Golperjogot

Golperjogot

খুনশুটি প্রেমের গল্প – রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 19

Ragi Sir Jokhon Devil Husband

Sadia Afrin { Part 19 }


আফরিন রাফির কাছে যেতেই রাফি গাড়িতে ওঠে বসে। আফরিন আর কিছু না বলে সেও গাড়িতে গিয়ে বসে। তারপর গাড়ি স্টার্ট দেয়। কিছুদূর যাওয়ার পর আফরিন রাফিকে রাগানোর জন্য বললো,

আফরিন : ড্রাইভারদের সাথে বসতে আমার একদমি ভালো লাগে না। পেছনে বসলেই ভালো হতো।

সাথে সাথে রাফি গাড়ি থামিয়ে দিলো।

রাফি : তুমি ড্রাইভার কাকে বললা?
আফরিন : যে গাড়ি ড্রাইভ করছে তাকেই বলছি।
রাফি : কিহ্ তুমি আমাকে ড্রাইভার বলেছো? আর তোমার আমার সাথে বসতে ভালো লাগে না?
আফরিন : একদম ঠিক শুনেছেন।

রাফি গাড়ি থেকে নেমে অপর পাশে গিয়ে গাড়ির দরজা খুলে আফরিনকে বলে,

রাফি : বের হও আমার গাড়ি থেকে।
আফরিন : কেনো?
রাফি : তোমার তো আমার সাথে বসতে প্রবলেম। এখন ভালোই ভালোই গাড়ি থেকে নেমে যাও।
আফরিন : আরে আমি মাঝ রাস্তায় কোথায় যাবো?
রাফি : আমি কি জানি।

আফরিন : আপনি জানেন না তো কে জানে।
রাফি : তোমার হাসবেন্ড।
আফরিন : তাই না? এবার চলেন। অনেক দেরি হয়ে গেছে।

রাফি ডেভিল স্মাইল দিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসে। তারপর তারা বাসায় চলে যায়।

আফরিন ফ্রেশ হয়ে রান্না ঘরে চলে যায়। গিয়ে রান্না বসায়। আজকে রাফির ফেভারিট বিরিয়ানি রান্না করবে।

এই দিকে রাফি রান্না ঘরে উঁকি ঝুঁকি মেরে দেখছে আফরিন ছাড়া এখানে আর কেউ আছে কিনা?

আফরিনকে একলা দেখে রাফি রান্না ঘরে ঢুকে আর আফরিনকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আফরিনের চুলে নাক ডুবিয়ে দেয়।

আফরিন : আরে কি করছেন? দেখছেন না রান্না করছি।
রাফি : তো আমার কি?
আফরিন : রান্নার মাঝে এরকম ডিস্টার্ব কেনো করছেন?
রাফি : তোমার রান্না তুমি করো আমার কি।

আফরিন : এখন আপনি যান কেউ এসে দেখে ফেললে কি ভাববে?
রাফি : কে কি ভাববে? আমার বউকে আমি জড়িয়ে ধরবো তাতে কার কি?
আফরিন : হয়েছে এবার ছাড়ুন।
রাফি : না

আফরিন : না মানে কি ছাড়ুন বলছি।
রাফি : তুমি খুবই খারাপ। তোমার এতো সুইট কিউট জামাইকে বের করে দিচ্ছ।
আফরিন : হে দিচ্ছি এইবার বের হয়ে যান।

পড়ুন  মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ১১ | মোনা হোসাইন

রাফি অভিমান করে চলে যায়। এই দিকে রাফির কান্ড কারখানা দেখে আফরিন হাসতে শুরু করে। তখন বুয়া আসে।

বুয়া : আপামনি আপনি হাসেন কেনো?
আফরিন : না না এমনি। তুমি খাবার টেবিলে খাবার নিয়ে আসো।
বুয়া : জ্বী আপামনি।

আফরিন আর বুয়া মিলে খাবার টেবিলে খাবার সাজালো। আফরিন তার শ্বাশুড়ি মায়ের কাছে গেলো।

আফরিন : মা আসতে পারি।
মা : হে মা আসো।
আফরিন : মা রান্না হয়ে গেছে খেতে চলুন।
মা : তুমি রাফিকে নিয়ে আসো আমি আসছি।
আফরিন : ঠিক আছে মা।

আফরিন তাদের রুমের সামনে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখলো রাফি কোথায় আছে। রাফি শুয়ে শুয়ে গান করছে।

রাফি : আমারো দিলের চোট বুঝে না কোনো হালায়। আমারো দিলের চোট বুঝে নারে কোনো হালায়। আমি ফাইছা গেছি,আমি ফাইছা গেছি,আমি ফাইছা গেছি মাইনকার চিপায়।

আফরিন রাফির এমন গান শুনে আর হাঁসি থামাতে পারলো না। আফরিন হাসতে হাসতে রুমের ভেতর ডুকলো। রাফি শুয়া থেকে উঠে আফরিনের সামনে দাঁড়িয়ে বললো,

রাফি : কি হলো হাসছো কেনো?
আফরিন : আমি ভাবছিলাম হয়তো কোনো ভাংগা রেডিও চলছে কিন্তু এখন তো দেখি…..(আবার হেসে দিলো)

রাফি খুব রেগে যায়। রেগে গিয়ে আফরিনকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে।

আফরিন : কি করছেন কি?
রাফি : আমাকে নিয়ে মজা করা হচ্ছে তাই না? দাঁড়াও তোমাকে দেখাচ্ছি মজা।

রাফি আফরিনকে কিস করতে যাবে আফরিন রাফির হাতের নিচ দিয়ে দৌড়ে চলে যায়। রাফিও দৌড় দেয় আফরিনকে ধরার জন্য।

