Shes Thikana Tumi
Riya Singh { Part 13 }
আমি দিয়ে আসতে পারি একটা শর্তে যদি আপনি থেকে কথাটা তুমি হয়ে যায় তবেই নয়তো না, আমি বসে আছি ভাবো কি করবে ?(অরিন্দম)
সত্যি সত্যি যখন আর দিকে দেখল অরিন্দম কোনো কিছু না বলে চুপচাপ বসে থাকলো বাড়ি ফিরতে দেরি হলে ওর মায়ের গজগজানি শুনতে হবে তার থেকে এইমুহুর্তে তুমি বলে আপাতত ঝামেলা মেটানোই ভালো।
গাড়িটা চালাও দেরি হচ্ছে আমার। এরপর ফিরলে মা রাগ করবে।(অয়ন্তিকা)
অরিন্দম অয়ন্তিকার কথা শুনে একবার ওর দিকে তাকিয়ে একটু হেসে গাড়িটা স্টার্ট করে আরেকবার অয়ন্তিকার মুখটা দেখে গাড়ি চালানোর দিকে মন দিলো। অয়ন্তিকা কোন দিকে না তাকিয়ে শুধুমাত্র বাইরের দিকে মুখ করে বসে থাকলো। কিছুক্ষণ পর অয়ন্তিকার বাড়ি চলে আসায় অরিন্দম গাড়ি থামিয়ে অয়ন্তিকা কে ডাকতে অয়ন্তিকা চুপচাপ গাড়ি থেকে নেমে পিছনে না তাকিয়ে চলে গেল। অরিন্দম অয়ন্তিকার এইধরনের ব্যবহার আশা করেনি তবুও কিছু বললো না বাড়ি ফিরে এলো। রাতের দিকে ঘুমোনোর সময় ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো অয়ন্তিকার অরিন্দম ম্যাসেজ করেছে,সীন করবে না ভেবেও দেখলো , অরিন্দম লিখেছে
গুড নাইট বললে কি মুখটা ক্ষয়ে যেতো? অন্য কারোর সাথে কথা বলার সময় তো বেশ মুখে হাসি থাকে,খই ফোটে আমাকে দেখলেই গাল দুটো চুপসে যায় কেন? নাকি আমি মানুষ নয়।
এটা দেখে অয়ন্তিকা গুডনাইট মেসেজ লিখে ফোনটা অফ করে সেদিনের মত শুয়ে পড়লো।
এত বড় উত্তরে রিপ্লাই একটা গুডনাইট দেখে অরিন্দমের কেমন যেন রাগ হল পরেরদিন সেটা দেখে নেবে ভেবে সেদিনের মতো সেও ঘুমকে সঙ্গী করলো।
______________________________________________
আমাদের প্ল্যান ঠিকঠাক হচ্ছে যুষ্ট কটা দিন আরো এইরকম করে চালিয়ে যেতে হবে তারপর আমরা জেনেছি ঠিক সেরকম সেরকম হবে দেখে নিস।
অয়ন্তিকা কানে দিয়ে ফোনে ওপাশে থাকা ব্যক্তিকে খুব হেসে হেসে বললো ঠিক তখনই উত্তর ভেসে আসলো,
কিভাবে সবকিছু সাজিয়ে শেষ না হয়ে উপায় ছিল আমারই তো বরঞ্চ কি ভয় করছে তোর ওই গোমরামুখো মুখটা দেখে এমন করে তাকাচ্ছিল যেন চোখ দিয়ে গিলে খাবে।
আরে না না,এই জেলাসিটাই তো মনের কথা মুখ থেকে বের করবে। তারপর আমি তখন এতো হ্যাপি হবো না!(অনু)
তুই পারিস,হ্যাটস অফ।তোর মাথায় যে দুষ্টু বুদ্ধি ভরপুর আমি আগে ধরতে পারিনি।
কি করছিস ধরলে?বন্ধুত্ব করতিস না নাকি এখন বন্ধু নয় বলে চলে যাবি।(অনু)
আচ্ছা রাখছি,বাকি পরে বলে দিস কি করতে হবে আমাকে।
ম্যাসেজ করে দেবো সময়মতো করে। আপাতত এই যা করছিস অভিনয় চালিয়ে যা। আমি দাদা এলে ওর মুখটা দেখবো কি রকম মেজাজ আছে ওর।(অনু)
বেশ রাখলাম গুড নাইট।
গুড নাইট।(অনু)
রামুকাকা এক গ্লাস জল দাও তো বলেই অরিন্দম সোফায় বসে পড়লো।
কি রে চলে এলি? কিছু হয়েছে ? মুখটাই এরকম লটকে কেন?
