Golperjogot

Golperjogot

ভিলেন – রোমান্টক প্রেমের গল্প পর্ব 13 | Villain Bangla Golpo

ভিলেন–রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব 13 | Villain Bangla Golpo

মিঃ রায়হান খানের ছেলে নীরব খান সাথে আজ মেঘলার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল…
নীরব ছোট থেকে বিদেশে বড় হয়েছে কিছুদিন আগেই দেশে ফিরেছে।
বয়স ১৯ নীরবের পড়াশুনা এখনো শেষ হয় নি। নীরব আর আকাশ সমবয়সী, পড়াশুনাও সেইম ব্যাচ। আকাশ এবার H.s.c দিয়েছিল খুব ভাল রেজাল্টও করেছে। আর নীরব বিদেশে “A” level দিয়ে ডিগ্রী নিয়ে ফিরেছে কারন নীরবের বাবা চান নীরব এবার তার ব্যবসাটা বুঝে নিক তাই নীরবকে দেশে নিয়ে এসেছেন এখানেই কোন ভাল ভার্সিটিতে ভর্তি করবেন পাশাপাশি অফিসেও বসবে…

মেঘলা বা নীরব কারোরেই বিয়ের বয়স হয় নি।কথাছিল এনগেইজমেন্ট পড়িয়ে রাখা হবে বিয়ে হবে আরো কয়েক বছর পরে মুলত মেঘলার বাবা ও নীরবের বাবা তাদের পার্টনারশিপ মজবুত করার জন্যই এই সম্পর্ক করতে চেয়েছিলেন।

নীরবের বিয়ে করার ইচ্ছা ছিলনা কিন্তু বাবা মার কথায় রাজি হয়েছিল,
নীরব মেঘলাকে আগে কখনো দেখে নি।
আর মেঘলার তো বিয়ে করার ইচ্ছাই ছিল না তাই দেখার প্রয়োজন মনে করে নি.. ২ জন কেউ এই কাউকে চিনে না।এনগেইজমেন্ট হওয়ার আগে দূর থেকে একে অপরকে দেখেছিল কথা বলার সুযোগ হয় নি তার আগেই আকাশ এসে সব উলটপালট করে দিয়েছে

বিয়েটা ভেংগে যাওয়ায় নীরবের খুব অপমানবোধ হয়েছে।সে বাসায় ফিরেই সোস্যাল মিডিয়ায় মেঘলার আইডি খুঁজতে লাগল আর পেয়েও গেল।

নীরব মেঘলার ছবি দেখতে দেখতে ভাবছে,

নীরবঃ এইটুকু একটা মেয়ে তার আবার বয়ফ্রেন্ড ও আছে?বয়ফ্রেন্ড ছিল ভাল কথা অনুষ্ঠানের আগে কেন বলল না…?? আমাকে এভাবে অপমান করার ফল তো তোমাকে ভোগ করতেই হবে ডেয়ার…বিয়ে তো আমি তোমাকেই করব। দেখি কে আটকাতে পারে…

নীরব মেঘলার আইডি থেকে আকাশের আইডি খুঁজে বের করল নীরব।

নীরবঃ গেম শুরুর আগে দেখতে হবে প্রতিপক্ষ কতটা শক্তিশালী… নীরব আকাশের আইডিতে ঢুকল আর অবাক খুবেই সাদামাটা আইডি আকাশের কোন রকম আগলা ভাবের কোন ছবি নেই যা আছে সব ফরমাল ছবি আর খুব বেশি পোস্ট ও করা হয় না আইডিতে…

নীরব এটা দেখে খুব খুশি হল,

নীরবঃ ও আচ্ছা তাহলে কালকের সব ফাপড় ছিল এই ছেলের কোন পাওয়ারেই নেই। হয়ত অন্যদের ভাড়া করে এনেছিল। একে তো আমি এক তুরিতেই উড়িয়ে দিব তুমাকে আমার হাত থেকে বাঁচাবে মিস মেঘলা…নীরব আকাশের এড্রেস আর ডিটেল জানার জন্য প্রোফাইলটা দেখছিল তখন দেখলো আকাশের সাথে তার বেশ অনেকগুলি মিউচুয়াল ফ্রেন্ড আছে…

নীরব সাথে সাথেই একজন কে নক দিল আর আকাশের একটা ছবি পাটিয়ে আকাশের ব্যাপারে জানতে চাইল।

ছেলেটিঃ এটা তো আকাশ?

