Golperjogot

Golperjogot

Ragi Sir Jokhon Devil Husband Bangla Romantic Golpo Part 4

রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 4 Bangla Romantic Golpo

Ragi Sir Jokhon Devil Husband

Sadia Afrin { Part 4 }


অবশেষে ক্লাস শেষ হলো। স্যার চলে গেলো। সবাই একে একে বের হচ্ছে ক্লাস থেকে। নিলিমা পানি খাওয়ার জন্য বাইরে গেছে। আমার ব্যাগ গোছাতে গোছাতে লেট হয়ে গেছে। যখন ক্লাস থেকে বের হতে যাবো তখনই দরজার সামনে স্যার এসে দাঁড়ায়।

আমি তো ভয়ে শেষ। স্যার ভেতরে ঢুকছে আর আমি পিছোচ্ছি। পিছনে যেতে যেতে দেয়ালের সাথে লেগে গেলাম। স্যার আমার এক পাশে হাত রাখলো। অন্য পাশ দিয়ে চলে যাবো আরেক হাত দিয়ে আমাকে আটকে ফেললো।

আমি স্যারের চোখের দিকে তাকিয়ে আছি স্যারও আামার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। কেনো জানি স্যারের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে খুব ভালো লাগছে। চোখ সরাতেই পারছি না।স্যারও অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কোনো কিছুর শব্দ হতেই দুজনের হুঁশ ফিরলো। স্যার একটু পিছিয়ে দাঁড়ালো। আমি চলে আসবো তখনই স্যার আমার হাত ধরে ফেললো।

আমি ঃ মানে কি এই সবের?
স্যার ঃ কেনো বুঝতে পারছো না? নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করছো?
আমি ঃ ছাড়ুন আমার হাত ব্যাথা লাগছে।
স্যার ঃ ছাড়বো না।
আমি ঃ আপনি কোন অধিকারে আমার হাত ধরেছেন?
স্যার ঃ তোমার হাসবেন্ড এর অধিকারে।
আমি ঃ মানে?

স্যার ঃ তুমিই তো সারা ভার্সিটিতে বলে বেড়াইছো তুমি আমার হবু বউ সো তোমার হাত ধরার তো অধিকার আমার আছে।

আমি ঃ হাত ছাড়ুন বলছি
স্যার ঃ ছাড়বো না
আমি ঃ ছাড়ুন বলছি আমার হাতে লাগছে
স্যার ঃ ছাড়বো না

আমি আর কিছু না বলে স্যারের গালে চড় বসাই দিলাম। সেই কখন থেকে বলছি ছাড়ুন হাতে লাগছে সে শুনছেই না।

আমি চড় দিতেই স্যার হাত ছেড়ে দিলো। আমি হাত ছাড়া পেতেই দেখতে লাগলাম হাত লাল হয়ে গেছে।

স্যারের দিকে তাকাতেই দেখি স্যার রাগে ফুঁসছে। স্যারের গালে চড়টা একটু জুড়েই লেগেছে। হাতের ছাপ বসে গেছে। আমি চলে আসতে যাবো স্যার আমাকে ধাক্কা দিয়ে বেঞ্চে ফেলে দেয়। তারপর নিজের কোর্টটা খুলে ছুরে মারে টেবিলে। আমি তো ভয়ে শেষ।

আমি ঃ স্যার কি করছেন আপনি?
স্যার ঃ রাফি চৌধুরীর গায়ে হাত তুলার সাহস কিভাবে হয় তোমার?
আমি ঃ সসরি স্যার

পড়ুন  লাভার নাকি ভিলেন সিজন ২ – পর্ব ৩৫ থ্রিলার গল্প | মনা হোসাইন

স্যার আমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমি মুখের সামনে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলি।

অনেক্ষণ পরও যখন তেমন কিছু মনে হচ্ছে না তখন হাত সরিয়ে চোখ খুলে তাকালাম। দেখি স্যার আমার সামনে চেয়ার টেনে আমার দিকে তাকিয়ে বসে আছে।

