Golperjogot

Golperjogot

বাংলা প্রেমের গল্প – রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 15

বাংলা প্রেমের গল্প – রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 15

আফরিন : রাফি কার সাথে এভাবে হেসে হেসে কথা বলছে। কই আমার সাথে তো একবারও হেসে কথা বলে না। আচ্ছা ও কি কোনো মেয়ের সাথে কথা বলছে? যদি মেয়ের সাথেই কথা বলে তাহলে মেয়েটি কে? মেয়েটির সাথে রাফির সম্পর্ক কি? এটা আবার রাফির কোনো গার্লফ্রেন্ড নয় তো? আফরিন তুই পাগল হয়ে যাবি।

আফরিন রান্নার শেষে টেবিলে খাবার সাজিয়ে সবাইকে নিচে আসার জন্য ডাক দেয়। তারপর রাফি আর রাফির মা নিচে আসে।

তারা খেতে বসলে আফরিন সবাইকে খাবার বেড়ে দেয়।

মা : আফরিন মা তুমিও খেতে বসো।

আফরিন রাফির পাশে বসে। রাফির আম্মু তখন বলতে শুরু করে,

মা : তোদের বিয়ের তো কয়েক দিন হলো। বউ মাকে নিয়ে দূরে কোথাও থেকে ঘুরে আয়।

রাফি : না মা আমার অফিসে অনেক কাজ আছে। এমনিতেই অনেক দিন অফিসে যাই না। কালকে থেকে অফিসে যাবো।
মা : সব কাজ মেনেজারকে বুঝিয়ে দিবি। আর তুই কালই বউ মাকে নিয়ে হানিমুনে যাবি।
রাফি : মা……….
মা : কোনো কথা নাই। আমি টিকিট কেটে রাখছি। তোরা কল সকালে রওনা দিবি। সকাল ১০ টায় তোদের ফ্লাইট।
আফরিন : মা তাহলে আমি ব্যাগ গুছিয়ে রাখি।(উত্তেজিত হয়ে)

রাফি রেগে গিয়ে আফরিনের দিকে তাকাতেই আফরিন ভয়ে চোখ নিচে নামিয়ে চুপ করে বসে থাকে।

মা : ঠিক আছে মা যাও।

আফরিন আর কিছু না বলে দৌড়ে উপরে চলে গেলো। গিয়েই ব্যাগ গুছাতে শুরু করে।রাফি খাওয়া দাওয়ার শেষে উপরে আসে। এসে দেখে আফরিন ব্যাগ গুছাতে ব্যাস্ত।

রাফি : কালকে সকালে যাবো আর এখনি ব্যাগ গুছানোর কি আছে
আফরিন : সেটা আমার ইচ্ছা।
রাফি : যত্তোসব।

রাফি তারপর বাইরে চলে যায়। সারাদিন বাসায় ফিরে না। একদম রাতে বাসায় ফিরে। রাফির মা খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েছে। আফরিন রাফির জন্যই অপেক্ষা করছিলো।

রাফি আসলে রাফি কে খাবার দেয় সাথে নিজেও খায়। রাফি খাওয়া দাওয়া করে উপরে চলে যায়। আফরিন থালা বাসন গুছিয়ে নিজেও উপরে আসে।

রাফি শার্ট প্যান্ট নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় শাওয়ার নিয়ে বাইরে আসে। রাফির প্রতিদিন রাতে শাওয়ার নেওয়ার অভ্যাস আছে। রাফি শাওয়ার শেষে মাথা ডলতে ডলতে সোফায় বসে। আফরিন বিষয়টা লক্ষ করে।তাই সে ব্যাগ গোছানো রেখে রাফির জন্য কফি বানিয়ে নিয়ে আসে। আজকে আফরিন রাফির অগোচরে ইচ্ছা করে কফিতে এক চুমুক দেয়।

পড়ুন  কলেজের ক্রাশ যখন আমার প্রেমে পর্ব 1 | Emotional Love Story

আফরিন : এই নিন আপনার কফি।

রাফি কফির মগ হাতে নিয়ে দেখে লিপস্টিক এর ছাপ। তারমানে এটা আফরিনেরই ঠোঁটের ছাপ। রাফি কিছু না বলে আফরিনের ঠোঁটের ছোঁয়া জায়গা ঠোঁট রেখে কফি খেতে শুরু করে।

আফরিন : আজকে বলবেন না চিনি কেমন হয়েছে দেখতাম?
রাফি : আজকে চিনি পারফেক্ট আছে।

আফরিন কিছু না বুঝতে পেরে বলদের মতো দাঁড়িয়ে আছে।

রাফি : এখানে কি? কি করছিলা সেই কাজ করো।

আফরিন বিছানা গুছিয়ে ওয়াশ রুমে চলে যায়। হাত মুখ ধুয়ে আসে। সারাদিন কাজ করার জন্য খুব দুর্বল লাগছে এখন।

