স্কুল জীবনের প্রেম
M.T Minhaz ( Part 05 )
আমিঃ আমাদের পাশের এলাকায় তোর বাসা তাহলে।
সাজিদঃ বলিস কি।
আমিঃ কেন তুই জানিস না।
সাজিদঃ এত কিছু জানিনা, কারন সেই ক্লাস ফাইভ থেকে দুলাভাইয়ের বাড়ি থেকে পড়াশুনা করছি তো তাই, বাড়িতে বেশী যেতাম না।
আমিঃ ওহ, তোর দুলাভাইয়ের বাসা কোথায়।
সাজিদঃ এখান থেকে হেঁটে যেতে ১০ মিনিট লাগে।
আমিঃ আচ্ছা।
সাজিদঃ হঠাৎ করে এখানে ভর্তি হওয়ার কারন টা কিরে?
আমিঃ এখন বলতে পারবোনা, পরে একসময় বলবো।
সাজিদঃ ওকে
Bangla Romantic Golpo
কোথায় থেকে মমিন এসে বললো….
মমিনঃ কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
আমিঃ কিছু না।
মমিনঃ শুনলাম তুই যে স্কুল থেকে জে.এস.সি পরিক্ষা দিয়েছিস সেই স্কুল থেকে একজন এই পুরো থানার প্রথম হয়েছে।
আমিঃ হুম
সাজিদঃ তার নাম কি।
আমিঃ একটু পর জানতে পারবি।
মমিনঃ এখন বল না।
আমিঃ থাম তোরা, স্যার আসুক আগে।
মমিনঃ থাক বলতে হবে না।
আমিঃ
মমিনঃ চুপ থাক, স্যার আসছে এখন কথা বলিস না।
আমিঃ ওকে।
তারপর স্যার এসে বললো…….
স্যারঃ মিনহাজ এদিকে এসো।
আমিঃ হুম, স্যার।
তারপর সামনে গেলাম, যেতেই স্যার আবারো বললো……
স্যারঃ এই হচ্ছে আজ থেকে তোমাদের নতুন বন্ধু। কয়েকদিন আগে তোমাদের সবাইকে বলেছিলাম যে এই থানার সবচেয়ে প্রথম হয়েছে জে.এস.সি পরিক্ষাই শুধু তাই নয় ১০ বছরের সম্মান টা আবার ফিরে দিয়েছে সেই স্কুলের, এই সেই মিনহাজ,,,
সবাই আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে,
স্যারঃ এবার সবাই পড়ার দিকে নজর দেও, মিনহাজ জায়গাই গিয়ে বসো।
আমিঃ হুম।
তারপর জায়গাই বসে পরলাম তবুও দেখি সবার নজর আমার দিকে। আমি সেদিকে নজর না দিয়ে পড়ায় নজর দিলাম। দেখতে দেখতে সব ক্লাস শেষ হয়ে গেলো। তারপর আমি মমিন, সাজিদ বাহিরে আসলাম। তারপর সাজিদ বললো…..
সাজিদঃ সকালে আমাদের সারপ্রাইজ দিবি বলে আমাদের বললি না আগে।
আমিঃ হুম।
মমিনঃ ভালোই করেছিস আজকে এমনেই দেরি হয়ে যাচ্ছে আমি যাই, কাল দেখা হচ্ছে তাহলে।
আমিঃ হুম, ভালো থাকিস।
তারপর মমিন চলে গেলো। আমি আর সাজিদ বাসার দিকে রওনা দিলাম, একটু সামনে যেতেই সাজিদ বললো…..
সাজিদঃ দোস্ত এটাই আমাদের দুলাভাইয়ের বাসা,
আমিঃ এটাই তাহলে।
সাজিদঃ হুম,
আমিঃ তাহলে যায়, কাল দেখা হচ্ছে।
সাজিদঃ ভালো করে যাস। আর তোর নাম্বার টা দিয়ে যা।
তারপর নাম্বার টা দিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম সাইকেল দিয়ে। ৩০ মিনিট পর বাসাই এসে পরলাম, গোসল করে খাবার টেবিলে বসলাম, তারপর আম্মু বললো…..
আম্মুঃ আজ স্কুল কেমন কাটলো।
আমিঃ ভালোই, দিনশেষে বন্ধু ও পেয়ে গেলাম।
হঠাৎ করে দরজার পাশ থেকে বললো…… এখন তো আমাকে ভুলে যাবি।
দেখলাম হিমেল এই কথাটা বললো……
আমিঃ তোকে কি করে ভুলে থাকতে পারি।
হিমেলঃ এসব কথা বাদ দিয়ে তারাতারি খাবার খেয়ে নে।।
আমিঃ হুম
তারপর খাবার খেয়ে বেরিয়ে পরলাম আড্ডা খানাই। আড্ডা দিয়ে সন্ধ্যায় বাসাই এসে পড়াশুনা করে ১০ টা বেজে গেলো তারপর ঘুমিয়ে পরলাম সকালে উঠে দেখলাম, কে যেন ফোন দিয়েছে, দেখি আননোন নাম্বার, ধরতেই বললো…….
