Golperjogot

Golperjogot

বাংলা প্রেমের গল্প – রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 18

রাফি ভেতরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আসে দরজা খুলে পড়ে যেতে নিতেই আফরিন ধরে ফেলে। তারপর খাটে নিয়ে শুইয়ে দেয়।

আফরিন রাফির অনেক খেয়াল রাখে। আফরিনের যত্নয়াত্মীতে খুব তাড়াতাড়ি রাফি সুস্থ হয়ে উঠে।

রাফি : তোমার জন্য আজকে একটা সারপ্রাইজ আছে।
আফরিন : কি সারপ্রাইজ?
রাফি : রাতে রেডি হয়ে থেকো আমি তোমাকে এক জায়গায় নিয়ে যাবো।

আফরিন : কখন
রাফি : অফিস থেকে এসে
আফরিন : আচ্ছা ঠিক আছে।

রাফি অফিসে চলে যায়। আফরিন বাসার সব কাজ করে। রান্না বান্না করে রাফির আম্মুকে খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দেয়।

রাতে আফরিন খুব সুন্দর করে সাজে। কালো একটা শাড়ি পড়েছে। আফরিনকে খুব সুন্দর লাগছে। শাড়ির সাথে ম্যাচিং করে কানের দুল আর চুড়ি পরেছে। আফরিনকে অনেক সুন্দর লাগছে। যে কেউ প্রথম দেখাতে প্রেমে পড়ে যাবে। কিছুক্ষণ পর রাফি বাসায় ফিরে।

রাফি : আফরিন রেডি হয়েছো

তখনই সামনে আফরিনকে দেখে রাফি স্তব্দ হয়ে যায়। এক দৃষ্টিতে আফরিনের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার চোখ যেনো সরছেই না। তখন আফরিন রাফির সামনে হাত নাড়িয়ে বললো…..

আফরিন : কি হলো কি দেখছেন?

রাফি অপ্রস্তুত ভাবে বললো,,,

রাফি : না না কিছু না কিছু না চলো।

আফরিন গাড়িতে গিয়ে বসে। রাফি গাড়ি ড্রাইভ করছিলো। তখন আফরিন জিঙ্গেস করলো,,,

আফরিন : আমরা কোথায় যাচ্ছি?
রাফি : আগে চলো তার পরে বলছি।
আফরিন : স্যার না বললে কিন্তু আমি যাবো না।

রাফি : তাই নাকি? আমি না চাইলে তুমি গাড়ি থেকে নামতে পারবে না।(ডেভিল স্মাইল)
আফরিন : আমি গাড়ি থেকে লাফ দেবো
রাফি : দাও

আফরিন দরজা খুলতে চাইছিলো কিন্তু লক করা। আফরিন দরজা খুলতে ব্যার্থ হয়ে চুপ করে বসে থাকে।

রাফি : রাগ করেছো?
আফরিন :………(নিশ্চুপ)
রাফি : কি হলো বলো।
আফরিন :……..(এখনো নিশ্চুপ)

রাফি : আচ্ছা চলো তাহলে বলেই দেই।
আফরিন : সত্যি? বলেন বলেন।
রাফি : তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
আফরিন : সত্যি? কি সারপ্রাইজ?

রাফি : বলে দিলে তো সারপ্রাইজ আর সারপ্রাইজ থাকলো না তাই না ?
আফরিন : আচ্ছা ঠিক আছে। তাড়াতাড়ি চলুন কোথায় যাবেন।

তারা একটা হোটেলের সামনে আসে।

আফরিন : এখানে কেনো?
রাফি : বললাম তো সারপ্রাইজ আছে।
আফরিন : সারপ্রাইজ কি বাসায় দেওয়া যেতো না?
রাফি : জ্বী না।
আফরিন : এখানে কিসের সারপ্রাইজ?
রাফি : আগে চলো তো।
আফরিন : ঠিক আছে চলুন।

রাফি : দাঁড়াও দাঁড়াও
আফরিন : আবার কি?

রাফি একটা কালো কাপড় দিয়ে আফরিনের চোখ বেঁধে দেয়।

আফরিন : আরে কি করছেন?
রাফি : বললাম তো সারপ্রাইজ
আফরিন : উফ্ আপনি পারেনো বটে।
রাফি : এইবার চলো।

রাফি একটা অন্ধকার জায়গায় আফরিনকে দাঁড় করিয়ে দেয়। তারপর চোখের বাঁধন খুলে দেয়।

আফরিন : আরে এখানে এতো অন্ধকার কেনো? স্যার আপনি কোথায়?

