Golperjogot

Golperjogot

villain naki lover part 5

ভিলেন নাকি লাভার – পর্ব ৫ | মনা হোসাইন


আকাশ কি বলে গেল কিছুই বোঝতে পাড়ছিলাম না কিন্তু আমার জীবনটা যে এলোমেলো হয়ে গেছে সেটা বোঝেছি…

রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কিছুই পেটে পড়ে নি আর আকাশ যে আমায় খেতে দিবেনা তাও বোঝতে বাকি নেই, নিজের ব্যবস্থা নিজেকেই করতে হবে....কিন্তু,আকাশ কে না বলে চুরি করে খেলে আকাশ যদি কোনোভাবে জানতে পাড়ে একটা মারও মাটিতে পড়বে না তাহলে...
কি করা যায় ভাবতে লাগলো হিয়া।

এসব ভাবতে ভাবতেই সে নিচে আসলো আর রান্না ঘরের দিকে গিয়া বললো সে দুপুরের রান্না করবে,
কাজের লোকেরা অনেক নিষেধ করার পড়েও সে মানলো না। নিচে কথা বলার আওয়াজ শুনে আকাশের মাম্মাম নিচে আসলো,আমার কাছে এসে মিষ্টি হাসি দিয়া বলল কি হয়েছে মা…

আসলে আন্টি আমি আজ একটু রান্না করতে চাচ্ছিলাম।(হিয়া)
মাম্মামঃ তুই রান্না করতে পারিস?(অবাক হয়ে)
হিয়াঃজি মানে নে নে....(ইউটিউব থাকতে টেনশান কিসের মনে মনে) আসলে পাড়ি বা না পাড়ি আমি তো নতুন বউ আমার উচিত সবাইকে রান্না করে খাওয়ানো।

মাম্মামঃ ঠিক আছে কর,সবাই তোকে সাহার্য্য করবে।
হিয়াঃ আপনি যান আমি করছি, বলে মোবাইল হাতে নিয়া এক একটা রেসিপি ১০ বার দেখে রান্না শেষ করলাম যাতে সব ঠিকঠাক হয়।

আমি সব খাবার টেবিলে সাজিয়ে রেখে রুমে গেলাম ফ্রেশ হতে।
লাঞ্চের সময় হল আকাশও বাসায় চলে আসছে।
আকাশ আসার সাথে সাথেই মাম্মম কে বলতে শুনলাম তুই এত লক্ষি বউ আনবি কখনো ভাবতেই পারি নি হিয়া তো একদম আদর্শ বউ আমার খুব পছন্দ হইছে…

আকাশঃঅলরেডি মাথা চিবিয়ে খাওয়ার ক্লাস নিয়ে নিছে তাহলে বিড় বিড় করে বলতে বলতে রুমে ঢুকলো।

হিয়া বসে ছিল আকাশকে দেখে উঠে দাঁড়ালো
কি করছো তুমি...???(আকাশ)
কই কি করছি?(হিয়া)
মাম্মাম কি বলছিলো(আকাশ)
জানি না (হিয়া)
মিসেস রহমান এসে বল্লো ম্যাম আপনাদের নিচে যেতে বলছেন...
আপনি যান আমরা আসছি,

বলে আকাশ হিয়াকে বললো চলুন ম্যাডাম কি কি করছেন সারাদিন শুনে আসি।
চলুন চলুন হিয়া বললো।

মাম্মামঃ এসে গেছিস আকাশ বস হিয়া আজ রান্না করেছে একসাথে খাব সবাই।

আকাশঃআকাশ অবাক হয়ে বললো ও রান্না করেছে মানে? আর মাম্মম হিয়া ত নিজের ঘরে খাবে।
হিয়াঃনা না কিসের নিজের ঘরে আমি এখানেই খাব।(ঘরে গেলে ত আজব ধরনের খাবার খাওয়াবেন মনে মনে)
আকাশঃরাগি লুক নিয়ে ঠিক আছে বসো।

হিয়াঃআন্টি আমি তোমার হাতে খাব....(না হলে কি কি খেতে দিবে কে জানে মনে মনে)

মাম্মামঃসত্যি তুই খাবি...???আকাশ তুই একদম আমার মনের মত বউ এনেছিস বাবা আমি খুব খুশি আজ।
হুম বোঝেছি খাওয়া শুরু করো (আকাশ)

মাম্মমঃহিয়ার মুখে খাবার তুলে দিতে চাইল হিয়া বল্লো আগে তুমি খেয়ে বলো কেমন হইছে?
আচ্ছা বলে মা বাবা ২ জনেই খাওয়া শুরু করলো
বাহ অনেক ভাল রান্না করেছো বল্লেন বাবা।
মাও বেশ প্রশংসা করলেন।

বাবাঃকিরে আকাশ শুরু কর...

