Golperjogot

Golperjogot

Heart Touching Short Story in Bangla - Valobasha

Heart Touching Short Story in Bangla 2021 – Valobasha

ভালোবাসা অনুগল্প

আসফি জাহান ইফতি

পুরানো সেই দিনের কথা,
ভুলবি কিরে হা–য়।
ও সেই চোখের দেখা, প্রাণের কথা
সে কি ভোলা যায়।

মিউজিক..

আয় আর একটিবার আয়রে সখা
প্রাণের মাঝে আয়।
মোরা সুখের দুঃখের কথা কব,
প্রাণ জুড়াবে তা–

Short Story In Bangla

রাফিম রুশার মাথায় ঠুয়া মেরে হারমোনিয়াম নিজের কাছে নিয়ে নেয়।
রুশা: আহ ভাইয়া (রেগে পিছনে তাকিয়ে বলে)
রাফিম: মিউজিক……

মোরা ভোরের বেলা ফুল তুলেছি
ধুলেছি দোলা
বাজিয়ে বাশি গান গেয়েছি বকুলের তলায়।

রুশা: হায় মাঝে হলো ছাড়াছাড়ি
গেলেম কে কোথায়।
“রাফিমও তাল মেলায়,
রুশা রাফিম: আবার দেখা যদি হলো সখা,
প্রাণের মাঝে আয়।

রুশা: ভাইয়া তুইও গাইতে পারিস।( উৎকন্ঠা নিয়ে )
রাফিম: হুহু।
রুশা: কার কাছে শিখলি?
রাফিম: তোর কাছ থেকে।
রুশা : কই আমিতো তোকে শিখাই নাই।
রাফিম : তুই যখন গাইতি তখন আমি শুনতাম।
রুশা: আর হারমোনিয়াম বাজানো?
রাফিম: তাও তুই যখন এই গানে সুর তুলতি তখন দেখলাম।
রুশা: ওয়াও ভাইয়া। অনেক সুন্দর গেয়েছিস কিন্তু।

রাফিম: থাংকু সুইট বোন। চকলেট খাবি?
রুশা: খাবো খাবো।
রাফিম: এই নে।
রুশা: ওলে আমার সখারে। (জড়িয়ে ধরে)
রাফিম: চল তাড়াতাড়ি নাস্তা খেয়ে নিই। তোকে স্কুলে নামিয়ে কলেজে যাবো।
রুশা: ওকে চলো।

বাংলা অনুগল্প

ওরা নিচে নেমে দেখে ওদের মা টেবিলে নাস্তা দিচ্ছে।

ইতি(রুশা রাফিম এর মা) : কি ভাইবোনের গল্প গুজব শেষ হলো?
রুশা: এটা কি আবার শেষ হয় মা বলো তো।
ইতি : হয়েছে এবার খাবার খেয়ে যান।

ওরা দুজনেই খাবার খেয়ে যে যার স্কুল কলেজে চলে যায়। আবার বাড়ি ও ফিরে আসে।
বিকালে….

রুশা : ওই মোটু চল নাহ দোল খাবো।
রাফিম: আমি মোটু, আমারে দেখে তোর মোটু মনে হয়। তুই তো শুটকি।
রশা: হুহ আমি শুটকি নাহ, আমি হিন্দি নায়িকার মতো।
রাফিম: এহ আসছে হিন্দি নায়িকা। হা হা হা।
রুশা: ভাইয়া।
রাফিম: আয় দোল খাবো।
রুশা : চল।

রুশা দোলনায় বসেছে আর রাফিম পিছন থেকপ ধাক্কা দিচ্ছে। রুশা মন খুলে হাসছে রাফিমও। ভাইবোন দুটোই দেখতে অনেক সুন্দর। রাফিম রুশা দিকে তাকাতেই মন খারাপ হয়ে গেল। কাল থেকে আর দেখা হবে নাহ বোনটার সাথে। রুশা এখনো জানে নাহ যে তার ভাইয়া আমেরিকা যাবে পড়ালেখা করতে। অবশ্য রাফিম জানাবে নাহ, নাহলে রুশা যেতেই দিবে নাহ।