তখনই চারপাশ থেকে লাইট জ্বলে ওঠে। আফরিন চারপাশে চোখ বুলিয়ে দেখে অনেক বড় ফাঁকা জায়গা। চারপাশে লাইট দিয়ে সাজানো।

আফরিন পিছন ফিরে তাকাতেই দেখে টেবিলে কেক রাখা। তখনই উপর থেকে ফুলের পাপড়ি পড়তে থাকে। রাফি আফরিনের পিছন থেকে এসে তার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।

রাফি : Happy birthday to you. Happy birthday to you. Happy birthday to dear Afrin. Happy birthday to you.

আফরিন কিছু বলতে পারছে না। তার বিশ্বাস হচ্ছে না। রাফি স্যার তার জন্মদিন মনে রেখেছে। আর সুন্দর ভাবে তাকে সারপ্রাইজ দিচ্ছে। খুশিতে আফরিনের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।

রাফি : আহা একদম চোখের পানি নয়। আজকে তোমার জন্য স্পেশাল দিন। এই দিনে কোনো চোখের জল না।

আফরিন রাফিকে জড়িয়ে ধরে। রাফি কিছু বলতে পারছে না। সেই মূহুর্তটা দুজনেই ফিল করছিলো। রাফিও আফরিনকে জড়িয়ে ধরে।

রাফি : এই পাগলি কাঁদছো কেনো? একদম কাঁদবে না। এখন থেকে আমি তোমার মুখে শুধু হাঁসি দেখতে চাই।

আফরিন কিছু বলছে না। এখনো রাফিকে জড়িয়ে ধরে আছে। আর বাচ্চাদের মতো কান্না করছে।

রাফি : আহা কান্না অফ করো। চলো কেক কাটো।

রাফি আফরিনের চোখ মুছিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক করে বললো,,,

রাফি : তোমার জন্য কতো আয়োজন করেছি আর তুমি কান্না করছো? এইটা কিন্তু ঠিক না।
আফরিন : আচ্ছা ঠিক আছে আমি আর কান্না করবো না।

তারপর আফরিন কেক কাটে। কেক কেটে রাফিকে খাইয়ে দেয়। রাফিও আফরিনকে খাইয়ে দেয়। তারপর আফরিন বলে,

আফরিন : আমার গিফট কই?

রাফি আফরিনের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে। তারপর বলতে শুরু করে।

রাফি : তোমাকে সেই দিন ভালোবেসেছি যেইদিন তোমাকে প্রথম দেখেছি। বলতে পারো লাভ এট ফার্স্ট সাইট। তোমাকে অনেক বার বলতে চেয়েছি আমার মনের কথা। কিন্তু বলতে পারিনি। তোমাকে আমার ভালোবাসা বুঝাতে গিয়ে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি। আজ আমার মনের কথাটা তোমাকে বলতে চাই।

আমি তোমাকে ভালোবাসি। অনেক বেশি ভালোবাসি। তুমি কি তোমার মনে জমিয়ে রাখা সকল ভালোবাসা আমাকে দিবে? মন থেকে তোমার হাসবেন্ড হিসেবে মেনে নিবে?(রাফি আফরিনের সামনে হাত বাড়িয়ে দেয়)

আফরিনের চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় পানি পড়ছে। এই চোখের পানি কষ্টের না আনন্দের। আফরিন রাফির হাতে হাত রেখে মাথা দিয়ে হ্যা সুচক মাথা নারে। তার রাফি ওঠে দাঁড়িয়ে একটানে আফরিনকে নিজের কাছে নিয়ে আসে।

রাফি : এতো হিরার বর্ষণ হলে তো আমি গরিব হয়ে যাবো। আমার জন্য কিছু হিরা রাখো।(রাফি আফরিনের চোখ মুছে দেয়।)

আফরিন মুচকি হাসি দেয়।

রাফি : আয় হায় মুচকি হাসি দিয়ো না কলিজায় লাগে।
আফরিন : তাই বুঝি?
রাফি : I Love you
আফরিন : Love you too

রাফি আফরিনের চোখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আফরিন ও রাফির চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।

আফরিন : কি দেখছেন এভাবে?
রাফি : আমার পৃথিবী।
আফরিন : আমার চোখে আপনি পৃথিবী কোথায় দেখলেন?
রাফি : তুমিই তো আমার পৃথিবী।

রাফি তার ঠোঁট আস্তে আস্তে আফরিনের দিকে আনছে। আফরিন নিজেকে ছাড়িয়ে চলে যেতে নিতেই রাফি আফরিনের হাত ধরে ফেলে। আবার নিজের কাছে টেনে আনে। রাফি আফরিনকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।

রাফি : কোথায় যাচ্ছো হুম??
আফরিন : ,,,,,,,(নিশ্চুপ)

