Golperjogot

Golperjogot

ভিলেন নাকি লাভার – পর্ব ২ | মনা হোসাইন

আকাশঃ বাসায় চলো,তোমার বাসায় যাব আমি।বলতে বলতে টেনে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে বলল বাড়ির ঠিকানা বলো।

হিয়াঃআপনি কে? আমার সাথে এমন করছেন কেন?

আকাশঃএত কথা বলার সময় নেই আমার কাছে ঠিকানা বলো (ধমক দিয়ে)

হিয়াঃমনে মনে ভাবলাম বাসায় নিয়ে গেলে ইচ্ছা মত মার খাওয়ানো যাবে,আমাকে মারার শোধ তুলেই ছাড়ব আমি। এটা ভেবেই ঠিকানা বলে দিল হিয়া।ড্রাইভার চলো ( আকাশ)কিছুক্ষনের মধ্যেই বাসায় পৌছে গেলাম।

বেশ ভাল অবস্থা হিয়ার বাবার,তার উপড় বাসার চারপাশে গার্ডস ও রয়েছে।এসব কিছুর তোয়াক্কা না করে একদম বাসার ভিতরে চলে গেল আকাশ।

এরি মধ্যে হিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে তার বাবার বুকে মুখ লুকিয়ে যা যা ঘটেছে সব বলতে লাগল।

আকাশঃ হিয়া,চলো আজ এক্ষনি আমি তোমাকে আমার কাছে নিয়ে যাব।

রফিক সাহেব আকাশ কে,আর কেন এমন করছে কিছু জিজ্ঞাসা না করেই গার্ডসদের হুকুম দিল. গার্ডসদের ডেকে বলল আকাশ কে মারতে মারতে বের করে দিতে।আকাশকে মার খেতে দেখে হিয়ার খুশি যেন আর ধরে না। খিল খিল করে হাসিতে ফেটে পড়ছে সে।এবার দ্যাখ গুইসাপের বাচ্চা মার খেতে কেমন লাগে আমাকে থাপ্পর মারা তাই না ( হিয়া মনে মনে)গার্ডসরা আকাশকে মারতে শুরু করেছে।আকাশ হিয়ার এমন আচারন দেখে অবাক হলো। সে যেন এটা বিশ্বাস এই করতে পাড়ছে না যে হিয়া তার কস্ট দেখে আনন্দ পাচ্ছে।আকাশ এতক্ষন হিয়ার দিকে তাকিয়ে ছিল সে যেন একটা ঘোরের মধ্যে ছিল।হঠাৎ মাথায় আঘাত পেয়ে আকাশের ঘোর কাটল,পরনে থাকা কোর্ট না খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিল আর একনাগাড়ে সব গার্ডসদের মারতে শুরু করল,সবাইকে মেরে শুয়িয়ে দিয়ে কোন কথা না বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেল।হিয়া এবং রফিক সাহেব অবাক চোখে তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।যাই হোক চলে ত গেছে এটা ভেবে শান্তি পেল হিয়া,এবার নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ল।সকালে কলেজে যাওয়ার জন্য বের হয়েছে এর মধ্যেই আরিয়ানকে দেখতে পেল দৌড়ে গিয়ে আরিয়ান এর সামনে দাঁড়ায় হিয়া।হিয়াঃছি ছি ছি…তুমি কাল আমাকে আস্ত একটা রাক্ষসের সামনে রেখে এভাবে চলে গেলে….???

Short Story

আরিয়ানঃ কি বলছো তুমি এসব?আর তাছাড়া আমি এর আগে কখনো দেখি নি আকাশ কোন মেয়ের সাথে এমন আচারন করতে। এখন তুমি বলো আকাশের সাথে তুমার কিভাবে পরিচয়?

