Prem Kahini
Raj Choudhuri { Part 13 }
একটা মেয়ে এসে সিজানের পাশে দাঁড়িয়ে পিক তুলতে গেলে আইরিন মেয়েটাকে সরিয়ে দেয়। মেয়েটাকে সরিয়ে আইরিন সিজানের হাত ধরে ওদের সামনে থেকে নিয়ে যায়।
” বেয়াদব ছেরি গুলো। ছেলে দেখলেই ছবি তুলতে ইচ্ছে করে। (রেগে)
” আরে তুমি এতো রেগে যাচ্ছো কেনো? শুধু সেলফিই তো তুলতে চেয়েছিল.।
” শুধু সেলফি তাই না.? ওও খুব শখ মেয়েদের সাথে সেলফি তুলার তাই না..?।
” আরে আমি তা বলি নাই।
” বুঝি বুঝি সব বুঝি। যান যান মেয়েদের সাথে সেলফি তুলতে যান।
” না তুলতে ইচ্ছে করছে না এখন।
” কেনো, এখন ইচ্ছে করছে না কেনো.? তো কখন ইচ্ছে করবে শুনি.?
” ইচ্ছে করলেও তো তুলতে পারব না। ঢাকায় চলে যাবো।
” আহা গো এইজন্য আফসোস হচ্ছে। তো ছেরি গুলো রে কাধে করে ঢাকা নিয়ে যান। তাহলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
” কাধে করে নেওয়া সম্ভব নাকি.?
” কাধে করে নেওয়া সম্ভব না হলে হেলিকপ্টার করে নিয়ে যান।
” এই মেয়ে তুমি ওদের নিয়ে আমার সাথে ঝগড়া করছো কেনো.?
” আমি ঝগড়া করতে পারি না।
” সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি। কে ঝগড়া করতে পারে,আর কে পারে না।
” আপনি আমাকে ঝগড়াটে বলছেন.।খুব খারাপ হয়ে যাবে বলে দিলাম।
” ওরিব্বাস ভয় পাইছি।
” তবে রে দেখাচ্ছি…
আইরিন দৌড়ে এসে সিজানকে একটা ধাক্কা দেয়। সিজান গিয়ে পুকুরে পড়ে। সিজান হাবুডুবু খাচ্ছে।
সে সাঁতার জানে না।সে ডুবে যাচ্ছে। আইরিনের হঠাৎ মনে হলো সিজান তো সত্যিই সাঁতার জানে না।
আইরিন ভয় পেয়ে যায়। সে এটা কী করে করতে পারলো? আইরিনও পুকুরে ঝাঁপ দেয়। সে সিজানের কাছে গিয়ে সিজানকে ধরে পাড়ে উঠায়। সিজানের কাশি উঠে যায়।
” আমি সরি আমি সরি..আমার খেয়াল ছিল না আপনি সাতার জানেন না। (আইরিন প্রায় কেঁদে দিবে অবস্থা)
” আইরিন কুল ডাউন। এতো হাইপার হতে হবে না। আমি বুঝতে পারছি।
” না আপনি বুঝছেন না,আমার জন্য আপনি মরতে বসেছেন। আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না।
” এই মেয়ে চুপ। আমি বুঝি না কী? আমি সব বুঝছি। জাস্ট মজার ছলে দূর্ঘটনা হয়ে গেছে। এখন নিজেকে অপরাধী করার দরকার নাই। তোমার প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নাই। সো ক্ষমা চাওয়ার দরকার নাই।
” আপনি সত্যি বলছেন তো.?
” মিথ্যা কেনো বলতে যাবো.? সত্যিই বলছি।
” আচ্ছা।
” ভিজে তো অবস্থা খারাপ তোমার। এখন এভাবে রাস্তা দিয়ে বাসায় যাবে কীভাবে.?
” যেতে তো হবে।
” ওয়েট।
ইমরান,নিজের শরীর থেকে কোর্ট টা খুলে আইরিনকে পড়িয়ে দেয়।
এবার যাওয়া যাবে।
” হুম।
সিজান, আইরিন দুজনেই বাসায় চলে আসে। দুজনকে এভাবে ভিজে অবস্থায় দেখে সবাই একশ একটা প্রশ্ন জুড়ে দেয়।
” আমি বলছি কী হয়েছে?
” বলো বাবা।
” আসলে আমি সাঁতার জানি না। পুকুরের পাশ দিয়ে হাটার সময় আমি কিছুর সাথে স্লিপ খেয়ে পুকুরে পড়ে যায়। তখন আইরিন ঝাপ দেয় আমাকে উদ্ধার করতে। আইরিন না থাকলে আজকে বড় ধরনের কিছু হয়ে যেতো আমার।।
” বাবা কী বলছো কী? তুমি সাতার না জানলে কেনো গেলে পুকুরপাড়ে। আল্লাহ রক্ষা করেছে। শুকরিয়া। এখন যাও চেঞ্জ করে নেও। ঠান্ডা লেগে যাবে।
” জি আন্টি।
আইরিন, সিজানের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে যায়। সবার সামনে সত্যি কথা টা না বলে, ও তাকে কথা শুনা থেকে বাঁচিয়ে দিলো।
|
নীলার বাড়ি থেকে মেহমান রা চলে আসে। শিকদার সাহেব, নীলার বাড়ির মেহমানদের তার বাড়িতে আমন্রন জানাচ্ছে।
সিজানকে দেখে ফারিন এগিয়ে আসে।
” হাই..
” হ্যালো ফারিন..।
” তোমার তো কোনো খোঁজ খবর নাই। ফারিনকে ভুলেই গেছো মনে হচ্ছে।
” আরে না তেমন কিছু না।
” ফিরবে কবে..?
” আজকেই যাওয়ার ইচ্ছে আছে। আয়ান জোর করলে কালকে সিউর যাবো।
” আমিও যাবো। একা একা যেতে ভালো লাগবে না। তোমার সাথে গেলে ভালোই লাগবে। নিবে আমাকে সাথে.?
” আচ্ছা সমস্যা নাই। খাওয়ার জন্য ডাকছে। চলো খেয়ে আসি।
” চলো।
সবাই খাওয়ার জন্য বসেছে। সিজানের সাথে এসে আয়ানও যোগ দেয়।
” কীরে বেটা তুই এখানে কেনো? বউ রেখে বন্ধুর সাথে বসেছিস খেতে.?
” চুপ বেটা। বউ পেয়ে কি বন্ধুদের ভুলে যাবো।
” ভাইয়া তোদের সাথে আমিও কি জয়েন হতে পারি।
” সিউর।
” হাই ফারিন..।
” হাই..(হেসে)
সবার খাওয়া শেষ হলে। যে যার যার মতো করে উঠে পড়ে। আজকে নীলার সাথে আয়ানকে তার শশুরবাড়িতে পাঠানো হবে।।তাই সিজানের আর এই বাড়িতে থাকতে হচ্ছে না। সেও ঢাকায় যাওয়ার জন্য রেডি হয়। কিন্তু ফারিনকে যেতে দেওয়া হবে না। নীলা, তার বান্ধুবীকে জোর করে তার সাথে রেখে দেয়।