Golperjogot

Golperjogot

রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 9 – বাংলা ভালোবাসার গল্প

রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 9 – বাংলা ভালোবাসার গল্প

Ragi Sir Jokhon Devil Husband

Sadia Afrin { Part 9 }


অনেক সকালে ঘুম ভেঙে গেলো। ঘুম ভাঙার পর আমি যা দেখলাম তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।

আমি স্যারের বুকে। স্যার আমাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে আছে। এমন ভাবে জড়িয়ে ধরেছে মনে হচ্ছে ছেড়ে দিলেই পালিয়ে যাবো।

আমি নিজেকে ছাড়ানোর শত চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না। এতো শক্ত করে ধরে আছে ছাড়াতেই পারছি না। আর কোনো উত্তর না পেয়ে দিলাম স্যারের হাতে এক কামড়।

স্যার ঘুমের মধ্যেই চিৎকার দিয়ে উঠলো। আমাকে ছেড়ে খাট থেকে নেমে গেলো। হাতে যেই জায়গায় কামড় দিছি স্যার একবার ঐ দিকে তাকাচ্ছে আর এক বার আমার দিকে তাকাচ্ছে।

রাফি স্যার : তুমি আমার হাতে কামড় দিছো কেনো?(কাঁদো কাঁদো ভাবে)

আমি শুয়া থেকে উঠে খাট থেকে নেমে বললাম,

আমি : তো কি করবো আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরেছেন কেনো?
রাফি স্যার : আমি জড়িয়ে ধরি নাই তুমিই আমাকে জড়িয়ে ধরেছো।
আমি : কিহ! আমি?
রাফি স্যার : জ্বী হে আপনি।

আমি : আমি জড়িয়ে ধরেছি আপনি সরিয়ে দিতে পারলেন না?
রাফি স্যার : জড়িয়ে ধরছো তুমি সরবাও তুমি আমি কেনো সরাবো?
আমি : আপনি, আপনি অত্যন্ত বাজে লোক।

রাফি স্যার : শোনো তোমার প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নাই যে আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরবো। জড়িয়ে তুমি ধরেছো সো তুমি বাজে মেয়ে। আমি খুব ভালো একটা ছেলে।

আমি : আপনার সাথে কথা বলাও বেকার।
রাফি স্যার : সেইম

আমি আর কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। একটা থ্রি পিস পড়ে বের হয়ে আসলাম।

রাফি স্যার : এই তুমি এইটা কি পড়ছো?
আমি : কেনো দেখেন না?
রাফি স্যার : তোমার কি কোনো কমন সেন্স নাই?
আমি : এতে কমন সেন্স এর কি আছে?

রাফি স্যার : কালকে আমাদের বিয়ে হয়েছে। আজ বাসায় মেহমান আসবে তোমাকে দেখার জন্য আর তুমি থ্রি পিস পড়ে আছো?

আমি : তো কি পড়বো?
রাফি স্যার : এইটাও বলে দিতে হয় নাকি অবশ্যই শাড়ি পড়বা।
আমি : আমি শাড়ি পড়তে পাড়ি না।
রাফি স্যার : তা কেনো পারবা পারবা শুধু ফ্যাশন করতে।
আমি : আমি কোথায় ফ্যাশন করলাম?
রাফি স্যার : থাক আর বলতে হবে না। আমিই কিছু একটা করছি।
আমি : আপনি আবার কি করবেন?

পড়ুন  ভিলেন - থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 38 | Romantic Love Story

স্যার কিছুক্ষণ কি একটা ভেবে আমার দিকে তাকালো। তারপর হেঁচকা টান দিয়ে আমার উড়না নিয়ে নিলো।

আমি : কি করছেন কি?
রাফি স্যার : দেখছো না কি করছি।

আমি : আপনি আসলেই একটা বাজে লোক। আপনার সাহস কিভাবে হয় আমার উড়না নেওয়ার? আপনি সত্যিই একটা চ…...

