Golperjogot

Golperjogot

prem kahini bangla love story part 27

প্রেম কাহিনী – স্কুল জীবনের প্রেমের গল্প পর্ব 27

  প্রেম কাহিনী

Raj { Part 27}


শাস্তি যা ইচ্ছা দাও, তবু মাফ চাই।
তা হলে আমাকে একটু আদর সােহাগ কর। ঝর্ণা স্বামীকে জড়িয়ে আদর সােহাগ করে অস্থির করে তুলল। সাইফুল ঝর্নার আদর সােহাগে উত্তেজিত হয়ে তাকে পাজাকোলা করে চুমাে খেতে। খেতে বলল, তােমাকে নিয়ে বিছানা ...।

ঝর্ণা তাকে কথাটা শেষ করতে দিল না। তার মুখে হাত চাপা দিয়ে মেকী চোখ রাঙ্গিয়ে বলল, ভালাে হবে না বলছি। তাকে খাটে শােয়ার প্রস্তুতি নিতে দেখে কাকুতিমিনতি করে বল, প্লীজ এখন ছেড়ে দাও। তুমি এসেছ সাবুর মা-জানে। সে হয়তাে বুবু ও নাজনীনকে খবরটা দিয়ে ডাইনিং টেবিল রেডী করে ফেলেছে। দেরি হলে সাবুর মাকে বুবু ডাকতে পাঠাবে। সময় তাে পালিয়ে যাচ্ছে না।

সাইফুল তাকে ছেড়ে দিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করার সময় বলল, তােমার বুদ্ধির তারিফ করতে হয়। ঝর্ণা স্বামীকে লুংগি দিয়ে তার জামাকাপড় ব্যাকেটে রাখার সময় বলল, মনে কিছু করলে? করেছি। তবে তুমি যদি পালিয়ে যাওয়া সময়টা ধরে এনে আমার কাছে ধরা দাও, তা হলে মনে কিছু করব না।।

হয়েছে হয়েছে, অত ন্যাকামু করতে হবে না। কখনাে ধরা দিতে আপত্তি করেছি? তা অবশ্য করনি, তবে এখন পেটে বাচ্চা তাে, তাই যদি শরীরে না কুলােয়। তােমার কি মুখে কোন লাইসেন্স ট্যাক্স নেই? একদিন ছিল। তােমাকে বিয়ে করার পর আল্লাহ সে সব মওকুফ করে দিয়েছেন। আচ্ছা, কি লােক তুমি বল তাে? কেন? ঝর্ণার স্বামী। ঝর্ণা স্বামীর কোমর জড়িয়ে বলল, আর দুষ্টুমী নয়, খেতে চল, দেরি হয়ে যাচ্ছে। সাইফুলও স্ত্রীর কোমর জড়িয়ে বলল, চল।।

সেরাতে আমিন ঝর্ণাকে মারার পর পার্টিতে গিয়ে সাহেবকে মিথ্যে করে বলল, গতকাল থেকে আমার স্ত্রী খুব অসুস্থ তাই আসতে পারে নি। | আজিজ সাহেব শুনে খুব রেগে গেলেন। কিন্তু লােকজনের সামনে বাইরে তা । প্রকাশ করলেন না। বুঝতে পারলেন, মেয়েটা জেনেশুনে ইচ্ছা করে অসুস্থতার অজুহাত।

দেখিয়ে এল না। ভেবে রাখলেন, দেখবাে কতদিন অজুহাত দেখিয়ে আমাকে ফাকি দিতে পারে। আমিন মদে চুর হয়ে বাসায় ফিরল।।
শায়লা বেগম ছেলেকে কোনাে দিন মদ খেয়ে বাসায় ফিরতে দেখেন নি। আজ দেখে খারাপ লাগলেও কিছু বললেন না। ভাবলেন, যাওয়ার সময় বৌটাকে মারধাের। করে গেছে, মন খারাপ, তাই হয়তাে মদ খেয়ে এসেছে।

আমিন রুমে এসে নিজের খাটে ঘুমিয়ে পড়ল। তার তখন কোনাে দিকে খেয়াল। করার মতাে অবস্থা ছিল না।
শায়লা বেগম বৌ যে চলে গেছে, সে কথা প্রথম জানতে পারেন নি। মনে করেছিলেন, মার খেয়ে হয়তাে রাগ করে ঘুমিয়ে পড়েছে। খাওয়ার সময় কাজের মেয়েকে বললেন, আমিন আজ বাইরে খেয়ে আসবে। তুমি বৌমার ভাত তার ঘরে দিয়ে এস।

