Shudhu Tokei Chai
Asfi Jahan Iffti { অনুগল্প }
আরিয়া: সমস্যা কি? কানা নাকি দেখে গাড়ি চালাতে পারেন নাহ। চোখ কোথায় থাকে? পকেটে নিয়ে গাড়ি চালান?(গাড়ির আয়নায় থাপ্পড় দিয়ে বললো কথাগুলো আরিয়া)
অনির্বাণ: এই মিস আপনি কি চোখ ওড়নার কোনায় বেঁধে হাটেন আপনি দেখে হাটতে পারেন নাহ?(গাড়ির আয়না নামিয়ে বললো)
অনির্বাণের আরিয়ার দিকে চোখ যেতেই আটকে যায়। সে আরিয়ার দিকে তাকিয়েই থাকে আর কোনো কথা বলেনা।
আরিয়া: কিহ আমি চোখ ওড়নায় নিয়ে হাটি। এইসব খাম্বা, উগান্ডা যে কোথা থেকে আসে কে জানে। যত্তসব। মন চায় গাড়িটা সহ আছাড় মারি।(রাগে গজগজ করতে করতে চলে যায় আরিয়া)
অনির্বাণ: অপূর্ব(অস্পষ্ট স্বরে)
আরিয়ার বাড়িতে…
আরিয়ার মা: কিরে মা, এই অবস্থা কেনো তোর?
আরিয়া: আর বলো নাহ কোথা থেকে গন্ডার, হনুমান আসে। গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় একদম রাস্তার কাদা সব আমার গায়ে।
মা: আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে নে।
আরিয়া: হুম।
আরিয়া ফ্রেশ হয়ে খেয়েদেয়ে শুয়ে ফেসবিক স্ক্রলিং করতে থাকে।
এইদিকে.....
অনির্বাণ তার বন্ধুদের সাথে দেখা করতে আসে। অনির্বাণ এর বন্ধুরা তাকে জড়িয়ে ধরে।
আরিফ: আরে অনির্বাণ তুই?
অনির্বাণ: অবাক হয়েছিস?
সুজন: হবেই তো নাহ। হঠাৎ তোর দেখা।
আরিফ: কোনদিন এলি তুই?
অনির্বাণ: এইতো পরশু।
আরিফ: ডাক্তারি পড়া শেষ?
অনির্বাণ: হুম। দেশে ফিরে এসেছি। দেশেই চিকিৎসা করবো।
সুজন: এটা ভালো করেছিস। চল চা খাই।
অনির্বাণ: হুম চল।
পরদিন.....
"আরিয়া, মা উঠ কলেজের দেরি হয়ে যাবে তো।
"আর একটু ঘুমাই।(ঘুম ঘুম কন্ঠে)
"একটা থাপ্পড় দিবো। কয়টা বাজে দেখেছিস? উঠ তাড়াতাড়ও।
আরিয়া উঠে ফ্রেশ হয়ে কলেজে চলে যায়।
নিতু: হাউ আর ইউ বেবি?
আরিয়া: ফাইন বেবি.
নিতু: আমারে জিগাইলি নাহ।
আরিয়া: তোমারে জিগাইতে হয় নাহ বুঝছো। তুমি মিয়া বিন্দাস আছো।
নিতু: আইচ্ছাহ। ক্লাসে চল।
আরিয়া: হুম চ..। ও আল্লাহগো আমি শেষ গো। আমার ভবিষ্যৎ জামাইর কি হইবো গো। কোন খাম্বায় আমার বাচ্চার মারে ফালাই দিলো।
Related Story
আরিয়া একজনের সাথে ধাক্কা খায়। সে আর কেউ নয় অনির্বাণ। আরিয়াকে অনির্বাণ ধরে ফেলে। আর আরিয়ার বকবক শুনতেছে। আর আরিয়ার দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে।
অনির্বাণ: এই মেয়ে কি আবোলতাবোল বলতেছো?
আরিয়া চোখ মেলে তাকায়।
আরিয়া: আপনিই?
