে আসে। মানুষকে সব সময় মনে। রাখতে হবে, যে জ্ঞান আল্লাহ ও রাসূলের (দঃ) আইনের পরিপন্থী তা পরিত্যাগ করতে হবে। আর তা জানার জন্য আল্লাহপাকের কুরআন ও রাসূল (দঃ)-এর হাদিসের ব্যাখ্যা। পড়তে হবে। আমরা তা করছি না বলে আজ সারা বিশ্বে মুসলমানরা সব থেকে ঘৃনিত, আর সমাজে এত অশান্তি। শিরীনের কথা শুনতে শুনতে ঝর্ণা মনের মধ্যে কি রকম যেন অস্থিরতা অনুভব করল। কুরআন-হাদিসে কি আছে জানার জন্য প্রেরণা পেল। বলল, তাের কথা শুনে। মনে হচ্ছে, আমরা ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন না করে ঐশ্বর্যের মধ্যে সুখ-শান্তি খুঁজে বেড়াচ্ছি। যার ফলে এত সুখের নীড় অশান্তিতে ছারখার হয়ে যাচ্ছে।

এরপর থেকে ঝর্ণা তাদের ঘরে যত ধর্মীয় বই ছিল, সেগুলাে পড়তে পড়তে তার। জ্ঞানের চোখ খুলে গেল। সেগুলাে পড়ে এবং বিভিন্ন বিষয়ে শিরীন ও তার স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করে বুঝতে পারল, আসল জ্ঞান কুরআন-হাদিস না পড়লে অর্জন করা যায়। । তারপর সে নামায পড়তে শুরু করল। কুরআন-হাদিসের ব্যাখ্যা যত সে পড়তে লাগল, ততই তার মনে যেন এক স্বর্গীয় শান্তি অনুভব হতে লাগল। জীবনে যে এত বড় বিপর্যয় ঘটে গিয়ে তার মন দুঃখের সাগরে ভাসছিল, এখন তার মনে হতে লাগল, সেই সাগেরর তীরের দিকে যেন ক্রমশঃ এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রায় প্রতিদিন সে জায়েদকে চাকরির কথা জিজ্ঞেস করে। একদিন রাতে খাওয়াদাওয়ার পর ঝর্ণা জায়েদকে বলল, আর কত দিন আপনাদের ঘাড়ে বসে খার? আসলে। আপনি সিরিয়াসলি চেষ্টা করছেন না।

আপনার ধারণা ভুল। চেষ্টার কোনাে ত্রুটি করছি না। আমাদের ক্লিনিকে একজন রিসেপসনিস্ট দরকার। দু’জন মেয়ে ঐ পদে ছিল। একজন বেটার চান্স পেয়ে চলে গেছে। সকাল আটটা থেকে বেলা দুটো পর্যন্ত ডিউটি। বেতন দেড় হাজার টাকা। আপনি রাজি থাকলে আমি ব্যবস্থা করে দেব। ঝর্ণা কিছু বলার আগে শিরীন বলল, করবে না কেন? তুমি ব্যবস্থা কর। তারপর ঝর্ণাকে জিজ্ঞেস করল, কি রে করবি না? ঝর্ণা উৎফুল্ল কণ্ঠে বলল, করব না মানে? নিশ্চয় করব। তারপর জায়েদের দিকে তাকিয়ে বলল, আপনি ব্যবস্থা করুন।

শিরীন বলল, বেতনটা একটু কম, তা হােক আপাতত এটা কর। পরে বেটার চান্স পেলে ছেড়ে দিবি। | জায়েদ বলল, বেতনটা কম বলে আমি কথাটা বলতে চাই নি। উনি আমাকে চেষ্টা করছি না বলে সন্দেহ করায় বললাম। তবে বিকালের দিকে একটা ছাত্রীকে প্রাইভেটও পড়াতে পাবেন। আমার এক বন্ধুর ভাগ্নি ক্লাস টেনে পড়ে। বেতন মােটামুটি ভালই দেবে।

তবু কত দেবে বলে মনে হয়? আগে যে পড়াত, তাকে এক হাজার দিত। সে সপ্তাহে তিন দিন যেত। উনি যদি সবদিন পড়ান, তা হলে আমি বললে দেড় হাজার দিতে পারে। ঝর্ণা জিজ্ঞেস করল, উনি আপনার কি রকম বন্ধু?

