Golperjogot

Golperjogot

শেষ ঠিকানা তুমি – থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 7 | Love Story

Shes Thikana Tumi

Riya Singh { Part 7 }

এবার বাকি ওইদিকের মানুষ কে বোঝানো বাকি অনুর, তারমনে কি চলছে সেটাও জানতেই হবে ওকে। এটুকুই পরিস্কার দুটো মানুষের মনে কিছু না কিছু অনুভূতি আছেই। সেই কারণে দুটো মানুষের কাছাকাছি হওয়া জরুরি। আপাতত পরের দিনের অপেক্ষায় অনু থাকলো, নিজের কলেজ শেষ করে অয়ন্তিকার সাথে একটা রেস্টুরেন্টে এলো অনু,

এখানে আনলি আজ? আগে তো কখনো আসিস না? ( অয়ন্তিকা)

আরেহ এতো প্রশ্ন করলে কোনটার উত্তর দেবো বলোতো? এমনিই বন্ধুদের থেকে শুনলাম এটা ভালো রেস্টুরেন্ট তাই এলাম।তুমি কি খাবে বলো? (অনু)

তোর যা মন চায় সেটাই অর্ডার কর দেখি..

অয়ন্তিকার কথামতো নিজের পছন্দের সবটা অর্ডার করে খেতে খেতেই বললো ,

তোমরা দুজনেই কি কলেজের বন্ধু দি ? মানে ধরো দাদাকে তো মেয়েদের সাথে মিশতে দেখি না আর তোমাকেও বাড়িতে আসতে দেখিনি কখনো। আমার এটুকুই মনে আছে দাদার সাথে তুমি আমাদের বাড়িতে এলে যখন দাদা তোমাকে বন্ধু বলে পরিচয় করিয়েছিল।

আমিই তো কলেজের জুনিয়র ছিলাম আর সেরকম মিশিই না কলেজ ছাড়ার পর একটু থাকার জন্য জায়গা খুঁজছিলাম তাই আর কি এছাড়া কিছু নয়।(অয়ন্তিকা)

দি আজ না তুমি আমার সাথে আমাদের বাড়ি যাবে। চলো চলো। (অনু)

অয়ন্তিকা অনুর কথা শুনে প্রমাদ গুনলো। আবার ওই বাড়ি? ওখানে থেকে চলে আসার পর ভেবেই নিয়েছিল আর না। আবার কোথায় কথা শুনতে হবে তারচেয়ে বরং কোনরকমে অনু কে বলে কাটিয়ে দেবে ভাবলো।

না রে অন্য একদিন যাবো, আজ আসি তাড়া আছে তোকে বলাই হয়নি আমার, বলে অয়ন্তিকা উঠতে যাবে অনু থামিয়ে দিয়ে বললো,

আমি বলেছি মানে যাবেই তুমি। ব্যস অনুর জোড়াজুড়িতে অয়ন্তিকা শেষে হার মেনে নিয়ে ওর সাথেই গেল। বাড়িতে ঢুকতে দেখে প্রথমে রামুকাকাকে দেখতে পেল এক গাল হাসি হেসে বললো,

আরেহ নতুন দিদিমণি আইছেন, কতদিন পর সেঈ যে গেলেন আর এলেন না। ভুলে গেছেন আমারে,

– আরে না গো, কাজের চাপে আসা হয় না,তুমি কেমন আছো বলো দেখি? (অয়ন্তিকা)- ভালো আছি গো, তোমারে দেখে আরো ভালো হয়ে গেলাম। ( রামুকাকা)

Related Story

অনু শেষে অয়ন্তিকা কে নিজের ঘরে টেনে নিয়ে গেল, বললো দেরি করে ফিরবে আজ তুমি বাড়িতে বলে দাও। অয়ন্তিকা এদিকে চাইছে অরিন্দম ফেরার আগে চলে যেতে, কোনমতেই মুখোমুখি হতে চাইছে না। তাই তাড়াতাড়ি করে বললো,

