Golperjogot

Golperjogot

ভিলেন – থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 19 | Villain Action Story

মেঘলা এই বাসায় এসেছে ৬ মাস পেরিয়ে গিয়েছে,
এর মধ্যে নীরবের সাথেও তার যোগাযোগ হয়েছে নীরব তার টিসির ব্যবস্থা করে দিয়েছে মেঘলা স্কুলে ভর্তি হলেও বাসায় কেউ জানে না সে স্কুলে পড়ে নাকি কলেজে পড়ে কারন মেঘলার ব্যাপারে তাদের কারো কোনো ইন্টারেস্ট নেই।মেঘলা নিজের মত করেই স্কুলে যায় নীরব প্রায়েই মেঘলার সাথে দেখা করে।

মেঘলা এখন কাজ করাতেই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে কারোর খারাপ ব্যাবহারে তার খারাপ লাগে না সব মানিয়ে নিয়েছে শুধু মানিয়ে নিতে পারে নি ভিলেনের ব্যাপারটা। মেঘলার মনে হয় কেউ যেনো তাকে সারাক্ষন ফলো করে কিন্তু সে কাউকে বলতে পারে নি অপেক্ষায় আছে আকাশ আসলে বলবে…

দেখতে দেখতে অবশেষে মেঘলার অপেক্ষারো অবশান হতে চলেছে আকাশ ফিরে আসছে তাও খুব ভাল রিজাল্ট করেছে সে…

মেঘলার খুশি যেন আর ধরে না,

মেঘলাঃ আজ আমার সব কষ্টের অবশান হবে আবার সবকিছু আগের মত হয়ে যাবে যেখানে থাকবে না কোন খারাপ ব্যাবহার থাকবে না কোন ভয়….

বাসায় যেন খুশির রব চলছে,নেহা মিলি নাবিল সবাই খুশি।
মেঘলা প্রতিদিন বিরক্তি নিয়ে কাজ করলেও আজ নিজের ইচ্ছায় সব কাজ করছে আকাশের ঘর নিজের হাতে গুছিয়েছে…

মেঘলাঃ ছোট মা আজ আমি রান্না করি..??

শায়রা বেগমঃ তুই পারবি সব করতে..??কষ্ট হবে তো মা আমি করি তুই সাহায্য কর।

মেঘলাঃ না আমি করি… ভাইয়া যখন শুনবে আমি রান্না করতে পারি অনেক অবাক হবে আর খুশিও হবে আমি ওর পছন্দের সব খাবার গুলি রান্না করব।

সায়রা বেগমঃ ঠিক আছে কর তাহলে…

মেঘলা আকাশের পছন্দের সব খাবার রান্না করল।
বিকালে নাবিল এয়ারপোর্টে গেল আকাশ কে রিসিভ করতে।

মেঘলাঃ কতদিন পর তোকে দেখব তুই ও নিশ্চুই ঠিক আমার মতই অপেক্ষা করছিস..কথা গুলি ভাবতে ভাবতে মেঘলা জামা বদলে নিল,ঠোঁটে হালকা লিপষ্টিক, চোখে কাজল সাথে একটা টিপ ও পরেছে।

সন্ধ্যায় নাবিলের গাড়ি এসে বাসার সামনে থামল।

মেঘলার হার্টবিট বেড়ে গেছে,পৃথিবীর সকল ব্যাস্ততা যেন ধমকে গিয়েছে বুকের বাম পাশে ডিপ ডিপ আওয়াজ হচ্ছে এ যেন এক অদ্ভুত অনুভূতি।
আকাশকে এক ঝলক দেখার তর সইছে না মেঘলার।

ঠিক তখনি সকল নীরবতা ভেংগে এগিয়ে এলো আকাশ।মুগ্ধ নয়নে মেঘলা তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে…

মেঘলাঃ মাসআল্লাহ কত সুন্দর হয়ে গিয়েছে ভাইয়া একদম মিঃ পারফেক্ট লাগছে।

মেঘলা ইচ্ছা করেই একটু পিছিয়ে দাঁড়াল যাতে আকাশ তাকে খুঁজে নেয়।

আকাশ এসে প্রথমেই তার বাবা মা চাচা চাচীকে সালাম করল।
নেহা মিলি দৌড়ে গিয়ে আকাশকে জরিয়ে ধরল আকাশো তাদের জরিয়ে ধরল।

মেঘলা কিছুটা অবাক হল কারন সে দেখল আকাশ তাকে দেখেও কোন কথা বলেনি এমনকি একবার দেখার পরে আর এদিকে তাকাচ্ছেও না।