হিয়াঃওই হনুমানের সাথে আমার কিসের পরিচয়? আমি ওকে এর আগে কখনো দেখিই নি…

আরিয়ানঃএটা কিভাবে সম্ভব?আকাশ আমার বড় চাচার ছেলে আমারা সমবয়সি আর আমরা একসাথে বড় হয়েছি আমি কখনো দেখি নি আকাশ কারন ছাড়া কাউকে কিছু বলেছে।তাহলে তুমাকে কেন মারলো?আসলে আকাশ আমাকে অনেক ভালবাসে ও কয়েকবার আমার জীবন বাঁচিয়েছ আর আমি নিশ্চিত ছিলাম ও তোমার কোন ক্ষতি করবে না তাই চলে গেছিলাম।

হিয়াঃ ভালই হইছে তুমি চলে গেছো,কাল ওকে মেরে বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছি…মুখ ভেংচি দিয়ে বলল হিয়া।

আরিয়ানঃ কি বলছো তুমি এসব হিয়া, তুমি জানো ও কে? ও এই এলাকার কমিশনারের ছেলে খুবই রাগি একটা ছেলে,চাচা ওর জন্য হাফ ডজন সিকিউরিটি গার্ড রেখেছেন ওর গায়ে একটা ফুলের টুকাও লাগতে দেই না আমরা কেউ ও আমাদের পরিবারের মধ্যমনি আর তাছাড়া ওর গার্ডদের কিছু না করলেও চলে ও নিজেই তো ডজন খানিক লোককে শুয়িয়ে দিতে পারে আর তুমি বলছো কিনা….

হিয়াঃ বেশ অবাক হয়েছে হিয়া, কথাটা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বলল আমার কলেজের দেড়ি হয়ে যাচ্ছে আমি এখন যাই পড়ে কথা হবে।

আরিয়ানঃ তোমাকে আমি ভালবাসি তাই তোমাকে কিছু বলতে পারলাম না তোমার জায়গায় যদি অন্য কেউ আকাশের ব্যাপারে কিছু বলত তবে তাকে দেখে নিতাম (মনে মনে) আচ্ছা যাও। আরিয়ান আকাশকে খুব ভালবাসে আর আকাশও তাকে।আরিয়ানকে বিদায় দিয়ে যেই একটু সামনে এগিয়ে গেলাম বোঝলাম পিছন থেকে কেউ আমার হাত ধরেছে কোন হারামজাদা, ইতর,বেয়াদব,গর্দব ঢেরশরে আমার হাত ধরেছিস? হাত টা কি তর বাপের সমত্তি নাকি বলতে বলতে তাকিয়ে দেখি রাক্ষস টা….ওমা কাল এত মার খেয়েও আজ একদম সুস্থ আছে কিভাবে…আল্লাহ কি এটাকে স্টিল দিয়ে বানাছে নাকি হিয়া মনে মনে বলতে লাগলো।আকাশঃ সুইট হার্ট, হ্যা সম্পত্তি তবে বাবার নয় আমার।আর আমি স্টিলের তৈরি তোমার কোন সমস্যা?হিয়াঃও মা এই ছেলে আমার মনের কথা বোঝল কিভাবে?আমি কিছু বলার আগেই খচ্ছর টা আমার ঠোঁটে একটা জোড়ে কামড় দিল আমি ভয়ে ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে উঠলামআকাশঃ ধমক দিয়ে বলল ডাকাত পড়েছে নাকি এত চেঁচাচ্ছ কেন?হিয়াঃ ব্যাগ থেকে একটা আয়না বের করে দেখতে লাগলাম(সাজুগুজু করতে ভাল লাগে তাই ব্যাগে সবসময় আয়না থাকে)

আকাশঃএই মেয়ে কি ব্যাগে পার্লার নিয়ে ঘুড়ে নাকি,কান্নার শব্দে আকাশের ভাবনায় ছেদ পড়ল এই আহাম্মক আবার বাচ্চাদের মত কাদঁছে কেন? আকাশ বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞাস করল ওই কি হইছে সমস্যা কি?