– না রে এসেছি দেখা করেছি তোর কথা শুনে এবার যাই!- দাদা আসুক, চলেই আসবে হয়তো দেখা করে যেও না। (অনু)

যেদিকটা আড়াল করে রাখছে সেদিকটাই বারবার এসে পড়ছে,অনুর ঘর থেকে বেরিয়ে মুখ নিচু করে ব্যাগটা চেন টেনে কাঁধে ফেলবে ঠিক তখনই কারোর সাথে ধাক্কাধাক্কি কিন্তু পড়ার আগে কারোর বলিষ্ঠ বুকে আছড়ে পড়ার আগে চোখটা বন্ধ করে নিলো।

উঠুন কিছু হয়নি আপনি সেফ আছেন, ভরাট গলায় কেউ বলতে চোখ খুলে দেখলো অরিন্দম তাই তাড়াতাড়ি উঠতে গিয়ে দেখলো চুল আটকে গেছে অরিন্দমের ব্লেজারের বোতামে। কোনরকমে ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে দেখলো আর জট পাকিয়ে যাচ্ছে। ওকে থামিয়ে অরিন্দম সবটা ঠিক করে বললো হয়ে গেছে যেতে পারেন।

– বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে পিছু ডাকায় থমকালো অয়ন্তিকা,- দাঁড়ান আমি ড্রাইভার কে বলছি ছেড়ে আসতে,

না ধন্যবাদ আমি নিজেই ম্যানেজ করবো আপনাকে এতো না ভাবলেও চলবে ,এতোটা ভাবলেন তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। (অয়ন্তিকা)

ভাঙবে তবু মচকাবে না বলে লাগে গজগজ করতে করতে অরিন্দম নিজের রুমে চলে গেল।

অনু সবটা দেখে বুঝলো এদের ভিতরের দূরত্ব কমিয়ে আনতে বেশ কসরত করতে হবে ওকে। অয়ন্তিকা দি পারবে ওর দাদাকে জব্দ করতে। ওর সামনে দাদা আর মুখ খুলতে পারে না। তাই এর জন্য এদের বারবার দেখা হওয়া সবার আগে প্রয়োজন।

 

এদিকে অয়ন্তিকা ফেরার পথে সমানে অরিন্দম কে ইচ্ছে করে বকা দিচ্ছে,

কিভাবে কি নিজেকে? রাক্ষস কোথাকার? হাসে না সারাক্ষণ মুখটা কিরকম প্যাচার মতো করে রাখে। এর বিসনেস কিভাবে এগোতে পারে? মানুষের সাথে কথা বলতে জানে? জানা থেকেই তো বন্ধুত্ব শুরু ও হলো শেষ অবধি আবার এক জিনিস। যত জ্বালা আমার কেন যে এর বোনের ট্রিটমেন্ট করলাম। ভালো লাগে না ব্যাঙ এর সামনে ই পড়তে হচ্ছে।

বাড়ি ফিরে অয়ন্তিকা ওর মা কে বললো,খাবে না।

মেয়ের খাবারে অনীহা আর মুখ পেঁচকানো দেখে ওর বাবাকে বললেন ,

দেখো তোমার মেয়ের কান্ড ,এতো বড় মেয়ে এখনো বলে বলে খাওয়ার কথা মনে করাতে হয়, বলতে হয় খেয়ে নে।

অয়ন্তিকার বাবা নিজের কাজ থামিয়ে নিজের গিন্নির দিকে তাকিয়ে বললেন,

মেয়ে বড় হয়েছে তো, এবার তো ছাড় দিও ওকে। সবকথায় এইভাবে বলো না কিন্তু।

আর লাই দিও না তো। কদিন পর শশুড়বাড়ি যাবে তখন ও এরকম করবে নাকি! বড় হয়েছে কিন্তু নিজের অযত্ন করবে তাই বলে? মা বাবার কাছে তো ছোট আছে। যাও গিয়ে খাইয়ে এসো,আমি তো আর ভালোবাসি না তুমিই বাসো যাও শুনবে।(অয়ন্তিকার মা)

