Golperjogot

Golperjogot

রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 11 – রোমান্টিক লাভ স্টোরি

রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 11 – রোমান্টিক লাভ স্টোরি

Ragi Sir Jokhon Devil Husband

Sadia Afrin { Part 11 }


মা : তুমি রান্না পারো?
আমি : না তবে আপনার থেকে শিখে নেবো।
মা : ঠিক আছে মা তোমাকে আমি নিজের হাতে রান্না শিখাবো।

তারপর আমি মায়ের সাথে টুকটাক কাজ করলাম।

সবাই খাওয়া দাওয়া করলাম। আমি আর রাফি স্যার আমাদের বাসায় যাওয়ার জন্য রেডি হলাম।

আমি তো ঠিক করেছি যদি একবার আমাদের বাসায় যাই তাহলে আর আসবো না। এই ডেভিলটার সাথে থাকা অসম্ভব।

আমি : মা যাই।
মা : যাই না মা বলো আসি।

আমি মাকে জড়িয়ে ধরলাম। এই দুই তিন দিনে মায়ের প্রতি এই বাড়ির প্রতি একটা আলাদা অনুভুতি জন্মে গেছে। মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম। আমি গাড়ির পিছনের সিটে বসেছি। তখনই স্যার গাড়ির দরজা খুলে বললো।

রাফি স্যার : বের হও
আমি : কেনো
রাফি স্যার : আমি বলছি বের হও
আমি : বলবেন তো কেনো বের হবো।
রাফি স্যার : তোমার কি আমাকে ড্রাইভার মনে হয়? তাড়াতাড়ি বের হয়ে সামনে বসে।
আমি : আমি আপনার সাথে বসবো না।

রাফি স্যার আর কিছু না বলে আমাকে গাড়ি থেকে জোর করে কোলে নিয়ে সামনে তার পাশের সিটে বসিয়ে দিলো। তারপর সে এসে ড্রাইভিং সিটে বসলো। গাড়ি চলছে আপন মনে। আমি এখনো স্যারের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। স্যার বিষয়টা লক্ষ্য করে আমার চোখের সামনে হাত নাড়িয়ে বললো,

রাফি স্যার : কি হয়েছে? এভাবে কি দেখছো?

স্যারের কথাতে আমার হুশ ফিরে। আমি সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নেই। একটু লজ্জাও পেয়েছি।

কিছুক্ষণ পর মিষ্টির দোকানের সামনে দাঁড় করায়। প্রায় আধ ঘন্টা পর অনেক ফল আর অনেক মিষ্টি নিয়ে গাড়ির পিছনে রাখে।

আমি : এতোক্ষণ সময় লাগে?
রাফি স্যার : কতোক্ষণ সময় লাগছে?
আমি : প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মিনিট।

রাফি স্যার : মাত্র ৩০ মিনিট লাগছে। আর তোমরা মেয়েরা যদি বাজারে বের হও তাহলে সারাদিনেও তোমাদের বাজার করা শেষ হবে না।

স্যার একটু ভাব নিয়ে সিট বেল্ট লাগিয়ে গাড়ি চালাতে শুরু করলো। আমি বাইরের দিকে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ একটা ফুচকার দোকান সামনে পড়লো। আমি খুব উত্তেজিত হয়ে বললাম,

পড়ুন  Romantic Premer Golpo Bangla Tomar Amar Prem Part 4

আমি : স্যার গাড়ি থামান গাড়ি থামান।
স্যারও তাড়াতাড়ি করে গাড়ি থামালো,

রাফি স্যার : কি হয়েছে।

আমি কিছু না বলে গাড়ি থেকে নেমে সোজা ফুচকার দোকানে চলে গেলাম। ফুচকা ওয়ালা মামাকে বললাম ফুচকা দিতে তারপর আমি খাওয়া শুরু করলাম।

