Golperjogot

Golperjogot

Bangla Romantic Love Story Valobashi Dujone Part 16 End

Valobashi Dujone Bangla Romantic Love Story

Imtihan Imran [ Part – 16 ]

রিক্সায় উঠার পর সিজান, রুমাল দিয়ে ফারিনের চোখ বেঁধে দেয়। ফারিন ভয় পেয়ে যায়।

” চোখ বাঁধছো কেনো?

” হুশ,বিশ্বাস রাখো আমার উপর।

ফারিন চুপ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারে রিক্সা থেমে যায়। সিজান,ফারিনকে নিয়ে রিক্সা থেকে নামে। সিজান ফারিনের এক হাত ধরে হাটতে থাকে। রাস্তার কোলাহল থেকে বন্ধ হয়ে যায়। আশেপাশে শুনশান নিরবতা। ফারিন,সিজানের হাত টা শক্ত করে ধরে রাখে। হঠাৎ করে সিজান,ফারিনের হাত ছেড়ে দেয়। 

” রুমাল খুলবে না। আমি বললে তখন খুলবে।

সিজান, ফারিনের কাছ থেকে সরে দাঁড়ায়। হঠাৎ ফারিনের কাছে মনে হচ্ছে,তার আশেপাশে সিজানের কোনো অস্তিত্ব নেই। ফারিন ভয় পেতে শুরু করে। সে সিজানের নাম ধরে ডাক দেয়।

” সিজান.

সিজানের কোনো সাড়াশব্দ নেই। ফারিন আবার ডাক দেয়।

” সিজান, কথা বলছো না কেনো? আমার ভয় করছে।

তাতেও সিজানের কোনো সাড়াশব্দ পাচ্ছে না। ফারিন ভয়ে ঘামছে। সে এবার হাত দিয়ে তার চোখের উপর থেকে রুমাল টা খুলে ফেলে।

 Valobashar Golpo Bangla Valobashi Dujone

রুমাল খুলে সামনে তাকাতেই ফারিনের দুই চোখ বিস্ময়ে ভরে যায়। এতোক্ষন চোখ বন্ধ থাকার কারনে আলোর ঝলকানি চোখে পড়তেউ ফারিনের চোখ কিছু সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।

ক্যান্ডিট লাইট দিয়ে পুরো জায়গাটা সাজানো হয়েছে। তার মাঝখানে লাইট দিয়ে একটা লাভ আকৃতি করে, তার মাঝখানে সিজান দাঁড়িয়ে আছে। সিজানের হাতে একটা বোর্ড,যেখানে লেখা Happy Birthday Farin

ফারিনের খুশি ধরে না। তার দুই হাত আপনা আপনিই নিজের মুখে চলে যায়। সিজান এবার ফারিনকে ইশারা দেয়,সে যেনো নিজের মাথার উপরে তাকায়। ফারিন সিজানের ইশারা মতে উপরে তাকাতেই আকাশে হ্যাপি বার্থডে ফারিন বাজি ফুটে 

ফারিনের ইচ্ছে করছে খুশিতে মরে যেতে, এই সবকিছু তার জন্য। ফারিন দৌড়ে সিজানের কাছে এসে সিজানের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

সিজান এবার নিজের মুখে বলে,

” Happy Birthday Dear Farin

Happy Birthday to you.

” Thank you. Thank you. 

হঠাৎ কারো কাশির শব্দ শুনে ফারিন হকচকিয়ে সিজানের বুক থেকে মাথা উঠায়।

নীলা, আয়ানকে দেখে ফারিন অবাক হয়ে যায়। এরা এখানে কেনো?

” হ্যাপি বার্থডে টু ইউ ফারিন।

” হ্যাপি বার্থডে ফারিন। 

” থ্যাঙ্কিউ। তোরাও এসেছিস?

” হ্যাঁ ফারিনের জন্মদিনে আমরাও দাওয়াত পেয়েছি। (হেসে)

” হয়েছে চল কেক কাটি।

” কেকের ব্যাবস্থাও আছে?

