Valobashi Dujone
Imtihan Imran ( Part – 2 )
সিজান চোখ বন্ধ করে গিটারেরে টুংটাং আওয়াজের সাথে গানটি গাচ্ছে।তার চুল বেয়ে টুপ টুপ করে বৃষ্টির পানি পড়ছে। ফারিন ছাতা নিয়ে এসে দাঁড়িয়ে মুগ্ধ হয়ে সিজানের কন্ঠে গানটি শুনছে।
সিজান গান গাওয়া শেষ হলে,চোখ খুলে খেয়াল করে ফারিন ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
“কেমন লাগলো গান?
” খুব বাজে।তোমার গান শুনলে,গান শুনার ইচ্ছাটাই মরে যায়।
“হাহা হাসাইলি। যেখানে সিজানের কন্ঠে গান শুনার জন্য সবাই হুমড়ি খেয়ে এসে পড়ে, সেখানে তোর কথা অনেক হাইস্যকর।
” সবাই গানের কী বুঝে? সবাইর ব্রেন কী আমার মতো নাকী?
“একদম ঠিক বলেছিস। তোর ব্রেন একদম পঁচা।
“আচ্ছা বাদ দেও। এবার বলো এভাবে মেয়েদের মতো বৃষ্টিতে ভিজতেছ কেনো?
” তুই জানিস না? আমার বৃষ্টিতে ভিজতে অনেক ভালো লাগে।
“হুম। সারাজীবন শুনে আসলাম, দেখে আসলাম মেয়েরা বৃষ্টিতে ভিজতে পাগল।আর এখানে আমার জামাই তার উল্টো।
” ছাতা টা ফেলে দিয়ে তুইও বৃষ্টিতে ভিজতে থাক। ভালো লাগবে।
” বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর বাধার কোনো ইচ্ছাই আমার নাই।
” আরে জ্বর কে ভয় পেলে চলে?
এমন সময় খালা এসে ছাতাটা নিয়ে আমার পাশে এসে দাড়াল।
{ Valobashi Dujone Romantic Love Story Bangla }
“হায়! হায়! পোলাডা বৃষ্টিতে ভিইজা চুপসে যাইতেছে।আর দেখ দেখ ছেমড়ি ডা ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কতো বড় পাষান মাইয়া।
” তোমার পোলা বৃষ্টিতে ভিজতে চায়, আমি কী করবো?
” ও বৃষ্টিতে ভিজতে চায়,আর তুই ভিজতে দিলি। ক্যান জোর করতে পারলি না?
” তোমার পোলা আমার কথা শুনবে না।
” তুই ছেমড়ির কথা শুনার দরকারও নাই। একদম ঠিক করছত বাজান।দরকার পড়লে সারারাত বৃষ্টিতে ভিজবি, তারপরেও এই ছেমড়ির ছাতার ভিতর ঢুকবি নাহ।
“খালা তুমি এখানে কেনো আসলে?
” ওমা এগিন কিয়া কস? আই আইতান নো,তো কে আইবো?আমার পোলাডা সারারাত বৃষ্টিতে ভিইজা বৃষ্টির পানি খাইবো,আর আমি বইসা বইসা দেখমু, এ হতে পারে না।
“বৃষ্টির পানি তো অলরেডি খেয়ে ফেলছি। এখন এসে লাভ কী হলো?
” তোর তো বৃষ্টি পছন্দ তাই বৃষ্টির পানি খাইতে দিছি।এখন আর দিমু না।চল ঘরে চল।
“যাও খোকা যাও,তোমার ঢংগি খালার সাথে ঘরে যাও।
” দেখলি কতবড় বেয়াদ্দপ মাইয়া,আমারে বলে আমি নাকী ঢং করি। তুই ঢং করস,তোর জামাই ঢং করস।
ফারিন দৌড়ে এসে খালার সামনে দাঁড়ায়।
“হ ঠিক কইছে আমার জামাই ঢং করে আমিও ঢং করি। তাই না জামাই?(হেসে সিজানকে উদ্দেশ্য করে)
” ছেরি চুপচাপ ঘরে যা,কথা বাড়াইস না।
“হু।
ফারিন,খালাকে একটা ভেংচি দিয়ে চলে যায়।
” তোর মুখ আমি এক ঘুষি দিয়ে ভোতা করে ফেলবো,ফাজিল মাইয়া,শুধু ভেংচি দেয়।
“খালা তুমিও তো ভেংচি দেও।
” তুই এখন ওর জন্য আমার সাথে ঝগড়া করবি।
“নাহ,চলো যাই।
{ Romantic Love Story Bangla }
নবীনবরন ফাংশনের দিন,
মুখে পানির ছিটেফোঁটা পড়তেই সিজানের ঘুম ছুটে যায়। নিভু নিভু চোখ খুলতেই তার সামনে একটা লাল পরীকে দেখতে পায়।সিজান বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে।সে কী কোনো স্বর্গে চলে এলো নাকী?
