Golperjogot

Golperjogot

প্রেম কাহিনী – স্কুল জীবনের প্রেমের গল্প পর্ব 23 |

  প্রেম কাহিনী

Raj  { Part 23}

ডনি ঐ সব দিয়ে আমার প্রেমকে পরীক্ষা করেছেন।তােমার যখন বিয়ে হয়ে গেল। তখন করআন-হাদিসের ভালাে জ্ঞান না থাকায় তা বুঝতে না পেরে নামায-রােযা ছেড়ে দিয়ে তােমাকে ভুলে থাকার জন্য মদ ধরি। তারপর তারই অপার করুনায় আমাকে শাস্তি দিয়ে তােমাকে আমায় দান করলেন এবং আমার জ্ঞানের চোখ খুলে দিলেন। সেই জন্যে তার পাক দরবারে কোটি কোটিবার শুকরিয়া আদায় করেছি এবং আজীবন করতে থাকবাে।

তােমাকে ছাড়া এ দুনিয়ায় আমার আর কোনাে কিছু কাম্য ছিল না, এখনও নেই, ভবিষ্যতেও থাকবে না। স্বামীর কথা শুনতে শুনতে ঝর্ণার চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল।আঁচলে চোখ মুছে। বলল, তুমি যে আমাকে এত ভালবাস, আমি কি তার উপযুক্ত? আমি কি তােমা প্রেমের কণামাত্র প্রতিদান দিতে পারছি?সাইফুল তাকে আলিঙ্গন মুক্ত করে দু’হাতে তার মাথা ধরে সারা মুখে চুমােয়। চুমােয় ভরিয়ে দিয়ে বলল, তােমার কাছ থেকে কতটুকু কি পেলাম না পেলাম, সেদিকে কখনাে খেয়াল করি নি। তােমায় পেয়ে আমার আশা-আকাংখা পূর্ণ হয়েছে, সেটাই আমার কাছে সব থেকে বড় পাওয়া। তবু তুমি আমার জন্য যা কিছু করছ, তাতে করে আমার মনে হয়, পৃথিবীর কোনাে মেয়েই বােধ হয় তার স্বামীকে এত ভালবাসে না, এত প্রেমও দেয় না।দেশে ফিরে ব্যবসা দেখতে গেলে, সারাদিন তােমাকে ছেড়ে থাকতে হবে মনে করলে ফিরতে ইচ্ছা করে না। ঝর্ণা স্বামীর মাথা ধরে সারা মুখে প্রতিদান দিয়ে বলল, স্টপ, প্লিজ স্টপ। তােমার প্রেমের তুলনায় আমারটা কোটি কোটি ভাগের এক ভাগও নয়। আমাকে ছেড়ে সারাদিন ব্যবসার জন্য বাইরে থাকার কথা যে বললে, তা ঠিক নয়। পুরুষের পুরুষত্ব থাকতে হবে। বৌয়ের কাছে সব সময় থাকলে লােকে স্ত্রৈণ বলবে। তা হওয়া তােমার চলবে না। আমি আমার প্রিয়তম স্বামীকে পুরুম দেখতে চাই। আমার জন্য লােকে গেমায় নিন্দে করবে, তা আমি সহ্য করতে পারব না।তা ছাড়া আল্লাহপাকের রহমতে ভবিষ্যৎ বংশধর আসছে। তার জন্য তােমার কি কিছু করা উচিত না?