কাজের মেয়ে ভাত নিয়ে গিয়ে ঝর্ণাকে দেখতে না পেয়ে টেবিলের উপর চাপা দিয়ে রেখে এসে বলল, আপাকে তাে ঘরে দেখলাম না।

| শায়লা বেগম চিন্তিত হয়ে ছেলের রুমে এসে দেখলেন, আজ বৌ যে শাড়িটা পরেছিল, সেটা খাটের উপর জমা করা রয়েছে। ভাবলেন, তা হলে কি বাে চলে গেছে? না কোনাে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে? তাড়াতাড়ি বাথরুম খুলে দেখলেন, নেই। কাজের মেয়েকে সব বাথরুম খুলে দেখতে বললেন। ছােট ছেলেদের জিজ্ঞেস করলেন। তারা বলল, আমরা জানি না। কাজের মেয়ে ফিরে এসে বলল, কোথাও নেই। শায়লা বেগম। ভাবলেন, নিশ্চয় চলে গেছে।

আমিন ফিরলে তাকে কথাটা বলার জন্যে এত রাত জেগে ছিলেন। ছেলের অবস্থা দেখে আর বললেন না। সকালে ঘুম থেকে জেগে আমিনের গত রাতের সব ঘটনা মনে পড়ল। স্ত্রীর খাটের দিকে তাকিয়ে শাড়িটা দেখে মনে সন্দেহ হল। তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে উঠে মাকে ডাকতে ডাকতে তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, তােমার বৌ কোথায়?

| শায়লা বেগম বললেন, তুই চলে যাওয়ার পর বৌ ঘরেই ছিল। তারপর আর বার। হয় নি। রাতে খাওয়ার সময় খোঁজ নিয়ে দেখি নেই। কত খোঁজাখুঁজি করলাম, পেলাম । মনে হয় চলে গেছে।

আমিন ক্রুদ্ধ বাঘের মতাে গর্জন করে উঠল, তােমরা এতলােক থাকতে সে চলে গেল, তােমরা জানলে না?
শায়লা বেগম বললেন, আমরা যে যার রুমে রয়েছি। কে কখন কোথায় যাচ্ছে, জানব কি করে?
আমিন মাকে আর কিছু বলল না। নিজের রুমে আসার সময় গজ গজ করে বলল, যাবে কোথায়? যেখানেই যাক না কেন খুঁজে বের করবই। রুমে এসে বসে বেশ কিছুক্ষণ ভাবতে লাগল, কার কাছে যেতে পারে? ঝর্ণা যে সত্যি সত্যি চলে যাবে, এটা সে ভাবতেই পারছে না। এক এক করে তার বান্ধবীদের কথা মনে করতে লাগল। বাব- মার কাছে যে যাবে না, সে কথা নিশ্চিত। আর যদি গিয়েও থাকে, তা হলে তাে। খুব ভালই হবে। মাস খানে পরে গিয়ে পরিচয় দিয়ে তাদেরকে বলবে, আপনাদের।

ময়ে রাগ করে চলে এসেছে। তাকে নিয়ে যেতে এসেছি।
আবার ভাবল, ঝর্ণা যদি তার অত্যাচারের কথা বাবা-মা ও ভাইয়েদেরকে বলে দেয়, তা হলে তাে বিপদ? কিন্তু না বলে তাে ঝর্ণাকে হাতছাড়া করা চলবে না। যেখানেই যাক না কেন ছলচাতরি করে লকে চেয়ে বুঝিয়ে সুজিয়ে আনতেই হবে। নচেৎ ব্যবসারও যেমন ক্ষতি হবে তেমনি ভবিষ্যতে তার বাবা ও ভাইদের কাছ থেকে কিছুই আদায় করতে পারবে না। কাল