” অবশ্যই।

ভালোবাসার গল্প 

ফারিন খেয়াল করল ,একটা ছোট্ট টেবিলে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। ফারিন টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। কেক এর উপর লেখা আছে, Happy Birthday Farin.

” ফারিন মোমবাতি নিভিয়ে কেক কাটো।

ফারিন ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নিভিয়ে কেক কাটে। বাকি তিনজনে সমস্বরে বলে,

” হ্যাপি বার্থডে টু ইউ, হ্যাপি বার্থডে টু ইউ,হ্যাপি বার্থডে টু ইউ ডিয়ার ফারিন।

ফারিন হেসে ছুরি দিয়ে কেক কাটে। সিজান কেকের টুকরো নিয়ে ফারিনকে খাইয়ে দেয়। ফারিনও ছোট্ট এক টুকরো নিয়ে সিজানকে খাইয়ে দেয়। তারপর নীলা ও আয়ানকে খাইয়ে দেয়।

সিজান ফারিনকে নিয়ে ক্যান্ডিট লাইট দিয়ে আকৃতি দেওয়া লাভের মাঝখানে দাঁড়ায়। 

” এখানে আবার কেনো?

সিজান জবাব না দিয়ে পকেট থেকে একটা আংটি বের করে ফারিনের সামনে হাটু গেড়ে বসে। ফারিন শুধু অবাক হয়ে দেখছে। আজকে মনে হচ্ছে সিজান তাকে অবাকের দুনিয়ায় ভাসিয়ে নিবে।

” বেশি কিছু বলব না,শুধু বলতে চাই,

আমি তোকে খুব করে চাই,

খুব করে ভালোবাসতে চাই,

খুব করে তোর ভালোবাসা পেতে চাই।

আমি তোকে আমার বউ করতে চাই।

বিয়ে করবি আমাকে.?

সিজান তার হাতের আংটি টা ফারিনের দিকে বাড়িয়ে দেয়। ফারিনের যেনো খুশি ধরে না,সে মাটি থেকে সিজানকে উঠিয়ে সিজানকে ঝাঁপটে জড়িয়ে ধরল।মুখে বলল,

” হুম। কিন্তু একটা শর্ত আছে।

” কী শর্ত শুনি? (ফারিনকে বুক থেকে তুলে)

” এখনো তো আমাকে ভালোবাসিস বলিস নি। অথচ বিয়ে করতে বলছিস,হ্যাঁ? 

” এখনই বলছি।

 

আমি তোকে ভালোবাসি ফারিন।

” এভাবে হবে না,তুমি করে বলতে হবে।

” আমি তোমাকে ভালোবাসি ফারিন। বিয়ে করবে আমাকে?

” হুম করবো। 

ফারিনও আবারও সিজানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। কিছুক্ষণ পর নীলা বলে উঠে,

” আমরা এখানে আছি। সব কিছু দেখে ফেলতেছি।

নীলার কথা শুনে সিজান হেসে উত্তর দেয়।

” চোখ বন্ধ করে রাখ,নাহলে অন্যদিকে তাকিয়ে থাক।

” আমাদের চোখ বন্ধ করতে না বলে, তোমরা জোড়াজোড়ি বন্ধ রাখো।

ফারিন সিজানের বুক থেকে উঠে আসে। সিজান ফারিনের হাতে আংটি টা পড়িয়ে দেয়।

আয়ান,নীলা হাত তালি দিয়ে দুজনকে কংগ্রাচুলেশন জানায়।

Romantic Love Story Bangla

দুইটার পরে তারা বাসায় ফিরে আসে। ফারিন সিড়ি দিয়ে উপরে উঠার সময়,আবার সিজানের কাছে ফিরে আসে। সিজান ভ্রু উঁচু করে জিজ্ঞেস করে,

” কী?

