Golperjogot

Golperjogot

School Life Bangla Romantic Story School Jiboner Prem Part 3

স্কুল জীবনের প্রেম

M.T Minhaz ( Part 03 )

হিমেলের মুখে দীপ্তি নাম টা শুনেই মন টা খারাপ হয়ে গেলো, ও তো আমাকে ভালোবাসে না তাহলে রক্ত দিলো কেন। তারপর হিমেলকে জিজ্ঞেস করলাম………

আমিঃ দীপ্তি তো আমাকে ভালোবাসে না, তাহলে কেন আমাকে রক্ত দিয়েছে।
হিমেলঃ সেটা আমিও জানিনা, তুই তার কাছ থেকে জেনে নিস।
আমিঃ এটা জানার দরকার নেই।
হিমেলঃ তুই যা ভালো মনে করিস। তুই শুয়ে থাক আমি এখন আসি।
আমিঃ যা তাহলে।

তারপর হিমেল চলে গেলো। আমি হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি M+D নাম টা ভালো করে বুঝা যাচ্ছে। দূর থেকে যে কেও দেখে বুঝে ফেলতে পারবে। এসব চিন্তা বাদ দিয়ে শুয়ে থাকলাম।

Bangla Romantic Story

৫ দিন পর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলাম, আজ কলেজে যাচ্ছি, আমি আর হিমেল। একটা রিকশা নিয়ে চলে গেলাম কলেজে। গেট দিয়ে ঢুকে ক্লাসে যেতে লাগলাম, হঠাৎ করে দীপ্তি আমার সামনে এসে দাড়ালো তারপর বললো……

দীপ্তিঃ হিমেল তুই একটু এখান থেকে যা, তার সাথে কথা আছে।
হিমেলঃ ওকে,

তারপর হিমেল চলে গেলো আমি বললাম…

আমিঃ কি বলবে বলো।
দীপ্তিঃ তুমি এমন পাগলামি কেন করতে গেলে। হাতের এসব কি লিখেছো।
আমিঃ যে সত্যি কারে ভালোবাসা বুঝে, সে এমনি পাগলামি করে, আমি তার ব্যতিক্রম নয়।
দীপ্তিঃ আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারবোনা কারন আমি হাসিব কে ভালোবাসি ৬ মাস ধরে।
আমিঃ কিহহহহহহহ
দীপ্তিঃ হুম।
আমিঃ আমাকে ভালোবাসো না তাহলে রক্ত দিয়ে কেন বাঁচালে।

দীপ্তিঃ আমার কারনে তোমার এই অবস্থা হয়েছে, তোমার অবস্থার জন্য আমিই দায়ী, এখন যদি রক্ত দিয়ে না বাঁচায় তাহলে নিজেকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবোনা।

আমিঃ যাক ভালো করেছো, তাহলে আমি যাই।

তারপর সেখান থেকে চলে আসলাম। দীপ্তি যদি আমাকে আগে বলে দিতো যে হাসিবকে ভালোবাসে তাহলে আজ এত কষ্ট পেতে হতো না।

ক্লাসে এসে সোজা বেঞ্চে বসে পরলাম, এক এক ক্লাস শেষ করে বাসাই চলে আসলাম, এখন দীপ্তিকে কিছুতেই ভুলতে পারতেছিনা, সবসময় তার চেহারাই আমার চোখের সামনে ভেসে উঠে।

আজ ৫ দিন স্কুলে যাই না, সারাদিন ঘরে বসেই দিন কেটে যায়। আর ভাবছি এখন এভাবে বসে থাকলে তো চলবে না, সামনে জে.এস.সি পরিক্ষা ৷ তাই আগের মতো পড়াশুনা করে চালিয়ে যেতে হবে। আর মাত্র কয়েক মাস বাকি পরিক্ষার

Bangla Premer Golpo

পরেরদিন সকালে হিমেলকে বললাম আমাকে বাসা থেকে নিয়ে যেতে, কিছুক্ষন পর হিমেল আসলো, আমরা এক সাথে মিলে স্কুলে গেলাম, গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখলাম দীপ্তি হাসিবের হাত ধরে বসে আছে, এই দৃশ্যটা দেখে মনে হয় বুকের ভিতরে হাতুরি দিয়ে কে যেন পিটাচ্ছে। তারপর হিমেল বললো……..

হিমেলঃ সেদিকে খেয়াল না করে চল।
আমিঃ হুম।

তারপর ক্লাসে চলে আসলাম। আমি আর হিমেল, রিফাত বসে বসে আড্ডা দিচ্ছি, আমার কিছুতেই আড্ডাই মনোযোগ বসছে না। হঠাৎ করে রিফাত বললো…..