মেঘলাঃ ভাইয়া কি আমাকে দেখে নি…??নাকি ইচ্ছা করেই আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছে? না না এটা কি করে সম্ভব? এই পৃথিবীতে ও সবচেয়ে বেশি ভাল আমাকে বাসে সেটা আমি জানি।

ছোট মাঃ কত দিন পর দেখলাম কেমন আছিস বাবা…

আকাশঃ বিন্দাস আছি ছোট মা প্যারা দেওয়ার ময় কেউ নেই তো তাই…

মেঘলাঃ কথাটা কি আমাকে বলল? কি হচ্ছে এসব?

আকাশের মাঃ কিন্তু তুই একা কেন নাবিলরা কোথায়?

আকাশঃ আমি নাবিলের গাড়ি নিয়ে চলে এসেছি রাস্তায় একটু কাজ ছিল তাই একাই এসেছি ওরা পিছনের গাড়িতে আসছে…

মেঘলাঃ ওরা মানে নাবিল ভাইয়া তো একা গিয়েছিল…(মনে মনে)

এরিমধ্যে নাবিল আসল সাথে ২ টা মেয়ে একটা ছেলেও আছে…

ওরা আসতেই আকাশ এগিয়ে বলল সুইটহার্ট ওয়েলকাম টু মাই হোম।

কথাটা শুনে মেঘলার প্রায় কাঁদোকাঁদো অবস্থা।
মেয়েগুলি এসে আকাশের মাকে জরিয়ে ধরল।

রুবিনা বেগমঃ রাস্তায় কোন সমস্যা হয়নি তো?

–না খালামনি একদমি হয় নি আকাশ ছিলো তো… তোমার ছেলে এত ক্যায়ারিং কি আর বলব ওর সাথে নরকে গেলেও মনে হয় অসুবিধা হবে না বলেই মেয়েটা হেসে উঠল।

রুবিনা বেগমঃ তাই বুঝি..??আচ্ছা চল সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।বলে রুবিনা বেগম সবার সাথে নীলিমা,ঈষিকা আর ইশানের পরিচয় করিয়ে দিতে লাগল।

মেঘলা এমনেতেও সবার পিছনে দাঁড়িয়ে ছিল এবার আরো পিছিয়ে গিয়ে সিঁড়ির কাছে দাঁড়াল যাতে ওকে দেখা না যায়…কারন ও নিলমার সাথে পরিচিত হতে চায় না।

আকাশ কিছুক্ষন কথা বলার পর বলল আমি ফ্রেশ হয়ে আসি খুব ক্লান্ত লাগছে।

নাবিলঃ হ্যা যা যা…ফ্রেশ হয়ে আয়,
মা ওর খাবার দাও আজ সারারাত গল্প করব।

আকাশ হেসে বলল তাত অবশ্যই করব তোর সাথে কত হিসেব বাকি সব নিতে হবে না?

নাবিলঃ হিসেব…???

আকাশঃ ছাড় পরে বলছি,নীলিমা তোমরাও যাও ফ্রেশ হয়ে এসো..
বলতে বলতে আকাশ সিঁড়ির কাছে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল মেঘলা এবার আকাশের খুব কাছে তাও আকাশ মেঘলার সাথে কথা না বলেই চলে যাচ্ছিল

মেঘলার আর সহ্য হল না অভিমানী কন্ঠে বলেই ফেলল,
মেঘলাঃ আমি দাঁড়িয়ে আছি তুই দেখতে পাচ্ছিস না…??

আকাশ মেঘলার দিকে তাকিয়ে তাছিল্যের হাসি দিয়ে বলল হ্যা দেখেছি,রং মেখে ঢং করার জন্য দাঁড়িয়ে আছিস কিন্তু তুই ভুলে গেছিস আকাশ মেয়েদের রুপে ভুলার ছেলে নয়…

মেঘলাঃ মানে…???

আকাশঃ এই যে ঠোঁটে রং মেখেছিস কপালে টিপ পরেছিস এগুলি কিসের জন্য? আমাকে ইম্প্রেস করার জন্যই তো নাকি? এসব করে লাভ নেই তার চেয়ে এভাবে সেজে রাস্তায় দাঁড়াস ভালো কাস্টমার পাবি.

