Golperjogot

Golperjogot

ভিলেন – এ্যাকশন লাভস্টোরি পর্ব 11 | Villain Bangla Golpo

ভিলেন – এ্যাকশন লাভস্টোরি পর্ব 11 | Villain Bangla Golpo

মেঘলা আকাশের কথায় কোন গুরুত্ব দেয় নি কারন সে জানে আকাশ কিছুই করবে না।

আকাশের বাসার সবাই বিকালের মধ্যেই মেঘলার বাসায় চলে গেল শুধু আকাশ গেল না।

আজ মেঘলার বিয়ে,মেঘলা বেশ হাসিখুশি সাজগোছ করেছে নিজের মনের মত। এনগেইজমেন্ট বলে কথা..

সারাদিন কোন গন্ডগোল হয় নি জন্যে মেঘলার মাও আকাশের ব্যাপারটা ভুলে গেল।
সন্ধ্যার দিকে বর পক্ষ আসলো সব আত্মীয়রাও।
এনগেইজমেন্টের সকল প্রস্তুতি সম্পুর্ন।

তখনি অনেক গুলি বাইক একসাথে গেইটের সামনে এসে থামলো..
অনেকগুলি ছেলে এসে বাসায় ডুকতে লাগল সবার সামনে আছে আকাশ।
আকাশ খুব শান্ত ভাবে পকেটে হাত রেখে নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আসছে দেখে মনে হচ্ছে তার চেয়ে ভদ্র ছেলে পৃথিবীতে আর একটাও নেই।

কিন্তু তার সাথের ছেলে গুলি দেখে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,কারন তাদের দেখেই বুঝা যাচ্ছে তারা মারামারি করতে এসেছে,

আকাশকে আসতে দেখে মেঘলার বাবা এগিয়ে গেলেন…কারন তিনি বেশ বুঝতে পেরেছেন আকাশ ঝামেলা করতে এসেছে।

মেঘলার বাবাঃ আকাশ বাসা ভর্তি লোকজন তোমার কিছু বলার থাকলে পরে বলো।

আকাশ গলা নিচু করে খুব ভদ্রতার সাথে বলল আমার কিছু বলার নেই আংকেল আমার জিনিস আমাকে দিয়ে দিন আমি চলে যাই..কোন ঝামেলা করব না কথা দিলাম।

মেঘলার বাবাঃ মানে কি?

আকাশঃ বেশিক্ষন শান্ত থাকতে পারি না আংকেল এই একটাই সমস্যা আমার,ভদ্রভাবে তো বল্লাম শুনলেল না এবার সামনে থেকে সরুন আংকেল বুঝতেই পারছেন আজ আমি কারোর কোন কথাই শুনব না মেঘলাকে আমি নিতে এসেছি পৃথিবীর কোন শক্তিই আজ ওকে আমার কাছে থেকে সরাতে পারবে না তাই অযথা ঝামেলা বাড়িয়ে কি লাভ?সরুন প্লিজ।

আকাশের বাবা কিছু বলতে যাবে তখনি অন্য একটা ছেলে বলে উঠল উফফ আংকেল আপনিও না… কিছুই বুঝেন না দেখে কি মনে হচ্ছে আমরা এখানে দাওয়াত খেতে এসেছি? আমরা যেখানে যাই কাজ শেষ করেই ফিরি আপনার সাধ্য নেই আমাদের আটকানোর তাই চুপ থাকুন।বলেই মেঘলার বাবার দিকে বন্দুক তাক করল ২ জন সাথে সাথে বিয়ে বাড়িতে থমথমে পরিবেশের সৃষ্টি হল।

আকাশ এবার মেঘলার কাছে গেল।

তারপর মেঘলার থুতনিতে হাত দিয়ে মুখ উঁচু করে বলল বাহ কি সুন্দর সেজেছিস রে মেঘলা…
দেখি দেখি বাপরে লিপষ্টিক পরেছিও তাও লাল রং এর।
আকাশ এবার মেঘলার হাত টেনে বলল মেহেদীও পড়েছিস নাকি দেখি বাহ সাহস তো ভালই হয়েছে দেখতে পাচ্ছি…তবে এটা বুঝলাম না সেজেগুঁজে ঢং করার অধিকার তোকে কে দিল..??একবারো বুক কাঁপলো না?

পড়ুন  লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ৩৭/অন্তিম পর্ব থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

আকাশের কথা বলার ধরন দেখেই মেঘলার পরাণ পাখি উড়ে গেল কারন আকাশ সাধারনত এভাবে কথা বলে না…আর মেয়েদের গায়ে হাত তো একেবারেই দেয় না।তাও এত লোকের সামনে….

এতদিন আকাশকে ভয় না পেলেও আজ আকাশের অন্য এক রুপ দেখে মেঘলার ভয় করছে…মেঘলা কি বলবে বুঝতে পারছে না আকাশকে শান্ত করার জন্য ভয়ে ভয়ে বলল ভ ভ ভ ভাইয়া বস না…

আকাশঃ হ্যা বসতে তো পারতামেই কিন্তু হাতে যে একদম সময় নেই অনেক কাজ বাকি। চল তোকে এখন আমার সাথে যেতে হবে।

মেঘলাঃ আ আ আমার তো আজ বিয়ে ভাইয়া আমি কি করে যাব….. কথা শেষ হওয়ার আগেই আকাশ স্বজোরে মেঘলার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিল।মেঘলা ছিটকে গিয়ে নিচে পড়ল।আকাশ গিয়ে মেঘলার চুলের মুটি ধরে টেনে তুলল..

