Golperjogot

Golperjogot

শেষ ঠিকানা তুমি – থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 9 | Premer Golpo

Shes Thikana Tumi

Riya Singh { Part 09 }

শুনছো, মেয়েটা বড় হয়েছে এবার তো বিয়ের কথা ভাবো! এইতো না যে ও পড়াশোনা করছে। নিজে ইনকাম করছে এবার এই ব্যাপারে একটু ভাবনার চিন্তা করো দেখি। কি গো শুনছো (অয়ন্তিকার মা)

বলো, কি বলবে?(অয়ন্তিকার বাবা)

তুমি কি কানে কালা? হয়ে গেছো নাকি ছিলে নয়তো মেয়ের ব্যাপারে কিছু বললেই হয়ে যাও কোনটা ঠিক  খোলসা করে বলো দেখি? ( অয়ন্তিকার মা)

গিন্নির রণমূর্তি দেখে কোনরকমে সামলানোর জন্য আমতা আমতা করে বললেন,

ইয়ে মানে গিন্নি বলছি কি…

ওই করো মেয়ের বেলায় এইসব হয় তোমার,বাহানা বোঝাতে এসো না আমাকে। আমার তো জ্বালা মেয়ে একার যেন ওনার নয়। অসহ্য! (অয়ন্তিকার মা)

আরেহ শোনো তো বলছি যে,(অয়ন্তিকার বাবা)

ওই বললতেই তোমাকে থেকে যেতে  হবে, সে বলা আর হবেও না তোমার আর বলা হবে না অনেক হয়েছে থাম আমি বলি এবার তুমি শোনো ,কেমন ! ( অয়ন্তিকার মা)

আচ্ছা বেশ কি বলবে বলো দেখি আমাকে (অয়ন্তিকার বাবা)a

আমি ভাবছি এবার অয়ন্তিকার বিয়ে দেবো ওর জন্য ছেলে খুঁজতে শুরু করেছি, একজনকে বলা আছে এবার দেখা যাক তুমি কিন্তু এখানে বাধা দেবে না তোমার মেয়েকে প্রশ্রয় দিয়ে দিয়ে আজ এ অবস্থা যা বলবো চুপচাপ সেটা  শুনে নেবে ভালো ছেলে পেলে ওকে রাজি হতেই হবে সেটাও তুমিই করাবে। (অয়ন্তিকার মা)

গিন্নি মেয়ের অমতে বিয়েটা হবে না ,বলে দেখবো যদি রাজি তো হবে বিয়ে সে নিয়ে নিশ্চিত থেকো। কিন্তু ও  করতে রাজি না ও হলে অবশ্যই বিয়েটা হবেনা সেটাও আমি ঠিক করেছি। কিন্তু মেয়ের অমতে জোর করে কিছু হবেই না।

Related Story

অয়ন্তিকার মা একটু দমে গেলেও নিজেকে শক্ত রেখে বলল,

মেয়েকে এত লাই দিও না পরে পস্তাবে বলে দিচ্ছি। চাকরি করছে বিয়ের বয়স হয়েছে, ভালো ছেলে কেন বিয়ে দেবে না তুমি?

আমি সেটা বলতে কখনোই চাইনি এটাই পরিস্কার করে বলতে চাই মেয়ের অমতে কোন কিছু হবেনা, আমার সন্তানের এতো বড় জীবনের সিদ্ধান্ত অবহেলা করতে পারি না সেটা তুমিও বুঝতে পারছো তাও জেদ করেই যাচ্ছো।( অয়ন্তিকার বাবা)

আমি জেদ করছি তাহলে তোমরা কি করছো বলো? ( অয়ন্তিকার মা)

অন্তত তোমার মতো হুট করেই কিছু করিনি, মেয়েটার জীবন কোন ছেলেখেলা নয় এমনিই বলে মানুষ মেয়ে ছেলে দের বিয়ে আর বাড়ির জন্য দলিল খুব ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেখানে আমার একমাত্র মেয়ে,আদরের অনেক তাকে আমি এইভাবে বিয়ে দিতে পারিনা (অয়ন্তিকার বাবা)

ঠিক আছে যা পারে করো, পরে আমাকে বলতে এসো না কিছু বলছ দিচ্ছি তখন আমি শুনবো না কিছু।(অয়ন্তিকার মা)

আমিও জানি তুমি ওকে ভালোবাসো,যা করবে ভালোর জন্য কিন্তু মাথা গরম করে সবকিছু একা ভেবে নিও না ।বিয়ের পরের জীবন ও যার সাথে কাটাবে সেই মানুষটা ঠিক হলেই তোমার মেয়েটা সুখের সাথে শান্তি ও পাবে। সেটা যদি এতো বড় মেয়ের মা কে বোঝাতে হয় আমি কি বলি আর…( অয়ন্তিকার বাবা)

তোমার সাথে আমি বলছি বা কেন কে জানে? করো যা পারে ,কিন্তু আমার মেয়ের ব্যাপারে ভীষণ তুমি একা নিতে পারো না আমিও সেখানেই ইনভলব আছি, ভুলে যেও না।মেয়েটা আমাদের তোমার নয় কিন্তু! ( অয়ন্তিকার বাবা)

দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি চলতেই থাকলো অয়ন্তিকার মা কোনমতেই চাইছেন না। এটা বুঝতে একটা মানুষের জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তার নিজের থাকে ,অন্য কারোর নয় এমনকি মা বাবার ও নয় তার আমাদের গাইড বা সাজেশনস দিতেই পারেন তবুও শেষ মুহূর্তে আমাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কিন্তু অয়ন্তিকার মা যে করেই হোক মেয়ের বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করলেন, অন্যভাবে মেয়েকে রাজি করাতে হবে এই ভেবেই অয়ন্তিকা ফিরতে ওর কাছে গিয়ে বসলেন,