ফারিন জবাব না দিয়ে হুট করেই সিজানকে জড়িয়ে ধরে। ফারিনের এমন কান্ডে সিজান হেসে দেয়। নিজের বুক থেকে ফারিনের মাথা টা উঠিয়ে, সিজান ফারিনের কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দেয়।

আগামী সপ্তাহে সিজান-ফারিনের বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। দুজনে তো হেব্বি খুশি, খুব তাড়াতাড়িই তাদের বিয়ে হচ্ছে বলে।

আজকে বৃহস্পতিবার, সিজান ফারিনের গায়ে হলুদ।

আত্নীয়_স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের উপস্থিতিতে দুই বাড়ি মুখরিত হয়ে উঠেছে।

গায়ে হলুদের সাজে ফারিনকে তার কাজিনরা সাহায্য করেছে। এমনসময় ফারিনের ফোনের রিংটোন বেজে উঠে। ফারিন ফোন হাতে নিয়ে দেখে,সিজানের ফোন।

” তোরা বের হও তো এখন, পরে আসিস।

” সমস্যা কী আমরাও থাকি। দেখি দুলাভাইয়ের সাথে কী কথা বলো তুমি। (সবাই হেসে উঠে)

” দেখতে হবে না, বের হও তো।

 

ফারিন সবাইকে জোর করেই রুমের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। রুমের ভিতর এসে ফোন রিসিভ করে।

” বাহ আমার বউকে তো হেব্বি লাগছে। প্রেমে পড়ে গেলাম।

” এইসব ঢঙের কথা বাদ দিয়ে বলো তো, কেনো ফোন দিয়েছে। 

” আমার বউকে দেখতে ইচ্ছে করছে তাই। এভাবে দেখে মন ভরছে না। বাসায় চলে আসি।

” এই না..আমাকে লজ্জায় ফেলতে চাও। ভুলেও আসবে না। কালকেও তো আসছিই। তখন ইচ্ছে মতো দেখিও।

” ইস! কালকের দিনটা আসছে না কেনো?

সিজানের কথা শুনে ফারিন হেসে দেয়।

” পাগল একটা। 

ফারিন,সিজানকে পাশাপাশি বসানো হয়েছে। সিজান বারবার তার বউয়ের দিকে তাকাচ্ছে, আর প্রতিবারেই তার কাজিনরা এই নিয়ে মজা করে হাসাহাসি করছে।

” আমার বউকে আমি দেখছি, তোদের সমস্যা কী?

সিজানের কান্ডে ফারিনের লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে। অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ চলে এসেছে। 

সিজান,ফারিন দুজনেই কবুল বলে এক পবিত্র বন্ধনে চিরদিনের জন্য আবদ্ধ হয়ে যায়।

Bangla Love Story

অনেকক্ষন থেকে ফারিন বাসরঘরে সিজানের জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে। কিন্তু সিজানের আশার কোনো নাম গন্ধও পাচ্ছে না। ফারিন বসে থাকতে থাকতে বোর হয়ে যাচ্ছিল। তাই সে রুমে হাটাহাটি করে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াল।

কিছুক্ষণ পর কেউ একজন এসে ফারিনকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। ফারিন স্পর্শ বুঝতে পেরে, সিজানের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। অভিমানী সুরে বলে,

” ছাড়ো আমাকে। এতোক্ষনে আসার সময় হলো তোমার। রুমে যে একা একা বসে আসি, সে খেয়াল তো কেউ রাখে না।

” সরি বউ। এই যে কানে ধরলাম। এই ভুলের জন্য আমাকে যা শাস্তি দিবেন, মাথা পেতে নিবো।

সিজান,ফারিনকে ছেড়ে দিয়ে কানে ধরে। ব্যস ফারিনের রাগ অভিমান সব হাওয়ায় মিলে যায়। মুখে এখন হাসির রেখা ফুটে উঠেছে।

” পাগল। যাও তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম।

সিজান ক্ষমা পেয়ে আচমকায় ফারিনকে কোলে তুলে নেয়।

” কী করছো?

