Golperjogot

Golperjogot

প্রেমময় বৃষ্টি – অনুগল্প | Romantic Short Love Story Bangla

প্রেমময় বৃষ্টি

Ifrat Jahan Mariyam { Short Story }

!”আজকের সকাল টা কেমন একটা গুমোট ভাব। দিনটা ফুরফুরে মেজাজেই শুরু হলো। নামাজটা পড়ে নিলাম। আজকে তো শুক্রবার। উনিতো বাড়িতেই থাকবেন আজ সারাদিন। আজকের আবহাওয়াটাও খুব সুন্দর। শীতল একটা হাওয়া বয়ে গেলো হৃদয় দিয়ে।”” ফারু, কি করো?” এইতো নাস্তা রেডি করেছি। বসেন নাস্তা দিচ্ছি।” তুমিও বসো।” আজকে কি রান্না করবো বলেন?” আজকে তোমার পছন্দ মতো করো।” চিংড়ির মালাই কারি করি?” ঠিকআছে।!”ফারিয়া রান্নাঘরে চলে গেলো। আর সায়ান ল্যাপটপ নিয়ে বসেছে। আর মাঝে মাঝে তার ফারুকে দেখছে।”” সত্যি ফারু তোমাকে পেয়ে সত্যি আমি ভাগ্যবান। তোমার মতো এতো মিষ্টি দায়িত্বশীল মেয়েকে আল্লাহ আমার করে দিয়েছে। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া। (মনে মনে বললো সায়ান)!” ফারিয়া কোমড়ে কাপড় বেঁধে রান্না করছে। কপালে নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। সায়ান ফারিয়াকে এভাবে দেখে উঠে এলো রান্নাঘরের দিকে। এসেই পিছন থেকে ফারিয়ার কোমড় জড়িয়ে ধরলো।”” আরে আরে কি করছেন?” কিছুই না। আমার বউকে ধরে রেখেছি।” আপনার বউ তো এখন রান্না করছে।” করুক তাতে তো আমার সমস্যা নেই।( ঘাঁড়ে মুখ গুজে বললো সায়ান)!” ফারিয়া কেঁপে উঠলো সায়ানের কান্ডে!”” আরে মিস্টার এমন করলে তো আমি রান্না করতে পারবো না। ( সায়ানের দিকে খুন্তি তাক করে বললো ফারু)” এমা এমা কি করছো লেগে যাবে তো।” লেগে যাবার জন্যই তো এমন করছেন আপনি। ধূর।” আচ্ছা যাও যাও ধরবো না তোমাকে আর।” হুহ, যান তো।!” ফারিয়া রান্না শেষ করে সায়ানের কাছে গেলো। দেখলো সায়ান উপুড় হয়ে শুয়ে আছে।”” আপনি যে এ অসময়ে শুয়ে আছেন।”তো কি করবো?” নাচেন কতক্ষণ, দেখি আপনি নাচতে পারেন কিনা।” মজা করো তুমি ফারু।” এমা কই মজা কর…!” হঠাৎ করে বজ্রপাত হতে শুরু করলো, জোরে হাওয়া বইতে শুরু করলো। সকাল থেকেই আবহাওয়া একটা গুমোট ভাব ধরে ছিলো। ফারিয়া ভয় পেয়ে কানে হাত খিঁচে রইলো। সায়ান উঠে ফারিয়াকে জড়িয়ে ধরলো!”” আরে ভয় পাচ্ছো কেনো?” দেখছেন না কীভাবে বজ্রপাত হচ্ছে। ( শক্ত করে জড়িয়ে ধরে)” তো কি হইছে ছাড়ো তো।” না নাহ এমন করবেন না। আমার ভয় লাগছে।” আগে আমাকে একটা চুমু দাও নইলে ছেড়ে দিবো।” এমন করছেন কেনো।” ছা….” না না দিচ্ছি..”! ফারিয়া টুপ করে সায়ানের গায়ে চুমু দেয়। বৃষ্টি হতে শুরু করলো। ভারি বর্ষণ। সায়ান ফারিয়াকে নিয়ে কাথা মুড়িয়ে শুয়ে পড়লো। ঠানৃডা এক অনুভুতি নাড়া দিলো। সায়ান ফারিয়ার কপালে চুমু দিয়ে দুজনে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি দিলো।দুপুর দুইটায় ফারিয়ার ঘুম ভেঙে গেল। সায়ান ওকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। এখন তেমন বৃষ্টি হচ্ছে না গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ফারিয়া দেখে দুটো বাজে।”” আরে সায়ান সাহেব উঠেন। কয়টা বাজে দেখছেন। নামাজের সময় পাবেন নাতো আর দেরী হলে। কচু ছাড়েন।” এতো চিল্লাচিল্লি করছো কেন? উঠছি তো।” উঠতে উঠতে নামাজ সময় যাবে গা।” হুহ চলো।”! দুজনে গোসল করে নিলো। ঠান্ডা আবহাওয়ায় গোসল করায় শরীরে একটা শিরশির অনুভুতি বয়ে যায়। সায়ান আজকে আর মসজিদে যায় নি, দেরী হয়ে গেছে। দুজনে একসাথে নামাজ পড়ে খাবার খেয়ে নিয়েছে।। খাবার খেয়ে ফারিয়া গিয়ে বেলকনিতে দাড়ায় আর বাইরের দৃশ্য উপভোগ করে। কি সুন্দর বৃষ্টির ফোঁটা সবুজ গাছের পাতায় পড়ছে। পাতা থেকে গড়িয়ে মাটিতে পড়ছে। বৃষ্টির ফেঁটা গুলো যেনো আঁচড়ে পড়ছে নিছে। ছমছম আওয়াজ হচ্ছে। হঠাৎ কারো ঠান্ডা শীতল স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠেছে ফারিয়া। আর কেউ নয় তার চিরচেনা ভালোবাসার মানুষের স্পর্শ। “” কি করছো গো সোনাবউ।( ঘাড়ে মুখ গুঁজে)” বাহিরের দৃশ্য উপভোগ করছি।”খুব সুন্দর না। কি মনোরম। রোমান্টিক মুহুর্ত।( ঘাড়ে চুমু দিয়ে)” সবসময় আপনি ফাজলামো করেন।!” সায়ান ফারিয়াকে সামনে ঘুরিয়ে নেয়। কপাল থেকে চুলগুলো সরিয়ে দেয়। তারপর কপালে ছোট্ট একটা চুমু দেয়!””জানো ফারিয়া তোমাকে যেদিন প্রথম দেখি। মনে হয়েছিল তুমিই আমার সেই রাণী যাকে আমি এতদিন খুঁজছি। তোমার লজ্জামাখা হাসি দেখে মনে হয়েছিলো তোমাকে আমি অনন্ত যুগ ধরে ভালোবাসি। তোমাকে খুব ভাগ্য করে পেয়েছি। তোমার প্রতিটা কাজকর্ম সবাইকে মুগ্ধ করে। তোমাকে আমি কখনো হারাতে চাইনা। কখনো হারিয়ে যেওনা। অনন্তকাল তোমার সাথে থেকে যেতে চাই তুমিই যে আমার সব। অনেক ভালোবাসি তোমায় ফারুমণি।! ” সায়ান ফারিয়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।”” আমিও যে আপনাকে হারাতে চাইনা। আজীবন আমাকে আপনার বুকে আগলে রাখবেন সায়ান। আমিও যে ভালোবাসি।” আমাদের এই প্রেমময় বৃষ্টি যেনো আজীবন রয়ে যায়।”

সমাপ্ত

Writer :- Ifrat Jahan Mariyam

Leave a Comment