খুঁচিয়ে তোলার জন্য অনু কথাগুলো বললো।
না কি হবে আবার? (অরিন্দম)
সেটা তুই ভালো করে বলতে পারবি কি হবে? বা কি হয়েছে সেটা আমি এখান থেকে বসে বসে তো কিছু বলতে পারব না। (অনু)
কথাগুলো গোল গোল করে ঘোরাস না তো, যা বলার সোজাসুজি আমাকে বল।(অরিন্দম)
কিছুই কথা নেই তুই বরং একটা গ্লাস জল খা রামুকাকা যেটা দিয়ে গেছে একটু আগে আর ভালো করে ঘুমোও ।দেখিস আবার অসুবিধা না হয় বলা তো যায় না আজকাল ঘুম আসতে পারে কথাবার্তা বলি অনু অরিন্দমের পাশ থেকে উঠে চলে গেল গুডনাইট বলে।
এরকম আগামাথা ছাড়া কথাবার্তা গুলো শুনে অরিন্দম আদৌ কিছু মানে বের করতে পারল না উপরন্তু হা করে কিছুক্ষণ বসে থেকে নিজেও ঘুমাতে চলে গেল।
এরকম করে সময় কাটছে, এরমধ্যে বেশ কয়েকবার অরিন্দম অয়ন্তিকার সাথে রনিকে কথা বলতে দেখে রীতিমত রেগে গিয়ে সেই রাগের কিছু টা অয়ন্তিকার উপর দেখিয়েছে তবুও নিজের কাজের কোনরকম আভাস ও নিজেও জানতে চায় না।
রনিদের সাথে কথাবার্তা বলছে কথায় কথায় রনি হাতের উপর হাত পড়ে যাওয়াতে অরিন্দম রেগেমেগে সেখান থেকে উঠে চলে গেল। অরিন্দমের মুখটা দেখে দিকে ভাল করে দেখে মনে হলো রেগেমেগে উঠে চলে যাচ্ছে তাই অয়ন্তিকা ওর পিছনে গেল।
কোথায় যাচ্ছো? ওখানে থেকে চলে এলে? হঠাৎ রাগের কি হলো? সবাই তো আছে ওখানে এভাবে একা একা চলে গেলে খারাপ দেখায় তো।
অয়ন্তিকার কথা শুনে অরিন্দমের মাথাটা আরো গরম হয়ে গেল।তাই পিছনে না তাকিয়ে বললো,
তুমি এখন যাও আমি পরে গিয়ে বসছি।
আমার হাতটা ভুল বশত রনির হাতে ঠেকে গেছিল, এখানে রাগার কিছু নেই।
বলেই অয়ন্তিকা চলে আসছিল এই সময় অরিন্দম পিছন থেকে বলল তাহলে বুঝতে পেরেছ আমার রাগের কারণটা কি? আর রাগ তুলেছো পানিশমেন্ট পাবে না এমনটা কখনো হয়? কি দেওয়া যায় বলোতো?
আমি কেন পানিশমেন্ট পাবো? ইচ্ছে করে করেছি নাকি?