জায়েদ বলল, বন্ধু বন্ধুর মতই। কলেজে পড়ার সময় বন্ধুত্ব হয়। ছেলেটা একটু বেপরােয়া মতাে হলে কি হবে খুব সরল আর ধার্মিক। সে সময় আমাদের সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল। এখন তার কথা মনে হলে খুব দুঃখ হয়।

শিরীন জিজ্ঞেস করল, কেন দুঃখ হয় কেন? জায়েদ বলল, সে কথা শুনলে তােমরাও দুঃখ পাবে। তাছাড়া সব কথা বলতে গেলে রাত ভাের হয়ে যাবে। ঝর্ণা বলল, হােক ভাের, তবু শুনব। যার ভাগ্নিকে পড়াব তার সব কথা জানা দরকার ।। জায়েদ চিন্তা করতে লাগল এদের কাছে বন্ধুর সম্বন্ধে কতটা বলা যায়।

স্বামীকে চুপ করে বসে থাকতে দেখে শিরীন বলল, চুপ করে আছ কেন? ঝর্ণাতাে ঠিক কথা বলেছে। জায়েদ বলতে আরম্ভ করল, বন্ধুর নাম আরজু। আমি আই. এস. সি পাস করে। মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পর আরজুর সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ তেমন হত না। মাঝে মাঝে সংগঠনের মিটিং-এ দেখা হলে আলাপ হত। প্রায় বছর তিনেক হল সংগঠনের সঙ্গে তার যােগাযােগ নেই। সেক্রেটারীকে জিজ্ঞেস করে জানলাম, সে সংগঠন ছেড়ে দিয়েছে। হঠাৎ দিন পনের আগে আরজু আমাদের ক্লিনিকে পেটের যন্ত্রনার ট্রিটমেন্ট করাতে এলে আমাকে দেখে আনন্দে কোলাকুলি করে ভালােমন্দ জিজ্ঞেস করল। তাকে। সংগঠন ছেড়ে দেয়ার কথা জিজ্ঞেস করতে বলল, পড়াশােনা ছেড়ে দিয়ে বিলেতে চলে গিয়েছিলাম। বছর খানেক পরে বাবা-মার মৃত্যুর খবর পেয়ে ফিরে আসি। তারপর। আবার চলে যাই। সেখানে পড়াশােনা করতে গিয়ে একটা চাকরি করছি।’

ওর বাবা একজন বড় ব্যবসায়ী জানতাম। জিজ্ঞেস করলাম, পড়াশােনা না করে। সেখানে চাকরি করছ কেন? পড়াশােনা ভালাে না লাগলে বাবার ব্যবসায় নেমে যাও।

আমার কথা শুনে ম্লান হেসে একটা কার্ড দিয়ে বলল, সময় করে দু’একদিনের মধ্যে বাসায় এস, সেদিন তােমার প্রশ্নের উত্তর দেব।’ ওকে পরীক্ষা করে দেখলাম ওর লিভার পচতে শুরু করেছে। সে জন্য পেটে যন্ত্রনা হচ্ছে। যারা বেশি মদ খায় তাদের এই রােগ হয়। তাই অবাক হয়ে বললাম, তােমার এই রােগ হল কি করে? আবার ম্লান হেসে বলল, বললাম না, বাসায় এলে সব কথা বলব। আরজু চলে যাওয়ার পর চিন্তা করলাম, অত ধার্মিক ছেলে মদ ধরল কি করে? আগে ওর কত সুন্দর স্বাস্থ্য ছিল, সব সময় মুখে হাসি লেগে থাকত। এখন কত রােগা হয়ে গেছে। মুখে হাসি নেই। সব সময় বিষাদের ছায়া। ভেবে রাখলাম কালকে ছুটি আছে, যাওয়া যাবে। পরের দিন বেলা দশটার দিকে পুরানা পল্টনে ওদের বাসায় গেলাম। বেশ বড় দোতলা বাড়ি। গেটে দারােয়ান।

