Golperjogot

Golperjogot

ভিলেন নাকি লাভার – পর্ব ৩ | মনা হোসাইন

ওয়াশরুম থেকে হিয়া চেঁচাচ্ছে,বাজে,অসভ্য,খচ্ছর লোক….আকাশ ওয়াশরুমের কাছে গিয়ে বলল কি হইছে সমস্যা কি? এভাবে ছাগলের মত চেঁচাচ্ছ কেন?

হিয়াঃএটা কি ড্রেস দিছেন?

আকাশঃকেন কি হইছে?

হিয়াঃএত ছোট আর সামনে দিয়ে পুরুটাই তো খোলা অসভ্য লোক।

আকাশঃদাঁতে দাঁত চেপে বলল,ভিজা কাপড়ে ছেলেদের সামনে দাড়িঁয়ে থাকাটা বোঝি সভ্য মেয়েদের কাজ?

হিয়াঃছেলে পাইলেন কই?

আকাশঃ আমাকে কি মেয়ে মনে হয়?

হিয়াঃ হি হি হি….

আকাশঃহাসতাছো কেন? (প্রচন্ড রেগে)

হিয়াঃ আপনাকে গাউন পড়িয়ে লিপস্টিক দিলে কেমন দেখাবে সেটাই চোখে ভাসছে তাই হাসছি….সাথে একমনে হেসে চলেছে…

আকাশঃ বাইরে আয় হারামি….

হিয়াঃ না এই ড্রেসে আমি বাইরে যাব না।

তাহলে সারারাত খালি গাঁয়ে রাখতে বাধ্য হব এক্ষনি বের হও (ধমক দিয়ে)

হিয়াঃ ভয়ে ভয়ে বের হল না খারাপ লাগছে না আর ঘরে তো রাক্ষসটা ছাড়া আর কেউ নেই সমস্যা নাই। আপনি আমার দিকে তাকাবেন না কেমন।

আকাশঃআচ্ছা তাকাব না,এবার খুশি?

হিয়াঃহুম খুশি

আকাশঃযাও শোফায় শুয়ে পড় এবার….

হিয়া যেন আকাশ থেকে পড়ল আর বলে উঠল ছি আপনারা কত গরীব…

আকাশঃ কি বললা তুমি?

হিয়া বোঝল কিছু একটা করতে হবে না হলে এখনি পৃথবী অন্ধকার হয়ে যাবে সন্দেহ নেই…

হিয়াঃনা মানে নে নে নে…হুম বলো কি মানে (আকাশ)

আরে এত বড় বাড়িতে কি আর কোন ঘর নেই থাকার মতো?(হিয়া)

ঘর থাকলে কি হবে?(আকাশ)

আমি ওখানে থাকতাম(হিয়া)

তোমাকে কি আমি খাইতে আর ঘুমাইতে নিয়া আসছি বলে তোমার মনে হয়?(আকাশ)

আলমারি দেখেই বোঝেছি কি জন্য নিয়া আসছেন(হিয়া)

আকাশঃআগে তো ভাবছিলাম তোমার মাথায় ২,১টা স্ক্রু ঠিকঠাক আছে, এখন তো দেখছি সবগুলাই ঢিলা আলমারিতে কি দেখলা?

হিয়াঃকিছুনা বলেই খাটে উঠি শুয়ে পড়লো

আকাশঃও তুমি তাহলে খাটে থাকতে চাও বেবি?

হিয়াঃ হুম…কিন্তু আপনি ওখানে ঘুমাবেনআকাশঃ বাহ কি সাহস তোমার…বলতে বলতে নিজের কোর্ট খুলতে থাকে এবার হিয়া আর কি করবে কিছুক্ষন কম্বল নিয়ে টানাটানি করে হার মানল, ততক্ষনে আকাশ তাকে টেনে হিছড়ে বিছানা থেকে নামিয়ে নতুন একটা কম্বল দিয়ে ঘুমাতে বলছে….হিয়া হনুমানটার সাথে থাকব না মনে মনে বলেই চুপিচুপি কম্বল নিয়ে অন্যরুমে গিয়ে সোফায় বসেছে।আকাশের রাগ এখন আর বাঁধ মানছে না।হিয়ার সামনে গিয়া বল্ল কি হচ্ছে এগুলা?

হিয়াঃএত কম জায়গায় কেউ ঘুমাতে পাড়ে নাকি আমি এখানে থাকব।

আকাশঃঅসম্ভব সবাইকে জানাতে চাও যে আমাদের বিয়ে হয়নি? এটা আমি হতে দিব নাবিয়ে ছাড়া আমার বাবা মা তোমাকে আমার সাথে থাকতে দিবে না। আর আমি তোমাকে বিয়ে করব না।কিন্তু তুমি অন্য কোথাও থাকবে এটা আমি হতে দিব না হাত ধরে টানাটানি করছে আকাশকিন্তু হিয়াও নাছোড়বান্দা সেও কোনমতে যাবে না ঘরে।আকাশ নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে না পেড়ে সোফায় হিয়াকে চেপে ধরে হিয়ার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেপে দিল ২, ৩ টা বাইট দিতেই হিয়া ভ্যা করে কেঁদে দিল….আকাশ সাথে সাথে ওকে ছেড়ে দিল হিয়া উঠে বলল আমি থাকব না আপনার সাথে…তাহলে কি আরিয়ানের সাথে থাকবা বলেই আকাশ হিয়াকে কোলে তুলে নিয়ে ঘরে গিয়ে বিছানায় ছুড়ে ফেলে দিল ….খুব বেশি বাড়াবাড়ি করছো তুমি এরপর আমার কথা না শুনলে নিজের অবস্থা দেখে নিজেই ভয় পাবে…..