আফরিন : বিছানা গুছানো হয়েছে এবার শুয়ে পড়ুন।

রাফি গিয়ে নিজের জায়গায় শুয়ে পড়ে। আফরিন লাইট অফ করে এসে নিজেও শুয়ে পড়ে। আজ কেউ আফরিন রাফির কাছে আসতে চেয়েছিলো কিন্তু কাল রাতের কথা ভেবে ভয় পেয়ে আর যায় না।

সকালে আফরিন তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে রান্না বান্না করে রেডি হয়ে যায় কারণ আজকে তাড়া হানিমুনে যাবে। আফরিন সব কাজ শেষে রাফি কে ডাক দেয়।

আফরিন : এই যে উঠুন ৮ টা বাজে।
রাফি : হুম
আফরিন : কিসের হুম তাড়াতাড়ি উঠুন নয়তো দেরি হয়ে যাবে।
রাফি : কোথায় যাবো
আফরিন : কোথায় যাবো মানে আজকে না আমাদের হানিমুনে যাওয়ার কথা?
রাফি : আমি কাল রাতে টিকিট ছিঁড়ে ফেলেছি অতএব হানিমুনে যাওয়া কেন্সেল।

আফরিন এই কথা শুনে মনে মনে খুব কষ্ট পায়। সে হতাশ হয়ে খাটের এক কোনায় বসে পড়ে। তখনই রাফির আম্মু রুমে আসে।

আফরিন : মা আপনি?
মা : তোমরা এখানো রেডি হও নাই?
আফরিন : না মা আসলে
রাফি : আমি কালকে টিকিট ছিঁড়ে ফেলেছি তাই যাওয়া হবে না।
মা : টিকিট ছিড়েছিস কেনো?
রাফি : আমি যাবো না তাই।

মা : আমার কথাই শেষ কথা যাবি মানে যাবি।
রাফি : টিকিট নাই।
মা : আমি জানতাম তুই এরকম কিছু করবি তাই আরেকটা টিকিট কেটে রেখেছি।
রাফি : মা
মা : আমি আর কিছু শুনতে চাই না। এখনি রেডি হও।

রাফি বাধ্য হয়ে শুয়া থেকে উঠে ওয়াশরুমে চলে যায়।

মা : বউ মা এখন তুমি খুশি তো?

আফরিন ওনাকে জড়িয়ে ধরে বলে,

আফরিন : অনেক খুশি মা।
মা : তুমি তো রেডি। দেখো ব্যাগ ঠিক মতো গুছিয়েছো কি না।
আফরিন : মা ব্যাগ আমি কালকেই গুছিয়ে রেখেছি। আপনি নিচে চলুন আমি আপনাকে খাবার দিচ্ছি।
মা : হে চলো।

পড়ুন  Love Never Ended Part 13 | Come Back Sad Love Story

মা আফরিন নিচে গেলো রাফিও শাওয়ার শেষে নিচে গেলো। তারপর সবাই একসাথে খেলো।

মা : তুই এখনো রেডি হসনি?
রাফি : হ্যা এখনি রেডি হবো।
মা : তাড়াতাড়ি যা আর ১ ঘন্টা আছে।

রাফি উপরে চলে যায় আর খুব সুন্দর করে রেডি হয়ে আসে। রাফিকে দেখে আফরিন আবার ক্রাশ খায়।

রাফি : চলো
আফরিন : কোথায়
রাফি : কোথায় মানে তুমি কোন রাজ্যে আছো

আফরিনের হুশ ফিরলে আফরিন একটু লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলে।

রাফি : মা তুমি ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করবা।
আফরিন : আর ঔষধটাও সময় মতো খেতে হবে। আমি হালিমাকে সব বলে দিয়েছি।
মা : ঠিক আছে মা ঠিক আছে। তোমরা ঠিক মতো যেয়ো। গিয়েই আমাকে একটা ফোন করবা।
আফরিন : ঠিক আছে মা।
রাফি : আসি মা।
আফরিন : মা আসি।
মা : সাবধানে যেয়ো।

রাফি আর আফরিন রওনা দিলো ইয়ারপোর্ট এর উদ্দেশ্য। তাদের বাসা থেকে এয়ারপোর্ট বেশি দূরে না থাকায় খুব তাড়াতাড়ি ইয়ারপোর্টে পৌছে গেলো।

