Golperjogot

Golperjogot

রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 12 – বাংলা প্রেমের গল্প

Ragi Sir Jokhon Devil Husband

Sadia Afrin { Part 12 }


রাফি স্যার : আচ্ছা তুমি কি আমার একটা কথাও শুনবে না? শুধু বলছি দেখো কফিতে চিনি ঠিক আছে কি না যদি না হয় তাহলে চিনি দিয়ে নিয়ে আসবা।

আমি আর কিছু না বলে কফিতে চুমুক দিয়ে দেখি চিনি ঠিকই আছে। তখনি স্যার আমার হাত থেকে কফি নিয়ে নেয়।

রাফি স্যার : এইবার ঠিক আছে
আমি : না খেয়েই কিভাবে বলছেন এইবার ঠিক আছে?
রাফি স্যার : ও খাই নাই।

তারপর স্যার কফি খেতে লাগলো। আমি স্যারের দিকে তাকিয়ে আছি। চুল থেকে টুপ টুপ করে পানি পড়ছে।

ভাবছিলাম কিছু বলছে না চলে যাবো তবুও কেনো জানি যেতে মন চাইছে না।

আমি খাট থেকে টাওয়াল নিয়ে চুল মুছতে লাগলাম।

রাফি স্যার : আরে কি করছো আমি তো চুল মুছেছি।
আমি : তা তো দেখতেই পারছি। চুল থেকে এখনো পানি পড়ছে আর উনি নাকি চুল মুছেছে।

স্যার কিছু বললো না। আমি সুন্দর করে চুল মুছে দিলাম।

রাতে,

ভাইয়া চলে এসেছে। ভাইয়াকে দেখে আমি দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম।

ভাইয়া : কেমন আছিস বোন
আমি : অনেক ভালো আছি। তুই কেমন আছিস ভাইয়া।
ভাইয়া : আমার চোখের মণি আদরের ছোট বোন আমাকে ছেড়ে চলে গেছে আমি কিভাবে ভালো থাকবো।
আমি : অনেক miss করছি তোকে ভাইয়া।
ভাইয়া : আমিও তোকে অনেক miss করছি।

আমি : আমার চকলেট কই?
ভাইয়া : ইসরে আজকে তো ভুলে গেছি।
আমি : যাহ তোর সাথে কথা নাই আড়ি ।
ভাইয়া : কালকে এনে দিবো অনেক গুলো সত্যি।
আমি : দরকার নাই। তোর সাথে আমি কথা বলবো না।

হঠাৎ আমার মনে হলো চকলেটের বৃষ্টি যেনো আমার মাথায় পড়ছে। পিছনে তাকিয়ে দেখি ভাইয়া আমার মাথায় পুরো বক্সের চকলেট ঢেলে দিয়েছে। আমি তো খুশিতে আত্মহারা। আমি ভাইয়ার হাত থেকে বক্স নিয়ে সব চকলেট বক্সে রাখলাম। সবাই আমাদের দুই ভাই বোনকে দেখে হাসছে।

আমি ভাইয়াকে আবার জড়িয়ে ধরে বললাম,

পড়ুন  Bangla Premer Golpo Tomar Amar Prem Part 5 Love Story

আমি : Thank you ভাইয়া।
ভাইয়া : রাফি কই?
তখনই রাফি স্যার আসলো।
রাফি স্যার : আসসালামুয়ালাইকুম ভাইয়া।
ভাইয়া : ওয়ালাইকুমুস সালাম। কেমন আছো?
রাফি স্যার : জ্বী আলহামদুলিল্লাহ। আপনি কেমন আছেন?
ভাইয়া : আলহামদুলিল্লাহ ভালো।

তারপর সবাই একসাথে রাতের খাওয়া দাওয়া করলাম। রাতে খাওয়া দাওয়ার পর কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম। তারপর যে যার রুমে চলে গেলো।

আমি বিছানা ঠিক করছিলাম তখনই স্যার রুমে আসলো। স্যার সোজা বেলকুনিতে চলে গেলো। কার সাথে জানি ফোনে কথা বলছে।

আমি ঐ দিকে কান না দিয়ে নিজের কাজ করছি। তখন স্যার আবার রুমে আসলো,

রাফি স্যার : কালকে আমাদের বাসায় ফিরে যেতে হবে।
আমি : মানে?
রাফি স্যার : অফিসে জরুরি কাজ আছে কাল অফিসে যেতে হবে।
আমি : আপনি গেলে যান কিন্তু আমি যাবো না।
রাফি স্যার : কি বললা?

আমি : যা শুনছেন তাই। আমি তো ঠিক করেছি আমি আর ঐ বাড়িতে ফিরেই যাবো না। আপনার মতো লোকের সাথে সংসার করা আমার পক্ষে সম্ভব না।

রাফি স্যার : আমার দোষ কি?