রাফি আফরিনকে ঘুরিয়ে নিজের সামনে দাঁড় করায়। তারপর দুই গালে চেপে ধরে দুজনের ঠোঁট এক করে দেয়। কতোক্ষণ এভাবে ছিলো তারা নিজেরাই জানেনা। রাফি আফরিনের ঠোঁট ছেড়ে এবার গাড়ে কিস করতে শুরু করে। রাফির প্রত্যেকটা ছুয়াতেই আফরিন কেঁপে ওঠে।

রাফি আফরিনকে কুলে করে নিয়ে একটা টেন্টের ভেতর চলে যায়। খুব সুন্দর করে সাজানো ভেতরে। সেদিকে কারো খেয়ালই নেই। দুজন দুজনের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রাফি আফরিনকে খাটে শুইয়ে দেয়। তারপর দুজন এক হয়ে যায়। হারিয়ে যায় ভালোবাসার এক বিশাল রাজ্যে।

পরদিন,

আফরিনের আগেই ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম থেকে উঠে দেখে আফরিন রাফির বুকে শুয়ে আছে।দুজনেরই গায়ে কোনো কাপড় নেই। গতকাল রাতের কথা মনে পড়তেই আফরিন খুব লজ্জা পায়।

আফরিন নিজের সব লজ্জা ভুলে রাফির ঠোঁটে যখনি কিস করতে যাবে তখনই রাফি জেগে ওঠে। আফরিন তাড়াতাড়ি সরে যেতে যাবে তখনই রাফি আফরিনকে শুইয়ে দিয়ে নিজে ওপরে উঠে রাফির হাত চেপে ধরে।

আফরিন : কি করছেন কি?
রাফি : তুমি যেটা করতে চেয়েছিলা।

এইটা বলেই দুজন আবার এক হয়ে যায়। তারপর দুজনে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়ে। আফরিন রাফির বুকে শুয়ে আছে।

রাফি : ও বউ
আফরিন : হুম বলেন।
রাফি : আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে না তো?

আফরিন রাফির মুখে হাত দিয়ে বলে‌…….

আফরিন : একদম এই কথা বলবেন না। আপনি যদি আমাকে ছেড়ে চলে যান না তাহলে আমি একদম মরেই যাবো।

রাফি আফরিনের কপালে একটা চুমু দিয়ে বলে,

রাফি : আমি তোমাকে কখনই কোথাও ছেড়ে যাবো না।
আফরিন : এবার বাসায় চলুন না জানি মা একা একা কি করছে।
রাফি : আরেকটু থাকো না।
আফরিন : না আর না। এইবার উঠুন।

আফরিন নিজের শাড়ি নিয়ে টেন্টের ভেতরের বাথরুমে চলে যায়। তারপর ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসে। আফরিন ফ্রেশ হয়ে এসে রাফিকে জোর করে বাথরুমে পাঠিয়ে দেয়।

আফরিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ভেজা চুল মুছছিলো। রাফি একটা টাওয়েল পরে ফ্রেশ হয়ে আসে।আফরিনকে দেখে রাফি আফরিনকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।

আফরিন : কি করছেন?

রাফি আফরিনের থেকে মাথা মুছার তোয়ালে নিয়ে খাটে ছুঁড়ে মারে। তারপর আফরিন চুলে নিজের নাক ডুবিয়ে দেয়।

আফরিন : আপনি এমন কোনো?
রাফি : কেমন?
আফরিন : একটু বেশি রোমান্টিক।
রাফি : আমি ডেভিল।
আফরিন : হয়েছে এইবার ছাড়েন।
রাফি : না।

আফরিন : আমি বুঝি না রাগী স্যার কিভাবে ডেভিল হাসবেন্ড হয়?
রাফি : তাই না? তাহলে তোমাকে বুঝিয়ে দেই কিভাবে রাগী স্যার কিভাবে ডেভিল হাসবেন্ড হয়।
আফরিন : এই না। অনেক হয়েছে। কাল সারারাত ঘুমাতে দেননি। এখন আর কোনো দুষ্টুমি চলবে না।

রাফি : একটু।
আফরিন : আপনি অনেক লুচু

রাফি আফরিনকে ছেড়ে দেয়।আর সামনে গিয়ে বলে,,,

রাফি : কিহ্! আমি লুচু?
আফরিন : তার থেকে বেশি।

রাফি রেগেমেগে নিজের শার্ট প্যান্ট পরে চলে যায়। আফরিন মুচকি মুচকি হাসতে থাকে। তারপর রেডি হয়ে হোটেলের বাইরে যায়। গিয়ে দেখে রাফি গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

আফরিন রাফির কাছে যেতেই রাফি গাড়িতে ওঠে বসে। আফরিন আর কিছু না বলে সেও গাড়িতে গিয়ে বসে। তারপর,,,,,,

Leave a Comment