তোমাতে মাতোয়ারা
Ifrat Jahan Mariyam { অনু গল্প }
"সাইফি ওই দেখ রাইসা। ( মিলন)
[ রাইসা তার কাজিন জনির সাথে দাড়িয়ে হেসে হেসে কথা বলছে। জনি অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছে। রাইসাকে জনির সাথে দেখে সাইফির মাথা গরম হয়ে যায়। আরো হাত ও ধরে।]
" থাকুক চল।( সাইফি)
" রাইসা তুমি তো দেখি অনেকই বড়ো হয়েছো। দেখতেও সো কিউট হয়েছো।(জনি)
" তো ভাইয়া আমি কি ছোটো থাকবো নাকি? আপনিও তো বড়ো হয়েছেন। ( রাইসা)
" তা ঠিক। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে তুমি কিছুদিন আগেও ত বাচ্চা ছিলে কান্না করতে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে।
" হুহ, আমারও মনে আছে আপনি আন্টির আঁচল ধরে বায়না জুড়ে দিতেন যতক্ষণ না আপনার কথা শুনতো।
"আচ্ছা আচ্ছা তোমার মনে আছে তাহলে। ( হা হা)
" আছে। তো আমাদের বাড়িতে আসবেন কবে?
" মাত্রই তো আসলাম। কিছুদিন যাক। এখন বলো কি খাবে?
" নাহ ভাইয়া কিছু খাবো না আজ। লেট হয়ে যাচ্ছে। আপনি কিন্তু আসবেন।
" তাতো অবশ্যই।।
" তাহলে আসি ভাইয়া।
" ওকে বাই।
.................
" মা আজকে সাইফি ভাইয়ার সাথে দেখা হয়েছে।(রাইসা)
" তো নিয়ে আসিস নাই কেন?( মা)
" বলছি, বলছে কালকেই তো আসছে , পরে আসবে।
" ওহ, তুই ফ্রেশ হয়ে নে। খাবার দিচ্ছি।
" এইতো যাচ্ছি মা।
[ রাইসা খেয়ে দেয়ে ফোন নিয়ে ম্যাসেজ চেক করতে যায়। কিন্তু আশ্চর্য আজকে সাইফির একটাও ম্যাসেজ নাই। প্রতিদিন ম্যাসেজ দিয়ে ভরিয়ে ফেলতো। রাইসা সাইফিকে ম্যাসেজ দেয়। কিন্তু না অনলাইনে নাই। তারপর ফোন দেয়। সাইফি বারবার ফোন কেটে দেয়। শেষে ফোন বন্ধই করে দেয়। রাইসা অবাক হয় সাইফি কখনো তার সাথে এমন করে না। আজ কি হয়েছে তাই নিয়েই চিন্তা করে।]
" আজকে কি হলো? সাইফি এমন করছে কেনো? দেখি আন্টিকে ফোন দি ও ঘরে আছে কিনা।
আসসালামু আলাইকুম আন্টি। কেমন আছেন?
" এইতো মা ভালো আছি। তুমি?( সাইফির আম্মু)
" এইতো আন্টি আমিও ভালো আছি। সাইফি কোথায় আন্টি?
" ওইতো ঘরে৷ সেই যে এসে রুমে ঢুকেছে আর বেরোবার নাম নেই। খাওয়ার জন্য ডাকছি। বলে খাবে না।
" আচ্ছা আন্টি আমি আসছি।
" আসো দেখো কিছু করতে পারো কিনা।
[ রাইসা রেডি হয়ে নিচে নামে। আর ভাবতে থাকে কি হয়েছে সাইফির]
" কিরে রাইসা কই যাচ্ছিস?( মা)
" সাইফির বাসায়।
" কেনো কি হয়েছে ওর?
" খাওয়া দাওয়া করছে না, ফোন অফ করে রাখছে।
[রাইসা আর কথা না বলে বের হয়ে যায়]
" সাইফি দরজা খোলো। সাইফি।( রাইসা)
[ সাইফির কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে রাইসা ভয় পেয়ে যায়]
" সাইফি প্লিজ দরজা খোলো। কি হয়েছে বলবা তো। না বললে কেমনে বুঝবো। সাইফি প্লিজ।
" কি হয়েছে ওর কে জানে।( সাইফির আম্মু)
" আন্টি আপনি যান আমি দেখছি।
" আচ্ছা।
......
" দেখো সাইফি তুমি যদি দরজা না খোলো তাহলে কিন্তু কিছু হয়ে যাবে। সাইফি দরজা খোলো। সাইফি আমি কিন্তু নিজেকে শেষ করে দিবো। দরজা খোলো। আমি আর পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করবো। কিছু হয়ে যাবে কিন্তু।
[ সাইফি অনেক জোরে দরজা খুলে রাইসাকে রুমের ভিতরে এক টান দেয়। আকস্মিক আক্রমনে রাইসা টাল সামলাতে না পেরে সাইফির বুকে পড়ে। সাইফি এক হাতে দরজা আটকিয়ে রাইসাকে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরছে। শক্ত হাতে চেপে ধরার কারণে রাইসা ব্যাথা পায়।]
" সাইফি ব্যাথা পাচ্ছি।
" কি বললি তুই? নিজেকে শেষ করে দিবি এতো শখ নিজেকে শেষ করা।
"......
" কিছু হয়ে যাবে না? তুই ভাবলি কি করে আমি থাকতে তোর কিছু হতে দিবো। এর আগে আমিই শেষ হয়ে যাবো।
" সাইফি শান্ত হও। এমন করছো কেনো? তুমি খাওয়া দাওয়া করছো না কেনো। ফোন অফ করে রাখছো কেনো?
" তুই অন্য ছেলের সাথে হেসে হেসে হাত ধরে কথা বলবি সেটা আমাকে দেখতে হবে?
" কই আমি......।
আরে ও তো আমার ভাইয়া হয়। ও আমার কাজিন। আমাকে ছোট বোনের মত দেখে।।
" হাত ধরবি কেন?
" ভুল হয়ে গেছে সরি সাইফি।
" যা এখান থেকে।
" এভাবে কথা বলবা তুমি আমার সাথে কষ্ট পাইনা আমি?
"..........।
[সাইফি অন্য দিকে চলে যেতে নেয়। রাইসা গিয়ে সাইফিকে জড়িয়ে ধরে।]
" এতো রাগ করে না কলিজা।( পিঠে একটা চুমু দিয়ে)
" ছাড়োতো।
" এমন করো কেন সাইফি।( কাঁদো হয়ে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে)
[সাইফি এবার রাইসাকে সামনে নিয়ে এসে ওর মুখ ধরে বলে,
" জানোনা কেনো এমন করি? ভালোবাসিযে তোমায়। কাউকে তোমার সাথে সহ্য হয় না। তুমি কেনো বুঝো না?
" সরি। আর হবে না।( বাচ্চা ফেইস করে)
[ সাইফি রাইসার চোখে মুখে অসংখ্য চুমুতে ভরিয়ে দেয়। তারপর রাইসাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।]
" আমি তোমাতে মাতোয়ারা রাইসা। তোমাকে ছাড়া আমি কিছু বুঝি না রাইসা। অনেক ভালবাসি তোমায়।
" আমিও মিস্টার সাইফি। অনেক ভালোবাসি। এবার আসেন খাবেন।.......