আফরিন খুব নার্ভাস ফিল করছে কারণ এই প্রথম সে বিমানে চড়ছে। রাফি বিষয়টা লক্ষ করে। রাফি একটা ডেভিল স্মাইল দেয় যার রহস্য আফরিন বুঝতে পারে না। বিমানে সবাইকে সিট বেল্ট লাগাতে বলে। আফরিন চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। তারপর রাফি আফরিনের সিট বেল্ট লাগিয়ে দেয়।

বিমান উড়ার সময় প্রথমে আফরিন কিছুটা ভয় পায় পরে একটু সাভাবিক হয়। অনেকক্ষণ জার্নির পর তারা তাদের গন্তব্যে পৌছায়। একটা হোটেলে তাদের নামে হোটেল বুক করা। তার আম্মু তাদের নামে হোটেল বুক করে রেখেছে।

তাদের আসতে আসতে রাত হয়ে যায়। দুজনেই তাদের রুমে গিয়ে খুব ক্লান্তির কারনে খাটে বসে পড়ে। কিছুক্ষণ পর রাফি শাওয়ার নিতে ওয়াশ রুমে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে বাইরে এলে আফরিন ও শাওয়ার নেওয়ার জন্য ওয়াশ রুমে যায়।

এইদিকে রাফি আফরিনকে শাড়ি পড়িয়ে দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করে আছে। আফরিন কে প্রতিদিন শাড়ি পড়িয়ে দিতে দিতে তার একটা অভ্যাস হয়ে গেছে।

কিছুক্ষণ পর আফরিন বাইরে আসে পড়নে লং থ্রিপিস।

রাফি : তুমি আজ শাড়ি পড়োনি কেনো?

আফরিন : প্রতিদিন আপনাকে আমার জন্য বিরক্ত হতে হয়। আপনার মনের অনিচ্ছায় আমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিতে হয় তাই ভাবলাম আজকে আপনাকে আর কষ্ট দিবো না তাই থ্রিপিস পড়ছি। আর আমি আজকেই শাড়ি পড়া শিখে নেবো তাহলে আপনাকে আর আমার জন্য বিরক্ত হতে হবে না।

পড়ুন  ভিলেন পর্ব 84 - প্রেমের গল্প | Romantic Premer Golpo

রাফি কিছু বললো না। তারা কিছুক্ষণ রুমে বিশ্রাম নিলো।

রাফি : চলো
আফরিন : কোথায়?
রাফি : রাতের খাবার খাবে না।
আফরিন : বাইরে গিয়ে খেতে হবে?

রাফি : এই হোটেলের সামনেই খুব সুন্দর একটা রেস্টুরেন্ট আছে। ভিউটা খুব সুন্দর।
আফরিন : ওওও
রাফি : হুম

তারপর তারা দুজনেই রেস্টুরেন্টে গেলো। রাফির কথা মতো সত্যিই রেস্টুরেন্টটা খুবই সুন্দর।

তারা দুজনেই খাবার শেষ করে রেস্টুরেন্টের বিল পে করে বাইরে বের হয়।

আফরিন : গাড়ি নিবেন না?
রাফি : ঐ দিকটা খুবই সুন্দর চলো ঐদিকটা একটু হেঁটে আসি।

রাফি আর আফরিন সেই দিকে যায়। রাস্তাটা খুবই নির্জন। রাফি সেখানে গিয়ে একটা কল করে। আফরিনের থেকে একটু দূরে গিয়ে হাসতে হাসতে কথা বলতে শুরু করে।

আফরিন এতোক্ষণ চারপাশ দেখছিলো। রাফির দিকে তাকাতেই দেখে রাফি কিছুটা দূরে কার সাথে জানি হেসে হেসে কথা বলছে। যা দেখে আফরিন প্রচন্ড রেগে যায়।

আফরিন রাফির কাছে গিয়ে ফোন কেড়ে নেয় আর কানে ফোন নিয়ে একটা মেয়ের কন্ঠ শুনতে পায়। মেয়েটা ফোনের ওপাশ থেকে রাফি কে I love you বলতে বলছে।

আফরিনের চোখ থেকে দুফোঁটা পানি বের হয়ে পড়ে। ফোনটা হাত থেকে পড়ে যায়। আফরিন দৌড়ে হোটেলের দিকে চলে যায়। রাফি আফরিন কে অনেক ডাক দেয় কিন্তু আফরিন কোনো কথাই শুনে না। হোটেল থেকে রেস্টুরেন্ট বেশি দূরে না।

আফরিন তাদের রুমে গিয়ে খাটের উপর শুয়ে বালিশ জড়িয়ে কাঁদতে থাকে তখনই,

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top