Golperjogot

Golperjogot

ভিলেন – থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 22 | Villain Bangla Story

ভিলেন – পার্টঃ২২
Mona Hossain

আকাশঃ কিছু করিস নি তাহলে লুকিয়েছিস কেন?

মেঘলাঃ সবাই আমাকে যেভাবে খুঁজছিলো আর তুই তো আমার কোন কথাই শুনবি না ঠাস ঠাস করে থাপ্পড় মারবি তাই ভয় পেয়ে লুকিয়ে পড়েছি।

আকাশঃ তুই সত্যিই আমাকে ভয় পেয়েছিস?

মেঘলাঃ হুম খুব😔

আকাশঃ আচ্ছা যা মারব না..

মেঘলাঃ আর একটু থাকি তোর ঘরে…?? বাইরে গেলে সবাই মিলে বকা দিবে..

আকাশঃআচ্ছা থাক।

মেঘলা গিয়ে সোফায় বসে বসে ভাবছে কাজ টা তো আমি করি নি তাহলে কে করল?

আকাশ বসে বসে ফোন টিপছিল..কিছুক্ষন পর,
আকাশঃ তোকে সবার বকা থেকে বাঁচাব যদি আমার কথা শুনিস…

মেঘলাঃ কি কথা..???

আকাশঃ আমার মাথাটা একটু টিপে দে তো ব্যাথা করছে..

মেঘলাঃ বাহ এই তো সুযোগ মনে মনে ভেবেই কোন প্রকার আপত্তি না করে দৌড়ে গিয়ে বলল শুয়ে পড় এখুনি দিচ্ছে।
মেঘলার আগ্রহ দেখে আকাশ অবাক হল তবুপ মেঘলার গা ঘেঁষে শুয়ে পড়ল..

মেঘলা নিজের শরীরে যত শক্তি ছিল সব খরচ করে আকাশের চুল টেনে ধরল আকাশ প্রথমে চমকে উঠলেও পরে বুঝতে পারল মেঘলার ইচ্ছে করে এসব করছে তাই কিছু বলল না এমনকি বাঁধাও দিল না…

মেঘলা; এটা কি গন্ডার নাকি এত জোরে টানছি তাও ব্যাথা পায় না কেন? (মনে মনে)

আকাশ মিটি মিটি হেসে বলল আমি আকাশ মেঘলা নই তাই …

মেঘলা চমকে উঠে বলল ম ম মানে?

আকাশঃ জিজ্ঞাস করছিস না কেন ব্যাথা পাচ্ছি না?

মেঘলাঃ ক ক কই আমি তো কিছু বলি নি

আকাশঃ সব কথা বলতে হয় না বুঝা যায়।

মেঘলাঃ আ আ আমি এখন যাই….

আকাশঃ ভয় পেতে হবে না মারব না।

মেঘলাঃ যাক একটুর জন্য বেঁচে গেলাম আর এমন করা যাবে না। মেঘলা এবার সুন্দর করে টিপতে লাগল।

আকাশঃ আচ্ছ হয়েছে আর লাগবে না চল সবার সাথে ঝামেলা টা মিটিয়ে দিয়ে আসি।

মেঘলা আকাশের সাথে গেল মেঘলাকে দেখেই সবাই এগিয়ে আসল পারলে যেনো এখুনী মেঘলাকে চিবিয়ে খায়।মেঘলা ভয় পেয়ে আকাশের পিছনে লুকিয়ে পড়ল।

আকাশঃ তুই এত ভীতু কেনো যা গিয়ে মাথা উঁচু করে সত্যিটা বল।

মেঘলা এগিয়ে যেতেই নিলিমা এগিয়ে এসে বলল আমাদের পিকনিক টা নষ্ট করার এত সাহস হয় কি করে তোমার?বলে নিলিমা মেঘলাকে থাপ্পড় মারতে চাইল।

সাথে সাথে আকাশ ঝড়ের বেগে নিলিমার হাত ধরে ফেলল।
আকাশ প্রচন্ড রেগে গিয়েছে চোখ ২ টি মুহুর্তেই লাল হয়ে গিয়েছে কপালে মাঝ বরাবর রগ ফুলে গিয়েছে…আকাশ নিলিমার হাতটা এক ঝটকায় ছেড়ে দিয়ে চোখ গরম করে বলল মেয়েদের টাচ করার অভ্যাস আমার নেই তবুও বাধ্য হয়ে ধরতে হল, কেন নিলামা ওর দিকে হাত বাড়ানোর সাহস হয় কি করে…??