নীরবঃ বাসা কি এখানেই?

ছেলেটিঃ না ওর বাসা এখান থেকে কিছুটা দূরে তবে প্রায়েই এখানে আসে ওর ফুফির বাসা এখানে একটা বোন আছে খুব আদর করে মেয়েটাকে সেজন্যেই আসে…

পড়ুন  Bangla Premer Golpo Tomar Amar Prem Part 5 Love Story

নীরবঃহুম তুই ওকে কিভাবে চিনিস?

ছেলেটিঃ ওকে চিনে না এমন কেউ আছে নাকি প্রচুর মারামারি করে…বলতে পারিস ডন।

নীরবঃ কি বলিস? আইডি দেখলাম তো গোবেচারার মত লাগে…

ছেলেটিঃ এটাই ওর স্টাইল দেখ এই গোবেচারা পিকে কত কত কমেন্ট কেউ ভাই ছাড়া কথা বলে না। বড় ছোট সবাই ওকে ভাই বলে। ও এতই মোডি যে কারোর কমেন্টের রিপ্লে পর্যন্ত দেয় না।ও খুব চুপচাপ থাকে মাঝে মাঝে ২,১ টা কথা বলে।এলাকার নেতারাও ওর সামনে কথা বলতে ভয় পায়। রাজনীতে আসার জন্যে অনেকেই অনেক রিকুয়েস্ট করেছে ও আসে নি। তবে প্রায়েই বিভিন্ন পোগ্রামে নেতারা ওকে হায়ার করে নিয়ে আসে সোআপ করার জন্য । একটা পোগ্রামে দেখা হয়েছিল সেই থেকেই পরিচয়।

নীরব এবার ভালো করে আইডি টা দেখলো আর নিজেই নিজেকে বলল যতটা সহজ ভেবে ছিলাম তত টা সহজ হবে না…
যাক প্লেয়ার সম সাময়িক না হলে খেলা জমে না…
এবার দেখার পালা কে জিতে…!!!

এদিকে,
মেঘলা কে নিয়ে যাওয়ার পর আকাশ মেঘলাকে অনেকবার ফোন করেছে কিন্তু মেঘলার ফোন বন্ধ…

সময়ের সাথে আকাশের অস্থিরতা বাড়তে লাগল তাই মেঘলার মার নাম্বারে কল দিল…

আকাশঃ মনি…

মেঘলার মাঃ হুম বল.

আকাশঃ আমি একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছি তাই না? আসলে মাথা টা এত গরম হয়ে গিয়েছিল আর কিছু ভাবতে পারি নি।

মনিঃ বাবুনি আমার কথাটা শোন বাবা, মেঘলার বাবা এই সম্পর্কটা কিছুই মানবে না। তুই পাগলামি করিস না…উনি টাকা ছাড়া কিছুই বোঝেন না।

আকাশঃ তো আমাকে মানবে না কেন মনি আমি কি ভিখারি ? আমি কি মেঘলাকে সুখে রাখতে পারব না। মেঘলা আমাকে ছাড়া কখনই সুখি হবে না বিশ্বাস করো…

মনিঃ আমি জানি মেঘলা তোকে ছাড়া থাকতে পারবে না কিন্তু মেঘলার সুখ দিয়ে তার বাবা কি করবে? তার তো দরকার টাকা। মিঃ রায়হানের সম্পত্তির উপড় নজর পড়েছে উনার। যেভাবেই হোক সেটা নিজের করে ছাড়বে তাতে মেঘলার জীবন নষ্ট হয়ে গেলেও তার কিছু যায় আসে না।তিনি মেয়ে বা আমার কথা কবেই বা ভেবেছেন?যে আজ ভাব্বে?

আকাশ কথা বলতে বলতেই মেঘলার বাবা এসে মেঘলার মার কাছ থেকে ফোন টা কেড়ে নিয়ে নিল।

মেঘলার বাবাঃ তুমি…??আবার ফোন করেছো?তোমার সাহস হয় কি করে ফোন করার?বলেছি না তোমাদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই…আবার কি চাই…??

