Ragi Sir Jokhon Devil Husband
Sadia Afrin { Part 6 }
তখনই পার্লারের লোকেরা আসলো। আমি সবাইকে বের করে দিলাম। তারপর সবাই নিলিমাকে সাজাতে শুরু করলো। পরে আমাকেও বলছিলো কিন্তু আমি সাজি নাই। আমার এই সব সাজগোজ ভালো লাগে না। আমি সুইট এন্ড সিম্পল একটা মেয়ে।😇
সাজগোজের পর আমি নিলিমাকে নিয়ে নিচে গেলাম। সবাই আমাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমার সেই মজা লাগছে। নিলিমা তো লজ্জায় লাল হয়ে গেছে।
নিচে নিয়ে গিয়ে ভাইয়ার সামনে দার করিয়ে আমি আমার বাকি ফ্রেন্ড আর কাজিনদের কাছে চলে গেলাম।
ভাইয়া : তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে
নিলিমা : ধন্যবাদ
ভাইয়া : শুধু ধন্যবাদ দিলে চলবে না
নিলিমা : তাহলে কি?
ভাইয়া : ঘরে চলো পরে বলছি😜
নিলিমা : এতো মানুষ এখানে কি বলছেন আপনি?(লজ্জা পেয়ে)
ভাইয়া : তাতে কি হয়েছে আমার বউকে আমি যা ইচ্ছা তাই বলবো তাতে কার কি?
নিলিমা : আপনিও না
ভাইয়া : কি
তখনি ভাইয়ার বন্ধুরা বউ সহ হাজির,
শাকিল : কিরে বিয়ের পর দিনই বউ পাগল হয়ে গেলি নাকিরে?
ভাইয়া : আরে শাকিল কি খবর কি অবস্থা।
শাকিল : এই তো আলহামদুলিল্লাহ। তা ভাবি কেমন আছেন
নিলিমা : জ্বী আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
ভাইয়া তাদের ফ্রেন্ডের সাথে নিলিমাকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। এই দিকে আমি আমার ফ্রেন্ডদের সাথে গল্প করছি। হঠাৎ চোখ পরলো একটা ছেলের উপর। সব মেয়েরা তার দিকেই তাকিয়ে আছে। আমিও তাকিয়ে আছি। ছেলেটা আর কেউ না আমাদের রাগী স্যার মানে রাফি স্যার। আমি আবারো রাফি স্যারের উপর ক্রাশ খেলাম।
Related Story
স্যার ভেতরে ঢুকতেই ভাইয়া স্যারকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো। তারপর দুজনেই হেসে হেসে কথা বলতে লাগলো। কথা বার্তা শেষে স্যার সোফায় গিয়ে বসলো। স্যার মনে হয় কাউকে খুঁজছে। বার বার এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। তাই আমি স্যারের সামনে গিয়ে লম্বা একটা সালাম দিলাম।
আমি : আসসালামুয়ালাইকুম
স্যার আমাকে দেখে দাঁড়ালো। আমার সালামের উত্তর দিলো,
রাফি স্যার : ওয়ালাইকুমুস সালাম
আমি : কেমন আছেন স্যার?
রাফি স্যার : হুম ভালো। তুমি?
আমি : জ্বী স্যার আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তা স্যার আপনি কাউকে খুঁজছেন?
রাফি স্যার : ককই না তো। আর তুমি সবসময় আমার সাথে লেগে থাকো কেনো। আমার থেকে দুরে থাকতে পারো না?(ধমক দিয়ে)
আমি : আরেব্বাস আমাদের বাসায় এসে আমাকেই ধমকানো হচ্ছে। আপনার সাহস কিভাবে হয়?
রাফি স্যার : আমি এখানে তোমার ভাইয়ার ইনভাইটেড গেস্ট। আর তা ছাড়াও আমি তোমার স্যার। সো রেসপেক্ট মি।
আমি : হুহ ডং
রাফি স্যার : কি? আমি ডং করি?
আমি : তা নয়তো কি?