হিয়াঃকত সপ্ন ছিল একটা রাজপুত্রের সাথে বিয়ে হবে আমার, একটা মেয়ে হবে আমি আর আমার মেয়ে সেম ড্রেস পড়ে সেম মেইকঅভার করব। এই বিশ্রি ঠোঁট নিয়ে আমি কিভাবে সাজব ভ্যা ভ্যা…. করে কাদেঁই চলেছে হিয়া।

আকাশঃ হাসবে নাকি রাগ করবে বোঝতে পাড়ছে না।আচ্ছা বাবা থামো আমি ঠিক করে দিব।

হিয়াঃআকাশের একদম কাছে এসে মুখ উচু করে বলল,দিন তবে….

আকাশঃহিয়ার কানের কাছে মুখ নিয়ে হিয়ার কানে ঠোঁট ছুয়ে দিল আর ফিস ফিস করে বলল আগে বাচ্চা হতে দাও তখন ঠিক করে দিব।

হিয়াঃ ঠোঁট খেয়ে শান্তি হয়নি?এখন কি কানটাও খেয়ে ফেলবেন?রাক্ষস কোথাকার, (চেঁচিয়ে বলে উঠল)এভাবেই যখন তখন আকাশ এসে হাজির হত হিয়ার সামনে কখনো চিমটি কাটত কখনো আবার থাপ্পড় মারত,চুল ধরে টানত এভাবেই গত সাতদিন চলে গেছে এগুলা ভাবতে ভাবতেই গাড়ি এসে এক বিরাত বাড়ির সামনে থামলো।

আকাশঃ হিয়ার মুখ খুলে দিয়ে বলল সব সময় লক্ষি মেয়ের মত থাকবা এখন বাসায় ভিতরে চলো।ভিতরে ঢুকতেই কিছু কাজের লোক এসলো তার মধ্যে একজন মধ্যবয়সি মহিলাও আছেন।তিনি এগিয়ে এসে বল্লেন স্যার উনি…???আকাশঃ আমার বউ….!!!হিয়াঃকিন্তু আমাদের ত বিয়ে……বলা শেষ হয়নি ঠাসসসস….করে থাপ্পড় দিল আকাশ।হিয়াঃএই আপনার সমস্যা কি? কথায় কথায় মারেন কেন? আপনার হাত কি চুলকায় নাকি?

আকাশঃনা হাত চুলকায় না আসলে তোমার মুখটা একটু বেশি চলে আর আমার চলে হাত তাই,তোমার মুখ যদি বন্ধ থাকে তাহলে আমার হাতটাও বন্ধ থাকবে বোঝেছো…???

হিয়া চুপ হয়ে গেল কারন কথা বললেই পৃথিবী অন্ধকার হয়ে যাবে সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই…!!!

আকাশঃ বাবা মা ফিরে নি?

ওই মহিলা বললেন না স্যার কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে আসবেন আপনারা ফ্রেশ হয়ে নিন আমি খাবার দিচ্ছি।আকাশঃ না খাবার দিতে হবে না আমার বউ খুব কম খায় আমাকে জিজ্ঞাস না করে ওকে কেউ কিছু খেতে দিবা না….আর আমরা খেয়ে এসেছি

হিয়াঃ আরে বাবা আমি কখন খেলাম? আমার মুখে ত ট্যাপ ছিল (মনে মনে)

আকাশঃমনে মনে বিড়বিড় করে লাভ নাই,আমি সবি শুনতে পাচ্ছি ঘরে চলো…. (শয়তানি হাসি দিয়ে)হিয়াঃ মনে মনেও কথা বলা যাবে না কি যন্ত্রনারে বাবা। জল্লাদ একটা ( মনে মনে)

আবার বকা দিচ্ছ…??? (আকাশ)

হিয়াঃকই নাত কিছুই বলিনি আমি, চলেন যাই।

আকাশঃহুম চলো।

রুমটা বেশ গুছানো দেখে ভালই লাগছে কিন্তু আমাকে কেন জানি বিছানাটা খুব টানছে যদি একটু ঘুমাতে পারতাম ভাল হত ( হিয়া)