রাফিম : চল রুশা ঘরে যাই।
রুশা : তুই যা ভাইয়া। আমি একটু রিতুর (রুশার বান্ধবী) কাছ থেকে আসি।
রাফিম: আচ্ছা তাড়াতাড়ি চলে আসিস।
রুশা: ওক্কি মাই সুইট ভাইয়া।

পড়ুন  Bangla Valobashar Golpo Mr. Fuskawala Part 4 | Love Story

Bangla Short Story

রাফিম ঘরে চলে আসে…

ইতি: বাবা তোর সবকিছু আমি গোছগাছ করে দিয়েছি। রুশাকে কি বলবি, নাহ বললেই মনে হয় ভালো হয়। নাহলে মেয়েটা জান্না জুড়ে দেবে।
রাফিম: নাহ মা বলা যাবে নাহ।
ইতি: হুম।

রাতে…..
রাফিম রুশার কক্ষে গিয়ে রুশা চোখ হাত দিয়ে ঢেকে দেয়।

রুশা: কে কে ভাইয়া?
রাফিম: হুম।

রাফিম রুশার সামনে রুশা জন্য আনা চকলেট, আইসক্রিম, বই রাখে তারপর চোখ থেকে হাত সরিয়ে নেয়। রুশা সামনে তাকাতেই তার পছন্দের জিনিস দেখে খুব খুশি হয়ে যায়।

রুশা: আই লাভু ভাইয়া। ( জড়িয়ে ধরে ) কিন্তু ভাইয়া আজকে হঠাৎ এতোকিছু?
রাফিম: কেনো আনতে পারি নাহ? ( মুখ বাকা করে)
রুশা: অবশ্যই।
রাফিম: চল খেতে চল।

দুজনে নিচে গিয়ে খেয়ে নেয়। রুশা এসে ঘুমিয়েও পড়ে। তাদের বাবা ( জাফর হোসেন) রাফিম কে ডেকে পাঠায়।

জাফর: বাবা এই নে তোর টিকিট। সুন্দরভাবে থাকবি, পড়ালেখাও ঠিকমতো করবি বুজলি।
রাফিম: জি বাবা।

ভোররাত্রি…
রাফিম রুশার রুমে এসে রুশার কপালে চুমু দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে আসে নিচে।

জাফর: চল বাবা ফ্লাইট এর সময় হয়ে গেছে।
ইতি: বাবা সাবধানে থাকিস ( জড়িয়ে ধরে )
রাফিম: আচ্ছা মা ইতির খেয়াল রেখো।
ইতি: আচ্ছা।

রাফিম চলে যায় আমেরিকার ফ্লাইটে।

সকালে…..
রুশা : মা মা ভাইয়া কোথায় গেছে গাধার কি একটুও আক্কেল নাই। স্কুলের সময় হয়ে গেল।
ইতি: ওকে বাজারে পাঠিয়েছি, আজ তুই চলে যা।
রুশা: এ্যা একা যাবো, আচ্ছা।
রুশা স্কুলে চলে যায়।
রিতু: কিরে রুশা তোর ভাইয়া আজকে তোকে দিয়ে যায় নাই।
রুশা: ভাইয়াকে একটু কাজে পাঠাইছে আম্মু।
রিতু: ওহ।

রুশা বাড়িতে চলে আসে। তার জানি কেমন কেমন লাগছে। সে রাফিম কে ডাক দেয়।

রুশা: ওই মুটকু ভাইয়া। সখা কই তুই, আজকে একটিবারও তোকে দেখলাম নাহ (রাফিমের রুম থেকে ঘুরে আসে)

Heart Touching Short Story Bangla

রাফিম এর কেনো সাড়া না পেয়ে রুশা মাকে জিজ্ঞেস করে সে কোথায়। তার মা তাকে শান্ত করে সব বুজিয়ে বলে। রুশা সব শোনার পর কেঁদে একাকার হয়ে যায়।
রুশা: ভাইয়া আমাকে বলেও গেলে নাহ( কাঁদতে কাঁদতে)। কেনো গেলি ভাইয়া। আমি কীভাবে থাকবো।
“এভাবে দিন কেটে যায়। রুশা প্রতিদিনি কাঁদে রাফিম ফোন করলেই বলে চলে আসতে। তাই তার মা এখন আর তাকে রাফিম এর সাথে বেশি কথা বলতে দেয় নাহ।

