Golperjogot

Golperjogot

ভিলেন – থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 32 | Villain Action Story

ভিলেন পার্টঃ৩২
Mona Hossain

আমি শাড়ি পড়তে পারি না তুই পরিয়ে দে..

আকাশঃ আমি কবে থেকে শাড়ি পরাতে পারি?তুই মেয়ে হয়ে পারিস না আমি ছেলে হয়ে কি করে পারব?

মেঘলাঃ আচ্ছা তোর লাগবে না দাড়া আমি নাবিল ভাইয়া কে ডাকি…নাবিল ভাইয়া, নাবিল ভাইয়া একবার আমার রুমে আয় ত…

আমি নাবিল ভাইয়ার নাম নিতেই ভাইয়া আমার মুখ চেপে ধরল…

মেঘলাঃ উম উম…

আকাশঃ ইচ্ছে করছে গলাটা টিপে দেই ফাযিল মেয়ে… নাবিল কেন দিবে আমি পরিয়ে দিচ্ছি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক।

আকাশ ভাইয়া আমার পরনের শাড়িটা খুলছে ঠিক তখনি নাবিল আর নিলিমা আসল। কারন আমি নাবিল ভাইয়াকে আগেই বলে রেখেছিলাম আমি ডাকলে যেন নিলিমাকে নিয়ে আসে।আমি নিলিমাকে দেখাতে চাই আকাশ আমাকে কতটা ভালবাসে।

নাবিল ভাইয়া আমার কথামত নিলিমাকে নিয়ে আসল।

নাবিল সামনে ছিল তাই নিলিমাকে দেখা গেল না আকাশ ভাইয়া নাবিল ভাইকে দেখেই আমাকে সামনে থেকে এসে জড়িয়ে ধরল কারন আমার পরনে কাপড় নেই।

নাবিল ব্যাপারটা বুঝেও নিলিমাকে জ্বালানোর জন্য বলল,

নাবিলঃ কিরে আকাশ তোরা এখানে কি করছিস?

আকাশঃ কি করছি দেখতে পারছিস না?

নাবিলঃ দেখতে পাচ্ছি কিন্তু রোম্যান্স দরজা লক করতে হয়।

আকাশঃ ভাই রোম্যান্স করছে সেটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে না দেখে দরজা টা লক করে যেতে পারছিস না?

নাবিলঃ বাহ বাহ গুরু তুমিও তাহলে গোলাপজামনের লোভে পড়লে..??

আকাশঃ তোকে না আমি…

আকাশ ভাইয়া পিছন ঘুরে আমাকে ডেকে রেখেছে তাই সে নাবিল বা নিলিমাকে দেখতে পাচ্ছে না কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছে আমার কাছে হেরে নিলিমার মুখটা দেখার মত হয়েছে।ওর অবস্থা দেখে আমার খুব হাসি পাচ্ছে।

আকাশঃ এখনো দাঁড়িয়ে আছিস?

নাবিলঃ যাচ্ছি যাচ্ছি বলে দরজা লক করে চলে গেল।



নিলিমাঃ ওরা ভিতরে কি করছিল?

নাবিলঃ দেখতে পেলে না..??

নিলিমাঃ কিন্তু এটা কি করে সম্ভব আকাশ ত মেঘলাকে ভালবাসে…

নাবিলঃ উম না শব্দ টা উচ্চারণ করো না, আকাশ মেঘলাকেই ভালবাসে…

নিলিমাঃ পার্টিতে গেলেই বুঝতে পারবে কে কাকে ভালবাসে… (মনে মনে)



এদিকে আকাশ বহু চেস্টার পরেও মেঘলাকে শাড়ি পরাতে পারল না।

আকাশঃ এটা কেমন ড্রেস কোন নমুনা নেই শুধুমাত্র এক টুকরা কাপড়, কিভাবে পরে এটা? জানিস মেঘলা আমার মনে হচ্ছে এই শাড়িটা ঠিক ঠাক ভাবে বানানো হয় নি।

মেঘলাঃ হি হি হি…

আকাশ রেগে গেল,
বেয়াদবের মত হাসছিস কেন শাড়িতে কি সুন্দর ভাঁজ থাকে দেখ এটায় আছে কি..??