রাফি স্যার আমার ঠোঁটে আঙুল রাখলো। আমি চুপ করে গেলাম। তারপর আমার উড়না দিয়ে নিজের চোখ বাঁধলো। তারপর খুব সুন্দর করে শাড়ি পড়িয়ে দিলো।

আমি সব হাবার মতো দেখছি কিছুই বলতে পারছি না। স্যার খুব সুন্দর করে শাড়ি পড়িয়ে দিলো যখন কুঁচি গুঁজে দিবে তখন আমার পেটে ছোঁয়া লাগতেই আমি কেঁপে উঠলাম আর স্যারের হাত চেপে ধরলাম।

আমি চোখ বন্ধ করে আছি। অদ্ভুত একটা ফিলিংস হচ্ছে। স্যারের হাত তখনো চেপে ধরে রেখেছি। স্যার চোখ থেকে উড়না সরিয়ে আমার দিকে এক অন্য রকম দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

হঠাৎ দরজায় আওয়াজ হতেই আমার হুশ ফিরলো। আমি স্যারের হাত ছেড়ে দিলাম স্যারও হাত সরিয়ে নিলো।

আমি একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ালাম। স্যার ওয়াশ রুমে চলে গেলো। আমি গিয়ে দরজা খুলে দিলাম। দরজা খুলতেই সবাই ভেতরে ঢুকে গেলো।

সবাই আমাকে এনে খাটে বসালো তারপর সবাই নিজেদের পরিচয় দিতে থাকলো।

সবাই ভাবি নয়তো ননদিনী হয়। সবাই খুব মজা নিচ্ছে। মাঝে মাঝে এমন কিছু কথা বলছে যাতে আমার খুব লজ্জা লাগছে।

সব কথার মাঝখানে এক ভাবি এসে বললো,

ভাবি : দেখি দেখি

মাথা থেকে ঘোমটা সরিয়ে বললো,

ভাবি : তার মানে সব হয়েছে।

সবাই মিটিমিটি হাসছে। আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না।সবাই হাসছে কেনো। আমি হাদারামের মতো সব দেখছি।

সবাই হাসি ঠাট্টা করে চলে গেলো। আমি আবার দরজা অফ করে খাটে এসে বসলাম। তখনই স্যার ওয়াশ রুম থেকে বের হলো।

রাফি স্যার : সবাই চলে গেছে?
আমি : হুম
রাফি স্যার : উফ্ বাঁচলাম?
আমি : কেনো?

রাফি স্যার : এখানে থাকলে তোমার মতো আমাকে নিয়েও সবাই হাসি ঠাট্টা করতো।
আমি : হুম। আচ্ছা সবাই আমার চুল দেখে হাসলো কেনো?
রাফি স্যার : ওরা তোমার ভেজা চুল দেখে হেসেছে।
আমি : এতে হাসার কি আছে?

পড়ুন  মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ৭ | মোনা হোসাইন

রাফি স্যার : তাদের ধারণা বিয়ের পরেরদিন যদি বউয়ের চুল ভেজা থাকে তাহলে তাদের ফুল সজ্জা হয়েছে। তাই ওরা তোমার ভেজা চুল দেখে ভেবেছে তোমার আমার ফুল সজ্জা হয়েছে।
কিন্তু তারা তো জানে না এমন এক মেয়েকে বিয়ে করেছি তার সাথে সজ্জা তো দূরে থাক ফুল পর্যন্তও হয়নি।

আমি কিছু না বলে ভেংচি কেটে অন্য পাশে ফিরে বসলাম। স্যার সুন্দর করে রেডি হয়ে নিচে চলে গেলো। তার কিছুক্ষণ পর পার্লারের মহিলারা আসলো। আমাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিলো। তারপর পর আমার ননদিনীরা আসলো।

সবাই মামাতো ফুফাতো ননদিনী স্যারের কোনো আপন ভাই বা বোন নেই। পরিবারের এক মাত্র সন্তান।

তো ননদিনীরা আমাকে নিয়ে গিয়ে স্টেজে বসিয়ে দিলো। পাশে স্যার এসে বসলো। সবাই আমাদের দুইজনের ছবি তুলছে। আমার তো ইচ্ছে করছে নানান রকমের পোজ দিতে। কিন্তু নতুন বউ হওয়ায় বসে থাকা ছাড়া কোনো পোজ দিতেই পারছি না।

কিছুক্ষণ পর ভাইয়া নিলিমা আর আমার কিছু ফ্রেন্ডসরা আসলো। আমি তাদের দেখে দৌড়ে গেলাম। গিয়েই ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরলাম। ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরেই কান্না করে দিলাম। তখন রাফি স্যারও আসলো।