বটা একটু বেশি হয়ে গিয়েছিল। তাই হয়তাে রাগ করে কোনাে বান্ধবীর বাসায় চলে গেছে। দু'চার দিন পর রাগ পড়লে ফিরে আসবে। কিন্তু এক এক করে চার-পাঁচ মাস পরেও যখন ঝর্ণা ফিরল না তখন আমিন একজন লােককে তাদের দেশের বাড়িতে পাঠিয়ে খবর নিল সেখানে যায় নি। তারপর ঝর্ণার বান্ধবীদের অনেকের কাছে খোজ নিয়ে কোনাে খবর পেল না। শেষে মাস ছয়েক পরে উকিলের ডির্ভোসের চিঠি পেয়ে বুঝল, সে ঢাকাতেই আছে। ডিভাের্সের দিন কোর্টে আমিন ঝর্ণার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করল। কিন্তু সফল হতে পারল না । কোর্ট থেকে ফিরে সে দু’টো গুণ্ডার সঙ্গে কন্ট্যাক্ট করল ঝর্ণাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে আসার জন্য।

| গুণ্ডারা খোজ নিয়ে দেখল, খুব জাদরেল লােকের আশ্রয়ে ঝর্ণা থাকে। আমিন গুণ্ডা দ’টোকে ঝর্ণার ফটো দিয়েছিল। ঝর্ণা বাইরে বেরােবার সময় বােরখা পরে বের হয়। সেই জন্যে তারা ঝর্ণাকে চিনতে পারে না।

বছর খানেক পর আমিন জানতে পারল, ঝর্ণা যাকে কামলার ছেলে বলে ঘৃণা। করতাে, সে এখন বড় ব্যবসায়ী এবং ঝর্না তাকেই বিয়ে করেছে। জানার পর তার মাথা গরম হয়ে গেল। গুণ্ডাদেরকে সাইফুলের বাসার ঠিকানা দিয়ে বলল, সাইফুলকে মার্ডার। করে হলেও তােমরা ঝর্ণাকে আমার কাছে এনে দাও। তাতে যদি তােমাদের সঙ্গে যা। কন্ট্যাক্ট হয়েছে তার দ্বিগুণ টাকা লাগে দেব।।

গুণ্ডারা উঠে পড়ে লাগল । কিন্তু তারা শত চেষ্টা করেও সুযােগ সুবিধে করে উঠতে পারল না। তবু তারা হতাশ না হয়ে সুযােগের অপেক্ষায় রইল, ঝর্ণাকে কিডন্যাপ করার | আমিন গুণ্ডাদের কাছ থেকে সব খবর রাখছে। নিজেও লােক দিয়ে সাইফুলের অফিস থেকে তাদের অবস্থানের খবর নিয়ে গুণ্ডাদের জানাচ্ছে। বিদেশ থেকে ফেরার পর সাইফুল । অফিসে আজ পার্টি দিচ্ছে জানতে পেরে আমিন গুণ্ডাদের সেই কথা জানাল।

গুণ্ডারা সারাদিন সাইফুলের বাসার দিকে লক্ষ্য রাখল। সাইফুল পার্টি থেকে ফেরার। পর তারা গেটে এসে ছল চাতুরী করে দারােয়ানকে গেট খােলাল। ঢুকেই একজন। দারােয়ানের কানের গােড়ায় জুড়াের চাপ মেরে অজ্ঞান করে ফেলল। তারপর প্যান্টের। পকেট থেকে লাইলনের রশি বের করে হাত-পা বেঁধে গেটের আড়ালে শুইয়ে রাখল। তার মুখটা একটা বড় রুমাল দিয়ে বাধতে ভুলল না। দারােয়ানকে রেখে তারা। বারান্দায় এসে কলিং বেলে চাপ দিল।

একজন বয়স্ক চাকর একটু আগে সাহেবকে দরজা খুলে দিয়েছে। সাহেব ঢােকার পর। দরজা বন্ধ করে নিজের রুমে এসে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে গেল। সে দরজার পাশের রুমে থাকে । তার কাজই হল, দরজা খােলা এবং বন্ধ করা। সেই জন্যে সে সাহেবের অপেক্ষায়। জেগে বসে ছিল। আবার বেল বাজতে শুনে বিরক্ত হয়ে ভাবল, এতরাতে আবার কে এল?

পড়ুন  মেঘলা আকাশের প্রেমজুড়ি – বাংলা রোমাঞ্চকর লাভস্টোরি পর্ব 5
Click Here For Next :চলবে

Writer :- Raj

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top