Tomar Amar Prem Bangla Love Story
Imtihan Imran [ Part – 01 ]
মন টা খুব বিষাদ হয়ে আছে। আত্নহত্যা করতে মন চাচ্ছে। কিন্তু আবার সাহসও পাচ্ছি না। এই অবস্থা হওয়ার কারন, যাকে আমি মন প্রান উজাড় করে ভালোবেসেছিলাম, সেই মেয়েটি আজকে আমার সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে দিলো। কারন হিসেবে দাঁড় করালো আমি একজন বেকার ছেলে,বাপের টাকায় খাই,ফুর্তি করি,আমাকে তার বাবার সামনে কীভাবে দাঁড় করাবে? অবশ্য আরেকটা কারনও ছিলো তার বিয়ে ঠিক হয়েছে। জামাইয়ের অনেক গুন কীর্তিও করলো। জামাই অনেক বড় কোম্পানিতে জব করে।
আমি সবকিছু শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। যাকে অনেক বেশি’ই ভালোবেসেছিলাম, সে এভাবে আমাকে ছেঁড়ে চলে যাবে। আমি জাস্ট ভাবতেই পারছি না। আমি অনেক কষ্টে নিজেকে কন্ট্রোল করে তাকে বললাম,
” তুমি মজা করছো,তাই না?
” মজা না,সত্যি টাই বললাম। বিশ্বাস করবে কি করবে না, সেটা তোমার ব্যাপার। আমি যাই,আমার উডবির সাথে আজকে দেখা করতে হবে।
নীলা চলে গেলো। একবারও পিছনে ফিরে দেখলো না, আমি কতোটা ভেঙে পড়েছি।
Bangla Love Story
আমি সিজান চৌধুরী। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। বাবা মাহবুব চৌধুরী, মা জাহানারা চৌধুরী। দুজনেই অনেক ভালোবাসে আমাকে। একটা মাত্র ছেলে কিনা? আমাকে নিয়েই তাদের সবকিছু।
অনেক রাত করে বাসায় ফিরলাম। মা দরজা খুলে আমাকেই প্রশ ছুঁড়ে দেয়।
” সিজান এইসব কী? কয়টা বাজে খেয়াল আছে তোমার? কোথায় ছিলে তুমি?
সিজান, তার মায়ের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে পাশ কেটে চলে যায়। জাহানারা চৌধুরী অবাক হয়ে যান, সিজানের এমন ব্যবহারে।
” সিজান দাঁড়াও। কী হয়েছে তোমার? সিজান..
সিজান না শুনে নিজের রুমে চলে গিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। জাহানারা চৌধুরী পিছন পিছন এসে দরজার কাছে এসে থেমে যায়। তার ছেলের আজকে কী হলো? তিনি বুঝতে পারছে না।
” সিজান দরজা খোলো। কী হয়েছে তোর?
জাহানারা চৌধুরী দরজা ধাক্কাধাক্কি করছেন। এমন সময় সিজনা ভিতর থেকে জবাব দেয়।
” মা তুমি যাও তো। আমাকে একলা থাকতে দেও।
জাহানারা চৌধুরী বুঝতে পেরেছেন তার ছেলেকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে সে কিছুই বলবে না। চাপা স্বভাবের ছেলেটা।
” সিজান তুই খেতে আয়। আমি তোর জন্য না খেয়ে বসে আছি।
” তুমি খেয়ে নেও মা। আমার খেতে ইচ্ছে করছে না।
” তুই না খেলে আমিও খাবো না বলে দিলাম
সিজান জানে এখন তার আম্মা জান কোনোভাবেই খাবে না, যদি না সে খায়। তাই সে বলল,
” তুমি সব রেডি করো,আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
” তাড়াতাড়ি আয়। আমি অপেক্ষা করছি।
এই কথা বলে জাহানারা চৌধুরী চলে গেলেন। সিজান উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়।
Bangla Premer Golpo
খাওয়ার টেবিলে বসে সিজান চুপচাপ খাচ্ছে। জাহানারা চৌধুরী ছেলের এই চুপচাপ অবস্থা মেনে নিতে পারছে না।
” সিজান।
” হু।
” তোমার কী হয়েছে?