আমি : দোষ কি? লজ্জা করে না এই কথা জিজ্ঞেস করতে? আপনি হয়তো ভুলে গেছেন কিন্তু আমার এখনো মনে আছে আপনি কিভাবে একটা মেয়েকে একা ডেকে তার ইজ্জত নষ্ট করতে চেয়ে ছিলেন। আমি আপনার মতো চরিত্রহীন লোকের সাথে সংসার করতে পারবো না।

কথা শেষ হতেই স্যার আমার গালে সজোরে একটা চড় মারলো। আমি তাল সামলাতে না পেরে ফ্লোরে পড়ে যাই।

রাফি স্যার : আমি তোকে বলছিলাম আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলবি না। তাও তুই বুঝবি না। তোকে এই ভাবে বোঝাতে হয়। তুই আমার সাথে বাসায় যাবি না। তুই যাবি কি আমি তোকে আর আমার বাসায় নেবো না। তুই বলছিলি আমার সাথে সংসার করবি না এখন আমি বলছি আমি তোর সাথে সংসার করবো না।

তুই আমাকে নিয়ে খুশি না কারণ আমি তোর কেয়ার করি। ঠিক আছে আজ থেকে আর তোর কেয়ার করবো না। এখানেই আমাদের সব সম্পর্ক শেষ। আমি কালই ডিবোর্স পেপার পাঠাবো। তারপর তোর যা ইচ্ছা তাই করবি। ভালো থাকিস আল্লাহ হাফেজ।

তারপর স্যার চলে গেলো।স্যারের মুখে ডিবোর্সের কথা শুনে কেনো জানি খুব কষ্ট হচ্ছে। নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে।

পড়ুন  মুখোশ সিজন ২ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ১ | মোনা হোসাইন

ড্রয়িং রুমে,

ভাইয়া : আরে রাফি এতো রাতে কোথায় যাও?
রাফি : সরি ভাইয়া এই বাড়িতে থাকা আমার পক্ষে আর সম্ভব না।

রাফি স্যার চলে গেলো।

ভাইয়া আর ভাবি দৌড়ে আমার রুমে আসে। এসে দেখে আমি ফ্লোরে বসে কান্না করছি।

ভাবি : আফরিন কি হয়েছে তোর? তুই এভাবে কান্না করছিস কেনো?
ভাইয়া : রাফি এভাবে চলে গেলো কেনো? কি হয়েছে তোদের মধ্যে?

ভাইয়া লক্ষ্য করলো আমার গাল লাল হয়ে আছে।

ভাইয়া : রাফি তোর গায়ে হাত তুলছে? ওর এতো সাহস কিভাবে হয় আমার বোনের গায়ে হাত তোলার? ওকে আমি,

ভাবি : থামো তুমি আগে সব শুনো তারপর যা করার করো। আফরিন তুই সব খুলে বল কি হয়েছে তোদের মধ্যে।

আমি সব ঘটনা খুলে বললাম।

ভাইয়া : কিহ! রাফি এতো খারাপ একটা কাজ করেছিলো! আমি না জেনে আমার বোনকে একটা খারাপ লোকের সাথে বিয়ে দিয়ে দিয়েছি!

ভাবি : তোমরা শুধু এইটুকুই জানো। আসলে রাফি আফরিনকে কতোটা ভালোবাসে তা তোমরা জানো না।

আমি : কিহ! রাফি স্যার আমাকে ভালোবাসে?
ভাবি : রাফি থেকে বেশি ভালো তোকে কেউ আর বাসতে পারবে না।
আমি : আমি কিছু বুঝতে পারছি না তুমি কিভাবে জানো রাফি স্যার আমাকে ভালোবাসে?

ভাবি : সেই প্রথম দেখায় রাফি স্যার তোকে ভালোবেসে ফেলেছিলো। তারপর নানা ভাবে বুঝানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু তুই বুঝিসনি। আমি জানি তুইও রাফি স্যারকে অনেক ভালোবাসিস। কিন্তু রাফি স্যার তার থেকেও তোকে বেশি ভালোবাসে। ঐ দিন অনুষ্ঠানের সময় ঐ পিচ্চি ছেলেটাকে রাফি স্যার পাঠিয়ে ছিলো তোকে ডাকার জন্য।

ভাইয়া : কেনো আফরিনকে ডাকছিলো?

ভাবি : আফরিন কে প্রপোজ করার জন্য। কিন্তু তার মধ্যেই রাফির কলেজ লাইফের ক্লাসমেট মিম চলে আসে। মিম স্যারের কাছ থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এসেছিলো।

আমি : কিসের প্রতিশোধ?

ভাবি : কলেজে থাকতে মিম রাফিকে প্রপোজ করেছিলো কিন্তু রাফি মিমকে রিজেক্ট করে। মিম এতে অপমান বোধ করে। আর তাই রাফি স্যারকে অপমান করার জন্য এই নাটক করেছিলো।

ভাইয়া : এটা যে নাটক তার প্রমাণ কি? আর রাফি যে সব সত্যি বলছে তারই বা প্রমাণ কি?

পড়ুন  লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ১৮ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

ভাবি : সিসি টিভি ফুটেজ। রাফি নিজেকে নির্দোষ করার জন্য সবাইকে সেই সময়ের সিসি টিভি ফুটেজ দেখায় আর সবাই আসল ব্যাপারটা জানতে পারে। কিন্তু রাফি সব প্রমাণ দেখানোর আগেই আমরা চলে এসেছিলাম।

তাই সব সব সত্যি আমরা জানতে পারিনি। রাফি সেদিনই এই চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলো আর নিজের বাবার ব্যাবসা সামলানো জন্য ব্যাবসাতে যোগ দিয়েছিলো।

Click Here For Next :চলবে

Writer :- Sadia Afrin

Leave a Comment

Home
Stories
Status
Account
Search