সবার সামনে কথাগুলি বলেই আকাশ চলে গেল মেঘলা আকাশে কথায় হতবাক হয়ে গেল। কিছু বলার সুযোগ পেল না কারন সে এই কথাগুলির মানেই বুঝে নি।

মেঘলাঃ এটা কি হল,রাগ তো আমার করার কথা ছিল ওর জন্য আমি মরতে বসেছিলাম তাও ওই শাকচুন্নি টাকে সাথে করে নিয়ে এসেছে আবার আমাকেই বাজে কথা বলে গেল?
মেঘলা নিজেই নিজেকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল,
ভাইয়া মনে হয় কোন কারনে রাগ করেছে আচ্ছা থাক কিছুক্ষন পর যখন দেখবে আমি ওর জন্য রান্না করেছি তখন নিশ্চুই রাগ কমে যাবে।
এটা ভেবে মেঘলা টিপ খুলে লিপস্টিক মুছে রান্না ঘরে গিয়ে খাবার গুছিয়ে এনে টেবিলে রাখল।

কিছুক্ষনপর আকাশ নিচে নামল এসেই টেবিলে বসে পড়ল,

আকাশঃ উফফ কতদিন পর বাড়ির রান্না খাব আমার আর সহ্য হচ্ছে না…ছোট মা তাড়াতাড়ি দাও।
নীলিমা,ঈষিকা,ঈশান,নাবিল,নেহা,মিলি সবাই খেতে বসেছে।

ছোট মাঃ হ্যা আজ তোর পছন্দের সব খাবার রান্না হয়েছে…

আকাশঃ তাই তো দেখছি দেখেই খেয়ে ফেলতে ইচ্ছা করছে..

ছোট মাঃ এসব কে রান্না করেছে জানিস?

আকাশঃ কে..??

ছোট মাঃ মেঘলা…

মেঘলার নামটা শুনে আকাশ প্রচন্ড রেগে গিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল হোয়াট…??

মেঘলাঃ রেগে যাচ্ছিস কেন?আমি এখন রান্না করতে পারি রান্নাও ভালো হয় ভয় পাস না একবার খেয়েই দেখ ।
এই দেখ তোর পছন্দের সব কিছু করেছি পায়েস ও করেছি…

আকাশ দাঁতে দাঁত চেপে বলল, ছোট মা আমি ঠিক কতদিন পর বাসায় আসলাম..??

ছোট মা অবাক উত্তর দিল ৪ বছর…

আকাশঃ উহু…ঠিক কত দিন সেটা বলো…??
৪ বছর না আমি আজ ১,৪৬৯ দিন পর বাসায় এসেছি ছোট মা তারপরেও আমার জন্য একটু রান্না করতে পারলে না? ব্যাপার টা দুঃখজনক। যাই হোক আমি বাইরে থেকে খেয়ে আসছি…

আকাশ যখন চলে যেতে চাইল মেঘলা আকাশের হাত ধরে বলল,

এতো রাগ করেছিস আমার উপড়?আমি সারাদিন ধরে রান্না করলাম তাও খাবি না?
মেঘলা সেই আগের মত অনেকটা অধিকার নিয়ে আকাশের হাত টেনে বলল বস তো তোর খেতে হবে না আমি খায়িয়ে দিচ্ছি..সবকিছুতেই জেদ দেখাস।

কথাটা বলতেই আকাশ মেঘলার কাছ থেকে হাত টা ছাড়িয়ে নিয়ে ঠাস করে মেঘলার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিয়ে বলল,

মেঘলা অবাকের সর্বোচ্ছ সীমায় পৌছে গেল।

আকাশঃ কোন সাহসে তুই আমার গায়ে হাত দিস?আমি কি তোর মত চরিত্রহীন নাকি যে তোর হাতে খাব? আর ছেলেদের হাত করার ইচ্ছা থাকলে আমাকে নয় অন্যকাউকে ট্রাই কর আর শরিরের চাহিদা মিটাতে ইচ্ছা হলে রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াস টাকাও পাবি আর শারীরিক সুখ ও। নেক্সড টাইম আমার চোখের সামনে আসবি না বলে দিলাম।

মেঘলা থাপ্পড় দেয়া গালে হাত দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।সে আকাশের এমন আচারনের জন্য প্রস্তুত ছিল না চার বছরে আকাশ এত বদলে গিয়েছে সেটা মেঘলা ভাবতেও পারেনি। সে স্বব্ধ হয়ে গিয়েছে মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। মেঘলার গাল লাল হয়ে গিয়েছে হয়ত ব্যাথাও করছে কিন্তু আকাশের কথা গুলি মেঘলার মনে থাপ্পড়ের চেয়েও বেশি আঘাত করেছে তাই মনের ব্যাথার কাছে শরীরের ব্যাথা জায়গা পেল না।

আকাশের ব্যবহারে শুধু মেঘলা না সবাই অবাক হয়েছে…

নাবিলঃ মেঘলা কার সাথে কি করেছে আমি তো কিছু বলি নি আকাশ কে তাহলে কেন এমন ব্যবহার করল?এত রাগ কিসের?