দুই বছর পর…
রুশা কলেজের ক্যাম্পাসের দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ কেউ একজন রুশা হাত টান দিয়ে অন্ধকার রুমের মধ্যে নিয়ে আসে।

পড়ুন  বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব ২৯ রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন

রুশা: কে কে ছাড়ুন বলছি (ভয় পেয়ে)

“আর হ্যাঁ রুশা এখন কলেজে পড়ে এ বছরই কলেজে ভর্তি হয়েছে।”

কোনো কথা না বলে রুশাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে রাতুল। ওর একদম কাঁছে চলে আসে। রুশার ভয়ে গলার পানি শুকিয়ে যায়।

রাতুল: আই লাভ ইউ পাখি কতবার বলবো তোমাকে। কেনো বুঝতে চাচ্ছো নাহ আমাকে।
রুশা পরিচিত গলা শুনতে পেয়ে নিশ্বাস ফেলে।
রুশা: আর আমিও আপনাকে কতবার বলবো, ভালোবাসিনা। ছাড়ুন, আপনার মতো বদমেজাজি লোককে ভালোবাসিনা আমি।

রাতুল কোনো কথা না বলে রুশার কপালে চুমু দেয়। রুশা কিছু বলতে যাবে তার আগেই রাতুল বলে।

রাতুল: তুমি শুধুই আমার রুশা। মনে রেখো। তুমি আমারই হবে।
এই কথা বলে চলে যায়। এমনই চলে রুশার দিন, জ্বালিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে ছেলেটা তাকে। ভাইয়ার সাথেও তেমন কথা হয় নাহ তার। প্রতিদিন ভাইয়ার কথা মনে করে খুব খারাপ লাগে তার। আর বলে, ভাইয়া তুই বড়ই খারাপ।

কেটে যায় আরো দুইটি বছর….

রুশা এখন অনার্স ফ্রাস্ট ইয়ারে। রাতুলকেও মেনে নেয় সে। আর না মেনে নিয়ে যাবে কোথায়। আজ রুশাদের কলেজে অনুষ্ঠান আছে। রুশা খুব ভালো গান পারে তাই তাকে গান গাওয়ার জন্য বলা হলো। রিতু আরো কয়েকজন মিলে নাচের শো করবে অনুষ্ঠান শুরু হবে রুশা আর রাতুলের গান দিয়ে শেষ ও হবে রুশার গান দিয়ে।

রাতুল: রুশা তোমাকে কিন্তু আজকে হেব্বি লাগছে। আবার প্রেমে পড়লাম। কে বললো এতো সাজতে।
রুশা: ইশ অনুষ্ঠান আর আমি নাকি সাজবো নাহ হু।

এর মধ্যেই রুশা আর রাতুলের ডাক পড়ে……

রুশা: এতো রোদ্দুর তুই এনে দিলি তাই..
তোর বৃষ্টি আমি একটু পেতে চাই।।
রাতুল: মেঘলা হয়ে যা আরো পাচটা বারো মাস,
কোনো বিকেল বেলাতে তুই আমার হয়ে যা।

রুশা: শুধু তুই শুধু তুই
আর চাইছি নাহ কিছুই।।
রাতুল: শুধু তুই শুধু তুই
আর চাইছি না কিছুই।।

………………………………

এরমধ্যে সবার পারফর্ম শেষ হয়ে গেল। রিতুদের নাচও খুব সুন্দর হয়েছে। এখন আবার রুশার গান এর পালা। রুশার গানের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের শেষ হবে।

Bangla Short Story For Brother

ম্যাম: রুশার গানের মধ্য দিয়ে আজকে আমাদের অনুষ্ঠান শেষ হবে। প্লিজ রুশা।

রুশা: শুকনো পাতার নুপুর পায়ে নাচিছে ঘূর্ণিবায়য়য়য়।
জলতরঙ্গে জিলমিল জিলমিল ঢেউ তুলে সে যায়য়য়য়(।।)