রিফাতঃ তোর মনের অবস্থা বুঝতে পারছি, একটা কথা শুনে রাখ যে তোকে ভালোবাসে না তার জন্য কেঁদে লাভ কি। তুই আবার নতুন করে জীবন সাজানোর চেষ্টা কর।

আমিঃ নিয়তি যদি চায় তাহলে সম্ভব হবে।
হিমেলঃ দীপ্তিকে ও দেখিয়ে দিতে হবে যে তাকে ছাড়া তুই ও চলতে পারিস।
আমিঃ তাই করতে হবে।
হিমেলঃ এই তো গুড।
রিফাতঃ এখন চুপ থাক, স্যার আসছে।

দেখলাম দীপ্তি আর হাসিব ও আসছে, তারা তাদের জায়গাই বসে পরলো, আমি সেদিকে খেয়াল না করে সামনে তাকিয়ে থাকলাম,

আরো কিছুদিন কেটে গেলো, একদিন হাসিবকে বললাম………

আমিঃ দোস্ত, তুই আমার একটা কথা রাখতে পারবি।
হাসিবঃ হুম বল।
আমিঃ তুই দীপ্তিকে কোনদিন কষ্ট পেতে দিস না, মেয়েটা তোকে অনেক ভালোবাসে।

হাসিবঃ এসব কি বলছিস, তাকে আমি নিজের চেয়ে বেশী ভালোবাসি তাহলে তাকে কিভাবে কষ্ট দিই। দোস্ত সরি তোকে কষ্ট দেওয়ার জন্য, আসলে আমি জানতাম না তুই দীপ্তিকে সেই ৩ বছর ধরে ভালোবাসিস।

আমিঃ এসব বাদ দে, আমার কথা টা রাখিস।
হাসিবঃ তুই একদম টেনশন করবি না,
আমিঃ হুম, তুই থাক আমি যাই,,
হাসিবঃ ওকে, দোস্ত মন খারাপ করে থাকবি না।
আমিঃ ওকে।

তারপর চলে আসতে লাগলাম হঠাৎ করে রিফাত আর হিমেল ডাক দিয়ে বললো দাঁড়াতে তাই আমি দাঁড়িয়ে গেলাম, হিমেল এসে বললো…….

School Life Love Story

হিমেলঃ তুই হাসিবকে এসব কথা নাও বলতে পারতি।

আমিঃ সমস্যা কোথায় বললে, সেও তো আমাদের বন্ধু। আর হ্যাঁ ভালোবাসার মানুষ টাকে শুধু কাছে থেকে থেকে নয়, দুর থেকেও ভালোবাসা যাই।

রিফাতঃ তাহলে এতদিনে বুঝলি
আমিঃ বাদ দে চল এবার।

তারপর আড্ডা খানায় চলে আসলাম, কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে বাসা এসে পরলাম

এভাবে কেটে গেলো তিন মাস। কালকে পরিক্ষা, দেখতে দেখতে পরিক্ষা ও শেষ, ভালো পরিক্ষাই দিয়েছি এবার রেজাল্টের অপেক্ষা আছি ৷ এখন স্কুল বন্ধ তাই বাসায় বসে থাকি সারাদিন, যাক ভালোই হয়েছে, এখন আর দীপ্তির সাথে দেখাও হবে না, আগের স্মৃতি মনেই পরবে না বেশী একটা।

আজ ২ মাস পর,

আমি স্কুলে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি, হিমেল এসেছে এখন, ব্রেকফাস্ট করে স্কুলে রওনা দিলাম, রেজাল্ট দিবে তাই স্কুলে যাচ্ছি। স্কুলে এসে দেখলাম দীপ্তি আর হাসিব তারা গল্প করছে, বাহ তাদের প্রেম আগের মতোই আছে, যাক ভালো হয়েছে কিছুটা কষ্ট ও পেয়েছি আবার কিছুটা খুশিও হয়েছে।

চোখ দিয়ে পানি পরছে, চোখের পানি টা মুছে ফেলে অফিস কক্ষের দিকে এগুতে লাগলাম হঠাৎ করে দীপ্তির ডাক…..

দীপ্তিঃ মিনহাজ দাড়াও,

আমিও দাড়িয়ে গেলাম, কাছে এসে বললো…..