রাফি স্যার গাড়ি সাইট করে আমার কাছে ছুটে আসলো। স্যার আমাকে ফুচকা খেতে দেখে অবাক। আমার নিজের মতো করে ফুচকা খাচ্ছি। স্যার আসতে আসতে আমি দুই প্লেট ফুচকা শেষ করে ফেলেছি।

স্যার আমার এই সব কান্ড দেখে দিলো এক ধমক। আমি ধমক খেয়ে স্যারের দিকে কাঁদো কাঁদো ভাবে তাকিয়ে আছি। স্যার বুঝতে পেরে বললো,

স্যার : তুমি ফুচকা খাবা আমাকে বলবা না। এভাবে হঠাৎ করে গাড়ি থামিয়ে ছুটে আসার কি ছিলো।

আমি : সরি আর হবে না।
স্যার : আচ্ছা ঠিক আছে এবার চলো।
আমি : না
স্যার কেনো?
আমি : ফুচকা খাবো।

স্যার না পারছে সইতে না পারছে কিছু বলতে। স্যার ধপাস করে একটা চেয়ারে বসে পড়লো। আমি কয়েক বার বললাম ফুচকা খাওয়ার জন্য কিন্তু উনি খায় নাই। আমি ফুচকা খেয়ে বিল দিবো কিন্তু পার্সে টাকা নাই।

স্যার মুচকি হাসি দিয়ে ফুচকার বিল দিয়ে গাড়ির দিকে যেতে লাগলো আমিও ওনার পিছন আসছি। তারপর গাড়িতে গিয়ে বসি।

কিছুক্ষণ পরেই গাড়ি আমাদের বাসার সামনে গিয়ে থামে। গাড়ি থেকে নামতেই ভাবি মানে নিলিমা আর আম্মু আসলো। আমি আম্মুকে জড়িয়ে ধরলাম।আম্মূ খুব কান্না করছে আমি ও কান্না করছি। তারপর ভাবিকে জড়িয়ে ধরলাম। রাফি স্যার আম্মুকে সালাম করলো।

রাফি স্যার : ভালো আছেন মা?
মা : আলহামদুলিল্লাহ ভালো। বিয়াইন কেমন আছে?
রাফি স্যার : আলহামদুলিল্লাহ আম্মুও অনেক ভালো আছে।
মা : আচ্ছা ভেতরে আসো তোমার।

ভিতরে গিয়ে সবার সাথে একটু আড্ডা দেই। ভাবি আর আমার কিছু বান্ধবীরা আমাদের সাথে অনেক হাসি ঠাট্টা করছে।

কিছুক্ষণ পর আম্মু বললো আগে ফ্রেশ হয়ে আসতাম তার পর আড্ডা দিতাম। তাই আমি উপরে চলে যাই।

পড়ুন  ভিলেন পর্ব 85 - প্রেমের গল্প | Romantic Premer Golpo

আমি শাড়ি পড়েছিলাম কিন্তু পড়তে পারছিলাম না। তখনই স্যার চলে আসলো। হঠাৎ করে স্যার আসাতে ভয়ে আমার হাত থেকে আঁচল পরে যায়। আমি ভয়ে চিৎকার দিবো তখনই স্যার আমার মুখ চেপে ধরে।

আমি মুখ থেকে স্যারের হাত ছাড়িয়ে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। আমার খুব লজ্জা লাগছে। স্যার আর আসার সময় পেলো না। এখন আমি কিভাবে স্যারের সামনে যাবো?