সাইফুল ইঙ্গিতটা বুঝতে পেরে আনন্দে তাকে পাজাকোলা করে তুলে দু’তিন পাক। ঘুরপাক খেয়ে আদর-সােহাগে অস্থির করে তুলল। | ঝর্ণা প্রতিদান দিতে দিতে বলল, এই কি হচ্ছে? প্লীজ, ছেড়ে দাও। এই সময় এই রকম করা ঠিক নয়।সাইফুল তাকে খাটে বসিয়ে বলল, তুমি ঠিক কথা বলেছ, আমার সে কথা মনেই নেই। তারপর আবার বলল, তুমি মা হতে চলেছ, এতদিন বলনি কেন বলে তাকে শুইয়ে তার ঠোটে একটু জোরে কামড়ে দিয়ে বলল, অন্যায়ের শাস্তি দিলাম। তারপর তার বুকে মাথা রেখে জিজ্ঞেস করল, ক’মাস?ঝর্ণা তাকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বলল, অত জোরে কামড়ালে ব্যথা লাগে না বুঝি?সাইফুল বলল, লাগবার জন্যই তাে কামড়ালাম। বললাম না, অন্যায়ের শাস্তি? এখন যা জিজ্ঞেস করলাম বল ।।যাও বলব না, আমার লজ্জা করছে। পাক লজ্জা, তবু বল।। বলব না।।সাইফুল তার হাত দুটো ধরে মুখের উপর ঝুঁকে পড়ে বলল, বল বলছি, নচেত কামড়ে ঠোট ফুলিয়ে দেব।ব্যাথা পাব না বুঝি? সেই জন্যে তাে কামড়াব। তুমি বলছ না কেন?তিন মাস বলে ঝর্ণার মুখটা লজ্জায় লাল হয়ে গেল। সে তাকিয়ে থাকতে না পেরে চোখ বন্ধ করে নিল।