আকাশঃ আজ তোর কি যানি আবার বল..?শুনতে পাই নি।আকাশ দাঁতে দাঁত চেপে বলল আমাকে না জানিয়ে তুই বিয়ের পীড়িতে বসিস এত সাহস কই পেলি? আচ্ছা চল তোর বিয়ে করার শখ আমি মিটিয়ে দিচ্ছি।বলেই মেঘলাকে টানতে লাগল আকাশ।

মেঘলাঃ তুই আমার কাজিন হয়ে এমন ভিলেনের মত আচারন কি করে করতে করছিস ভাইয়া?

আকাশঃ মুখ দিয়ে আর একটা শব্দ বের হলে এখানেই মেরে পুঁতে রেখে দিব.

মেঘলার মা,আকাশের বাবা মা সহ বাসার সবাই হতবাক।

মেঘলার মাঃ বাবুনি তুই এসব কি করছিস…

আকাশঃ আদরের ডাকে আমাকে ডেকোনা মনি…তোমরা কে আমাকে কত ভালবাসো সেটা আমার দেখা হয়ে গেছে… কি করে পারলে মেঘলার বিয়ে ঠিক করতে একবারো আমার কথা মনে পড়ল না?

মেঘলাঃ ভাইয়া….

আকাশঃ চুপ একদম চুপ এতদিন জানতাম তুই আমাকে ভালবাসিস আজ তুই প্রমান দিলি তুই শুধু মুখে মুখেই বলিস আসলে আমার জন্য তোর মনে কোন জায়গা নেই তুই আমার ভালবাসা পাওয়ার যোগ্য না কিন্তু নিজের হাতে গড়ে তুলেছি তো তাই তোকে অন্যকারোর হতে দিতে পারব না তাই তোকে নিয়ে যাচ্ছি তাই বলে ভাবিস না তোকে আমি ভাল রাখব পৃথিবীর যত ধরনের শাস্তি আছে তুই পাবি…আজ থেকে ভুলে যাস পুরনো আকাশ কে আগের আকাশ তোকে আগলে রাখত এই আকাশো রাখবে তবে আগে আকাশ তোর ইচ্ছায় চলত এবার তুই চলবি আকাশের ইচ্ছায় আমার কথার বাইরে এক পা রাখলে একটা হাড়ও আস্ত রাখব না।

পড়ুন  Romantic Love Story Bangla Valobashi Dujone Part 12

চল এবার বলে মেঘলার চুল ধরে টানতে টানতে নিয়ে বেরিয়ে আকাশ…

আকাশের সাথের ছেলেদের প্রত্যেকের হাতে গান ছিল তাই কেউ কিছু বলার সাহস পেল না।আকাশ মেঘলাকে নিয়ে নিজের বাসায় গেল।

মেঘলাঃ আমার লাগছে রে ছাড় ভাইয়া…

আকাশ আরো জোরে চুল টেনে ধরে বলল ন্যাকামি আমার সাথে চলবে না… কি মনে করেছিস সব ভুলে গেছি…??

না কিছুই ভুলি নি আরে তোকে কখনো মাটিতে পা রাখতে দেই নি তোর পায়ে ময়লা লেগে যাবে বলে সবসময় ছায়া হয়ে পাশে থাকতাম একটা প্রজাপতির মত করে যত্ন করে রেখিছিলাম তোকে যাকে বেশি হালকা করে ধরে রাখলে উড়ে যাবে আবার বেশি জোর করে ধরলে মরে যাবে এতটাই সাবধনতার সাথে রাখতাম তোকে.. তোর জন্য রান্না করা কাপড় কাচা বাসন মাজা ঘর গোছানো,সব করেছি হাজারটা ছেলের সাথে মারামারি করেছি জীবনে যা যা একবার শুধু মুখ দিয়ে চেয়েছিস সব তোর পায়ের কাছে এনে দিয়েছি। বিশ্বাস হচ্ছে না তাই না? দাঁড়া দেখাচ্ছি বলে সেদিনে পছন্দ করা ড্রেস টা লেকের শাপলা সেদিনের আইস্ক্রিমের প্যাকেট সহ হাজার টা ছোট জিনিস দেখালো যেগুলি বিভিন্ন সময় মেঘলা পছন্দ করেছিল।
আমার এত ভালবাসার বিনিময়ে তুই আমাকে কি দিয়েছিস মেঘলা? অন্য কারোর বাচ্চা আর বিয়ের দাওয়াত তাই না?

আমার ভালবাসাকে তুই পায়ে ঠেলে দিয়েছিস মেঘলা আমি এই সব কিছুর হিসেব নিব আজ থেকে তোর জিবনের নতুন অধ্যায় শুরু হল। জীবন কতটা ভয়াবহ তুই আজ থেকে বুঝবি এতদিন ন্যাকামি করে চোখের জল ফেলেছিস এবার সত্যিকারের চোখের জল ফেলবি কিন্তু সেটা মুছিয়ে দেয়ার জন্য আকাশ আর আসবে না…

মেঘলা কি বলবে বুঝতে পারছে না…শুধু আকাশের দিকে অসহায়ের মত তাকিয়ে আছে।

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top