মেঘলাঃ ভাঁজ না কুচি আর সেটাও থাকে না পরার সময় দিতে হয়। ছাড় তুই যে পারবি না বুঝছি…

আকাশঃ পারব না মানে অবশ্যই পারব…নাবিল এই নাবিল একবার আয় তো.

মেঘলা ওকে আবার ডাকছিস কেন

আকাশঃ তুই এত কথা বলছিস কোন সাহসে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাক।

নাবিল দরজার সামনে এসে,
আবার কি হল..???

আকাশঃ চোখ বন্ধ করে ভিতরে আয়।

নাবিলঃ মানি কি?

আকাশঃ মানে কি আমি তোকে সেটা পরে বুঝাচ্ছি আয় শালা…

নাবিল কিছু বলার আগেই আকাশ নাবিলকে টেনে ভিতরে আনল।
তার আগে মেঘলার গায়ে কাপড় জড়িয়ে দিল।

নাবিলঃ কি হয়েছে বল…

আকাশঃ শাড়ি কিভাবে পরায় বল।

নাবিলঃ শাড়ি কিভাবে পরায় মানে…??

আকাশঃ মেঘলা যে বলল তুই শাড়ি পরাতে পারিস?

নাবিলের কথা শেষ হওয়ার আগেই মেঘলা ইশারায় নাবিল কে কিছু বুঝানোর চেষ্টা করছে…

নাবিলঃ কি ইশারা করছে..??
ওহ আচ্ছা মেঘলা নিশ্চুই আকাশ কে জেলাস ফিল করানোর জন্য বলেছিল আমাকে দিয়ে
শাড়ি পরাবে..কিন্তু আমি কিভাবে বলব শাড়ি কিভাবে পরায়?কাউকে কখনো পরিয়েছিলাম নাকি?
ভালভাবেই ফেঁসেছি এবার…(মনে মনে)

আকাশঃ চুপ করে আছিস কেন বল..

নাবিলঃ না মানে এভাবে এভাবে এভাবে পরায়।

আকাশঃ পাগলের মত কিসব বলছিস এভাবে এভাবে কিভাবে? ভাল করে বল না।আমি পারছি না ত,
আচ্ছা নে তুই পরা

নাবিলঃ আমি মা মানে…

মেঘলাঃ তোদের কারোর পরাতে হবে না আমি ছোট মার কাছ থেকে পরে নিব যা তোরা।

নাবিলঃ কিন্তু মা নেহা মিলি সবাই ত পার্টি সেন্টারে চলে গেছে শুধু বড় মা আর নিলিমা আছে।

আকাশঃ কেন অন্য কারো পরাতে হবে কেন? নাবিল পরাবে..

মেঘলাঃ এত মহা ঝামেলা হয়ে গেল কেন যে নাবিল ভাইয়ার কথা বলেছিলাম(মনে মনে)

আকাশঃ নাবিলের বাচ্চা পরা বলছি এত ভাব দেখাচ্ছিস কেন?

নাবিলঃ তুই পরা ভাই আমি হেল্প করছি।

আকাশ আর নাবিল ২ জনের অবস্থা নাজেহাল করেও শেষ পর্যন্ত মেঘলার শাড়ি পরা হল না কারন যেমন তেমন শাড়ি পরে ত আর পার্টতে যাওয়া যায় না।

আকাশঃ ছাড় মেঘলা তোর শাড়ি পরে কাজ নেই সারাজীবন যেমন টিশার্ট পরেছিস আজও তেমনি টিশার্ট এই পর।

মেঘলাঃ পার্টিতে কেউ টিশার্ট পরে যায়?

আকাশঃ তুই যাবি..

মেঘলাঃ না যাব না দেখ তোদের কত ভাল দেখাচ্ছে..আমাকে ভিখারির মত লাগবে…আমি টিশার্ট পরে যাব না।

আকাশঃ আমার কথার উপড়ে কথা বলছিস?
একটা থাপ্পড় মারব পর বলছি…

মেঘলাঃ আমার ভাল কোন টিশার্ট নেই…

আকাশঃ শাড়ি নেই,পার্টি ড্রেস নেই, টিশার্টও নেই তাহলস আছে টা কি শুনি..??

মেঘলাঃ আমার কিছুই নেই হয়েছে..??

আকাশঃ চুপ করে দাঁড়িয়ে থাক,
নাবিল আমার রুমে ওয়াড্রপের ১ম তাকে একটা টিশার্ট আছে নিয়ে আয় তো..