অনির্বাণ: হে আমি। আমি খাম্বা? আর কি সব পাগলের মতো বলতেছো। বাচ্চা মেয়ে নিজেই আবার নিজের বাচ্চার কথাও চিন্তা করে।
"চিন্তা করবো না? আর আমি বাচ্চা মেয়ে নাহ বুঝলেন?
"কতো ঢং এর মানুষ আছে দুনিয়াতে।
"একদম বাজে বকবেন নাহ। ওইদিন আমায় কাঁদা দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছে আজ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছেন।( রাগি লুক নিয়ে)
"মিথ্যুক মেয়ে তোমাকে আমি কই ফেলেছি এখনো ধরে আছি দিব্যি।
" আসলেও তো। ইশ কেমন কেমন লাগছে। বেকুব নাকি আমি ওনার কোলে এতোক্ষণ।(মনে মনে)। ছাড়ুন আমাকে। (রাগ দেখিয়ে)
"বাপরে আবার রাগও দেখায়। আমি যেনো সাধে ওনাকে ধরে রেখেছি। যত্তসব!
"আমি বলছি আমাকে ধরেন। আমি পড়ে গেলে পড়ে যেতাম ধরলেন কেনো? আবার আসছে যত্তসব যত্তসব করতে। যান ভাগেন।
হঠাৎ অনির্বাণ আরিয়ার হাত ধরে ফেলে।
"চলো । তোমাকে নিয়ে ভাগি।
আরিয়া যেনো শিহরিত হয়ে যায়।
"আসছে আমাকে নিয়ে ভাগতে।(হাত ঝাড়ি দিয়ে চলে যায়)
"ওকে আমার চাই ই চাই।( শয়তানি হাসি দিয়ে)
এভাবে কিছুদিন কেটে যায়। অনির্বাণ প্রায়ই আরিয়াকে বিরক্ত করত আর ঝগড়া হয়ে যেত।
নিতু: অনির্বাণ ভাই মনে হয় তোরে পছন্দ করে রে আরিয়া।(হেসে)
আরিয়া: এখন আমি কি করতাম।
আরিয়া আনমনে হাঁটছে...
নিতু: আরে আরিয়া এক্সিডেন্ট করবি তো।( চিৎকার দিয়ে)
আরিয়া তাকিয়ে দেখে একটা গাড়ি প্রায় ওর কাছে চলে এসেছে। আরিয়া কি করবে বুঝে উঠতে পারছে নাহ। হঠাৎই অনির্বাণ কোথা হতে এসে আরিয়াকে এক টান দিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে অনেকটা শক্তভাবে। আরিয়াও ভয় পেয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে সেও অনির্বাণকে জড়িয়ে ধরে। আরিয়া অনির্বাণ এর হার্টবিট শুনতে পাচ্ছে। যা অতি দ্রুত উঠানামা করছে। আরিয়ার বুক ধুকপুক করছে। অনির্বাণ আরিয়াকে নিয়ে রাস্তার পাশে চলে আসে। সে আরিয়ার হাত ধরে দাড়িয়ে আছে।
" কি চোখ কোথায় থাকে হাঁটার সময়? তুমি কি বাচ্চা মেয়ে? মন কোথায় থাকে? এখনি তো গাড়ির নিচে পড়ে ওপারে চলে যেতে। কেয়ারলেস মেয়ে একটা। একটা থাপ্পড় দিয়ে সব দাঁত ফেলে দিব।
আরিয়া যেনো বাধ্য মেয়ের মতো ওর সব কথা শুনে যাচ্চে।
"আর কখনো যদি এমন দেখছি নাহ। এখন যদি কিছু হয়ে যেতো?
" হয়ে গেলো হতো। তাতে আপনার তো কিছু আসে যায়। আপনার কি?
" আমার কি নাহ? একটা কথা কান খুলে শুনে রাখ আমার শুধু তোকে চাই।
"মানে কি?
"মানে...
অনির্বাণ আরিয়ার হাত ধরে একটা কামড় বসিয়ে দেয়।
"আহ..