ওনার কথামতো মেয়ের কাছে গিয়ে ওর ঘরে নক করতেই অয়ন্তিকা ভিতর থেকে বলে উঠলো,

ভিতরে এসো বাবা।

মেয়ের জন্য খাবার নিয়ে পাশের টেবিলে রেখে ওর কাছে বসলেন, অয়ন্তিকা ওর বাবাকে জড়িয়ে ধরলো।

– কি ব্যাপার আজ এতো আদর বাবাকে? কিছু চাই ? (অয়ন্তিকার বাবা)- বাপিই… আমি ছোট নেই বড় হয়েছি। এমনিই (অয়ন্তিকা)

খাইয়ে দি বোস দেখি এখানে বলে রুটি ছিঁড়ে তরকারির সাথে ছোটবেলার মতো অয়ন্তিকাকে উনি খাইয়ে দিতে লাগলো।

অরিন্দম অনুকে বললো,মিস বসু কে তুই এনেছিলিস নাকি নিজে এলেই বাড়িতে?

– আমি এনেছি তাও জোড় করেই (অনু)- কেন? (অরিন্দম)- বললো আসবো না তাই একটু জোড়াজুড়ি করতেই এলো (অনু)

কাউকে এইভাবে জোর করা ঠিক নয় অনু, অনেকেই খারাপ ভাবে বিরক্ত হয় (অরিন্দম)

নিজের লোকদের জোর করতে হয় ,এক এক সময় নয়তো তাদের কেয়ার করি এটা বোঝাতে পারবোনা। (অনু)

অরিন্দম তবুও বোনকে বোঝাতে চেষ্টা করলো, কিন্তু অনু শুনলে তো! ওর এক কথা ওর অয়ন্তিকাকে দি ভাবে তাই যা করেছে ঠিক করেছে । আবার ডাকবে আর অরিন্দম এর তো বন্ধু তাহলে এতো এড়িয়ে চলা কেন?

Related Story

অরিন্দম কিছুতেই আসল কথা গুলো বলতে পারলো না, অনেক কষ্ট করে বোন কে আনন্দ পেতে দেখেছে তাই পরে একদিন সময় করে সবটা বলবে ভাবলো। এদিক থেকে অনু ও চেষ্টা করছে আসল ব্যাপার কি কি কারণে এতো লুকোচুরি? যদি অচেনা মানুষ হয় তাহলে মিথ্যা বললো কেন?

দেখ দাদা এতো কিছু বুঝি না আর চাইছিও না তোর মতো এতো লজিক এসব মাথায় ঢোকেনা। তাই বাদ দে। (অনু)

অরিন্দম বুঝলো এই মুহুর্তে যাই বলুক অনুর ছোট মাথায় ঢুকবে না উল্টে আরো সন্দেহ হবে আর প্রশ্ন করে মাথাখারাপ করবে।

– গুড নাইট রাত হয়েছে ঘুমোতে যা ‌‌তোর পরীক্ষার কি খবর কবে থেকে হবে?(অরিন্দম)- কি জানি পড়ছি ভালোই হবে চিন্তা করিস না।(অনু)- বেশ দেখা যাক,খারাপ হলেই কিন্তু গাট্টা খাবি বলে দিলাম।(অরিন্দম)

চিল আমার সব ঠিকঠাক হবে এতো ভাবিস না তো। তুই খালি ভাব একটা বউদি কবে পাবো আমি আমাকে বউদি কবে এনে দিচ্ছিস।(অনু)

– খালি আলফাল কথা তোর !(অরিন্দম)- কেন রে আমি কি চাইতে পারি না একটা মিষ্টি বুঝি বল বল? (অনু)- এই তুই সত্যি মার খাবি এবার,যা ভাগ এইতো বয়েস কি পাকা পাকা কথা দেখো (অরিন্দম)

Click Here For Next :– চলবে

Writer :- Riya Singh

Leave a Comment