আকাশঃ আমি বাইরে খেতে যাব তোরাও সবাই চল…আর বাসার সবার জন্য খাবার নিয়েও আসব। ছোট মা নেক্সট টাইম যেন মেঘলাকে আমি রান্না ঘরে না দেখি ও যদি রান্না করে আমি এই বাসায় খাব না। বলে আকাশ সবাইকে নিয়ে বাইরে চলে গেল।

আকাশের মাঃ ছেলেটা এতদিন পর আসলো একটু শান্তিতে খেতেও পেল না যতসব গা জ্বলে যায় একেবারে…

শায়রা বেগম মেঘলার মনের ব্যাপার টা বুঝতে পেরে কিছু না বলে সেখান থেকে চলে গেল কারন মেঘলাকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা তার জানা নেই।

মেঘলা চোখ মুছতে মুছতে খাবার গুলি নিয়ে ফ্রিজে তুলে রাখল যদিও ফেলে দিতে ইচ্ছা করছিল কিন্তু সে জানে খাবার ফেলে দিলে ওকে অনেক বকা শুনতে হবে।

এদিকে নাবিল ড্রাইভ করছে আকাশ পাশের সিটে বসে আছে আকাশ রাগে ফুসফুস করছে…

নাবিল বুঝতে পারল কিছু একটা ঘটেছে কিন্তু কি ঘটেছে সেটা বুঝল না।

আকাশ বাইরে গিয়ে সবার জন্য খাবার অর্ডার দিল কিন্তু নিজের জন্য দিল না।

নাবিলঃ তুই নিলি না যে…

আকাশঃ ফ্রেন্ডস মিট আপ আছে সেখানে খেতে হবে…তোরা খেয়ে বাসায় যা আমি ওদের সাথে দেখা করে আসছি…

আকাশ চলে গেল.
তারপর রাত ১০ টায় বাসায় ফিরল সবাই তখন ড্রয়িং রুমে গল্প করছিল আকাশো এসে বসলো।

মেঘলাও আছে তবে সবার থেকে দূরে এক কোণে বসে আছে…

আকাশ বসেই নাবিলকে বলল তার ঘর থেকে লাগেজ নিয়ে আসতে সে সবার জন্য গিফট এনেছে সেগুলি দিবে।

নাবিল নিয়ে আসল,আকাশ একে একে সবাইকে গিফট দিল সবাই ত খুব খুশি।
আকাশ গিফেটের সাথে সবাইকেই অনেক চকলেটও দিল…
মেঘলা সবি দেখছে,কিন্তু আকাশ তার জন্য কিছুই আনে নি সেটা দেখে এবার আর অবাক হলো না।

আকাশ সবাইকে দেয়ার পর, চকলেট এর কয়েকটা প্যাকেট ছোট মা কে দিয়ে বলল আমাদের আত্মীয়দের দিয়ে দিও।

সবাই গিফট উল্টে পাল্টে দেখছে নেহা মিলি নিলিমা ঈষিকা ঈশান নাবিল সবাই চকলেট খাচ্ছিল ছোট মা লক্ষ্য করল আকাশ মেঘলাকে কিছুই দেয় নি এমনকি চকলেটও দেয় নি তাই তিনি মেঘলাকে ডাকল..

মেঘলা আসতেই প্যাকেট থেকে চকলেট দিয়ে বলল ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? নে খা…

মেঘলা কথা না বাড়িয়ে চকলেট নিয়ে নিল সাথে সাথেই আকাশ মেঘলার হাত ধরে ফেলল

মেঘলা অবাক হয়ে আকাশের দিকে তাকাতেই আকাশ বলে উঠল ছোট মা আমি বলেছি আত্মীয় দের দিতে তুমি বোধয় শুনতে পাও নি…
তাই কাজের মেয়েকে দিচ্ছো…

ছোট মাঃ কি বলছিস?

