Golperjogot

Golperjogot

রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 8 - বাংলা প্রেমের গল্প

রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 8 – বাংলা প্রেমের গল্প

Ragi Sir Jokhon Devil Husband

Sadia Afrin { Part 8 }


সকাল বেলা ঘুমিয়ে ছিলাম। তখন আম্মু এসে বললো আজ আমার বিয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হতে।

আমি আম্মুর কথা কিছুই বুঝলাম না। বিয়ে মানে? হঠাৎ করে না জানিয়ে বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে? আর কার সাথে বিয়ে হচ্ছে তাও তো জানি না।

আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে নামতেই দেখি বাসায় লাইটিং করা হচ্ছে আর চারো পাশে মেহমান মানে আমাদের আত্মীয়স্বজন। সবাই নিজেদের কাজে বিজি। আমি অনেক খুঁজে নিলিমাকে পেলাম।

আমি : ঐ এইসব কি হচ্ছে?
নিলিমা : কেনো তুই জানিস না? আজ আমার কিউট ননদের বিয়ে।

আমি : মানে কি না জানিয়ে হঠাৎ করে বিয়ে এটা কেমন কথা? আর তুই তো জানিস আমি এই বিয়ে করতে পারবো না। আমার মনে শুধু একজনই আছে আর সেটা রাফি স্যার।

নিলিমা : আমি কিছু জানি না তুই রেডি হ যা।
আমি : নিলিমা শেষ পর্যন্ত তুইও?
নিলিমা : আমরা তোর জন্য যা করছি সব তোর ভালোর জন্যই করছি।
আমি : এই বিয়ে তে আমার কোনো ভালো নাই। আমি এই বিয়ে করতে পারবো না ব্যাস।
মা : কি বলছিস তুই?
আমি : মা!

মা : এতো দিন তোর সব কথা শুনেছি। আজ আমার কথাই শেষ কথা। তোকে বিয়ে করতে হবে মানে হবেই। আমার কসম রইলো।

আমি : মা,

নিলিমা : আমরা তোর কখনো খারাপ চাইবো না। তুই একদম চিন্তা করিস না। যা হচ্ছে ভালোর জন্যই হচ্ছে। তুই উপরে যা একটু পর পার্লারের লোকেরা আসবে।

আমি রাগ দেখিয়ে সেখান থেকে চলে আসলাম। কিছুক্ষণ পর পার্লার থেকে মহিলারা আসলো। যদিও সাজার একদম ইচ্ছে নাই তবুও নিলিমার কথায় সাজতে হইছে তবে মুখে মেকআপ দেইনি। হালকা সাজ দিয়ে ঘরেই বসে আছি। তখন সবাই আসলো আমাকে নিতে। আমাকে বড় একটা পর্দার আড়ালে বসিয়ে দিলো।

অপর প্রান্তে তার সাথে আমার বিয়ে হবে মনে হয় সে বসে আছে। তখনই কাজি আসলো। তিনি বিয়ে পড়ানো শুরু করে দিলো। তিনি যখন আমাকে কবুল বলতে বললো তখন কেনো জানি খুব কষ্ট হচ্ছিলো। মনে হচ্ছিলো এই একটা শব্দের জন্য আমি আমার পরিবার থেকে দুরে সরে যাবো।

আমার সবার কথা মনে পড়ছে। মায়ের বকাবকি করা, ভাইয়ার সাথে দুষ্টুমি করা, নিলিমার সাথে গল্প করা, কাজিনদের সাথে মজা করা বান্ধবীদের সাথে মজা করা সব কিছু আমার চোখে ভাসছে। সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে রাফি স্যারের কথা।।

পড়ুন  লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ১২ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

তখন আবার কাজি সাহেব বললো কবুল বলতে। নিলিমা আমার হাত ধরে বললো। কবুল বলতে। আমি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর কবুল বলে চোখের পানি ছেড়ে দিলাম।

আমার খুব কান্না পাচ্ছে। আজ থেকে এই বাড়ি আমার পর হয়ে গেলো। আর কোনোদিন ভাইয়ার সাথে ঝগড়া করে বলতে পারবো না। আম্মু তোকে ড্রেন থেকে কুড়িয়ে আনছে। আমি আম্মুর নিজের মেয়ে। এই বাড়ি আমার। প্রতিদিন সকালে আম্মুর বকা খেয়ে ঘুম থেকে উঠতে হবে না। নিলিমার সাথেও আর দুষ্টুমি করা হবে না।