ওই পাশ থেকেঃ- স্কুলে আসবি না নাকি আজ।
কন্ঠ শুনে চিনে ফেললাম,
আমিঃ ৪০ মিনিট পর,
সাজিদঃ এত দেরি করে।
আমিঃ কি করবো অনেক দূরে তো তাই।
সাজিদঃ আচ্চা সমস্যা না, আয়।
তারপর ফোন কেটে দিয়ে তারাতারি করে রেডি হয়ে খাবার খেতে খেতে ১০-১৫ মিনিট পাড় হয়ে গেলো, তারপর স্কুলের দিকে রওনা দিলাম।
২৫ মিনিট পর স্কুলে এসে দেখলাম মমিন আর সাজিদ আরো কিছু ছেলে বসে আছে, আমি যেতেই সাজিদ বললো……
সাজিদঃ শেষ পর্যন্ত এসেছিস তাহলে।
আমিঃ না এসে আর পারি।
মমিনঃ তাদের সাথে পরিচয় হয়ে নে। এই হচ্ছে সাকিব,আলমগীর,তাওহিদ ,সিয়াম, নাহিদ,সাব্বির।
পরিচয় হয়ে গেলাম,
আমিঃ বেল বেজে গেছে চল ক্লাসে।
সবাইঃ হুম।।
তারপর ক্লাসে চলে আসলাম, সব ক্লাস শেষ করে বাসাই এসে পরলাম, সারাদিন এবাবে কেটে গেলো, রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।
পরেরদিন সকালে
ব্রেকফাস্ট করে স্কুলের দিকে রওনা দিলাম, অবশেষে স্কুলে চলে আসলাম, দেখলাম আজ কেও আসিনি, তাই একা একা বসে আছি, কিছুক্ষন পর স্কুল গেট দিয়ে একটা মেয়ে ঢুকলো, মেয়েটিও দেখতে মাশাল্লাহ। কিন্তু মায়াই পড়া যাবে না।
আমি সেদিকে আর খেয়াল না দিয়ে অন্য দিকে খেয়াল করলাম, মেয়েটি ক্লাসে চলে গেলো।
অতিতের কথা গুলো মনে পরতেই মন টা খারাপ হয়ে গেলো, দীপ্তির কথা ভাবতেই চোখটা পানিতে পরিণত হলো।
হঠাৎ করে পিছন থেকে কে যেন আমার পিঠে হাত রাখলো, তাকিয়ে দেখি সেই মেয়েটি, যাকে একটু আগে গেট দিয়ে প্রবেশ করতে দেখলাম। মেয়েটিকে দেখে চোখের জল মুছে ফেললাম।
তারপর মেয়েটি বললো…..
মেয়েঃ আপনার চোখে জল কেন?
আমিঃ কোথায় জল, (একটু হেসে দিয়ে)
মেয়েঃ তাহলে আমাকে দেখে চোখ মুছে ফেললেন কেন?
আমিঃ সেসব উত্তর আপনাকে দিতে পারবোনা।
মেয়েঃ আচ্চা থাক তাহলে দেওয়া লাগবে না। আমরা কি বন্ধু হতে পারি।
আমিঃ না,,
মেয়েঃ কেন?
আমিঃ বন্ধু না হয়ে সোজা বউ হয়ে যান। ( মন টা ভালো করার জন্য একটু মজা করলাম)
মেয়েঃ তবে রে
আমাকে আর পাই কে, দিলাম এক দৌড়। দৌড় দিতে দিতে হঠাৎ করে সাকিবের সাথে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পরে গেলাম, এটা সাকিব দেখে হাসতে লাগলো তারপর আমি বললাম….
আমিঃ ভাইরে আমাকে তুল,
সাকিবঃ এবাবে দৌড় দিয়েছিলি কেন?
আমিঃ ওই মেয়েটির কারনে ( হাত দিয়ে ইশারা করে দেখিয়ে দিলাম)
সাকিবঃ শেষ পর্যন্ত ওই পিচ্ছি মেয়ের কাছ থেকে দৌড়ানি খেলি।
আমিঃ দৌড় না দিলে তো আজ আমি শেষ হয়েই যেতাম।
সাকিবঃ কেন?