রাফি স্যার : তোমাকে আমি
আমি : কিছুই করতে পারবেন না
রাফি স্যার কিছু বলতে যাবে তখনই আম্মু আসলো,
আম্মু : আরে রাফি বাবা তুমি দাঁড়িয়ে আছো কেনো বসো।
আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
আম্মু : আর এই অকরমার ডেকি তোর স্যার আসছে আর তুই এখানে দাঁড়িয়ে আছিস? যা দেখ রাফি বাবার কি লাগবে।
আমি : আম্মুউউ
রাফি স্যার : আন্টি আমার কিছু লাগবে না। আমার কিছু লাগলে অবশ্যই বলবো।
আম্মু : আচ্ছা ঠিক আছে বাবা।
তার পর আম্মু চলে গেলো। আমিও ভেংচি কেটে চলে আসলাম। পিছন ফিরে আসতেই ওয়েটারের সাথে ধাক্কা লেগে সব আমার জামায় পড়ে যায়।
আমি : ইশ আমার ড্রেস
ওয়েটার : ম্যাম সরি আমি দেখতে পারি নাই। সরি ম্যাম।
আমি : আরে আপনি সরি বলছেন কেনো? দোষটা তো আমার ছিলো। কোনো ব্যাপার না আমি ড্রেস চেঞ্জ করে আসছি।
তারপর উপরে গেলাম। জামা চুজ করতে করতে অনেক টাইম লেগে গেলো। অবশেষে একটা জামা চুজ করে চেঞ্জ করার জন্য বাথরুমে ঢুকলাম। চেঞ্জ করে হালকা সাজ দেই। তখনই অসাধারণ কন্ঠে কেউ গান শুরু করলো। আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। কে গাইছে গানটা তা দেখার জন্য বাইরে যাই কিন্তু ততক্ষণে গানটা শেষ হয়ে যায়। অনেক মানুষ তাই বুঝা যাচ্ছে না কে গেয়েছে গানটা।
এইটা সেই কন্ঠ তা আমি কাল নিলিমাদের বাসায় শুনেছিলাম। কার কন্ঠ এইটা কে সে। আমি পুরো পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমি এই কন্ঠের উপর ক্রাশ খেয়েছি।
আর এই ব্যাপারটাকে পাত্তা না দিয়ে আমি ফ্রেন্ডদের কাছে চলে গেলাম। পুরো অনুষ্ঠান স্যার আড় চোখে আমাকে দেখছিলো। যখনি আমি তাকাই তখনই চোখ ফিরিয়ে নেয়।
অবশেষে অনুষ্ঠান শেষ হয়। সবাই একে একে চলে যায়। আমি সারাদিনের ক্লান্তির কারনে রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। এর কিছুদিন পর আমি আর নিলিমা ভার্সিটিতে যাই। ভাইয়া আমাদের ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে অফিসে গেছে। অনেক দিন পর ভার্সিটিতে এসে খুব ভালো লাগছে।
ভার্সিটিতে এসে সব ফ্রেন্ডসদের সাথে দেখা করলাম আড্ডা দিলাম। ক্লাসের টাইম হতেই সবাই ক্লাসে চলে যাই। প্রথম ক্লাস রাফি স্যারের তাই সবাই তাড়াতাড়ি গিয়ে বসে পড়ে। কিছুক্ষণ পর রাফি স্যার আসে।
আমরা সবাই একসাথে সালাম দেই তারপর স্যার আমাদের বসতে বলে। রাফি স্যার খুব ভালো করে পড়ান। তবে আজ রাফি স্যারের মনে হয় পড়ানোর দিকে মন নেই। বার বার আমার দিকে তাকাচ্ছে। আমি কিছু বুঝলাম না। রাফি স্যার বার বার আমার দিকে তাকাচ্ছে কেনো? আমি আবার কোনো ভুল করলাম নাকি ?
Short Story
পুরোটা ক্লাস এভাবেই চললো। তারপর অন্যান্য ক্লাস হলো সব ক্লাস শেষ করে বাইরে বের হতেই রাফি স্যারের সাথে ধাক্কা লেগে পরে যেতেই রাফি স্যার আমাকে ধরে ফেললো। একে অপরের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। আমার মনে হচ্ছে আমি অন্য কোনো জগতে আছি।
তখনই নিলিমা আসলো,
নিলিমা : উহুম উহুম (কাশি দিয়ে)
নিলিমার কাশি শুনে আমার হুশ ফিরলো। আমি রাফি স্যারের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে রাফি স্যারকে সরি বলে নিলিমাকে নিয়ে বাসায় চলে আসি।
বাসায় এসে কোনো কাজেই আমার মন বসছে না। বার বার রাফি স্যারের সাথে ধাক্কা খাওয়ার কথাটা মনে পড়ছে। বার বার সেই মুহূর্তের কথা মনে পড়ছে।
আমি : উফ্ আমি কি পাগল হয়ে গেছি? ঐ বজ্জাত রাগী খরুচ স্যারটাকে মনে পড়ছে কেনো? কেনো বার বার সেই মুহূর্তের কথা মনে হচ্ছে? কেনো আমি অন্য কিছু ভাবতে পারছি না? তাহলে কি আমি, না না কি সব ভাবছি আমি। দূর নিলিমার কাছে যাই।
তারপর নিলিমার কাছে চলে গেলাম,
আমি : ভাবিইইইই
নিলিমা : ঐ ভাবি কি আমি এখনো তোর বেস্টু ওকে?
আমি : জ্বী না ভাবি
নিলিমা : আবার ভাবি??
আমি : জ্বী ভাব
নিলিমা : তবে রে বদমাইশ
নিলিমা সারা বাসা আমাকে দৌড় করাইলো। আমার আম্মাজান আমাদের দুইজনের দুষ্টুমি দেখে হাসতে হাসতে শেষ।
তারপরের দিন প্রতিদিনের মতো আমাকে আর নিলিমাকে ভার্সিটিতে দিয়ে অফিসে চলে গেলো। ভার্সিটিতে গিয়ে ফ্রেন্ডসদের সাথে আড্ডা দিলাম। আর প্রতিদিন স্যারের সাথে দেখা হতো। স্যার কেনো জানি সবসময় আমাকে চোখে চোখে রাখতো।
এভাবেই দিন কাটতে লাগলো। একদিন আমাদের ভার্সিটিতে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। সবাই খুব সুন্দর করে সেজেগুজে এসেছে। আমি ফ্রেন্ডসদের সাথে কথা বলছি তখন একটা পিচ্চি এসে বললো কেউ একজন আমাকে ক্লাস রুমে ডাকছে। আমি বললাম তুমি যাও আমি আসছি। তারপর ফ্রেন্ডসদের সাথে কথা বলতে বলতে ভুলে যাই কেউ আমাকে ডাকছে।