নিলমার সাথে সাথে সবাই অবাক হয়ে গেল।আকাশকে দেখে মনে হচ্ছে যেন তার কলিজায় কেউ হাত দিয়ে ফেলেছে।

আকাশের মা দৌড়ে এসে বললেন কি করছিস আকাশ? তুই তো বলছিস মেঘলা আশ্রিতা ছাড়া কিছু না আর নিলিমা আমাদের গেস্ট ওর সাথে এমন ব্যবহার করতে পারিস না তুই।

আকাশঃ গেস্ট তো কি হয়েছে?
গেস্টের উচিত ভদ্রভাবে থাকা আর আশ্রিতা মানে হল যে কারোর আশ্রয়ে থাকে।মেঘলা যেহেতু এই বাসায় আশিতা হিসেবে থাকে আর আমি এই বাসার একজন যার মানে হল ও আমার আশ্রয়ে থাকে তাই আমার আশ্র‍য়ে থাকা কারোর দিকে অন্যকেউ হাত বাড়ানো ত দুর চোখ তুলে তাকালেও আমি সেটা মেনে নিব না এমনকি যদি সেটা তুমি হও তবুও আমি মানব না নেক্সট টাইম মেঘলার সাথে কেউ খারাপ ব্যবহার করবে না বুঝেছো?

আকাশ নিলিমাকে ধমক দিলেও ওর কথা বলার ধরন দেখে নাবিল নেহা মিলি সবারেই শিক্ষা হয়ে গিয়েছে…তাই পিকনিকের ব্যাপারে আর কিছু বলল না।

মেঘলা অবাক হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে…

আকাশঃ হা করে তাকিয়ে না থেকে এক কাপ চা করে আন মাথা ধরেছে আমার।

আকাশ চলে যেতেই মেঘলা রান্না ঘরে গেল

নিলিমাঃএই অপমানের শোধ আমি তুলব (মনে মনে)




মেঘলা চা বানিয়ে টেবিলের উপড় রেখে চিনি আনতে গেল সেই ফাঁকে নিলিমা চায়ে মরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে দিল।

মেঘলা চিনি নিয়ে আসছিল তখন নিলিমার ভাই ঈষান এসে বললো,

ঈষানঃ নিলিমার আচারনের জন্য আমি দুঃখিত।তোমার সাথে এভাবে কথা বলাটা উচিত হয় নি তুমি মন খারাপ করো নি তো..??

মেঘলা হেসে বলল না না একদমি না।

চা দিতে দেড়ি হচ্ছে দেখে আকাশ নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে দেখল মেঘলা গল্প করছে দেখে আকাশের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।

আকাশঃ চা টা কি আজ পাওয়া যাবে?

মেঘলাঃ এই যে এক্ষুনি নিয়ে আসছি মেঘলা তাড়াতাড়ি চা টা নিয়ে আকাশের ঘরে গেল।

আকাশ চায়ের কাপে একটা চুমক দিয়েই কাপটা ছুড়ে ফেলে দিল।

মেঘলাঃ কি হয়েছে?

আকাশ এসে মেঘলাকে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়ে বলল তুই আর কখনো আমার ঘরে আসবি না..

মেঘলা ধাক্কার তাল সামলাতে না পেরে নিচে পড়ে গেল।

আকাশের সেদিকে খেয়াল নেই সে দরজা লাগিয়ে দিল।

মেঘলা উটে অনুভব করল পায়ে একটু ব্যাথা পেয়েছে সে নিজের ঘরে চলে গেল।

দেখতে দেখতে রাত হল রাতে সবাই টেবিলে খেতে বসেছে মেঘলাও বসেছে তখন আকাশ আসল…

আকাশঃ মেঘলার দিকে তাকিয়ে বলল তুই এখানে কি করছিস…??

মেঘলাঃ মানে..??

আকাশঃ কাজের লোক আর মালিক কখনো একি টেবিলে বসে খায় শুনেছিস..

মেঘলাঃ আমি কি সত্যি সত্যি কাজের মেয়ে🥺

আকাশঃ তো কি?উঠ বলছি

মেঘলা জানে কথা না শুনলে থাপ্পড় খেতে হবে তাই খাওয়া বাদ দিয়ে উঠে গেল।

আকাশঃ প্লেট নিয়ে নিচে বস।

মেঘলাঃ তোরা খা আমি পরে খাব।

আকাশঃ আবার তুই করে বলিস? উঠ বলছি

আকাশ মেঘলার প্লেট নিয়ে গিয়ে মেঘলাকে ফ্লোরে বসিয়ে দিল।
ব্যাপার টা দেখে মুটামুটি সবারেই খারাপ লেগেছে শুধু নিলিমা খুশি হয়েছে।

আকাশঃ আজ থেকে তুই ফ্লোরেই খাবি

মেঘলা কিছু না বলে চোখের জল ফেলতে ফেলতে ফ্লোরে বসেই খেয়ে নিল।

পরদিন সকালে মেঘলা স্কুলের জন্য বের হতেই দেখল নীরবের গাড়িটা বাসার সামনে পার্ক করা।

মেঘলা অবাক হয়ে গাড়ির কাছে গেল।

যাওয়ার সাথে সাথেই
নিরবঃ গুড মরনিং

মেঘলাঃ তুমি এত সকালে এখানে?