নাবিল আকাশকে ভেংগানোর জন্য বলল, তুই কি এখন নিজের কাছে মেয়েদের টিশার্ট রাখা শুরু করেছিস নাকি?

আকাশঃ তোকে ত আমি…
আকাশ নাবিলের দিকে এগিয়ে যেতেই নাবিল দৌড়ে চলে গেল..




নাবিল আকাশের রুমে গিয়ে ওয়াড্রপে দেখল সেখানে অনেক গুলি গিফট বক্স প্রতিটার উপড়ে লিখা মেঘলা…

নাবিলঃ তারমানে আকাশ মেঘলার জন্য এত এত গিফট এনেছে..?? কিন্তু দিল না কেন কি চায় আকাশ..??ভাবতে ভাবতে একটা টিশার্ট নিয়ে ফিরে আসল।

মেঘলা টিশার্ট পরতে রাজি না তবুও আকাশ বকে টিশার্ট পরতে বাধ্য করল

কিন্তু তাতেও আকশের মন ভরল না কারন সে দেখল টিশার্ট এ মেঘলাকে আরো বেশি কিউট লাগছে…
তাই আকাশ এসে মেঘলার চুল বেঁধে দিয়ে লিপস্টিক মুছে দিল।

নাবিলঃ কি করছিস?

আকাশঃ আমি ওকে সাজিয়ে দিব।

মেঘলাঃ কিন্তু মুছছিস কেন এই লিপস্টিক টাই ত ভাল লাগছিল

আকাশঃ হ্যা খুব ভাল একদম রসে ডুবানো গোলাপজামনের মত।

আকাশের কান্ড দেখে নাবিল আর মেঘলা ২জনেরেই হাসি পাচ্ছে..
মেঘলা কোন রকম হাসিটা চেপে রেখে বলল,
আচ্ছা বেশ তুই তোর মত করে সাজিয়ে দে…

আকাশ মেঘলার লাল লিপস্টিক মুছে হালকা গোলাপি লিপস্টিক পরিয়ে দিল কিন্তু তাতেও মেঘলাকে সুন্দর লাগছে।

আকাশ এই লিপস্টিক টাও মুছে দিল।

নাবিলঃ আবার কি হল..??

আকাশঃ মেঘলার ঠোঁট এমনি সুন্দর লিপস্টিক দিতে হবে না..

মেঘলাঃ ভাইয়ার যে হিংসা হচ্ছে সেটা ত আমি বেশ ভাল করেই বুঝতে পারছি তাই কিছু বল্লাম না।নাবিল ভাইয়াও চুপ করে মজা নিচ্ছে।

বেশ কিছুক্ষন আমার সাজ মুছার বৃথা চেস্টা করে ভাওয়া ক্লান্ত হয়ে বিছানায় বসে পড়ল।

মেঘলাঃ কিরে ভাইয়া কি হল..??

আকাশঃ আমি পার্টিতে যাব না…বলে আকাশ চলে গেল।

আমি আর হাসিতে আটকাতে পারলাম না ভাইয়ার অবস্থা দেখে যেকারোই হাসি পাবে।

নাবিলঃ হায়রে পাগল এত জেলাস যে পার্টিতেই যাবে না..??

মেঘলাঃ তুই গিয়ে বুঝিয়ে বল।

নাবিল ভাইয়া আকাশ ভাইয়ার ঘরে গেল আমিও চুপচাপ পিছন পিছন গেলাম।

কিন্তু সেখানে গিয়ে আমি আর নাবিল ভাইয়া ২ জনেই অবাক হলাম,
ভাইয়া যে সত্যি সত্যি যাবে না সেটা বেশ বুঝতে পারলাম কারন সে ইতিমধ্যে নিজের জামা কাপড় খুলে ফেলেছে।

নাবিলঃ কি রে কি হল যাবি না কেন?

আকাশঃ এমনি যাব না তোরা যা।

নাবিলঃ আজব তোর সাকসেস পার্টিতে তুই এই যাবি না? এটা কেমন কথা..??লোকে কি বলবে?

আকাশঃ যা খুশি বলুক আমার কি?

নাবিলঃ কেন যাবি না সেটা ত বল…

আকাশ ভাইয়া এবার উঠে বসল।আর আমাকে দেখে বলল তুই এখানে কেন? নিচে যা।
ভাইয়ার মোড অফ দেখে আর কথা না বাড়িয়ে চলে আসলাম।



এদিকে,

নাবিলঃ এবার বল কি হয়েছে মন খারাপ করলি কেন?