আমাকে দেখে সালাম দিয়ে পরিচয়। জানতে চাইল। আমি পরিচয় দিতে গেট খুলে দিল। আমাকে দেখে আরজুর কি। আনন্দ। হাঁক-ডাক করে কাজের মেয়েদের ডেকে নাস্তা পানি করাল। বাড়িতে আর কোনাে লােকজন দেখলাম না। নাস্তা খাওয়ার পর আরজু একজন পয়ত্রিশ বছরের মহিলা ও পনের-ষােল বছরের একটা মেয়েকে সঙ্গে করে এনে বলল, আমার বড় বােন ও তার মেয়ে। তারপর আমাকে দেখিয়ে তাদেরকে বলল, আমার বন্ধু। এ ডাক্তার। এর কাছেই টিটমেন্ট করাচ্ছি। আরজুর বড় বােনকে তেমন প্রফুল্ল দেখলাম না। তবে তার মেয়েটা খুব সুন্দর। হাসি-খুশী ভাব। সালাম বিনিময়ের পর ভদ্রমহিলা দু’একটা কথা জিজ্ঞেস করে মেয়েকে নিয়ে চলে গেলেন। দুপুরে না খাইয়ে ছাড়ল না। তার আগে আমার কাছ থেকে ফোন নাম্বার নিয়ে বাসায় ফোন করে সে কথা জানিয়ে দিল। খাওয়াদাওয়ার পর বিশ্রাম নেয়ার সময় আমার মনে অনেক কিছু জানার ইচ্ছা হল। অতবড় বাড়িটাকে মৃত্যুপুরী বলে মনে হল।

চিন্তা করলাম, নিজেদের লােক কম, ভাড়া না দিয়ে। ফেলে রেখেছে কেন? আরজু বিয়ে করেছে বলেও মনে হল না। ইচ্ছাগুলাে চেপে রাখতে পেরে জিজ্ঞেস করতে যা বলল, তা বিশ্বাস করতে আমার অনেক সময় লেগেছিল। শিরীন বলে উঠল, কই, তুমি তাে তার কথা কখনাে বল নি? জায়েদ বলল, শুনে তুমি দুঃখ পাবে ভেবে বলি নি। আজ তােমরা একান্ত শুনতে চাচ্ছ বলে বলছি। ঝর্ণা শিরীনকে বলল, তুই থামততা, মাঝখান থেকে ডিস্টার্ব করিস না। তারপর জায়েদকে বলল, বলুন।

জায়েদ আবার বলতে আরম্ভ করল, আরজু উত্তর বঙ্গের ছেলে। স্কুলে ক্লাস টেনে পড়তে পড়তে কি একটা গােলমাল করে ঢাকায় পালিয়ে আসে। এসে প্রথমে কোনাে কাজ না পেয়ে রিক্সা চালাত। তারপর এক সাহেবের কৃপা দৃষ্টিতে পড়ে। সাহেবের। একটা মাত্র ছেলে ছিল। কলেজে পড়ার সময় মারা যায়। ছেলের শােকে সাহেবের স্ত্রী। পঙ্গু হয়ে যান। ওনারা আরজুকে নিজেদের ছেলে করে নেন। আরজুও তাদেরকে মা-বাবা বলে ডাকত। সাহেব তাকে স্কুলে ভর্তি করে দেন। তারপর ভার্সিটিতে পড়ার সময় একদিন বাসায় কাউকে কিছু না বলে হঠাৎ বিলেতে চলে যায়। কেন গেল জিজ্ঞেস করতে বলল, সে কথা এখন বলতে পারবে না। বিলেতে কিছু দিন পড়াশােনা করে।