বলতে বলতেই অয়ন্তিকা পিছিয়ে যেতে লাগলো,
তুমি এগিয়ে আসতো কেন?
তুমি পিছিয়ে গেছো বলেই বলেই অরিন্দমের মুখে একটা মুচকি হাসি ফুটে উঠলো। অয়ন্তিকা অরিন্দম কে দেখে বুঝতে পারলো এর মাথায় কিছু চলছে তাই ওখানে পাশ কাটিয়ে চলে আসতে গেলে অরিন্দম কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,
কোথায় পালিয়ে যাচ্ছো? অন্যায় করলে যে শাস্তি পেতে হয় তা জানো না বুঝি?
অয়ন্তিকা এর আগে এতো কাছে অরিন্দমের আসেনি, এমনকি কোন ছেলের ও কাছেও না কিন্তু এই অদ্ভুত অনুভুতি ওর কাছে নতুন ই বলা চলে। তাই কোনরকমে এইগুলো সামলে বললো,
অনেকক্ষণ হলো এখানে আছি,অনু হয়তো এতোক্ষণে খুঁজছে। নিচে নেমে যাওয়াটা ভালো হবে।
অয়ন্তিকা চলে যাওয়ার পর দরজার দিকে তাকিয়ে থেকে অরিন্দম নিজের মনে বলল,
মিস বসু পালিয়ে যাবেন কোথায়?ধরা তো আমার কাছেই শেষে পড়তে হবে তখন কোথায় পালাবেন? আমিও দেখি কতক্ষন লুকিয়ে থাকতে পারবে? দূরে সরে যেতে পারো।
অয়ন্তিকা কে হন্তদন্ত হয়ে আসতে দেখে অনু বললো,
এতক্ষন লাগলো কোথায় ছিলে আমি তো ভাবলাম দাদার মতো তুমিও হাওয়া হয়ে গেলে।
আরে না আমি তো জল খেতে গেছিলাম। (অয়ন্তিকা)
অরিন্দম কে পিছু পিছু আসতে দেখে অনু বললো,
কি রে দাদা তোর ও কী জলের পিপাসা পেয়েছিল নাকি!
কি সব বলছিস? আমি একটু ওয়াশরুম গেছিলাম (অরিন্দম)
আরে কিছু না, দুজন একসাথে হাওয়া হলি আবার দেখা দিলি তাই অয়ন্তিকা দি বললো জল খেতে গেছিল আমিও ভাবলাম তুই ও গেছিস।(অনু)
অরিন্দম অনুর এইরকম টিজ করা কথা শুনে মুখটা স্বাভাবিক রেখে বললো,
বড্ড পেকেছো হুঁ! এবার একটা বিয়ে দি তাহলে?
Related Story
আহ! দাদা জব করবো আমি এসব বিয়ে আমার জন্য নয়। আমার মতো মেয়ের তো একদম ই না।পাগল কেউ আমাকে করবে বলেই অনু হেসে দিলো।
অয়ন্তিকা আর অরিন্দম দুজনেই চুপ করে গেল কিরকম একটা অস্বস্তি বোধ হলো ওদের, মেয়েটা কত ছোট ওদের থেকে তবুও এতো কিছু সহ্য করে কাটিয়ে বসে আছে ।
অয়ন্তিকা তবুও পরিস্থিতি ঠিকঠাক করার জন্য বললো,
এই কি খাবি বল? আমার অনেক ক্ষণ থেকে খিদে পেয়েছে কিন্তু তোদের মুখ দেখে কিছু বলিনি।
অরিন্দম অয়ন্তিকার কথা শুনে বললো,
তোমার হাতের বিরিয়ানি টাইমুখে লেগে আছে ওটা বানিয়ে আনো ।
অনু বললো ঠিক তখনই,
তুই কবে থেকে বিরিয়ানি খাওয়া ধরলি?
যেদিন থেকে অয়ন্তিকার হাতের রান্না খেয়েছি সেদিন থেকে।