আকাশঃ মেঘলাকে এত সুন্দর দেখায় কেন?

আকাশের কথা শুনে নাবিলের খুব হাসি পাচ্ছে…
কিন্তু হাসলে আকাশ লজ্জা পাবে তাই হাসল না।

নাবিলঃ ত সেটা কি আজ নতুন দেখলি? এতদিন দেখিস নি।

আকাশঃ আমি কখনো ওর দিকে এভাবে তাকায় নি।

নাবিল বুঝেও বলল, তো আজ কিভাবে তাকিয়ে ছিলি?
নাবিল আকাশের সাথে মজা নিচ্ছে আকাশ সেটা বুঝতে পারল না।

আকাশঃ জানি না কিভাবে তাকিয়েছি কিন্তু আজ আমার চোখে শুধু ওর চেহারাটাই ভাসছে…

নাবিলঃ আচ্ছা বুঝলাম ও সুন্দরী তাতে তোর সমস্যা কি?পার্টিতে যাবি না কেন?

আকাশঃ সবাই ওর দিকে তাকিয়ে থাকবে বিশেষ করে আমার বন্ধুগুলি সেটা আমার সহ্য হবে না।

নাবিলঃ তুই কি ভয় পাচ্ছিস নাকি? ওকে নিজের করে রাখার ক্ষমতা তোর নেই?

আকাশঃ অবশ্যই আছে..

নাবিলঃ তাহলে কেউ তাকাক তাতে তোর কি কেউ হাত বাড়ালে তখন না হয় হাত টা ভেংগে দিস।তুই না গেলে ব্যাপার টা খারাপ দেখায়।
নাবিল অনেক বলে আকাশ কে রাজি করাল।

আকাশ আচ্ছা তুই যা আমি রেডি হয়ে আসছি তুই আমি মেঘলা একসাথে যাব।



কিছুক্ষন পর,
সবাই যাওয়ার জন্য রেডি হল।
আকাশ রেডি হয়ে নিচে নামার সাথে সাথেই,

রুবিনা বেগমঃ আকাশ তুমি নিলিমাকে নিয়ে যাও।

আকাশঃ কিন্তু মা…

রুবিনা বেগমঃ কোন কিন্তু না

আকাশঃ নিশ্চুই নিলিমা শাকচুন্নি মার কান ভাংগিয়েছে।
আকাশ বড়দের মুখে মুখে কথা বলতে পারে না। বেয়াদবিও করে না কখনো। তাই সে দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে কি করবে..??

কিছুক্ষন ভেবে আকাশ বাধ্য হয়ে নিলিমাকে নিয়ে চলে গেল।

আমি আকাশ ভাইয়ার রেডি হওয়ার অপেক্ষা করছি তখন ফোনে এসমেস আসল এসমেস টা নিলিমা করেছে…

নিলিমাঃ ইসস একসাথে যাওয়াটা হল না…ছো ছো ছো..দুর্ভাগ্য।

এসমেসের মানেটা বঝলাম না পাত্তাও দিলাম না অনেক্ষন পর বুঝতে পারলাম সারা বাড়ি খালি হয়েচ গিয়েছে কারন কারোর সাড়াশব্দ নেই।
তাই ঘর থেকে বের হলাম দেখলাম আশেপাশে কেউ নেই পুরো বাড়ি ফাঁকা…তারমানে আমাকে রেখে সবাই চলে গিয়েছে…
আমি নিচে গিয়ে দারোয়ান কাকাকে জিজ্ঞাস করলাম।
কাকু সবাই কি চলে গিয়েছে..??

দারোয়ান কাকাঃ হ্যা মা তুমি যাও নি কেন..??

মেঘলাঃ কাকু আকাশ ভাইয়াও কি চলে গিয়েছে..??

