Golperjogot

Golperjogot

ভিলেন নাকি লাভার – পর্ব ১ | মনা হোসাইন

আকাশঃ হাই,সুইটহার্ট আমি তোমাকে নিতে এসেছি..চল রেডি হয়ে নাও।আকাশের এমন কথায় হিয়া যেন আকাশ থেকে পড়ল,বাবা কি বলছে এই লোকটা?অবাক দৃষ্টিতে বাবার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল হিয়া।

আকাশঃ না না সুইটহার্ট উনি আর কিছুই বলবেন না, কারন আমি তোমাকে কিনে নিয়েছি, টাকার বিনিময়ে উনি তোমাকে আমার কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন (শয়তানি হাসি দিয়ে)

হিয়াঃ কি যাতা বলছেন আর এসবের মানে কি?বাবা তুমি কিছু বলছ না কেন?গার্ড ডেকে আগের দিনের মত ঘাড় থাক্কা দিয়ে বের করে দাও এই বেয়াদব,গর্দব,ঢেরশ টাকে। হনুমান কোথাকার।

আকাশঃ ভিষন রেগে গিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে, বেশ জোরে বলে উঠল বড্ড বেশি বাজে কথা বলছো তুমি,আমার হাতে এত সময় নেই বাবা মেয়ের ন্যাকামি দেখার,তুমি কি নিজে যাবে নাকি টেনে হিচড়ে নিয়ে যেতে হবে তুমাকে শুনি। আমি কি কি পাড়ি ইতিমধ্যেই জেনেছো নিশ্চুই….

রফিক সাহেবঃ আমার কিছুই করার নেই মা,উনি যা বলছেন মেনে নে, আর পারলে আমায় ক্ষমা করে দিস মা।বলেই রফিক সাহেব মানে হিয়ার বাবা চলে গেলেন

হিয়াঃ আমি কিছুই বোঝতে পারছিলাম না কি হচ্ছে এসব? বাবা কেন এমন বল্ল? সত্যি সত্যি মাথার উপড় যেন আকাশটা ভেংগে পড়লো,আমি গলা ফাটিয়ে যেই বলতে গেলাম আমি যাব না…..তখনি অনুভব করলাম চারদিক টা যেন অন্ধকার হয়ে গেছে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না নিজেকে একটু সামলে নিয়ে বোঝতে পারলাম কেউ আমাকে থাপ্পর মেরেছে আর সেটা এতই জোড়ে মেরেছে যে আমি চিটকে পড়ে গেছি আমার মনে হল, পৃথিবী টা যেন থেমে গেছে এক মুহুর্তের জন্য,ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হচ্ছে সেদিকে যেন কারোর খেয়ালেই নেই আমি যেন জেলের কয়েদি ঠিক সেভাবেই আমার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে আমাকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন আকাশ নামের পাষানটা।আমার হাতে থাকা কাচের চুড়িগুলো ভেংগে আমার হাতে চেপে বসেছে হাত কেটে রক্ত পড়ছে ভিষন কস্ট হচ্ছে কিন্ত ভয়েতে কিছু বলতে পারলাম না। যেন মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। এভাবেই জোর করে গাড়িতে তুলল আমাকে, তারপর অজানার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেন আকাশ।

এই আকাশ হল আমাদের এলাকার কমিশনারের ছেলে বয়স খুব বেশি হলে ২৬। বেশ লম্বা ফর্সা আর হ্যান্ডসাম, খুব বেশি কথা বলে না চুপচাপ রাগি রাগি লুক নিয়া থাকে সম সময়। এলাকার সব মেয়েরা তার জন্য পাগল।শুধু মেয়েরা না এলাকার সবাই তাকে ভালবাসে আবার ভয় ও পায় কিন্ত সে অযথা কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করে না,শুধু আমার সাথেই করে শুধু খারাপ ব্যবহার না কথায় কথার মারে তার অনেক রাগ রেগে গেলে মানুষকে খুন করতেও পিছ পা হয় না সে। বিদেশ থেকে পড়াশুনা শেষ করে ফিরেছে কয়েক মাস আগেই, বাবার টাকায় চলার ইচ্ছা তার নাই তাই নিজের বিজনেস শুরু করেছে এবং সফল ও হয়েছে বিশাল টাকার মালিক তার উপড় বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে।যদি ভালভাবে বলতো হয়ত প্রেম করতে রাজি হয়ে যেতাম এত হ্যান্ডসাম একটা ছেলে প্রেমে পড়ার এই কথা কিন্তু সে আমার সাথে প্রেম করতে চায় না,তাহলে কি চায় সে আমার কাছে কেনই বা যখন তখন এসে আমার উপড় অত্যাচার করে আর আজ তো অত্যাচারের সব সিমা পেরিয়ে গেছে আমার অনিচ্ছা সত্তেও আমাকে কই জানি নিয়ে যাচ্ছে, আচ্ছা বাবাতো এতদিন উনাকে গালাগাল করছেন, সাবধান করেছেন গার্ডসদের দিয়ে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে ছিলেন অবশ্য তখন তিনি জানতেন না এই গুনধর কমিশনারের ছেলে তবে কি কমিশনার এর ছেলে বলেই আজ আমাকে উনার হাতে ছেড়ে দিলেন ভেবেই কান্না পাচ্ছে,আচ্ছা উনিত আমাকে ভালবাসেন না তবে কেন নিয়ে যাচ্ছেন আমায় বোঝতে পারছি না,উফ মাথার স্কু যে কয়টা ঠিক ছিল সেগুলাও মনে হয় ঢিলা হয়ে যাবে এবার,এই হনুমানের কার্যকলাপ বিশ্লেষন করতে করতে, না আর ভাবতে পারছিনা,এসব ভাবতে ভাবতেই, হিয়া জ্ঞান হারিয়ে ফেলে, হয়ত সেই থাপ্পর আর হাতের ব্লাডিং এর জন্য অসুস্থ হয়ে পড়েছে….