রাফি স্যার : আসসালামুয়ালাইকুম ভাইয়া কেমন আছেন?
ভাইয়া : ওয়ালাইকুমুস সালাম আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুমি কেমন আছো।
রাফি স্যার : জ্বী আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
নিলিমা : ভাইয়াকে পেয়ে বান্ধবীদের ভুলেই গেছোছ।

আমি সবাইকে জড়িয়ে ধরলাম। সবাইকে এক সাথে দেখে খুব ভালো লাগছে।

আমি : আম্মু কোথায় ভাবি?
নিলিমা : আম্মু বাসায়।
আমি : আম্মু আসে নাই কেনো?
ভাইয়া : আম্মু বলছে বিয়ের পরের দিন নাকি মেয়ের শ্বশুর বাড়ি যেতে হয় না তাই আসে নাই।

রাফি স্যার : এই সব বাজে কথা। আপনি আম্মুকে নিয়ে আসতেন তাহলে ভালো হতো।
ভাইয়া : আসে নাই।
রাফি স্যার : তো ভাবি আপনি কেমন আছেন?
নিলিমা : জ্বি আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
রাফি স্যার : ভাইয়া চলুন ঐদিকে যাই।

ভাইয়া আর রাফি স্যার চলে গেলো। আমি নিলিমা মানে ভাবিকে বললাম,

আমি : ভাবি দেখছেন রাফি স্যার আপনাকে ভাবি বলছে আর আপনি করে বলছে।
নিলিমা : সেইটা তো রাফি স্যার বলছে কিন্তু তুই কেনো বলছিস।(আমার কান টেনে ধরে বললো)
আমি : ছাড় কুত্তা ব্যাথা লাগছে। সইতান কোথাকার আমার কানটা ছিড়েই ফেলেছে।
নিলিমা : আরো বলবি ভাবি?

পড়ুন  প্রেম কাহিনী – স্কুল জীবনের প্রেমের গল্প পর্ব 18 | Golpo

আমি : তুই আমার ভাইয়ের এক মাত্র বউ। তোকে ভাবি বলবো না তো কাকে ভাবি বলবো। আর এমনিতেও যদি সবার সামনে আমার ভাইয়ের বউকে নাম ধরে ডাকি তাহলে সবাই কি ভাববে?

নিলিমা : আচ্ছা ঠিক আছে সবার সামনে ভাবি আর সবার আরালে তোর বেষ্টু।
আমি : ওকে মাই ডিয়ার কলিজা।
নিলিমা : তো ননদিনী বাসর কেমন কাটলো?(একটা ধাক্কা দিয়ে বললো)

আমি : বাসর? কুত্তা আমার যার সাথে বিয়ে হবে সে যে রাফি স্যার তা আমাকে বলিস নাই কেনো?
নিলিমা : বললে কি হতো?
আমি : আমি যদি জানতাম একটা চরিত্রহীনের সাথে আমার বিয়ে হবে তাহলে মরে গেলেও আমি এই বিয়ে করতাম না।

নিলিমা : মানে?
আমি : কেনো ভুলে গেছিস অনুষ্ঠানের দিনের কথা?
নিলিমা : রাফি স্যার তোকে কিছু…...

নিলিমা কিছু একটা বলার আগেই রাফি স্যার চলে আসলো।

রাফি স্যার : ভাবি আর ননদিনীর মধ্যে কি কথা হচ্ছে?

রাফি স্যার আসতেই আমি ওনাকে পাত্তা না দিয়ে অন্য দিকে চলে গেলাম।

নিলিমা : স্যার আপনি এখানো আফরিনকে কিছু বলেন নাই কেনো?
রাফি স্যার : আরে দাঁড়াও এতো তাড়া কিসের?
নিলিমা : স্যার আপনি কি ওর উপর প্রতিশোধ তুলার জন্য বিয়ে করেছেন নাকি ভালোবেসে।

রাফি স্যার : পাগল নাকি? এতো পিচ্চি একটা কারণে আমি ওর উপর প্রতিশোধ নিবো? আমি তো ওর মনে নতুন করে আমার জন্য ভালোবাসা জাগাতে চাই।

নিলিমা : কিন্তু ও তো আপনাকে ভুলই বুঝবে।
রাফি স্যার : বুঝতে দাও। ভুল বুঝা থেকে ভালোবাসার সৃষ্টি হবে ইনশাআল্লাহ।
নিলিমা : বেস্ট অফ লাক স্যার...

Click Here For Next :চলবে

Writer :- Sadia Afrin

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top