"বাই বাই জানপাখি। আবার দেখা হবে। (চোখ টিপ মেরে)
আরিয়া অবুঝ এর মতো তাকিয়েই আছে।
নিতু: কিরে আরিয়া।ব্যাপার কি? বাহ এতো সিন্দর একটা হ্যান্ডসাম ছেলে তোর জন্য পাগল দেখছি। আমাদেরই কপাল পোড়া। আবার কামড় ও দিয়ে গেছে। আবার কোনদিন...
আরিয়া: একদম বাজে বকবি নাহ। (রাগ দেখিয়ে)
আরিয়ার হাতের কামড় এর কথা মনে পড়তেই প্রচুর লজ্জা পেয়ে যায়।
একদিন..........
অন্ধকার একটা রুমে আরিয়া। ক্লাসে যাওয়ার সময় হঠাৎ কেউ আরিয়াকে টেনে এই রুমে নিয়ে আসলো। আরিয়া চিৎকার করারও সুযোগ পায়নি। আরিয়ার মুখ চেপে ধরে আছে।
আরিয়া: দম বন্ধ হয়ে আসছে কোন বজ্জাত আমার সাথে এরকম করছে।(মনে)
" খুব শখ নাহ তোর ছেলেদের সাথে হাসাহাসি করার। হাত ধরার। আড্ডা দেওয়ার।
আরিয়ার আর বুঝতে বাকি রইলো এ অনির্বাণ। আরিয়া ওর মুখের ওপর থেকে হাত সরানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছে। অবশেষে অনির্বাণ হাত সরিয়ে দেয়।
"আপনার সমস্যা কি আমি হাসাহাসি করলে। আমাকে মারতে চান। আর একটু হলেই তো মরে যেতাম।(চোখে জল)
"তুই শুধু আমার, আমার শুধু তোকেই চাই। তুই ছেলেদের সাথে এরকম করবি তা আমি সহ্য করবোহ নাহ।(আরিয়াকে ঝাঁকি দিয়ে)
আরিয়া কিছু বলছে নাহ.
"সরি জানপাখি তোকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি। আমি আসলে তোকে অনেক ভালোবাসি তাই আমার সহ্য হয় নাহ। নেক্সট টাইম আর এরকম করো নাহ কেমন।
"কি লোকরে বাবা, কষ্ট দিয়ে আবার ভালোবাসা দেখায়,(মনে মনে)
অনির্বাণ আরিয়ার চুলগুলো কানে গুজেঁ দেয়। আরিয়ার লপালে আর গালে চুমু দিয়ে চলে যায়। আরিয়া বোকার মতো দাড়িয়ে থাকে.....................
এক বছর পর...
"কিহ? বলে ছিলাম' শুধু তোকেই চাই'। ঠিক করেই ছেড়েছি তোকে আমার।
" আ..আ..আপনি জোর করে বিয়ে করেছেন হু।
আরিয়া এক পা এক পা পিছাচ্ছে আর অনির্বাণ এগুচ্ছে। আরিয়ার পিঠ দেয়ালের সাথে লেগে যায়। অনির্বাণ দুই হাত আরিয়ার আরিয়ার দুইপাশে রেখে, আরিয়ার গালে গাল লাগাল। আরিয়া কেঁপে উঠে।
"জোর করে বিয়ে করলেও তুমি কিন্তু আমাকে ভালোবাসোই।
"হ কচু বাসি, ভালো বাসি নাহ, হু।
"ওকে ভালোবাসতে হবে নাহ তোমায়।
অনির্বাণ আরিয়াকে কোলে তুলে নিলো।
"এই এই কি করছেন আপনি।
"ভালোবাসবো নাহ তোমায়? ভালোবাসো কত প্রকার ও কি কি দেখাতে হবে তো।(বাঁকা হাসি দিয়ে)............
"লুচু লোক একটা ছাড়ুন আমায়।
"উহু..
অনির্বাণ আরিয়াকে বিছানায় ফেলে আরিয়ার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। ভালোবাসায় ভরিয়ে দেয়। আজ তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পাবে..............।
Writter :- Asfi Jahan Iffti