দীপ্তিঃ কেমন আছো।
আমিঃ আগের চেয়ে ভালো আছি।
দীপ্তিঃ তুমি বলবেনা আমি কেমন আছি।
আমিঃ ওহ, সরি ভুলে গেছি, কেমন আছো।

দীপ্তিঃ ভালো, সবসময় মন খারাপ করে থেকো না, দেখবে আমার চেয়ে ভালো একটা মেয়ে পাবে যে তোমাকে সারা জীবন ভালবাসবে।

আমিঃ এসব বাদ দেও, এবার চলো অফিস কক্ষে যাই
দীপ্তিঃ হুম চল,,,
আমিঃ তা হাসিব কেমন আছিস।
হাসিবঃ এতক্ষনে আমার কথা মনে পরলো।
আমিঃ আচ্ছা সরি আর এমন হবে না,
হাসিবঃ আচ্ছা, ভালো আছি তুই কেমন আছিস।
আমিঃ ভালো, চল তাহলে।

তারপর অফিস কক্ষে চলে আসলাম, কিছুক্ষন পর স্যার মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বললো………

স্যারঃ আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভালো আছেন, আমরা চাচ্ছি বেশী দেরি না করে রেজাল্ট তারাতারি ঘোষনা করবো এবার রেজাল্টে আসা যাক, ৩য় হয়েছে হিমেল,

সবাই হাত তালি দিতে শুরু করলো,

তারপর স্যার বললো…..২য় হয়েছে দীপ্তি।

আবারো হাত তালি দিলো সবাই।

এবার আমার একটা অজানা ভয় কাজ করতে শুরু করলো, আল্লাহ তায়ালাই যানে কে ১ম হয়, ২য় হলাম না, ৩য় ও হলাম না, তাহলে প্রথম হওয়া আমার দ্বারা সম্ভব না, আশা ছেরেই দিয়েছিলাম,

Bangla Valobashar Golpo

স্যার এবার বললো….আমাদের এই বছর সবচেয়ে ভালো রেজাল্ট করেছে, শুধু তাই নয় গত ১০ বছর ধরে এই রেজাল্ট কেও করে নাই, সে ১ম হয়েছে তার নাম, এই বলে থেমে গেলো স্যার,

সবাই মনে মনে চিন্তা করছে এই ব্যাক্তি টি কে,,

আমি ১ম হওয়ার আশাটা ছেরে দিয়েছি, হঠাৎ করে স্যার বলা শুরু করলো,১ম হয়েছে মিনহাজ।

আমি তো পুরাই অবাক। এটা কি শুনলাম নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না দেখলাম সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,

হিমেল,রিফাত,অমিত,আরো কয়েকজন বন্ধুরা এসেই আমাকে কোলে নিয়েই নাচতে শুরু করলো, দেখলাম দীপ্তি ও খুশি। তারপর আমাকে নামিয়ে হিমেল বললো…….

হিমেলঃ তুই এত ভালো রেজাল্ট করবি ভাবতেই পারিনি, ১০ বছর পর আবার আমাদের স্কুলের সম্মান ফিরে পেলো।

হঠাৎ করে দারোয়ান এসে বললো মিনহাজকে স্যার ডাকছে, তারপর আমি গেলাম অফিস কক্ষে, যেতেই স্যার বললো….

স্যারঃ মিনহাজ ১০ বছর পর আমাদের সম্মান টা আবারো ফিরিয়ে দিলে আজ আমি অনেক খুশি হয়েছি।
আমিঃ স্যার দোয়া করবেন যেন জীবনের বাকি পথ গুলো ভালো করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।

স্যারঃ আমার দোয়া সবসময় তোমার কাছে আছে, তা বলো কি চাও তুমি,
আমিঃ স্যার আমি কিছু চাইনা, শুধু একটা জিনিস চাই দিবেন।
স্যারঃ বলো,
আমিঃ আমি চাই অন্য স্কুল থেকে পড়াশুনা করতে।

স্যারঃ কি বলছো, তোমার মতো ছাত্রকে আমি ছাড়তে চাই না,
আমিঃ স্যার একটু বুঝার চেষ্টা করুন, প্লিজ।
স্যারঃ তুমি যখন বলছো তাহলে আমি আর বাধা দিবো না, সব কাগজ পত্র রেডী করছি।
আমিঃ থ্যাংকস, স্যার।

তারপর বাহিরে চলে আসলাম, এসে দেখলাম আমার বন্ধু রা সবাই এক সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে,
আমি গিয়ে বললাম আমি চাই অন্য স্কুল থেকে পড়াশুনা করতে,

এই কথা শুনার পর সবাই যেটা করলো………..

Click Here For Next Part – চলবে

Writer – M.T Minhaz

Leave a Comment