সাইফুল তার হাত ছেড়ে দিয়ে আলতাে করে তার ঠোটে চুমাে খেয়ে বলল, এবার তা হলে দেশে ফিরতেই হয় কি বল? ঝর্ণা স্বামীর মাথা বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, ইনশাআল্লাহ ফিরব। এবার একটা কথা বলি? বল।।একটা কথা ভেবেছি। কি ভেবেছ বলবে তাে।আমি তাে তােমার অফিসের ম্যানেজারের এতদিন পি. এ. ছিলাম। দেশে ফিরে। অফিসের সাহেবের পি.এ. হতে চাই। সাহেবের স্ত্রী হয়ে থাকতে বুঝি আর ভালাে লাগছে না? সাহেব যে বলল, সে তার স্ত্রীকে ছেড়ে সারাদিন অফিসে থাকতে পারবে না। পি. এ. হলেও তাে সাহেবের কাছে থাকতে পারছ না। পাশের রুমে থাকবে। তা হলে তাে সেই একই কথা।।তা কেন? সাহেব যলন ইচ্ছা ডেকে কাজের বাহানায় সামনে বসিয়ে রাখবে। আজকাল তাে অফিসের বসরা সুন্দরী যুবতী মেয়ে স্টাফদের যখন তখন কাজের বাহানায় ডেকে খােশ গল্প করে। সাইফুল বুঝতে পারল, ঝর্ণা আগের অভিজ্ঞায় তার সঙ্গে ইয়ার্কি করছে। বলল, দেখ, বেশি ফাজলামী করলে কামড়ে গালের মাংস তুলে নেব। তখন টের পাবে। তারপর একটু আহত স্বরে বলল, আমি ঐসব নােংরা ফাজলামি ভালবাসি না।ঝর্ণা নিজের ভুল বুঝতে পেরে হাত জোড় করে বলল, অজ্ঞানতার কারণে অন্যায়। করে ফেলেছি, দয়া করে মাফ করে দাও।। তার সঙ্গে ফাওটাও দিচ্ছি বলে সাইফুল তাকে জড়িয়ে ধরে চুমাে খেতে লাগল ।।দীর্ঘ এগার মাস পরে তারা ফিরে এল । মনিরা ও নাজনীন ঝর্ণার প্রেগনেন্সির কথা শুনে খুশী হল। সাইফুল ভবিষ্যৎ বংশধরের চিন্তা করে ব্যবসায় মন দিল। মাসখানেক পর মনিরা একদিন সাইফুলকে বলল, আমরা সবাই এ বাড়িতে চলে আসি। ওখানে আমার একদম মন টিকে নি। অত বড় বাড়িতে নাজনীনকে নিয়ে। থাকতে ভালাে লাগছে না। শুধু শুধু আমাদের দুজনের জন্য বাড়িটা ফেলে রাখবি। কেন? তারচেয়ে ভাড়া দিয়ে দে। এ বাড়িতে কত রুম খালি পড়ে আছে। তা ছাড়া ঝর্ণার পেটে বাচ্চা। ওকে এখন সাবধানে রাখতে হবে। ওর দিকে লক্ষ্য রাখবে কে? তুই তাে সারাদিন অফিসে থাকিস।।সাইফুল বলল, বুবু, তুমি ঠিক কথা বলেছ। সেই ব্যবস্থাই করব।মনিরা বলল, আর একটা কথা, তােরা দু’জনেই ছেলে মানুষ। তাই বলছি, ঝর্ণাকে নিয়ে তই একবার দেশে যা। তাের শ্বশুর-শাশুড়ীকে সালাম করে ওনাদের দোয়া নেয়া কর্তব্য। তা ছাড়া ঝর্ণা ওনাদেরকে যেমন অনেক দিন দেখে নি, তেমনি ওনারা মেয়েকে ঘর থেকে বের করে এতদিন মানষিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। যত তাড়াতাড়ি পারিস ওনাদের সঙ্গে দেখা করে আয়। আর সেই সঙ্গে আব্বা জহুর চাচাকে আমাদের ঘরে রেখে যে সমস্ত আবাদি জমি-জায়গা ভাগ চাষে দিয়ে এসেছিল, সেসবের হিসাবপত্র করে আমদের পাওনা আদায় করবি।সাইফুল বলল, তুমি খুব ভালাে কথা বলেছ, এটা করা একান্ত উচিত। তােমরা কালকেই গােছগাছ করে এখানে চলে আস। আমি দু’একদিনের মধ্যে ঐ বাড়ির সব মালপত্রও এখানে নিয়ে চলে আসব। তারপর সামনের মাস থেকে ভাড়া দেয়ার ব্যবস্থা করব।মামা-মামী দেশে যাবে শুনে নাজনীন বলল, আমিও তােমাদের সঙ্গে যাব।। ঝর্ণা বলল, নিশ্চয় যাবে। তারপর মনিরাকে বলল, বুবু তুমিও চল না । মনিরা বলল, আগে তােরা ঘুরে আয়, তারপর কাউকে নিয়ে আমি পরে যাব। বাসায় একজনকে থাকতে হবে না?মনিরা ও নাজনীন গুলশানের বাসায় চলে আসার এক সপ্তাহ পর সাইফুল ঝর্না ও নাজনীনকে নিয়ে গাড়ি করে রওয়ানা দিল। নাজনীন সামনে সিটে বসেছে। আর ওরা দু’জন পেছনে। পথে একসময় সাইফুল ঝর্নাকে বলল, তােমার বাবা ও ভাইয়ারা আমাকে চেনেন। যদি আমাকে অপমান করেন? ঝর্ণা বলল, বুবু যেদিন দেশে যাওয়ার কথা তােমাকে বলল, সেই দিনই আমি আব্বাকে চিঠি দিয়ে সব কিছু জানিয়েছি। আর সেই সঙ্গে নাজনীনকে নিয়ে আমরা যে আজ রওয়ানা দেব, সে কথাও টেলিগ্রাম করে জানিয়েছি।সাইফুল বলল, সত্যি মাঝে মাঝে আমি তােমার বুদ্ধি দেখে অবাক হয়ে যাই। সে জন্যে তােমাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নাজনীন শুনতে পেয়ে বলে উঠল, মামা, ধন্যবাদে আমারও কিছু অংশ পাওনা। আছে। টেলিগ্রাম করার বুদ্ধিটা আমি মামীকে দিয়েছিলাম। সাইফুল হেসে উঠে বলল, তুইও তাে দেখছি বেশ বুদ্ধিমতী হয়ে উঠছিস?বহুদিন পর মেয়ের চিঠি পেয়ে হামিদ সাহেবের চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল। সেসময় রাগের মাথায় যা তা বলে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন ঠিক; কিন্তু দিনের পর দিন তার। খোজ না পেয়ে খুব অশান্তিতে দিন কাটাচ্ছিলেন।আফসানা বেগম ভাত খেয়ে বিছানায় একটু কাত হয়েছিলেন। অসময়ে স্বামীকে। একটা খাম হাতে করে ঘরে ঢুকতে দেখে উঠে বসে এতক্ষণ স্বামীর দিকে চেয়েছিলেন। চিঠি পড়া শেষ করে তাকে পাঞ্জাবীর খুঁটে চোখ মুছতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কার চিঠি? তােমার চোখে পানি কেন?

Click Here For Next :– চলবে

Writer :- Raj

Short Story

Leave a Comment