আমার চোখের জল বাঁধ মানছে না। খুব কষ্ট হচ্ছে। অনেক কান্না পাচ্ছে। বিদায়ের সময় আমি ভাইয়া অনেক কান্না করেছে। আম্মু তো সেন্সলেস হয়ে গেছিলো কান্না করতে করতে। সবাইকে ছেড়ে আসতে খুব কষ্ট হয়েছে। আমাকে এই বাড়িতে এনে মানে যার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে তার বাড়িতে এনে একটা রুমে এনে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘরটা খুব সুন্দর করে সাজানো।

যার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে তাকে এখনো আমি দেখিনি। তার নাম কি সেটাও জানি না। সব কিছু এতো তাড়াতাড়ি হয়ে গেলো যে আমি বুঝতেই পারছি না কি করবো। কিন্তু আমি কিছুতেই যার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে তাকে মেনে নিতে পারবো না। ওনি যদি জোর করে ওনার অধিকার আদায় করে? না না আমি ওনাকে আমার স্বামী হিসেবে মানি না সো আমার উপর অধিকার ফলানোর কোনো রাইট নাই ওনার।

হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজে মনটা কেমন কেঁপে উঠলো। কেনো জানি খুব ভয় হচ্ছে। ওনি ধীরে ধীরে আমার কাছেই আসছে। আমি ঘোমটাটা আরো টেনে নিলাম।সে আস্তে আস্তে আমার সামনে এসে বসলো। আমার ঘোমটা ধরতে আমি চোখ বন্ধ করে ফেলি।

অনেকক্ষণ পর ও যখন কোনো আওয়াজ পেলাম না তখন চোখ খুলে তাকালাম। আমি চোখ খুলে তো অবাক। আমি নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার সামনে রাফি স্যার অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি হন্তদন্ত হয়ে খাট থেকে নেমে পড়ি।

আমি : একি আপনি এখানে।

আমার আওয়াজে স্যারের হুশ ফিরলো।

রাফি স্যার : হে আমি। চিনতে পারছো তাহলে?
আমি : আপনি এখানে কেনো? ওনি কোথায়?

রাফি স্যার : কে তোমার স্বামী? আমি তো তাকে মেরে বালি চাপা দিয়ে দিয়েছে। এখন তোমার সাথে আমি বাসর করবো।(ডেভিল স্মাইল দিয়ে)

পড়ুন  মুখোশ সিজন ২ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব 2 | মোনা হোসাইন

আমি : আমি মজা করার মুডে একদম নেই। ওনি কোথায় আছে বলেন।
রাফি স্যার : কেনো আমাকে দিয়ে তোমার হবে না? আরো দরকার তোমার?

রাফি স্যারের কথা শুনে খুব রাগ হলো। দিলাম কসিয়ে এক চড়। রাফি স্যার রেগে আগুন। আমার হাত পিছনে নিয়ে মুচড়ে ধরে বললো,

রাফি স্যার : তোমার সাহস কিভাবে হয় আমাকে চড় মারার?
আমি : আপনার মতো দু চারটা চরিত্রহীন লম্পটকে চড় মারার সাহস আমার আছে।

রাফি স্যার এবার রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে আমাকে সজোরে একটা চড় মারলো। আমি তাল সামলাতে না পেরে ফ্লোরে পড়ে যাই।

রাফি স্যার : আজ থেকে তোমার জীবনের প্রত্যেকটা সময় প্রত্যেকটা মূহুর্ত এই চরিত্রহীন লম্পটের সাথেই কাটাতে হবে। আর এই চরিত্রহীন লম্পটের সাথেই সারাজীবন থাকতে হবে।

আমি : মানে?

রাফি স্যার : মানেটা খুব পরিষ্কার। তোমার ওনিটাই আমি মানে আমার সাথেই তোমার বিয়ে হয়েছে। তোমার বাসার সবাইকে না করেছি আমার কথা বলতে। এখন তোমার উপর আমার পুরো অধিকার আছে।

আমি বুঝতে পারছি না আমি খুশি হবো নাকি কান্না করবো। একদিকে এটা ভেবে কান্না পাচ্ছে যে আমার স্বামী একটা খুব খারাপ মানুষ যে একটা মেয়ের ইজ্জতের উপর হাত দেয়। আবার এটা ভেবে খুশি লাগছে যে আমার ভালোবাসার মানুষটাই আমার স্বামী হয়েছে।

আমি নিজেকে সামলে নিয়ে ফ্লোর থেকে উঠে ওনার সামনে দাঁড়িয়ে বললাম।

আমি : আমি আপনাকে আমার স্বামী হিসেবে মানি না। আপনার মতো চরিত্রহীন…….