আমি চোখ খুলতেই স্যার বিকট শব্দ করে হেসে উঠলো।

স্যার ঃ তুমি কি ভেবেছো তোমাকে আমি টাচ করবো? কক্ষনো না। তোমারদের মতো থার্ডক্লাস মেয়েদের উপর আমার কোনো ইন্টারেস্ট নাই। নেক্সট টাইম থেকে তোমার এই মুখ আমাকে দেখাবা না।

স্যার টেবিল থেকে কোর্টটা নিয়ে চলে গেলো। আমার খুব কান্না পাচ্ছে। এতো অপমান আমাকে কেউ কোনোদিন করে নাই। স্যার চলে যেতেই নিলিমা আসলো……

নিলিমা ঃ কিরে স্যার এতো রেগে আছেন কেনোরে? আর এখানেই বা কেনো? আর তুই এখানে কি করছিস এখনো?

আমি ঃ আমি আর এই ভার্সিটিতে পড়বো না। এই যে সালাম করে বের হচ্ছি। আর কাউকে আমার মুখ দেখতে হবে না। আমাকেও কেউ অপমান করতে পারবে না।

আমি রাগ দেখিয়ে ক্লাস রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম। নিলিমাও আামার পিছন পিছন আসলো। রিকশা নিয়ে সোজা বাসায় চলে আসলাম। তার পর কিছুদিন ভার্সিটিতে যাইনি।

এই দিকে রাফি প্রতিদিন ভার্সিটিতে এসে আফরিনকে খুঁজে কিন্তু পায় না। কেনো জানি আফরিনকে খুব মিস করে রাফি।

প্রায় ১ মাস ভার্সিটিতে যাই না।একদিন নিলিমা এসে বলছে ওর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আমি তো অনেক খুশি হলাম কিন্তু নিলিমার মন খারাপ।

আমি ঃ নিলিমা তোর মন খারাপ কেনো?

নিলিমা কিছু না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো। আমি নিলিমাকে সামলে নিয়ে বললাম,

আমি ঃ শান্ত হ আমাকে বল তুই কি এই বিয়েতে রাজি না?

নিলিমা কিছু বলতে যাবে তখনই ভাইয়া চলে আসে।

আমি ঃ ভাইয়া তুই?
ভাইয়া ঃ তোর চকলেট দিতে আসছিলাম। কিন্তু নিলিমা কাঁদছে কেনো?
আমি ঃ ভাইয়া ওর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে তো তাই।

ভাইয়া কথাটা শুনেই চমকে উঠলো। ভাইয়া দরজার সাথে লেগে গেলো। আমি আর নিলিমা দৌড়ে গিয়ে খাটে নিয়ে এসে বসালাম।

পড়ুন  ভিলেন – থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 24 | Villain Bangla Story

আমি ঃ ভাইয়া তোর কি হয়েছে?
নিলিমা ঃ তোমার কিছু হয়নি তো?

ভাইয়া নিলিমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ওঠে চলে যেতে নিতেই নিলিমা ভাইয়ার হাত ধরে ফেলে। ভাইয়া এবার নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে নিলিমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়। নিলিমাও কান্না করে দেয়।

আমি সব হা করে তাকিয়ে দেখছি কিছুই বুঝতে পারছি না। নিলিমার বিয়ে ভাইয়া কাঁদছে কেনো? আর এভাবে জড়িয়েই বা ধরেছে কেনো? তাহলে কি নিলিমা আর ভাইয়া একে অপরকে। হায় খোদা এতো দিন আমি বুঝিনি কেনো? সব কিছু আমার সামনেই হচ্ছিলো আর আমি বুঝতে পারিনি?