Short Story

ভাবতে ভাবতে জ্ঞান হারায় হিয়া, হঠাৎ করে তার চোখে মুখে পানির স্পর্শ পেল,কেউ আলত করে তার ঠোঁটে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,চোখ খুলতে ইচ্ছে করছিল না তাও মিটমিট করে তাকিয়ে দেখে মিঃ হারামজাতা(আকাশ) তার চোখ মুখে পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে আর ঠোঁটের রক্তটাও মুছে দিছে,হাতটাও পানি দিয়ে মুছে দিছে, হাতটা অল্প ছিলে গেছে তাই আর ব্যান্ডজের প্রয়োজন হয়নি।গাড়িটা রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে আছে

হিয়াঃখচ্চর লোক একটা, আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?আর আমার সাথে সবসময় এমন করেন কেন? যাব না আমি আপনার সাথে।

আকাশঃও তাই নাকি বেবি…বলেই গাড়ি স্টার্ট দিলহিয়াঃ বল্লাম না যাব না কথা কি শুনতে পান না নাকি?

আকাশ গাড়ি থামিয়ে দিলযাক বাবা খচ্ছরটা কথা শুনছে তাহলে (হিয়া)আকাশ একটা পানির বোতল হাতে দিয়ে বলল পানি খাও।হিয়াঃ আজব আমি কি আপনার কাছে পানি খেতে চাইছি?আকাশঃ তুমি বড্ড বেশি কথা বলো,আমার ধর্য্যের সীমা পেড়িয়ে গেছে এটা বলেই কোথা থেকে একটা ট্যাপ হাতে নিয়ে হিয়ার মুখে লাগিয়ে দিয়ে বলল,পানি খাওয়ার সুযোগ দিছিলাম,বোঝলা না।

হিয়াঃ রাগে গজ গজ করতে লাগল কিন্তু মুখে ট্যাপ লাগানো থাকায় আর কিছু বলতে পারল না।আকাশ ড্রাইভ করা শুরু করল…..

হিয়াঃ মনে মনে ভাবছে গত ৭ দিন আগেও আমার জীবনটা কত সুন্দর ছিল আর এই গুন্ডাটা ৭ দিনে আমার জীবনটা একদম লটর পটর করে দিল।কয়েকদিন আগে আরিয়ানের এর সাথে বসে বাসার পাশে একটা ক্যাফেতে কফি খাচ্ছিলাম, হটাৎ চারদিক অন্ধকার হয়ে গেল মানে আজকের মতই সেদিন ও থাপ্পড় খেয়েছিলাম।রাগে শরীর ফেটে পড়ছিল আমি কোন হারামজাদা,ইতর,বেয়াদব,গুই সাপের বাচ্চারে…আমার গালটা কি তর বাপের সমত্তি নাকি যে আমাকে থাপ্পড় মারলি বলেই চেয়ার থেকে উঠে দাড়াঁতেই দেখলাম কপালে রগ ফুলিয়ে হাতে শক্ত মুষ্টি করে দাঁড়িয়ে আছে একটা অসম্ভব স্মার্ট ছেলে,এই কে আপনি আর আমাকে মারলেন কেন…….কথা শেষ হওয়ার আগেই আবারো থাপ্পড় মারলো এবার আর সহ্য হল না ভ্যা করে কেঁদে দিলাম….

পাশ থেকে দাঁড়িয়ে আরিয়ান বলে উঠল আকাশ তুই এখানে….আর ওকে মারছিস কেন…??

আকাশঃ আকাশ খান, কখনো কাউকে খয়ফত দিছে বলে শুনেছিস?

আরিয়ানঃ না মানে আমতা আমতা করে বলে উঠল আমি এটা বলতে চাই নি।

আকাশঃ আচ্ছা ছাড় এসব কথা,এখন তুই বলতো এই জিনিস টাকে তুই কোথায় পেয়েছিস ( হিয়ার দিকে তাকিয়ে)আর কি হয় তোর এই মেয়েটা?

আমি তো একমনে কেদেঁই চলেছি (হিয়া)

আকাশঃ উফ এত চিল্লাচ্ছ কেন? কানের পোকা বের করে দিচ্ছ একবারে( ধমক দিয়ে বলল)এবার আরিয়ানকে উদ্দেশ্য ক্রে চেঁচিয়ে বলে উঠলাম কে এই বাজে লোকটা….আকাশ চোখ গরম করে বলল তোকে কিছু জিজ্ঞাস করছি আরিয়ান।আরিয়ানঃ ভয়ে ভয়ে বলল এক বছর আগে এসেছে এরা এখানে,আমি আর হিয়া বন্ধু।আকাশঃটেবিলে জোরে চাপ্পড় মেরে বলে উঠল জানতাম।

Related Story

আরিয়ান আর আমি আমরা কিছুই বোঝতে পারছি না।আমি ভাবছি কি হচ্ছে এগুলা, আর এই সাইকোটাই বা কে?আরিয়ানকে আমি কিছু জিজ্ঞাস করতে যাব এর মধ্যেই আকাশ চেঁচিয়ে বলল আরিয়ান যা তুই এখান থেকে।বেশ বোঝলাম আরিয়ান ভয় পাইছে চুপচাপ চলে গেল।এবার আমার ভয় লাগতে শুরু করলক্যাফের সবাইকে ইশারা করলো আকাশ, সবাই চলে গেল আমি বোকার মত দাড়িঁয়ে আছি….আকাশঃ হাতটা চেপে ধরে বলল বাসায় চল আমি তোমার বাসায় যাব….

Leave a Comment