তারপর পড়াশােনা ছেড়ে দিয়ে চাকরি করতে থাকে। প্রায় বছর খানেক পর সে বাড়িতে চিঠি দেয়। ততদিন আরজুর শােকে সাহেব ও তার স্ত্রী মারা গেছেন। সাহেব। মারা যাওয়ার আগে সবকিছু আরজুকে উইল করে দিয়েছিলেন। যে ব্যারিস্টারকে দিয়ে উইল করিয়েছিলেন, সাহেবের মৃত্যুর পর সেই ব্যারিস্টার আরজুর চিঠি আসার পর সব কিছু জানিয়ে ফিরে আসতে বলেন। আরজু এসে বছর খানেক ঢাকায় থেকে ব্যবসায় মন দিল। খুব বুদ্ধিমান ছেলে। কিছুদিনের মধ্যে ব্যবসা করে প্রচুর টাকা রােজগার করল ।

এর মধ্যে দেশে গিয়ে মা, বাবা, বিধবা বােন ও তার মেয়েকে নিয়ে আসে। গুলশানে একটা বাড়ি করেছে। মা-বাবাকে আনার পর সে সেই বাড়িতে থাকে। প্রতিদিন ৪ দুপুরে এ বাড়িতে খেতে আসে। কয়েক মাস পরে তার মা-বাবা দু’মাসের ব্যবধানে মারা যায়। মা-বাবা মারা যাওয়ার পর ম্যানেজারের হাতে ব্যবসার ভার তুলে দিয়ে আবার বিলেতে চলে যায়। ব্যবসায়িক কারণে ম্যানেজারের চিঠি পেয়ে এসেছে। একবার ১ সাহেব তার বন্ধুর মেয়ের সঙ্গে আরজুর বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। আরজ ভাসিটিতে পড়ত।

বিয়ের কথা শুনে তাদেরকে বলে, আমি চিরকুমার থাকব। তাতে যদি আপনারা অসন্তুষ্ট হন, তা হলে বলুন আমি এখান থেকে চলে যাব। ওনারা আরজুর। মধ্যে নিজের ছেলেরমতাে ডেসপ্যারেট ভাব লক্ষ্য করছেন। সেই ছেলে যা বলত তার। একচুল নড় চড় করত না। তাই আরজুর কথা শুনে ঐ ব্যাপারে আর কিছু বলেন নি। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তােমার যে অসুখ হয়েছে, তা হেভী মদখােরদের হয়। তা হলে কি তুমি মদ খাও? আরজু একটু গম্ভীর হয়ে বলল, বুঝতেই যখন পেরেছ তখন আবার জিজ্ঞেস করছ। কেন? খুব অবাক হয়ে বললাম, কিন্তু তােমার মতাে ছেলে মদ খাবে এটা বিশ্বাস করতে । পারছি না।

আরজু করুণ স্বরে বলল, পৃথিবীতে এমন অনেক জিনিস ঘটছে, তা বিশ্বাস করা । যায় না। বললাম, একটা কথা জিজ্ঞেস করব, কিছু মনে করাে না। তুমি চিরকুমার থাকতে । চাইছ কেন?

আমার কথা শুনে বেশ কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে চুপ করে থেকে একটা দীর্ঘ। নিঃশ্বাস ফেলে ছলছল নয়নে আমার দিকে চেয়ে বলল, একটা মেয়ের অপেক্ষায়।

আরজুর চোখে পানি দেখে আমার মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। জিজ্ঞেস করলাম, সেই মেয়ে কি জানে তুমি তার প্রতীক্ষায় আছ? মুখে কিছু না বলে আরজু শুধু মাথা নাড়াল। খুব আশ্চার্য হয়ে আবার জিজ্ঞেস করলাম, সেই মেয়েকে নিশ্চয় ভালবেসেছিলে? শুধু ভালবেসেছিলাম না, আজও বাসি এবং মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বেসে যাব। সেও কি তােমাকে ভালবাসে? না, সে আমাকে ঘৃণা করে।