দারোয়ান কাকাঃ হ্যা উনি তো নিলিমা ম্যাডাম কে নিয়ে গেল।

মেঘলাঃ অহ আচ্ছা
এবার আমি নিলিমা আপুর এসমেসের মানে বুঝলাম।
মিথ্যা বলব না ভাইয়া যে নিলিমা আপুকে নিয়ে পার্টিতে গেল সে জন্যে আমার খুব রাগ হয়েছে…ও এমন দুমুখো আচারন কেন করছে বুঝতে পারছি না…

রাগে পার্টিতে যাব না সিধান্ত নিয়ে উপড়ে চলে যাচ্ছিলাম তখনি নাবিল ভাইয়াকে দেখলাম উপড় থেকে নামছে।

নাবিলঃ কিরে মেঘলা আকাশ কোথায় পার্টির দেড়ি হয়ে যাচ্ছে তো…

মেঘলাঃ উনি তার হবু বউয়ের সাথে পার্টিতে গিয়েছেন।

নাবিলঃ মানে কি…

মেঘলাঃ বাংলায়েই ত বল্লাম শুনতে পেলি না…??

নাবিলঃ আচ্ছা ছাড় চল আমরা যাই..

মেঘলাঃ আমার ভাল লাগছে না রে ভাইয়া তুই যা..

নাবিলের বুঝতে বাকি রইল না যে মেঘলা রাগ করেছে তাই একপ্রকার জোর করেই মেঘলাকে টেনে নিয়ে গাড়িতে তুলল নাবিল।

নাবিলঃ আরে বোকা মেয়ে একসাথে যেতে হবে এমন কোন কথা আছে।

মেঘলাঃ ভাইয়া ইচ্ছা করে আমাকে অপমান করার জন্য এমন করল তখন বুঝি নি এখন বুঝতে পারছি।
পার্টিতে কেউ টিশার্ট পরে যায় আমাকে নিয়ে সবাই হাসাহাসি করবে দেখিস…

নাবিলঃ আরে আমি মরে গিয়েছি নাকি?

নাবিল ভাইয়া যাই বলুক আমার খুব ভয় করছে আমি জানি সবার সামনে অপমানিত হব আজ..
খুব অস্বস্তি হচ্ছে।

পার্টির সামনে গিয়ে গাড়ি থামল কিন্তু আমার পা চলছে না ভিতরে যেতে একদম ইচ্ছা হচ্ছে না।

নাবিল ভাইয়া হাত ধরে নিয়ে গেল।

কিন্তু ভিতরে গিয়ে অবাক হলাম কারন যাকে ঘিরে পার্টি মানে পার্টির মধ্যমনি নিজেই টিশার্ট পরে পার্টিতে এসেছেন।তাও সেইম আমার টিশার্ট টার মত একটা টিশার্ট। দেখে ভাল লাগলেও আমার রাগ এখনো কমে নি তাই তার কাছে গেলাম না।

নাবিলঃ আরে এদিকে কোথায় যাচ্ছিস চল আকাশের কাছে যাই।

মেঘলাঃ না যাব না ওর কাছে থাকুক ও ওর নিলিমাকে নিয়ে..

নাবিলঃ মেঘলা আমার কথা শোন

মেঘলাঃ হাত ছাড়..
নাবিল ভাইয়াকে ছেড়ে দিয়ে আমি পার্টির মধ্যে চলে গেলাম আকাশ ভাইয়ার প্রায় সব বন্ধু বান্ধবকেই আমি চিনি ওরাও বেশ ভালভাবে চিনে আমাকে… সবার সাথে কথা বলছি আমার বরিং লাগছে না।




এদিকে,নাবিল আকাশের কাছে যেতেই,
আকাশঃ এটার সমস্যা কিরে নাবিল..?? কিসব করছে? যার তার সাথে হাত মিলাচ্ছে জড়িয়ে ধরছে কি এসব?

নাবিলঃ আমি কি করে বলব তুই নিলিমাকে নিয়ে ঘুরছিস ও ছেলেদের সাথে মিশছে।আমার ত শুধু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার নেই।

আকাশঃ ওর মিশামিশি বের করছি আমি দাঁড়া।

মেঘলাঃ তো ভাইয়ারা কেমন আছো… অনেকদিন পর দেখা হল তাই না?

—হ্যা হ্যা অনেকদিন একেবারে ১ যুগের ও বেশি সময় পর তা সেই খুশিতে একটু নাচবি নাকি..

মেঘলার ঠিক পিছনে দাঁড়িয়ে কথাগুলি বলছে আকাশ।

মেঘলাঃ নাচতে পারলে মন্দ হত না..কেক কাটা শেষ হোক তখন নাচব…

আকাশঃ কি🤨

মেঘলাঃ যা তো এখান থেকে কথার মাঝখানে ফোঁড়ন কাটবি না একদম।

আকাশঃ তোর কথা বলার শখ মিটাচ্ছি আমি দাঁড়া।

আকাশ ভাইয়া সবার কাছ থেকে দূরে এসে আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে..