” কই, কিছু হয়নি তো।
” তুই তোর আম্মার সাথে শেয়ার করবি না?
” প্লিজ আম্মু, এই বিষয়ে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করিও না।
” ওকে করবো না। কিন্তু তোমাকে কথা দিতে হবে, তুমি এভাবে চুপচাপ মনমরা হয়ে থাকতে পারবে না। আমি আমার হাসিখুশি মাখা সিজানকে দেখতে চাই।
” সময় লাগবে আমার।।
” খুব তাড়াতাড়ি।
” হুম।
” আম্মু আমি আসতেছি.।
” কোথায় যাচ্ছিস?
” নীলা শপিং করবে, তাই বলছে আমাকেও যেতে।
” নীলার কি বিয়ে ঠিক হয়েছে নাকি?
” ও হ্যাঁ, তোমারে তো বলা হয়নি।
” আচ্ছা যা, সাবধানে যাস।
ফারিন মেহবুব তার আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।
” আন্টি সিজান কোথায়? ওকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না।
” আয়ান বাবা, দেখো তো তোমার বন্ধুর কী হয়েছে? কালকে অনেক রাত করে বাসায় এসেছে। কোথায় ছিল,কী হয়েছে কিছুই বলছে না? তুমি দেখো তো কিছু জানতে পারো কিনা.?
” আচ্ছা আন্টি।
আয়ান এসে সোজা সিজানের রুমে ঢুকে পড়ে। সিজান তখন শুয়ে ছিল। আয়ান এসেই উচ্চস্বরে বলল,
” কীরে ব্যাটা, কয়টা বাজে খেয়াল আছে? এখনো শুয়ে আছিস?
আয়ানের কন্ঠ শুনে সিজান চোখ খুলে। সে শুয়ে থেকেই জবাব দেয়।
” তুই এইসময়?
” একবার ফোন টা হাতে নিয়ে দেখ, কয়টা কল দিয়েছি।
” কয়টা কল দিয়েছিস?
” দশটা পার হয়ে যাবে।
” এতো কল হঠাৎ? জরুরী কিছু?
” আবার জিগায়। আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।
” ওয়াও কংগ্রাচুলেশনস।
” থ্যাঙ্কিউ, এখন চল।
” কোথায়?
” শপিং করতে যাব।
” আমাকে কেনো যেতে হবে? তোর শপিং তুই গিয়ে কর না।
” তোকে যেতেই হবে। কোনো কথা শুনছি না।
” আমার ভালো লাগছে না প্লিজ তুই যা।
” ভালো লাগছে না কেনো? কী হয়েছে তোর?
বলে রাখা ভালো সিজানের রিলেশনের কথা কেউ জানে না।।আয়ানও না। অবাক হওয়ার মতো কথা হলেও এটাই সত্যি।
” আমার আবার কী হবে?
” তোকে দেখে তো মনে হচ্ছে, কিছু হয়েছে। গোপন করছিস কেনো? আন্টিও বলল, তুই নাকি কাল রাতে অনেক রাত করে বাসায় এসেছিস। কোথায় ছিলি তুই?
” আচ্ছা আমি ফ্রেশ হয়ে আসি। শপিং করতে যাবো।
Heart Touching Bangla Love Story
আয়ানের প্রশ্ন এড়িয়ে সিজান ফ্রেশ হওয়ার জন্য চলে যায়। সিজানের এভাবে উঠে যাওয়া দেখে, আয়ান খুব করে বুঝতে পারে সিজান তার প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছে। সে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাচ্ছে না।
সিজান ফ্রেশ হয়ে টিশার্ট চেঞ্জ করে আরেকটা টিশার্ট পড়ে বের হয় আয়ানের সাথে।
” কীরে তখন প্রশ্ন এড়িয়ে গেলি কেনো?