আশ্চর্য! এরকম ঘটনাও ঘটে তা হলে? আচ্ছা, তুমি যে এত ভালবাস সে কি তা জানে? জানে। আর জানে বলে আমাকে জব্দ করার জন্য অন্য একজনকে ভালবেসে বিয়ে। করেছে। আরজুর কথা শুনতে শুনতে আমার বিস্ময় উত্তরােত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছিল ।

বললাম, এতকিছুর পরও তুমি তাকে আমৃত্যু ভালবাসবে? বাসব। কেন জান? সেই মেয়েটাকে ছােটবেলা থেকে শুধু ভালবাসি নি, সে আমার অন্তরে এত গভীরভাবে বাসা বেঁধে আছে, সেখান থেকে সরান কিছুতেই সম্ভব নয়। যে। কটাদিন বাচব তার স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকব। তারপর সামলে নিয়ে চোখ মুখ মুছে বলল, আজ পর্যন্ত কাউকে এসব কথা বলি নি। ভেবেছিলাম, কাউকে আমার দুর্ভাগ্যের কথা জানাব না। কিন্তু তােমাকে কেন যেন বলে ফেললাম। একটা অনুরােধ করব রাখবে? বললাম, রাখব না কেন?

আমার এই ভাগ্নির জন্য একজন মহিলা টিউটর জোগাড় করে দেবে? বুবু আবার কোনাে পুরুষ টিউটর রাখতে চায় না। বললাম, ঠিক আছে চেষ্টা করব। ঘড়ির দিকে চেয়ে দেখলাম চারটে বেজে গেছে। এবার আমি যাই, আমাকে ক্লিনিকে যেত হবে। চা-নাস্তা খেয়ে ফিরে এলাম। এই হল আমার বন্ধুর হিন্ত্রী।

তারপর ঝর্ণাকে জিজ্ঞেস করল, এখন বলুন, আপনি আমার বন্ধুর ভাগ্নিকে পড়াবেন কিনা? ঝর্ণা এতক্ষণ শুনতে শুনতে চিন্তা করছিল, সাইফুলের সঙ্গে ওনার বন্ধুর হিস্ত্রীর অনেক মিল রয়েছে। সে নয় তাে? আবার চিন্তা করল, তা কি করে হয়? এনার নাম তাে আরজু। জায়েদের কথায় সম্বিত ফিরে পেয়ে বলল, আপনার বন্ধুর হিন্ত্রী বড় রােমাঞ্চকর ও দুঃখ জনক। দেখুন কথা বলে, আমার কোনাে আপত্তি নেই।

Related Story

জায়েদ বলল, সেদিন বলেছিল বেশিদিন সে থাকবে না। দাঁড়ান টেলিফোন করে দেখি আছে কিনা। টেলিফোন ইনডেক্স থেকে নাম্বার নিয়ে ডায়েল করল। রিং হচ্ছে কেউ ধরছে না। ঘড়ির দিকে তাড়িয়ে দেখল, রাত সাড়ে বারটা। হেঁসে উঠে বলল, বন্ধর ইতিহাস বলতে বলতে টাইমের কথা ভুলে গেছি। সাড়ে বারটার সময় কেউ। কাউকে টেলিফোন করে নাকি? রিসিভার রাখতে যাবে এমন সময় ওপাশের রিসিভার। তােলার শব্দ পেল। একটু পরে একটা তরুনীর কণ্ঠস্বর শােনা গেল-কত নাম্বার চান?

আরজর ভাগ্নি নাজনীন নিজের রুমে পড়ছিল। ঘুমাতে যাওয়ার আগে দরজা বন্ধ। করতে এসে বারান্দায় টেলিফোন বাজতে শুনে ফোন ধরেছে। জায়েদ নাম্বার বলল। নাজনীন বলল, কাকে চান? মামাকে? হ্যা।।মামা তাে এ বাসায় থাকেন না। গুলশানের বাসায় থাকেন। ওখানকার ফোন। নাম্বার জানেন? না, আপনি বলুন।

Click Here For Next :– চলবে

Writer :- Raj

Leave a Comment