আকাশঃ অন্যের বাসায় যারা কাজ করে তাদেরকে কাজের মেয়ে বলে তাই না? আমি তো সেটাই জানতাম…

আকাশ তখনো মেঘলার হাত ধরে ছিল এবার মেঘলার দিকে তাকিয়ে বলল তোর লজ্জা বলতে কিছু নেই তাই না? আমার দেয়ার হলে তো আমিই দিতাম তাই না? দেইনি যখন বুঝতেই পারছিস তোর জন্য আনি নি তবুও রাক্ষসের মত হাত পেতে নিতে লজ্জা করছে না?

কথাটা শুনে সবাই হেসে উঠল মেঘলা লজ্জা পেয়ে আমতা আমতা করে বলল না মানে ছোট মা বলল তাই…
মেঘলা সবার সামনে বিশেষ করে নিলিমাদের সামনে খুব লজ্জা পেল তাই বিষয় টা ধামাচাপা দিতে মেঘলা চকলেট গুলি রেখে দিয়ে একটু দুরে গিয়ে দাঁড়াল।

মেঘলার চোখ ২ টি ছল ছল করছে।
শুধু জল গড়িয়ে পড়ার অপেক্ষা করছে…

বিষয়টা নিলিমার ভাই ঈষান বুঝতে পেরে বলল আহ আকাশ কয়েকটা তো চকলেট হাতে নিয়েছে দিয়ে দে না এমন করছিস কেন…

আকাশঃ আকাশ যাকে তাকে গিফট দেয় না বলে উঠে গেল।

গভীর রাত সবাই ঘুমে আছন্ন কিন্তু মেঘলার চোখে ঘুম নেই কারন তার বেঁচে থাকার শেষ ইচ্ছাটাও আজ শেষ হয়ে গিয়েছে…তার আর এখন আপন বলতে কেউ নেই।
মেঘলা বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছিল সে কতটা অসহায়। সময়ের সাথে মানুষ আর মানুষের জীবন কতটা বদলে যেতে পারে এসবেই ভাবছিল হটাৎই খুব জোর বাতাস বইতে শুরু করল মেঘলার তখন মনে পড়ল ছাদে কাপড় আছে গভীর রাত হওয়া সত্ত্বেও বৃষ্টি আসবে ভেবে সে ছাদে গেল কাপড়গুলি আনতে।
যেতে যেতে হালকা বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে। মেঘলা এক দৌড়ে কাপড়গুলি তুলে নিয়ে চিলিকোঠার ছাদের নিচে দাঁড়িয়ে পড়ল কারন এবার প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে নিচে যেতে হলে ভিজে যেতে হবে তাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে তখনি চোখে পড়ল ছাদে সে একা নয় আরো একজন আছে সে কাক ভিজা অবস্থায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুকছে।

দেখে মেঘলার চিনতে বাকি রইল না এটা আকাশ মেঘলা নিঃশব্দ পায়ে এগিয়ে গিয়ে আকাশের পিছনে দাঁড়িয়ে অবাকের সাথে রাগ মিশিয়ে বলল তুই সিগারেট খাস?

আকাশ মেঘলার কথায় একটুও বিচলিত হলো না চমকেউ উঠল না যেন এখন এখানে মেঘলার আসারেই কথা ছিল আর এই প্রশ্নটা করার কথা ছিল ঠিক সেই ভাব নিয়ে পিছনে ফিরেই সিগারেটে ঠোঁট মিলাতে মিলাতে শান্ত গলায় জবাব দিল
হুম খাই অনেক আগে থেকেই……

মেঘলাঃ কিন্তু কেন তুই তো সিগারেট কে খুব ঘৃনা করতি ভাইয়া…

এবার আকাশ মেঘলার দিকে তাকাল,

আকাশকে দেখে মেঘলা চমকে উঠল।
আকাশের চোখ ২ টি টকটকে লাল হয়ে আছে অনেক্ষন কাঁদার পর যেমনটা হয় ঠিক তেমন টা।
মেঘলা অবাক হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে,
আকাশ নীরবতা ভেংগে মেঘলার থাপ্পড় দেয়া গালে আলতো করে হাতে বুলিয়ে নিজের মুখে হতাশার হাসি টেনে বলল সব কেন এর উত্তর হয় না রে.. সে যাই হোক এত রাতে তুই বাইরে কি করছিস ঘরে যা মেঘলা…!!!

মেঘলা নিজের অজান্তেই বলে উঠল তুই অনেক বদলে গেছিস রে ভাইয়া…

আকাশ আবারো হেসে বলল আমি নই সময় টা বদলে গেছে বলে হাত থেকে সিগারেট টা ফেলে দিয়ে ভিজতে ভিজতে ভিতরে চলে গেল..

চলবে…!!!!

Leave a Comment