” আয়ান ওই ব্যাপারে আমারে কিছু জিজ্ঞেস করিস না, বলতে পারবো না আমি।
” ওকে ব্রো, কিছু জিজ্ঞেস করলাম না।
আয়ান, সিজান দুজনে শপিংমলে চলে আসে। আয়ান মোবাইল বের করে কাকে যেনো ফোন দেয়। আয়ানের কথা শুনে বুজা যাচ্ছে, তার উডবিকে সে ফোন দিয়েছে।
” কোথায় তোমরা?
” আমরা শপিংমলের পশ্চিমে আছি।
” ওখানে দাঁড়াও। আমরা আসছি।
আয়ান ফোন রেখে দিয়ে সিজানকে বলে, চল।
” হুম।
আয়ানের উডবিকে দেখে সিজান অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। এ তো নীলা, যে গতকালকে তার সাথে ব্রেকাপ করেছে। তাহলে আয়ানি তার উডবি।
” হায়। (হেসে)
” এতো লেট?
” সরি।
” দুলাভাই এটা কিন্তু ঠিক না, আপনি আজকের দিন লেট করে আসলেন।
” এইবারেই শেষ বার আর দেরি হবে না।
” প্রথম বার ক্ষমা করে দিলাম।
সিজানকে দাঁড়িয়ে যেতে দেখে আয়ান বলে,
” কীরে ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো? এইদিকে আয়। পরিচিত হবি।
এতোক্ষনে নীলাও সিজানকে দেখতে পায়। সিজানকে দেখে নীলাও অবাক হয়। অবাক হলেও সে এখন ভয় পাচ্ছে। সিজান,আয়ানের বন্ধু। যদি সে সবকিছু আয়ান কে বলে দেয়। আয়ান কি এই বিয়ে করবে?
” আরে আয়।
Also Read Another Bangla Love Story
- Love Never Ended Part 1
- Valobashi Dujone Part 1
- Shishir Bindu Part 1
- Opurno Valobasha Part 1
- Mayer Valobasha Part 1
সিজান হেটে আয়ানের কাছে আসে।
” আমার উডবি নীলা। আর এ হচ্ছে নীলার বান্ধুবী ফারিন।
সিজান একবার নীলার দিকে তাকায়। তারপর আস্তে করে হায় জানায়। নীলাও ভয়ে ভয়ে হায় জানায়।
” আসসালামু আলাইকুম আমি ফারিন। (হেসে)
সিজান এবার নীলার পাশে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটির দিকে তাকায়। মেয়েটি অসম্ভব সুন্দর হলেও, হাসিতে যেনো তার দ্বিগুণ সৌন্দর্য্য বেড়ে যায়। সিজান চোখ সরিয়ে সালামের জবাব দেয়।
” আমি সিজান।
” আচ্ছা চল এবার ভিতরে যাই।
একঘন্টার মতো ঘুরে তারা শপিং শেষ করলো। এই শপিং এ সিজানের কোনো অবদান নেই বললেই চলে। নিজ থেকে তো কিছুই বলেনি। উল্টো কিছু জিগ্যেস করলেই শুধু হু হু করেছে।
শপিং শেষে তারা রেস্টুরেন্টে ঢুকে। আয়ান,নীলা এক পাশে বসে। আরেক পাশে সিজান, ফারিন। সিজান খেয়াল করেছে নীলা ভয়ে ভয়ে আছে। অবশ্য সে জানে ভয়ের কারন যে সে। তাই সে ফারিনকে উদ্দেশ্য করে বলল,
” এদেরকে একটু আলাদা কথা বলতে দিলে ভালো হয়। আমরা অন্য জায়গায় বসি।
Click Here For Next Part – চলবে…
Writer- ইমতিহান ইমরান