বলতে বলতে হিয়াকে বিছানায় ফেলে দিল আকাশ….হিয়া বোঝল ওকে সামলাতে হলে এখন কিছু একটা বলতে হবে এটা ভেবেই হিয়া বলে উঠল ক্ষিদে পেয়েছে…আকাশঃ কি….??? আমি কি বলি আর এই মেয়ে কি বলে?এই তোমার মাথায় কি সত্যিই কিছু নাই? কোন সময় কি বলতে হয় বোঝনা?

হিয়াঃ আমি খুব ভাল ভাবেই বোঝি ওই বিষয়টা বাদ না দিলে মাইর গুলা ত আমারই খেতে হবে মনে মনে ভাবতে ভাবতে বললো,তো কি বলবো ক্ষুদা পাইছে সেটাও বলা যাবে না নাকি?আকাশঃআমি একটা সিরিয়াস বিষয়ে কথা বলতেছিলাম…হিয়াঃআমার পেটে ইঁদুর বিড়াল দৌড়া দৌড়ি করছে এটা বুঝি সিরিয়াস বিষয় না?

আকাশঃউফ আল্লাহ কি দিয়া বানাইছো তুমি এই মেয়েকে? তা তোমার পেটে ইঁদুর বিড়াল ঢুকল কি করে?হিয়াঃ এমনি এমনি ঢুকছে,যান খাবার নিয়া আসেন।

আকাশঃ তাই বোঝি….আমাকে হুকুম করার সাহস হয় কি করে তোমার (ধমক দিয়ে)আর তোমার আজ খাওয়া বন্ধ জানো না?

হিয়াঃকেন খাওয়া বন্ধ কেন?আমি খাব।

আকাশঃহিয়ার হাত চেপে ধরে বললো,আমি আজ কোন বাড়াবাড়ি করতে চাচ্ছিনা। আমি চাই না বাবা মা জানুক আমাদের মধ্যে ঝামেলা আছে,তাই চুপ একটাও বাড়তি কথা না আর থাকো তুমি বিছানায়, আমি থাকছি সোফায়,রাগে গজ গজ করতে করতে কথা গুলো বলল আকাশ।

হিয়াঃ আপনার বুদ্ধিটা একটু আগে খোল্লেই এত কিছু হত না…(মনে মনে)

আকাশঃ কি বলতাছো মনে মনে….??? অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়া

হিয়া আর কিছু না বলে শুয়ে পড়লো।আকাশ ও ঘুমিয়ে গেল….

সকালে চোখ খুলে হিয়া দেখলো আকাশ শান্ত ছেলের মত শুয়ে ঘুমাচ্ছে আকাশকে দেখে… যেন, চোখ জুড়িয়ে গেল হিয়ার….!!!হিয়া ভাবতে লাগলো যেরকম খারাপ ভাবছিলাম, কই তেমন কিছু তো ঘটে নি,উনি বলছিলেন আমায় নাকি কিনে এনেছেন আর আমার জানামতে আমার বাবার বেশ ভালই টাকা আছে তিনি নিশ্চুই আমাকে কম টাকায় বিক্রি করে নি….তাহলে এত টাকা দিয়ে উনি আমায় কিনলেন কেন?আর কিনে এনে আমার সাথে খারাপ কিছু করলেন না কেন? কিছু করা তো দূর উনি আমার সাথে এক বিছানায় পর্যন্ত ঘুমালেন না তবে কি উনি আমায় ভালবাসেন….???কিন্তু আমায় যদি ভালবাসবেন তাহলে আমাকে কিনবেন কেন আর আলমারিতে এত মেয়েদের জামা গুলাই বা কার?না বোঝতে পাড়ছি না….

Short Story

ঠিক তখনেই মুখের সামনে তুরি বাজিয়ে হিয়ার ধ্যান ভাঙ্গালো আকাশ…এত কি ভাবছো যাও ফ্রেশ হয়ে আসো বাবা মার সাথে দেখা করতে হবে বলে আকাশ হিয়াকে একটা শাড়ি দিলো।

হিয়াও চুপচাপ শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে যাচ্ছে,পিছন থেকে চেঁচিয়ে উঠল আকাশ তুমি কি থাপ্পড় না খেয়ে ঠিকঠাক কিছু করতে পাড়ো না?

হিয়া চমকে উঠে বললো আবার কি করলাম আমি (মাথা নিচু করে)

আকাশঃটাওয়েল টা কে নিবে শুনি?