আমি শাড়ি পরার চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না। কিছুক্ষণ পর স্যার বাথরুম থেকে আমাকে বাইরে নিয়ে আসলো। আমি ভয় পেয়ে যাই। স্যারের দিকে তাকিয়ে দেখি স্যারের চোখ ওড়না দিয়ে বাঁধা। আমি কিছু বলতে যাবো তখনই স্যার বললো,

রাফি স্যার : চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকো। এখনো শাড়ি পড়া শেখো নাই। এতো বড় মেয়ে তাও শাড়ি পড়তে পারে না। নিজে যখন শাড়ি পড়তে পারো না তখন ভাবিকে বললে কি হতো।

আমি চুপ করে আছি আর মুগ্ধ হয়ে স্যারের দিকে তাকিয়ে আছি। স্যার চোখ বাঁধা অবস্থায় খুব সুন্দর করে আমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিলো। এখনো আমি স্যারের দিকে তাকিয়ে আছি। স্যার আমাকে শাড়ি পড়িয়ে একটু দূরে গিয়ে চোখ থেকে বাঁধন খুলে পিছন ফিরে ডেভিল স্মাইল দিলো।

আমার কেনো জানি খুব লজ্জা লাগছে।স্যার ব্যাগ থেকে শার্ট প্যান্ট নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। আমি ব্যাগ থেকে আমার আর স্যারের জামা কাপড় বের করে আলমারিতে তুলে রাখলাম।

আমি নিচে চলে আসলাম। রান্না ঘরে মা আর ভাবি কাজ করছে। আর বাকিরা সবাই চলে গেছে। ভাইয়া অফিসে গেছে। আজকে যেতে চায়নি অফিসে। কারণ তার আদরের বোন আসবে আজকে। কিন্তু একটা জরুরি কাজ চলে আসায় যেতে হয়েছে।

আমার একা একা একদম ভালো লাগছে না। তখন মনে হলো স্যার তো এই সময় কফি খায়। আসলে মা আমাকে সব বলে দিয়েছিলো। স্যার কোন সময় কি করে কি খায় না খায় সব বলে দিয়েছে।

তাই আমি রান্না ঘরে যাই স্যারের কফি বানানোর জন্য। আমাকে রান্না ঘরে দেখে আম্মু বকুনি শুরু করলো। বিয়ের আগে রান্না করা শিখিনি বলে বকাঝকা করছে আর এখান রান্না ঘরে আসছি বলে বকাঝকা করছে।

পড়ুন  প্রেমময় বৃষ্টি – অনুগল্প | Romantic Short Love Story Bangla

আজ কেনো জানি আম্মুর বকুনি খেয়ে খুব ভালো লাগছে। আমি আম্মুকে জড়িয়ে ধরলাম।আম্মুও চুপ হয়ে গেলো। তখন ভাবি বললো,

ভাবি : এখন নিজের মেয়ে চলে এসেছে বলে আমার কোনো আদর নাই। থাকবে কি কবে আমি তো পরের মেয়ে।

আম্মু ভাবিকেও বুকে জড়িয়ে নিলো।

আম্মু : কে বলেছে তুমি পরের মেয়ে। তুমিও আমারই মেয়ে। আমার দুইটা লক্ষী মেয়ে।
ভাবি : তা ননদিনি রান্না ঘরে কি তোর?
আমি : কাজ করতে আসছি ভাবি। আর তুই কি হুম? তুমি বলো তুমি।ননদিনি বলে কথা।
ভাবি : তুই আর ভালো হইলি না।

তারপর আমি স্যারের জন্য কফি বানিয়ে উপরে নিয়ে গেলাম। গিয়ে দেখি স্যার চুল মুছে টাওয়াল খাটের উপর রাখছে। আমি ওনার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।

আমি : এই নিন ধরুন।
রাফি স্যার : তুমি জানলা কেমনে এই সময় আমি কফি খাই?
আমি : মা বলে দিয়েছিলো।
রাফি স্যার : আচ্ছা দেখো তো কফিটাই চিনি হয়েছে কিনা?
আমি : আপনি দেখেন।

রাফি স্যার : আচ্ছা তুমি কি আমার একটা কথাও শুনবে না? শুধু বলছি দেখো কফিতে চিনি ঠিক আছে কি না যদি না হয় তাহলে চিনি দিয়ে নিয়ে আসবা।

Click Here For Next :চলবে

Writer :- Sadia Afrin

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top