যেখানেই যাচ্ছে আমাকে সাথে নিয়ে যাচ্ছে..মনে হচ্ছে যেন গ্লো দিয়ে কেউ আনাদের হাত জুড়ে দিয়েছে।আমার যাস্ট অসহ্য লাগছে আমি সবার সাথে কথা বলতে চাই মিশতে চাই কিন্তু ভাইয়া কিছুতেই হাত ছাড়ছে না।

মেঘলাঃ ছাড় ত এমন করিছিস কেন তুই তোর মত পার্টি সেলিব্রেট কর আমাকে করতে দে….

আকাশঃ চুপ করে আমার সাথে দাঁড়িয়ে থাক একটাও কথা বলবি না…

মেঘলাঃ ভাল হচ্ছে না বলছি ছাড়,
ভাইয়া ছাড়ছে না দেখে আমি আর কিছু না ভেবে
ভাইয়ার হাতে কামড় বসিয়ে দিয়ে দৌড় দিলাম।

কিন্তু এখন তো আরও বড় ঝামেলায় ছিলাম এতক্ষন না হয় ভাইয়ার সাথে দাঁড়িয়ে ছিলাম কিন্তু সবার মাঝে তো থাকতে পারছিলাম কিন্তু এখন ভাইয়ার ভয়ে লুকিয়ে আছি আর ভাইয়া আমাকে হন্নে হয়ে খুঁজছে।

একটা পিলারের নিচে দাঁড়িয়ে আছি ঠিক তখনী কেউ আমার কাঁধে হাত রাখল দেখেই পরান যায় যায় অবস্থা কারন এটা আকাশ ভাইয়া।

ভাইয়া আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কোথায় যাচ্ছে বুঝবার আগেই ভাইয়া একটা দড়ি এনে আমার হাতের সাথে পেঁচিয়ে নিজের হাতের সাথেও পেঁচিয়ে নিল..

আমি ত ভেবেছিলাম টাটিয়ে ২ টা থাপ্পড় মারবে কিন্তু তার কান্ড দেখে শুধু অবাক হইনি বরং নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছে।

মেঘলাঃ কি করছিস এসব সেদিন রাত ছিল আর নিজের ঘরে ছিল তাই কিছু বলি নি কিন্তু এখন সবার সামনে আমাকে এভাবে বাঁধছিস কেন?

আকাশঃ আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই.. তুই সবসময় আমার সাথে থাকবি ১ মিনিটের জন্যেও এদিক ওদিক যাবি না।

মেঘলাঃ আচ্ছা তাহলে হাত ধরে রাখ, বাঁধিস না প্লিজ।এভাবে বেঁধে রাখলে সবাই আমাদের পাগল বলবে…

আকাশঃ বললে বলুক তাতে আমার কিছু যায় আসে না,তুই যত তিড়িং বিড়িং করছিস আমার একদম সহ্য হচ্ছে না আর ধরে রাখার পর যে কান্ড করলি সেটার যে আর রিপিট করবি না তার কি গ্যারান্টি আছে? তাই বেঁধে রাখছি এখন বাকি সময় এভাবেই থাকবি।

আকাশ মেঘলা ২ জনের হাত একসাথে বাঁধা আবার পার্টিতে ২ জনেরেই বেমানান পোষাক তাও সেইম টিশার্ট সবার চোখ আকাশ আর মেঘলার দিকেই…

সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে…

নেহা, মিলি আর নিলিমা একসাথে দাঁড়িয়ে ছিল আকাশ আর মেঘলাকে দেখে মিলি অবাক হয়ে বলল
আমি যা দেখছি তুমরাও কি তাই দেখতে পাচ্ছো..??

নেহাঃ এরা ২ জন কি তবে পাগল হয়ে গেল..??

নিলিমা ড্যাবড্যাব করে মেঘলার দিকে তাকিয়ে আছে. রুবিনা বেগম রাগে ফুঁসফুঁস করছেন।

তবে মেঘলা আর আকাশের এই পরিস্থিতি দেখে নাবিল খুব খুশি হয়েছে…

চলবে…!!!

Leave a Comment