নিলিমা ঃ আমি এই বিয়ে করতে পারবো না।
ভাইয়া ঃ আমি তোমাকে ছাড়া বাচবো না।
নিলিমা ঃ সিহাব আমি তোমাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করতে পারবো না। নাহলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
ভাইয়া ঃ প্লিজ নিলিমা তুমি এই কথা বলো না। বাঁচলে দুজন এক সাথে বাঁচবো মরলে এক সাথেই মরবো।
নিলিমা ঃ এখন আমি কি করবো?
ভাইয়া ঃ চলো আমরা দুজন দূরে কোথাও পালিয়ে যাই যেখানে আমাদের কেউ খুঁজে পাবে না।
নিলিমা ঃ চলো পালাই।

আমি ঃ ওয়েট ওয়েট ওয়েট! কোথায় যাচ্ছিস তোরা? আর তোরা দুজন থাকবি কোথায়?
ভাইয়া ঃ অনেক দূরে কোথাও যেখানে আমাদের কেউ খুঁজে পাবে না।
আমি ঃ নিলিমাকে খাওয়াবি কি?
নিলিমা ঃ প্রয়োজন হলে না খেয়ে থাকবো।
আমি ঃ এই যে হিরো হিরোইন এগুলো ডাইলগ শুধু গল্পেই চলে বাস্তবে না। চল আমার সাথে।

আমি ভাইয়াকে আর নিলিমাকে নিচে নিয়ে গেলাম। গিয়ে দেখি আমার আব্বু আম্মু আর নিলিমার আব্বু আম্মু এক সাথে বসে গল্প করছে। আমি সাবার সামনে গিয়ে কিছুক্ষণ দম নিয়ে চোখ বন্ধ করে বলতে শুধু করলাম….

আমি ঃ আব্বু আম্মু আঙ্কেল আন্টি। আপনাদের একটা কথা বলবো সবাই মন দিয়ে শুনবেন। ভাইয়া আর নিলিমা একে অপরকে ভালোবাসে। তারা একে অপরকে ছাড়া বাচবে না। যদি আপনি নিলিমাকে জোর করে বিয়ে দেন তাহলে ভাইয়া নিলিমা দুজনেই সুইসাইড করবে তাদের শোকে পরে আমিও ফিনাইল খাবো তাই বলছি আপনারা ভাইয়া আর নিলিমার সম্পর্ক মেনে নিন।

পড়ুন  Heart Touching Bangla Love Story Tomar Amar Prem Part 1

আমি এক দমে কথাগুলো বলে দম ছেড়ে হাঁপাতে লাগলাম। আব্বু আম্মু আঙ্কেল আন্টি সবাই আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে এক সাথে হেসে উঠলো।

আমি ভাইয়া নিলিমা তিনজনই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।তারা হাসতে হাসতে শেষ। তারপর আম্মু বললো,,,,

আম্মু ঃ নিলিমার বিয়ে কার সাথে?
আমি ঃ কার সাথে আমি কি করে জানবো। নিলিমা ভাইয়াকে ভালোবাসে সে ভাইয়াকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করতে পারবে না।
আঙ্কেল ঃ নিলিমাকে জিজ্ঞেস করো তো ওর বিয়ে কার সাথে?
নিলিমা ঃ আমি জানি না।
আন্টি ঃ তোকে যে ছবিটা দিয়েছিলাম ঐটা দেখেছিস?
নিলিমা ঃ না আমি ফেলে দিছি ছবি।
আম্মু ঃ যদি ছবিটা দেখতা তাহলে বুঝতা তোমার বিয়ে অন্য কারো সাথে না সিহাবের সাথেই হচ্ছে।

এই কথা শুনে আমরা তিন জনেই অবাক। তার মানে নিলিমার বিয়ে ভাইয়ার সাথে হবে। দূর ভাবছিলাম একটু হিরোইন হবো তা আর হলো কই।

নিলিমা আর ভাইয়া তো অনেক খুশি। আমিও অনেক খুশি। আমার কলিজার টুকরা বান্ধবীকে আমার কাছেই রাখতে পারবো।সবাই এক সাথে আড্ডা দিলাম।

ভাইয়া আর নিলিমার বিয়ের আর মাত্র ১৫ দিন বাকি। আমি ভাইয়া নিলিমার অনেক শপিং করলাম। অনেক জায়গায় ঘুরলাম খাওয়া দাওয়া করলাম। ১৫ দিন দেখতে দেখতে চলে গেলো। দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে আসলো।

Click Here For Next :চলবে

Writer :- Sadia Afrin

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top