হিয়াঃ দৌড়ে এসে খপ করে আকাশ এর হাত থেকে টাওয়াল টা নিয়ে বললো এই তো আমিই নিচ্ছি।

আকাশঃউফ….!!!যাও ফ্রেশ হয়ে উদ্ধার করো এবার আমায়।হিয়া ফ্রেশ হয়ে এসেছে আকাশ এবার ফ্রেশ হতে গেল…আকাশ ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলো হিয়া খুব সুন্দর করে শাড়ি পড়ে রেডি হয়ে আছে

আকাশঃthats like a good girl বলে টিশার্ট টা গেয়ে দিতে দিতে বলল চলো এবার….

হিয়াঃহুম চলুন পেটে এখন ইঁদুর গুলো ঢুগঢুগি বাজাচ্ছে…

আকাশঃহিয়ার কথায় বার বার অবাক হয়ে যাচ্ছি কিসব বলে এই মেয়েটা? ইঁদুর কি বাজাচ্ছে তাও আবার পেটের ভিতরে?

হিয়াঃ হ্যাঁ তাই….নিচে চলুন খেতে হবে।

আকাশঃ খাওয়াচ্ছি তোমায় শয়তানি হাসি দিয়ে (মনে মনে)

সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে আকাশ বললো বড় করে মাথায় ঘুমটা দাও আর শোন কথা বলবা না।আর আমি আরিয়ান কে আসতে বলেছে ওর সাথে তো একদমি মাখামাখি করব না যা যা বল্লাম মাথায় থাকে যেন….হিয়া মাথা নাঁড়িয়ে সাঁই দিল…গুড মরনিং বাবা গুড মরনিং মাম্মাম….আকাশের বাবাও গুড মরনিং বল্লেনরাতে আমাদের ফিরতে অনেক লেইট হইছিলো তাই আর ডাকি নি তোমাদের,হিয়াও প্রথমদিন আসছে তাই আর বিরক্ত করি নি।

আকাশঃহুম বাবা,কি ব্যাপার মাম্মম চুপ করে আছো কেন কিছু বলো?

মাঃthe great আকাশ খান বিয়ে করছে কিনা লুকিয়ে,তাও আবার এমন এই লুকোচুরি যে সেই বিয়েতে বাবা মাও থাকতে পাড়বে না এরপর সেই ছেলের সাথে কথা বলা যায়? কথা শেষ করার আগেই আকাশ গিয়ে মায়ের গলা জড়িয়ে বলতে লাগলো মাম্মাম প্লিজ এটা নিয়ে আর কথা বলো না আমি বলছি তো এটা আমার একটা সপ্ন ছিল যা আমি কাল পূরন করেছি….তুমি কি চাও তোমার ছেলের সপ্ন পূরন না হোক?(আদুরে গলায়)মাঃ একদমি না তাই তো যেভাবে চেয়েছো সব সেভাবেই হয়েছে….

আকাশঃ চলো পরিচয় করিয়ে দেই,

মাঃ হুম হিয়া,বয়স ১৯, আইস্ক্রিম খেতে খুব ভালবাসে,কাঁটার ভয়ে মাছ খেতে পাড়ে না সারাদিন বকবক করে আর কার্টুন দেখে এই তো?

হিয়াঃআমি তো অবাক ইনি এত কিছু কিভাবে জানলেন,আমার দিকে এগিয়ে এসে উনি বলতে লাগলেন মা তোর কথা শুনতে শুনতে সব মুখস্ত হয়ে গেছে আমি খুব খুশি হয়েছি তোদের এর সিধান্তে…

বাবাঃতো আমাকেউ একটু দেখতে দাও ছেলে কেমন মেয়ে আনছে দেখি….বাহ মাসআল্লাহ খুব সুন্দর বউ হয়েছে আমার ছেলের

মাঃকেমন আছিস মা..

হিয়াঃকোন উত্তর নাই….

মাঃ কিরে কথা বলবি না আমার সাথে…??

হিয়াঃআবারও চুপ….

বাবাঃ কি ব্যাপার তুমি কিছু বলছো না কেন (অবাক হয়ে)

হিয়াঃআসলে এই লোকটা আমাকে কথা বলতে নিষেধ করছে।

মাঃ এই লোকটা কে?

হিয়াঃ আকাশের দিকে আংগুল দিয়ে দেখালামমাঃ কি…???

হিয়াঃজি আরও বলেছেন উনার কথা না শুনলে অবস্থা খারাপ করে দিবেন

Related Story

আমার কথা শুনে মা বাবা হেসে দিলেন….কিন্তু এক জোড়া চোখ রক্ত চক্ষু নিয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে….!!আচ্ছা বোঝেছি এবার এসো খেতে বসো….(মা)

আকাশঃনা মা….আসলে ও এখানে খাবে না ঘরে খাবে আর ওর জন্য আলাদা ম্যানু আছে বলে হাত ধরে যেই সিঁড়ির দিকে নিয়ে যেতে পা বাড়ালো পিছন থেকে কেউ বলে উঠলো গুড মরনিং মেরে জান…..

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

Leave a Comment