দিঘির বুকে শতদল দলি
ঝরায়ে বকুল চাপার কলি।।
চঞ্চল ঝরণার জল ছলছলি
মাঠের পথে সে ধায়।
জলতরঙ্গে জিলমিলজিলমিল ঢেউ তুলে সে যায়।।

পড়ুন  খালাতো বোন যখন ক্রাশ – অনুগল্প | Bangla Short Love Story

(বাকিটুকু নিজ দায়িত্বে শুনে নিয়েন)

সবাই হাততালি দেয়।
রুশা: রিতু আমি যাচ্ছি অনুষ্ঠান তো শেষ।
রিতু: হুম
রুশা: আর খুব ক্লান্ত ও লাগছে বাই।
রিতু: আচ্ছা বাই
রাতুল: চলো আমি দিয়ে আসি।
রুশা: নাহ আমি যেতে পারবো।
রাতুল: তোমার ইচ্ছা।

রুশা কলেজ থেকে বের হতে যাবে এমন সময়…

“পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কিরে হায়,
ও সেই চোখের দেখা প্রাণের কথা,
সেকি ভোলা যায়।
………….

পরিচিত কন্ঠ শুনে রুশা থেমে যায়। কলেজের দিকে আবারো হাটা ধরে
“মোরা ভোরের বেলা ফুল তুলেছি, ধুলেছি দোলায়।
বাজিয়ে বাশি গান গেয়েছি বকুলের তলায়।

মিউজিক…..
রুশা এবার কন্ঠটা ধরতে পেরেছে মনে হয়। সে দৌড়ে মঞ্চের দিকে চলে যায়। মঞ্চে তাকাতেই তার চোখ আটকে যায়। সে এ কাকে দেখছে, এই চার বছর পরেও তার ভাইকে দেখে তার একটুও চিনতে ভুল হয়নি। তার চোখে পানি টলমল করছে। রুশাও এবার গাইতে লাগল রাফিম এর সাথে….

রুশা, রাফিম: হায় মাঝে হলো ছাড়াছাড়ি,
গেলেম কে কোথায়।
আবার দেখা যদি হয় সখা।
রাফিম: প্রাণের মাঝে আয়য়য়( হাত বাড়িয়ে রুশার দিকে)

রুশা দৌড়ে গিয়ে রাফিমকে জড়িয়ে ধরে। কান্না জুড়ে দেয়। রাফিম রুশাকে অনেক যত্নে জড়িয়ে ধরেছে। অনেকদিন পর বোনের ছোয়া পেল।
একজন এগুলো দেখে অবাক। সে আর কেউ নয় রাতুল, সেও একপ্রকার দৌড়ে রুশার কাছে আসে।

রাতুল: রুশা এসব কি।

রুশা রাতুলের কথায় কর্ণপাত নাহ করে রাফিমকে মারতে লাগে।

রুশা: তুই খুব পচা সখা। তুই এভাবে আমাকে রেখে চলে গেলি।
রাফিম: সুইট বোন আমার। ভাইয়ার কি একটুও ভালো লেগেছিলো তোকে ছাড়া থাকতে হু।(রুশার চোখের পানি মুছে দিয়ে)

Also Read Another Story

রাতুল এতক্ষনে বুঝেছে এটা রাফিম রুশা যার কথা বলতো, তার ভাইয়া।

রুশা: কখন এলি ভাইয়া?
রাফিম: আজকে সকালে এসে উঠলাম। ভাবলাম তোকে একটু অবাক করে দিই। তাই অনুষ্ঠানে চলে এলাম।
রুশা: অনেক খারাপ তুই।
রাফিম: বুজলাম। কিন্তু এ কে হু( রাতুলকে দেখিয়ে)

রুশা: ইয়ে না মানে।
রাফিম : বুঝেছি, দাড়া আম্মু আব্বুকে বলছি বাড়িতে গিয়ে। (রাফিম চলে যেতে লাগে)
রুশা: এই নাহ মুটকু ভাই আমার। দাড়া বলছি দাড়া। সখা না আমার তুই।(রাফিমের পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে)।
রাতুল থ হয়ে দাড়িয়ে এসব দেখে যাচ্ছে……

Writer: Asfi Jahan Iffti

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top