রাফি আফরিনকে নিচে এসে ধরে ফেলে। রাফি দেখে তার মা তাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে। তাই রাফি আফরিনকে ছেড়ে দিয়ে ভদ্র ছেলের মতো ডাইনিং টেবিলে গিয়ে বসে।

আফরিন ও ভদ্র মেয়ের মতো খাবার সার্ভ করে দেয়।

মা : আফরিন মা তুমিও বসো।

আফরিন নিজেও খেতে বসে। আফরিন রাফির সামনে বসেছে। যদিও রাফি আফরিনকে বলেছিলো তার পাশে বসতে। কিন্তু আফরিন রাফিকে রাগানোর জন্য তার সামনে গিয়ে বসে।

রাফি টেবিলের নিচ দিয়ে তার পায়ের সাথে আফরিনের পা আঁকড়ে ধরে। আফরিন অনেক চেষ্টা করছে ছাড়ানোর কিন্তু পারছে না।

আফরিন ইশারায় অনেক বার বলে ছাড়তে কিন্তু ছাড়ে না। রাফি খাচ্ছে আর ডেভিদ স্মাইল দিচ্ছে। আফরিন পা ছাড়ানোর জন্য অন্য পা দিয়ে রাফির পায়ে দিলো এক লাথি। রাফি ওফফ চিৎকার করে দাঁড়িয়ে পড়লো।

পড়ুন  প্রেম কাহিনী – স্কুল জীবনের প্রেমের গল্প পর্ব 20 | Golpo

মা : কি হয়েছে।
আফরিন : মা মনে হয় বিড়াল কামড় দিয়েছে পায়ে।
মা : বিড়াল কোথা থেকে আসলো।
রাফি : না মা এমনি।(আফরিনের দিকে রাগি লুক নিয়ে)

মা : আচ্ছা শোন। আমি কিছুদিনের জন্য তোর ফুপির বাসায় যাবো। অনেক দিন ধরে বলছে যাওয়ার জন্য। আমি কিছুদিন ওখানে থাকবো তোদের সমস্যা হবে না তো।

আফরিন : মা আপনাকে ছাড়া থাকবো কিভাবে?
রাফি : মা তোমার কোথাও যাওয়ার দরকার নাই।
মা : আহা রাফি আফরিন আমি কিছুদিনের জন্য যাবো।

রাফি : কিন্তু?
মা : কোনো কিন্তু না। তুই তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসবি। আফরিন বাসায় একা থাকবে।
রাফি : তুমি আজকেই যাবে?
মা : হে এখনি রওনা দেবো।

তারপর তারা খাওয়া দাওয়া করলো। বিকেলে রাফির মা রাফির ফুপির বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা দিলো। রাফিও একটা কাজে বাইরে গেলো। বুয়ার বাসায় কিসের সমস্যার জন্য বাসায় চলে যেতে হয়েছে। বাসায় আফরিন ছাড়া আর কেউ নেই।

আফরিন আবার ভূত খুব ভয় পায়। তাই সে তার নিজের রুমে গিয়ে দরজা অফ করে ঘুমিয়ে পড়ে। তার ঘুম ভাঙে রাতে। রাতের রান্নার জন্য ফ্রেশ হয়ে নিচে আসে।

হঠাৎ লাইট অফ হয়ে যায়। আফরিন একটু ভয় পেয়ে যায়। মনে মনে নিজের মধ্যে সাহস সঞ্চয় করে বলে:হয়তো কারেন্ট চলে গেছে। তখন সে অনুভব করে পেছন থেকে কেউ দৌড়ে অপর পাশে চলে গেছে। সে ভয়ে ভয়ে বলে,,,

আফরিন : কেককে ওখানে?

আবারও পেছন থেকে কেউ দৌড়ে অপর পাশে চলে যায়। আফরিন বারবার বলছে কে ওখানে কে ওখানে কিন্তু কেউ কোনো সাড়াশব্দ দিচ্ছে না। আফরিন আরো ভয় পেয়ে যায় কারণ লাইট একবার জ্বলছে একবার নিভছে।

আফরিন প্রচুর পরিমাণে ভয় পেয়ে যায় সে দৌড়ে সিরিতে উঠতে যাবে তখনই খুব ভয়ংকর একটা চেহারা তার সামনে চলে আসে আর আফরিন প্রচন্ড ভয় পেয়ে জোরে চিৎকার করে মুখ ডেকে বসে পরে।

তখনই সারা বাড়ীতে লাইট জ্বলে ওঠে। আফরিন ভয় পেয়ে এখনো সেখানে বসে আছে।কারো হসির আওয়াজে সে মুখ থেকে হাত সরিয়ে উঠে দাড়ায়। পিছনে তাকিয়ে দেখে রাফি হাসছে।

আফরিন : তার মানে এই সব আপনার কাজ? (প্রচন্ড রেগে গিয়ে)

পড়ুন  শেষ ঠিকানা তুমি – থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 2 | Love Story

রাফি আবারো জোরে জোরে হাসতে শুরু করে।

আফরিন : আপনি জানেন আমি কতোটা ভয় পাইছিলাম।
রাফি : তুমি ভয় পাও বলেই তো এইসব করছি। তুমি যদি ভয় না পাইতা তাহলে এইসব করে আমার কি হতো।

আফরিন : আপনি খুব খারাপ একটা লোক।
রাফি : Yes আমি তোমার ডেবিল হাসবেন্ড।

আফরিন রাগ করে চলে যাচ্ছিলো রাফি এক টানে আফরিনকে নিজের কাছে নিয়ে আসে।

Click Here For Next :চলবে

Writer :- Sadia Afrin

Leave a Comment

Home
Stories
Status
Account
Search