আকাশঃ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যেভাবেই বলি না কেন আংকেল আমার একটাই চাওয়া সেটা হল মেঘলা…

মেঘলার বাবাঃ শুধু চাইলেই তো হয় না চাওয়ার জন্য পাওয়ার মত ক্ষমতা থাকতে হয়…আগে মেঘলার যোগ্য হও তারপর চাইতে এসো…

আকাশঃ কি নেই আমার টাকা, বাড়ি,গাড়ি সবি ত আছে।

মেঘলার বাবাঃ তোমার কিছুই নেই সব তোমার বাবার…আজ তোমাকে বের করে দিলে তোমার রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াতে হবে।আর তোমার মা যে ধরনের মহিলা কখন যে বের করে দিবে কে জানে।
তুমি যানো আজ মেঘলার যার সাথে বিয়ে হতে যাচ্ছিল সে বিদেশ থেকে পড়াশুনা করে দেশে এসে বাবার ব্যবসা সামলাচ্ছে…
সে তুলনায় তুমি তো দেশে পড়াশুনা করছো তুমি কখনো নিজের পায়ে দাঁড়াতে পাড়বে বলে তো আমার মনে হয় না…

পড়ুন  Bangla Valobashar Golpo Love Never Ended Part 5 | Sad Story

মনিঃ কিসব বলছো আকাশ কত ট্যালেন্টেড সেটা জেনেও এভাবে বলছো কেন? আকাশ বোর্ড স্ট্যান্ড করা সুডেন্ট।

আকাশের বাবাঃ রাখো তো আমাদের দেশের পড়াশুনার ব্যাপারে আমি জানি, ওর মত এমন ট্যালেন্ডেড হাজার হাজার আছে যারা শুধু সার্টিফিকেটই অর্জন করতে পারে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না। আকাশ নীরবের পায়ের নখের ও যোগ্য না…

কথাটা আকাশের খুব লাগল..
আকাশ রাগে ফোন টা কেটে দিল…

কিছুক্ষন পর আকাশ তার মনিকে আবার ফোন দিল…

আকাশঃ মনি আমি যদি নিজের পায়ে দাঁড়াই মেঘলাকে দিবে আমায়..??

মনিঃ অবশ্যই দিব তুই একবার শুধু দেখিয়ে দে তারপর আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তোদের বিয়ে দিব।যখন তোর পরিচয় দেয়ার মত একটা পরিচয় হবে তখন আমি সবার সামনে মাথা উঁচু করে বলব আকাশ মেঘলার যোগ্য।

আকাশঃ তাহলে কথা দাও আমাকে ৪ বছর সময় দিবে…এর মধ্যে মেঘলার বিয়ে হতে তুমি দিবে না…

মনিঃ কথা দিলাম আকাশ আমি বেঁচে থাকতে তোর মেঘলাকে অন্য কারো হতে দিব না।

পরদিন সকালে,

আকাশ আবার ফোন দিল,

আকাশঃ মনি মেঘলা কোথায়..??

মেঘলার মাঃ ঘরেই আছে ওর বাবা ওকে আটকে রেখেছে,ফোনটাও নিয়ে নিয়েছে…

আকাশঃ ওকে একটা বার বাইরে পাঠাবে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে…

মনিঃ ঠিক আছে পাঠাচ্ছি তবে বেশিক্ষনের জন্য না ওর বাবা অফিসে গিয়েছেন লাঞ্চের আগেই দিয়ে যাস…

আকাশঃ আচ্ছা…

মেঘলার মাঃ মেঘলা…আকাশ এসেছে… নিচে অপেক্ষা করছে যাবি আর আসবি বেশি দেড়ি করবি না বলে দিলাম।

মেঘলা কিছু না বলে বাইরে চলে গেল।

গিয়ে দেখল আকাশ বাইরে দাঁড়িয়ে আছে…
মেঘলা গিয়েই আকাশকে মারতে শুরু করল,

আকাশঃ কি হল..?? মারছিস কেন?

মেঘলাঃ এতক্ষনে তোর আসার সময় হলো..??সারাটা রাত আমার কি করে কেটেছে জানিস?

আকাশঃ এখানে ঝগড়া করাটা ঠিক হবে না চল।

আকাশ মেঘলাকে নিয়ে একটা ক্যাফেতে গেল।

মেঘলাঃ চকলেট এনে দে…

আকাশ চকলেট এনে দিল…

আকাশঃ আর কিছু খাবি?

মেঘলা খেতে খেতে বলল উহু… কিন্তু তুই আজ এত চুপচাপ কেন? বাবার কথায় মন খারাপ করেছিস তাই না?
বাবা এমনেই আমাকেই মন খারাপ করিস না ভাইয়া..