আমিঃ তাকে মজা করে বউ হতে বলেছিলাম তার জন্য এখন আমার এই অবস্থা।
সাকিবঃ বলিস কি ( বলেই হাসতে লাগলো)
আমিঃ এবার থাম, সাজিদ এসেছে নাকি।
সাকিবঃ না
আমিঃ ওহ
সাকিবঃ যত তারাতারি পারিস ওই পিচ্ছি মেয়ের কাছ থেকে মাফ চেয়ে নিস।
আমিঃ হুম, আজ প্রথম দেখলাম তাকে কিন্তু প্রথমেই মজা করাটা ঠিক হয় নি।
সাকিবঃ হুম।
আমিঃ ওর নাম জানিস নাকি, আর কোন ক্লাসে পড়ে।
সাকিবঃ ওর নাম মিম, এবার ক্লাস 6 পড়ে।
আমিঃ কিহ, ওকে দেখে তো বুঝা যাই না যে ক্লাস 6 পড়ে, মনে করেছিলাম আমাদের সাথেই পড়ে, কেন না মিমকে দেখেই বুঝা যাই।
সাকিবঃ হুম, ওই দেখ সাজিদ এসেছে
তারপর সাজিদ এসে বললো….
সাজিদঃ কিরে কখন আসলি।
আমিঃ এইতো কিছুক্ষন আগে।
সাজিদঃ মমিন এসেছে নাকি
আমিঃ না।
সাজিদঃ চল ক্লাসে, একটু পর মমিন আসবে মনে হয়।
আমিঃ হুম চল।
তারপর আমি,সাকিব,সাজিদ ক্লাসে এসে পরলাম। এসে রুপালি (আমার ক্লাসমেন্ট) আমাদের সামনে পরলো,
রুপালিঃ কিরে আজ দেরি করে কেন?
সাকিবঃ আর বলিস না, মিনহাজ ক্লাস 6 পড়ুয়া মেয়ের দৌড়ানি খেয়ে এসেছে তাই (হাসতে হাসতে)
আমিঃ ভাইরে থাম এবার।
রুপালিঃ কেন থামবে,সাকিব বল মেয়েটা কে?
আমিঃ রুপালি তোমার এসব না জানলেও চলবে।
রুপালিঃ বেশী বাড়াবাড়ি করলে ক্লাস থেকে বের করে দিবো একেবাড়ে।
আমিঃ হায় আল্লাহ এই পেত্নি বলে কি। ( বিরবির করে)
রুপালিঃ কি বললি, আমি পেত্নি। (রেগে গিয়ে)
সাজিদঃ তোরা কি শুরু করলি, এবার থাম।
রুপালিঃ আমাকে পেত্নি বললো কেন?
সাজিদঃ ওটা তো সিরিয়াস ভাবে বলে নাই, বন্ধু তাই মজা করে বলতেই পারে।
রুপালিঃ তোমরা কি ভেবেছো আমি তার কথাটা সিরিয়াস ভাবে নিলাম নাকি, আরে না আমিও একটু মজা করলাম।
আমিঃ হায় আল্লাহ বাঁচলাম, আর একটুর জন্য না হয় হার্ট এটাক করে মারা যেতাম।
রুপালিঃ এসব বাদ দেও, মেয়েটির নাম কি।
আমিঃ মিম।
রুপালিঃ পছন্দ হয়েছে নাকি।
আমিঃ সেরকম কিছু না।
রুপালিঃ পছন্দ হলে বলবে, আমি তোমাদের দুইজনকে সেটিং করিয়ে দিবো।
আমিঃ আমার দ্বারা প্রেম সম্ভব না ( অন্য দিকে তাকিয়ে বললাম)
সাজিদঃ কেন?
আমিঃ পরে এক সময় বলবো।
রুপালিঃ প্রেম না করার কারন টা কি অবশ্যই বলতে হবে।
সাকিবঃ না বললে তার বাপ বলবে।
আমিঃ শালা তোদের সাথে কথা বলাটাই ভুল হয়েছে, দুর আমি গেলাম,
এই বলে বেঞ্চে বসে পরলাম, একটু পর মমিন আসলো, এসে আড্ডা দিতে দিতে কখন যে বেল বেজে উঠলো খেয়াল করি নাই। তারপর স্যার আসলো এক এক ক্লাস শেষ করে সব ক্লাস শেষ হলো, তারপর তাদের বিদায় জানিয়ে বাসাই চলে আসলাম। গোসল করে, খাবার খেয়ে বাহিরে হিমেলের সাথে ঘুরতে গেলাম, সন্ধায় বাসাই এসে পড়তে বসলাম, রাতে ডিনার করে ঘুমিয়ে পরলাম
সকালে উঠে নামাজ পরে বাহিরে হাটতে বের হলাম, এভাবে ৮ টা বেজে গেলো। বাসাই এসে ব্রেকফাস্ট করে স্কুলে রওনা দিলাম, স্কুলে এসেই মিম আমার সামনে পরলো…………
Click Here For Next Part – চলবে
Writer – M.T Minhaz