ফারিন,সিজানকে এভাবে বিস্ময় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করল,
” কী হয়েছে জামাই?এভাবে তাকিয়ে কী দেখছো?
ফারিনের কথা যেনো সিজানের কান অব্দি পৌছায়নি। সে যেনো এই মুহুর্তে অন্য কোনো জগতে অবস্থান নিয়েছে।
ফারিন,তার চুলের পানি গুলো আবার সিজানের মুখে ছিটায়। সিজানের হুশ ফিরে আসে।
“কী সমস্যা?
” আমার রুমে এসে আমার ঘুম ভেঙে দিয়ে, আমাকেই জিজ্ঞেস করিস কী সমস্যা।
“তখন থেকে কোনো কথা না বলে তাকিয়ে আছো। তাই জিজ্ঞেস করলাম,কী সমস্যা?
“আমি আবার কখন কার দিকে তাকালাম?
ফারিন,সিজানের কাছে এসে সিজানের কপালে হাত দেয়।
” না ঠিকি তো আছে। কোনো সমস্যা নাই।
” কী শুরু করলি সকাল সকাল আমার আবার কী সমস্যা থাকবে?
” সমস্যা যদি নাই বা থাকে তাহলে উল্টাপাল্টা বলছো কেনো?
“আমি কখন উল্টাপাল্টা বকলাম?
” উফ!বাদ দেও।আজকে নবীনবরন অনুষ্টান ভুলে গেলে।কলেজে যাবে না?
“যাব তো।কয়টা বাজে?
” দশ টা বাজে।
” কীইই?
{ Bangla Valobashar Golpo }
সিজান লাফ দিয়ে উঠে,তার ফোন খুজে টাইম দেখার জন্য।ফোনে দেখে আটটা বাজে।
” মজা করছিস আমার সাথে আট টাকে দশটা কেনো বললি?
“হিহি।তোমাকে উঠানোর নিঞ্জা টেকনিক।
ফারিন হাসছে। সিজান মুগ্ধ হয়ে ফারিনের হাসি দেখছে।মুক্ত ঝরা,অপরূপ হাসি তার।সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে,এমন দৃশ্য দেখলে অবশ্য সারাদিন বিন্দাস ভালোই যাবে।
সিজান,এবার ভালো করেই ফারিনের দিকে তাকায়।
লাল শাড়ি,নীল চুড়ি,কানো ঝুমকো দুল,ঠোঁটে হালকা গোলাপী লিপস্টিক,ভেজা চুল।অসম্ভব সুন্দর লাগছে ফারিনকে সবকিছুই ।
Also Read Those Related Love Story
ফারিন হাসি থামিয়ে,সিজানের সামনে তুড়ি বাজায়।
” এই যে মিস্টার। এভাবে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে কী দেখছেন? ক্রাশ খেয়ে গেছেন,তাই না?
“যেভাবে সেজেছিস,মনে হচ্ছে আজকে তোর বিয়ে লাগছে?এইসব সাজগোজ কার জন্য?
” ওমা নবীনবরন অনুষ্ঠানে যাবো,একটু না সাজলে কি হয়? তোমাকে বুঝতে হবে,তোমার বউ কতোটা সুন্দরী?