” ক্ষমা যেহেতু পেয়েছি এবার তাহলে বউকে ভালবাসতে পারব।

” এই না..আমার লজ্জা করবে।

” শুনবো না তো কথা…

সিজান ফারিনকে ফুলের বিছানায় ফেলে দিয়ে, ফারিনের উপর উঠে ফারিনের দু জোড়া ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে যায়। সিজান, ফারিনের ঠোঁট থেকে সরে এসে ফারিনের পেটে ঠোঁট ছোঁয়ায়। ফারিন শিউরে উঠে। শক্ত করে সে সিজানের চুলের মুঠি চেপে ধরে।

ভালোবাসায় মাতলামি করতে থাকে নতুন এক যুগল। দুজন দুজনকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় ভালোবাসার সাগরে। তাদের এই ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে রইল বারান্দা দিয়ে আসা চাঁদের আলো।

Bangla Romantic Love Story

ফারিন-সিজানের বিয়ের পর ছয় মাস হতে চলল। আজকে দুজনেই তাদের প্রাক্তন কলেজে আসল। কলেজের নবীনবরণ অনুষ্টানে দাওয়াত পেয়েছে জনপ্রিয় তরুন শিল্পী সিজান চৌধুরী। তার সাথে তার মিসেসকেও আনার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এই জন্যই আজকে কলেজে আসা।

তরুন কণ্ঠশিল্পী মাইক হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছে। সবাই উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে গান শুনার জন্য।

” প্রথমে সবাইকে স্বাগতম আমাকে সাপোর্ট দিয়ে এখান পর্যন্ত আনার জন্য।

আমি একটা ডুয়েট গান করতে যাইআমার সাথে কন্ঠ দিবে আমার মিসেস, যদি আপনাদের আপত্তি না থাকে।

সবাই চিৎকার করে বলছে, আমাদের কোনো সমস্যা নাই। প্লিজ প্লিজ আপনার মিসেসকে নিয়ে গানটা করেন।

সিজান তার মিসেসকে স্টেজে আসার জন্য অনুরোধ করে। ফারিন হাসিমুখে স্টেজে সিজানের পাশে দাঁড়ায়। মিউজিক শুরু হয়।

 

সিজান,

অনেক সাধনার পরে আমি,

 পেলাম তোমার মন।

 পেলাম খুঁজে এই ভুবনে,

 আমার আপনজন।

 

ফারিন,

তুমি বুকে টেনে 

   নেওনা প্রিয় আমাকে

   আমি ভালোবাসি, ভালোবাসি

   ভালোবাসি তোমাকে।

 

সিজান,

অনেক সাধনার পরে আমি,

পেলাম তোমার মন।

পেলাম খুঁজে এই ভুবনে 

আমার আপনজন।

(পুরো গান নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন)

Also Read : Valobashi Dujone Part 1

Another Website Link

গান শেষ হতেই হাততালিতে ভার্সিটি মাঠ মুখরিত হয়ে উঠে। সিজান_ফারিন হাত নেড়ে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠে বসে। গাড়িতে উঠেই ফারিন সিজানের কাঁধে মাথা রাখে।

“খারাপ লাগছে?

” না ভালো লাগছে। (হেসে)

সিজানও হেসে ফারিনের কপালে চুমু দিয়ে এক হাত দিয়ে তার মিসেসকে জড়িয়ে ধরে ড্রাইভিং এ মনোযোগ দেয়। ফারিন হেসে চোখ বুজে নেয়।

সমাপ্ত

Writer- ইমতিহান ইমরান

Join Our { FB PAGE } and { FB GROUP } For Every Single Minutes Update Of  { Golper Jogot- Largest Story Platform }. Also Please Share Our Story On Your Social Media Platform and with Your Friends. 

Leave a Comment