বলার আগের স্যার আবারো আমাকে একটা চড় মারলো আমি সোজা খাটে গিয়ে পড়লাম।

রাফি স্যার : আর একবার যদি আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলো তোমাকে আমি খুন করে ফেলবো।

স্যারের চড়টা খুব জোরেই লাগলো। আমি গালে হাত দিয়ে কাঁদো কাঁদো মুখ করে বসে আছি। স্যার আমার সামনেই পাঞ্জাবি খুলে ফেললো। আমি দিলাম এক চিৎকার। স্যার আমার মুখ চেপে ধরলো।

রাফি স্যার : আরে আরে কি করছো?

আমি মুখ থেকে স্যারের হাত সরিয়ে অন্যদিকে ফিরে বললাম,,,

আমি : আগে তো জানতাম শুধু চরিত্রহীন এখন তো দেখছি আপনি নির্লজ্জ ও বটে।
রাফি স্যার : মানে ?
আমি : আপনার লজ্জা করে না এভাবে একটা মেয়ের সামনে পাঞ্জাবি খুলে ফেলতে?

রাফি স্যার জোরে হেসে উঠলো। তারপর বলতে লাগলো।

রাফি স্যার : আমি কি মেয়ে যে কারো সামনে পাঞ্জাবি খুলতে লজ্জা পাবো?
আমি : আপনি আসলেই একটা নির্লজ্জ।
রাফি স্যার : নির্লজ্জের দেখছো কি এখন দেখবা।
আমি : মানে?
রাফি স্যার : মানেটা আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি।

পড়ুন  মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ৭ | মোনা হোসাইন

বলেই এগোতে শুরু করলো,

আমি : একদম আমার কাছে আসবেন না বলে দিলাম। নইলে,,,
রাফি স্যার : নইলে কি?(এগোতে এগোতে)

আমি পাশে টেবিলে রাখা ফলের থালা থেকে ফল কাটার ছুরি নিয়ে বললাম,,,

আমি : নইলে এইটা দিয়ে আপনার পেট ফুটো করে দিবো।

রাফি স্যার আবারো হাসতে হাসতে বলল…..

রাফি স্যার : এই ফল কাটার ছুরি দিয়ে তুমি আমার পেট ফুটো করবা? হাহাহা তোমার মতো গাদা একটাও দেখিনি আমি।

আমি : আমি গাদা না আমি খুব বুদ্ধিমতি।
রাফি স্যার : হে তা তো দেখতেই পাচ্ছি। (আবার এগোতে শুরু করলো)
আমি : দেখুন আমি কিন্তু চিৎকার করবো।
রাফি স্যার : করো চিৎকার।

আমি পিছাতে পিছাতে খাটের সাথে লেগে পরে যাচ্ছিলাম তাই রাফি স্যারকে ধরি কিন্তু রাফি স্যার আমাকে সামলাতে না পেরে সোজা আমার উপর পড়ে যায়।

রাফি স্যার আমাকে অপলক দৃষ্টিতে দেখছে আমি ও স্যারের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। আমি যেনো কোথায় হারিয়ে গেছি। রাফি স্যারের ঠোঁট দুটো যেনো আমাকে কাছে ডাকছে। স্যার তার ঠোঁট দুটো আমার দিকেই আনছে।স্যারের নিঃশ্বাস আমার মুখে পড়ছে। যা আমাকে আরো দূর্বল করে দিচ্ছে।‌

রাফি স্যার আমাকে কিস করতে যাবে তখনি কারেন্ট চলে গেলো। আমার আর স্যারের দুজনেরই হুশ ফিরলো। স্যার আমার থেকে দুরে সরে গেলো। আমি খাট থেকে নেমে গেলাম। দুই জন দুই দিকে তাকিয়ে আছি।

রাফি স্যার : সরি আমি,
আমি : ইটস্ ওকে।
রাফি : এমনিতেও তোমার প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নাই।(একটু ভাব নিয়ে)
আমি : আপনার প্রতিও আমার কোনো ইন্টারেস্ট নাই।যত্তোসব।

আমি গিয়ে বালিশ নিয়ে খাটের এক সাইটে শুয়ে পড়লাম। তখনই কারেন্ট আসলো।

আমি : লাইট অফ করেন।
রাফি স্যার : আমি কেনো লাইট অফ করবো?
আমি : তাহলে থাক জ্বালানো।গুড নাইট।

রাফি স্যার আর কি করবে বেচারা আর উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে নিজেই লাইট অফ করে দিলো। তারপর খাটের অপর প্রান্তে শুয়ে পড়লো।

অনেক সকালে ঘুম ভেঙে গেলো। ঘুম ভাঙার পর আমি যা দেখলাম তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।

Click Here For Next :চলবে

Writer :- Sadia Afrin

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top