“সুন্দরী না ছাই,পেত্নীর মতো লাগছে।
” এই শুনো সুনাম না করতে পারলে করবে না,তারপরেও আমাকে পেত্নি বলবে না,হু।
“হইছে এখন ঘ্যানঘ্যান না করে রুম থেকে বের হও।
” আমি রুমেই থাকবো। তুমি ফ্রেশ হয়ে নেও,যাও।
“তুই রুম থেকে বের হবি,তারপর আমি ফ্রেশ হতে যাবো।
” এমন করো কেনো আমার সাথে,আমি তোমার বউ না!
” এতো সুন্দর করে সেজেছিস কেনো?
” এতোক্ষন তো পেত্নি বললে,এখন সুন্দর বলছো যে?
” যেটা জিজ্ঞেস করছি,সেটার উত্তর দে?
” সত্যি বলবো?
” অবশ্যই।
” আমার সব সাজ তো শুধু তোমার জন্য । আজকেও তোমার জন্য সেজেছি আমি।কলেজের সবচেয়ে স্মার্ট, হ্যান্ডসাম, ড্যাশিং ছেলের বউ আমি। তার সাথে তো আমাকে এভাবেই মানায়।
” আমি কী তোকে একবারও বলেছি, আমার সাথে তোর যায় না?
” এটাও তো বলো নাই,যে আমাকে সব অবস্থায় তোমার সাথে মানায়।
সিজান আর কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে যায়। যতক্ষন এখানে থাকবে,এর সাথে বকবক করেই যেতে হবে।
Also, Read These Another Love Story
ফারিন এই ফাঁকে সিজানের বিছানা,সবকিছু গুছিয়ে পরিপাটি করে ফেলে। বইপত্র টেবিলে সুন্দর করে গুছিয়ে রাখে। সিজান ওয়াশরুম থেকে এসে দেখে তার রুম একদম গুছানো পরিপাটি হয়ে আছে।ফারিন রুমে নেই। সিজানের আর বুঝতে বেগ পেতে হয়নি,যে কাজটা কার?
সিজান রেডি হয়ে রুমের বাইরে চলে আসে।ফারিন হা করে,সিজানের দিকে তাকিয়ে আছে।
” কীরে হা করে তাকিয়ে আছিস কেন? মুখে মশা ঢুকবে তো।
” আল্লাহ! তুমি এতো সুন্দর কেনো? ক্রাশ খেয়ে গেলাম আমি।
” মাসাল্লাহ বল।
“মাসাল্লাহ। কোনো শাকচুন্নীর নজর যেনো না লাগে।
” চল এবার যাওয়া যাক।
” চলো।
ফারিন বাইকে উঠেই সিজানকে জড়িয়ে ধরে বসে।
” এভাবে জড়িয়ে ধরেছিস কেনো?
” জড়িয়ে না ধরলে আমি পড়ে যাবো।
” পড়বি না। আস্তে চালাবো। কাঁধে হাত দিয়ে বস।
” না আমি এভাবেই বসবো। আর তুমি বাইক জোরে চালাও আমার সমস্যা নেই।
” ঘাড়ত্যাড়া মেয়ে একটা।
” তোমার বউ।
” হুম।
” ওই এতো সুন্দর করে সাজার কী দরকার ছিল?
” তুইও তো সেজেছিস।
” তোমাকে তো আজকে মেয়েরা খেয়েই ফেলবে।
” মেয়েরা রাক্ষসী নাকী?
” তোমাকে দেখে রাক্ষসীই হয়ে যাবে।
” তাই,হাহা।
” হাসবা না,ফাজিল।
আচ্ছা শুনো তুমি আজকে গান গেও না।
” ওমা কেনো?
” তোমার গান বিচ্ছিরি হয়,তাই।
” আমার গান বিচ্ছিরি হলে হবে।তুই শুনিস না। তোকে কেউ শুনতে বলেনি।তুই বাসায় চলে আসিস।
” হু এমনিতেও আজকে যা লাগছে না,মেয়েরা তো পাগল হয়ে যাবে। তারউপর যদি গান গাও, মেয়েরা তো ফিদা হয়ে উলটে পড়ে যাবে। আল্লাহ আমার জামাইকে মেয়েদের হাত থেকে রক্ষা করো,শুধু আমি বাদে।(মনে মনে)
Click Here For Next Part- চলবে…
Writer- ইমতিহান ইমরান
Valobashi Dujone romantic Love Story Part 2 |