আকাশঃ তোকে একটা কথা বলার জন্য ডেকেছি মেঘলা…

মেঘলাঃ কিছু কি হয়েছে তোর মনটা এত খারাপ কেন রে…

আকাশ চোখের জল লুকিয়ে বলল কই মন খারাপ? কিছুই হয় নি…তকে তো খুশির খবর দিতে এসেছি..

পড়ুন  ভিলেন – থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 35 | Villain Action Story

মেঘলাঃ সত্যি…??? কি খবর বল বল…

আকাশঃ আমি স্কলারশিপ পেয়েছি মেঘলা আজ রাতের ফ্লাইটে আমি uk চলে যাচ্ছি…

কথাটা শুনার সাথে সাথে মেঘলার হাত থেকে চকলেট গুলি পড়ে গেল…

আকাশ অভিনয়ের আনন্দ প্রকাশ করতে করতে বলল
আকাশঃ কিরে পাগলী খুশু হস নি?

মেঘলা নির্বাক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে এক পাহাড় সমান অভিমান নিয়ে বলল
তুই আমাকে ছেড়ে চলে যাবি ভাইয়া…??

আকাশঃ হ্যা অবশ্যই… এত বড় সুযোগ পেয়েও হাত ছাড়া করব নাকি নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে না?আমি বাইরে যাব পড়াশুনা করব কত নাম ডাক হবে আমার তুই সেটা চাস না??

মেঘলা সবার সামনে আকাশকে জরিয়ে ধরে কেঁদে ফেলল আর বলল না চাই না আমি চাই না তুই আমাকে ছেড়ে কোথাও যা…

আকাশঃ জানতাম তুই এমন টাই করবি। আমি যাই বলি না কেন তুই কিছুই শুনবি না কোন কিছুর বিনিময়েই তুই আমাকে যেতে দিবি না সিনক্রিয়েট করবি না আমাকে কঠোর হতে হবে মেঘলাকে সারাজীবনের জন্য পেতে এখন এই কষ্ট টা ওকে দিতে হবে।(মনে মনে)
আকাশ নিজের খারাপ লাগাটাকে মনের ভিতরে পোষে রেখে একটানে মেঘলাকে সরিয়ে দিয়ে বলল।

আকাশঃ কেমন বন্ধু তুই?যে আমার ভাল টা সহ্য করতে পারছিস না…আমার উজ্জল ভবিষ্যত দেখে তোর হিংসা হচ্ছে…???আমার উন্নতির পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে চাইছিস..??

মেঘলাঃ কি বলছিস এসব তুই?

আকাশঃ ঠিক কথাই তো বলছি।

মেঘলাঃ দেশে থেকে কি মানুষ নিজের পায়ে দাঁড়ায় না?

আকাশঃ দাঁড়ায় কিন্তু অনেক সময় লাগে সে যাই হোক আমার পরিবার চায় আমি যাই আমি নিজেও চাই আমি যাই তাহলে তুই বাঁধা দেয়ার কে? কে হোস তুই আমার? তোকে যে জন্যে ডেকেছি,আমি তো চলে যাচ্ছি এবার থেকে পাগলামি গুলি বাদ দে, ,ছেলেদের সাথে এত মিশিস না, নিজের খেয়াল রাখিস মেঘলা। মনে রাখিস তোকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য আকাশ নেই তাই নিজের খেয়াল নিজেকেই রাখতে হবে।লক্ষি হয়ে থাকিস।কথাগুলি একদমে বলে ফেলল আকাশ কারন তার কষ্ট হচ্ছে সেটা মেঘলাকে বুঝতে দিতে চায় না আকাশ।

আকাশঃএখন আমাকে যেতে হবে সন্ধ্যা ৬ টায় ফ্লাইট।বলে আকাশ হাঁটতে লাগল।

মেঘলা পিছন থেকে আকাশের হাত ধরে বলল যাস না প্লিজ…আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারব না রে…

আকাশ মেঘলাকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলল আমি কি তোর জন্য নিজের ভবিষ্যত কে পায়ে ঠেলে দিব নাকি?আমি কি তোর বডিগার্ড? স্বার্থপর মেয়ে নিজের সুখের জন্য আমাকে আটকে রাখতে চাইছিস.. হাত ছাড়… বলে এজ ঝটকায় হাত টা ছাড়িয়ে নিল আর বলল, এই জন্যেই বলে কুকুর কে লায় দিতে নেই। দিলে ঘাড়ে চেপে বসে…

মেঘলাঃ তুই আমাকে কুকুর বললি …??

আকাশ আর কিছু না বলে চলে গেল…!!!

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top