নীরবঃতোমাকে স্কুলে দিয়ে আসব তাই এসেছি।
উঠো…

মেঘলা গাড়িতে উঠল…

নীরবঃ কি ব্যাপার মেঘলা তুমি আজ এত চুপচাপ যে.. কিছু কি হয়েছে? মন খারাপ কেন?

মেঘলা এবার কেঁদে ফেলল নীরব তাড়াতাড়ি গাড়ি থামিয়ে বলল কি হয়েছে মেঘলা?

মেঘলা চোখ মুছতে মুছতে বলল,কিছু না চলো স্কুলের দেড়ি হয়ে যাচ্ছে…

নীরবঃ আমাকে বলো না কি হয়েছে দেখবে হালকা লাগবে..

মেঘলাঃ আমার সাথে এমন কেন হল বলতে পারো..?? মা কেন আমাকে ছেড়ে চলে গেল? বাবা কেন বদলে গেল আমি কেন একমাত্র মেয়ে থেকে কাজের মেয়ে হয়ে গেলাম কি ভুল ছিল আমার?

নীরবঃ বোকা মেয়ে এর জন্য কাঁদতে হয় নাকি? উপড় ওয়ালা যেভাবে যার ভাগ্য লিখেছে তেমনটাই হবে তবে জেনে রেখো দুঃখের পরেই সুখ আসে দুঃখ না থাকলে সুখ টা উপলব্ধি করা যায় না তাই জীবনে দুঃখ আসে আবার চলেও যায়।নীরব একটা পানির বোতল এগয়ে দিয়ে বলল পানি খাও আর চোখ মুছো সব ঠক হয়ে যাবে…

নীরব আবার গাড়ি চালাতে শুরু করল কিন্তু কিছুটা যাওয়ার পর ২ টা গাড়ি এসে নীরবের গাড়ির সামনে দাঁড়াল আর কয়েক টা গুন্ডা টাইপের ছেলে এসে নীরবকে টেনে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিল।

মেঘলাও নেমে গিয়ে বলল কি করছেন আপনারা কারা ছাড়ুন নীরব কে…

ছেলেগুলির মধ্য থেকে একজন বলল ম্যাডম আপনার গাঁয়ে হাত দেয়ার পারমিশন নেই তাই সরুন বক বক করে কোন লাভ নেই

কথা শেষ হওয়ার আগেই কেউ একজন এসে মেঘলার পিছনে দাঁড়াল আর ছেলেগুলিকে ইশারা দিল। ছেলটাকে দেখে অন্যছেলেগুলি নীড়ব কে নিয়ে চলে গেল।

মেঘলাঃ আরে কোথায় যাচ্ছে থামো বলছি ওকে নিয়ে যাচ্ছো কেন?

মেঘলা যেই দৌড় দিতে চাইল পিছন থেকে এসে সেই হুডি পড়া ভিলেন এসে হাজির হল।

মেঘলাঃ আপনি কে? আমার সাথে এমন কেন করছেন..

ছেলেটা চিরকুট দিল..

ছেলেদের সাথে মিশতে মানা করেছিলাম না?

মেঘলাঃ নীরবের কোন ক্ষতি করবেন না প্লিজ।

-আরো ২ জনের ক্ষতি হবে..

মেঘলাঃ মানে কি…

-নেক্সট টার্গেট ঈষান অপরাধ হাত মিলানো…

মেঘলাঃ না এটা করবেন না প্লিজ।

– তারপর আকাশ…অপরাধ থাপ্পড় দেয়া।

মেঘলাঃ আমার কথাটা একটু শুনুন প্লিজ ওদের ক্ষতি করবেন না প্লিজ…

ছেলেটা হাসতে হাসতে চলে গেল।

মেঘলাঃ এখন আমি কি করব কিভাবে রক্ষা করব সবাইকে? এক দিকে ভাইয়ার অত্যাচার অন্যদিকে এই ভিলেন আমার জীবন টা পুরো ভিলেনময় হয়ে গেল…!!!

চলবে..!!!

Leave a Comment