আকাশঃ যাও চেঞ্জ করে আসো ওয়াশরুম দেখিয়ে দিলহিয়াঃচেঞ্জ করে কি পড়ব? আমি তো জামা কাপড় আনি নি।আকাশঃআলমারিতে কাপড়ের অভাব নাই বলে আলমারির চাবি দিল।

গিয়ে দেখি সত্যিই অনেক গুলো কিউট কিউট ড্রেস তার মানে আমি এখানে একা নই এর আগেও অনেক মেয়ে এসেছে ছি ছি ছি… কি খারাপ ছেলেটা….দাঁড়িয়ে আছো কেন…??? (আকাশ)

আজ আমার কপালে দুঃখ আছে বোঝলাম, এইতো যাচ্ছি বলে ওয়াশরুমে ডুকলাম( হিয়া)বের হয়ে দিখি উনিও অন্যরুম থাকে শাওয়ার নিয়ে এসেছেন বসে বসে মোবাইল টিপছেন…. মুখ নিচের দিকে রেখেই বল্লেন এতক্ষন কি করছিলে? শাওয়ার নিতে এতক্ষন লাগে? বলে মুখ তুলে থাকালেন।আকাশঃওর দিকে তাকিয়ে মেজাজটা পুরাই খারাপ হয়ে গেল পায়ের রক্ত যেন মাথায় উঠছে…. এই অবস্থা কেন তোমার?( রাগে চেঁচিয়ে)

হিয়াঃ আমি যেই কান্না শুরু করতে যাব তখনি আকাশ বলে উঠল এবার যদি কান্না করো তোমাকে ফ্লাইওভার থেকে ধাক্কা দিয়ে সোজা নিচে ফেলে দিব।আমি ভয়ে কান্না থামালাম সত্যি সত্যি ফেলে দিতে পারে এই জল্লাদের কোন বিশ্বাস নাই…. আসলে টাওয়াল নিতে ভুলে গেছিলাম…(হিয়া)

আকাশঃকথাটা শুনে মেজাজ গরম হয়ে গেল….যেই থাপ্পড় দিতে যাব হিয়া বলে উঠল আপনাকে দিতে বলছিলাম আপনি দেন নি। তাই বের হতে দেরি হল আপনার অপেক্ষায় দাড়িঁয়ে ছিলাম (হিয়া)না মারা যাবে না দোষ তো আমারেই, আমিই তো অন্যরুমে গেছিলাম আর সত্যি বলতে এই ভিজা চুলে আর নীল ড্রেসে ওকে অসাধারন লাগছিল।মারতে ইচ্ছা করছে না বরং যদি একটু…….ধুর বাবা কি উল্টা পাল্টা ভাবছি এসব (আকাশ)

Related Story

আসলে টাওয়ালের অভাবে ভিজা শরীরের মধ্যেই জামা গায়ে দিয়েছে তাই জামাটা আধভিজা হয়ে শরিরে বসে গেছে চুল থেকে টুপ টুপ করে পানি পড়ছে….নিজের অজান্তেই একটা ছেলেকে পাগল করার সকল ব্যবস্থায় করে নিয়েছেন এই ম্যাডাম।না আর সহ্য হচ্ছে না তাড়াতাড়ি করে,হাতে টাওয়াল নিয়ে গিয়ে চুল মুছতে শুরু করলাম চুল মুছে দিয়ে একটা লাল টপস দিয়ে বল্লাম চেঞ্জ করে এসো তাড়াতাড়ি ….আসলে ও যদি এই আধ ভিজা অবস্থায় বেশিক্ষন এই নীল ড্রেসটা পড়ে আমার চোখের সামনে থাকে তাহলে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারব না তাই বললাম….(আকাশ)ওয়াশরুমে তো পাঠিয়ে দিলাম কিন্তুএখন আবার উনি কি ঘটনা ঘটাবেন কে জানে সেটাই ভাবতে লাগলো আকাশ….ভাবা শেষ হওয়ার আগেই চিৎকারের আওয়াজ….আকাশঃ ওই যে হয়ে গেল…. চলুন দেখে আসি কি আবার করলেন তিনি….

Leave a Comment