হুট করে মা কে আসতে দেখে একটু অবাক হলেও মুখে প্রকাশ না করেই মা কে বললো,

কি হলো আজ হঠাৎ আমার কাছে! কিছু লাগবে? (অয়ন্তিকা)

না না আমি কি আমার মেয়ের কাছে আসতে পারি না বল? নিজের মেয়ের কাছে দরকারি কিছু হলেই কি কথা বলবো?( অয়ন্তিকার মা)

এই মুহূর্তে আমার মনে হচ্ছে না যে তুমি দরকার ছাড়া এখানে এসেছো দেখো তুমি ভালো করে জানো তোমার মেয়ে একজন সাইকোলজিস্ট তো মিথ্যে কথা বললেও তুমি ধরা পড়ে যাবে কিন্তু সেই হিসেবেই বলো আসল কথা টা কি? (অয়ন্তিকা)

বলছিলাম যে তোর তো এখন পঁচিশ চলছে ,তোর মনে আছে তোর মামীর একজন আত্মীয়ের কথা।তোকে পছন্দ করে বলেছিলাম না। ( অয়ন্তিকার মা)

পছন্দ হতেই পারে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই পছন্দ করে তাতে কি হয়েছে কি হয়েছে সেটা তো খোলাখুলি বলতে পারো।( অয়ন্তিকা)

ছেলেটা ভালো চাকরি করে, একটু বড় হবে তোর জন্য ভাবছি দেখবো। তুই একবার ভাবলে…

মা কে থামিয়ে দিয়ে অয়ন্তিকা বলে উঠলো,

Related Story

 দেখো মা তোমাকে আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি আমার যদি বিয়ে করার প্রয়োজন হয় আমি নিজে থেকে তোমাকে বলবো ছেলে দেখো অথবা নিজেই মেয়ে পছন্দ করব এক্ষুনি আমি বিয়ে করতে চাইছিনা জবের বেশিদিন হয়নি শুরু করেছি একটু স্টেবেল সেভিংস করি তারপর নয় ভাববো আগেভাগে আগবাড়িয়ে তুমি কিছু করতে যেও না তুমি নিজেই অপমানিত হবে যে যে আমি রাজি থাকবো না আর বাবাকে বলেছ আশা করি বাবা রাজি না।

মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে অয়ন্তিকার মা বললো,

না কিন্তু তুই শোন,তোর বাবার কথা বাদ দে একটিবার তুই রাজি হলে ভাবলে তো হয় তাই না!

বাবা আমার থেকে বড় সে যদি এত বয়স্ক মানুষ হয়েও কিছু ভেবেচিন্তে না বলে সেখানে আমি তার মেয়ে হয় তাকে কেন অস্বীকার করবো। বারণ করে দিও আমি না বলেছি সেইজন্য।খিদে পেয়েছে খেতে দাও আমাকে (অয়ন্তিকা)

যেমন বাবা তেমনি মেয়ে, দু’জনে সমান।কেউ আমার কথা ভাবে না। ঠিক আছে করতে হবে না বিয়ে আমিও দেখি তোর বিয়ের সময় কখন হয়।( অয়ন্তিকার মা)

দুদিন পরে অয়ন্তিকা বাড়ি ফিরে দেখলো,অনেক লোকজন বসে আছে বসার ঘরে। ও কিছু সিনক্রিয়েট না করে নিজের ঘরে ঢুকে গেল। ওর পিছন পিছন মা এসে দাঁড়ালো,

তুমি যদি ভেবে থাকো ওই লোকগুলোর সামনে আমি গিয়ে সঙের মতো শাড়ি পড়ে সেজেগুজে বসবো ভুল করছো। কিছু ই করবো না সেরকম হসপিটালে থেকে ফিরে এসেছি তুমি ফোন করলে বলে যদি জানতাম মিথ্যা কথা বলে তুমি আমাকে ডেকেছো তাহলে আসতাম না।বাবা নেই বলে এই মুহূর্তে ওদের দেখেছো তাই না! (অয়ন্তিকা)

তুমি না চাইলে সেজো না তাই বলে ওদের অপমান করবে না। বিয়ের জন্য এসেছে একবার কথা বলে দেখো হয়তো তুমি রাজি হতে পারো। ( অয়ন্তিকার মা)

এই মুহূর্তে অয়ন্তিকার ওর মায়ের উপর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে তাই বাবাকে ফোন করে আসতে বলে নিজে গিয়ে ওদের সামনে দাঁড়িয়ে রাজি না বলে দেবে বলে বসার ঘরে এগিয়ে গেল,

দেখুন আপনারা কি শুনেছেন আমি জানি না আগেও মা কে বলেছি বিয়েতে রাজি না আপনারা তবুও এসেছেন যখন সামনাসামনি না কথাটা বলে দিলাম দ্বিতীয় বার যেচে অপমানিত হতে আসবেন না ধন্যবাদ (অয়ন্তিকা)

ওরা চলে যাওয়ার পর অয়ন্তিকার মা মেয়ের কান্ডে খুব অপমানিত হলে উনি নিজের ঘরে দোর দিয়ে বসে থাকলেন অয়ন্তিকার বাবা এসে দেখলেন মেয়ের থেকে সবটা শুনলেন জানতেন এরকম কিছু হবে।

Click Here For Next :– চলবে

Writer :- Riya Singh

Leave a Comment