আকাশঃঅনিচ্ছা সত্তেও হুম বলে খাওয়া শুরু করলো।
যেই এক মুঠো খাবার মুখে দিছে আকাশের চেহারা পুরাই বদলে গেছে,আকাশ কিছু বলতে যাবে তার আগেই হিয়া বলে উঠল,আমি জানিত বলবেন খাবার ভাল হয়নি আসলে আপনি ত আমাকে পছন্দ করেন না তাই সবার ভাল লাগলেও আপনার লাগবে না।

আকাশ স্তব্ধ হয়ে গেছে না পাড়ছে কিছু বলতে না পাড়ছে খাইতে।

মাম্মমঃহিয়াকে খাওয়াইতে খাওয়াইতে বললো আকাশ সব খাবার ভাল হয়েছে তুই খেয়ে দেখ।

বাধ্য হয়েই আকাশ নিচের দিকে মুখ করে খাচ্ছে কারন ও চায় না তার বাবা মা জানুক আমাদের মধ্যে ঝামেলা আছে।
আকাশ কোনো রকমে খাবার শেষ করে রুমে গেল।
মাম্মাম বললো তুই এখন ঘরে যা হিয়া,
আমার যাওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও যেতে হলো।

ঘরে গিয়েই আমার চোখ কপালে উঠে গেল ঘরের একি অবস্থা আকাশ ঘরে সব কিছু ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে।হিয়া ঘরে ডুকতেই আকাশ দরজা লক করে দিলো।হিয়ার হাত চেপে ধরে চেঁচিয়ে বললো তোমার সাহস কি করে হয় আমার খাবারে এত ঝাল দেওয়ার?

হিয়াঃআমাকে না খাইয়ে রাখার ফল বোঝ এবার রাক্ষস খচ্ছর একটা (মনে মনে)

হিয়াঃআমার যে কি আনন্দ হচ্ছিল বলে বোঝাতে পাড়ব না কারন আমি ইচ্ছা করেই আকাশের বাটিতে মরিচ মিশিয়ে দিয়েছিলাম কারন আমি ওর দুর্বল জায়গা টা কাল রাতেই জেনে গেছি ও চায় না বাবা মার সামনে ঝামেলা করতে আর ওকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য আদর্শ জায়গা মা বাবার সামনে।

একা ঘরে ওকে শাস্তি দেওয়া অসম্ভব আমার পক্ষে।মনে মনে ভাবছি এগুলা আর এক পৈশাচিক আনন্দ পাচ্ছি মনে মনে।যে ঝাল দিছিলাম ওর ঠোঁটের আজ বারোটা বেজে গেছে নিশ্চিত।

আকাশঃচোখ বড় বড় করে বললো তোমাকে কিছু জিজ্ঞাস করছি আমি...

হিয়াঃ আমতা আমতা করে বল্লো, না মানেনেনে...আসলে আমি বোঝতে পারিনিনি...

আকাশঃকোন ব্যাপার না ডিয়ার, আমি বোঝিয়ে দিচ্ছি বলে আমার ঠোঁটে ঠোঁট চেপে দিল, আমার ঠোঁট মুখ এখন আকাশের দখলে,না শুধু আকাশের ঠোঁট না আমার ঠোঁটে মুখে আকাশের জ্বিহবা বিচরন করছে বোঝতে বাকি রইল না আমার।
ঝালে আমার মুখ ঠোঁট জ্বলে যাচ্ছে,ওর মুখের সব ঝাল আমার মুখে চালান করে দিছে (হতচ্চাড়া)

তাও শান্তি হয় নি ছাড়ারার নামেই নিচ্ছে না,
ঝালে আর আকাশের চাপাচাপি তে আমার ধম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হইছে,তাও ছাড়ছে না।আমি যতই ধাক্কা দিয়ে আকাশকে দূরে সরাতে চাচ্ছি আকাশ ততই আমায় চেপে ধরছে।
পুরো ১০ মিনিট পর ছাড়লো।

আরো করবা এমন মনা? আমার গাল টেনে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়া দুষ্ট হাসি দিয়ে বললো আকাশ।
ঝালে আমার জীবন যায় যায় অবস্থা।

আকাশঃপ্রেমিকার ঠোঁটে এত মিষ্টি থাকে আজ প্রথম জানলাম প্রতিদিন ঝাল দিয়ে রান্না করো কেমন বলে আবার আমার গাল টেনে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল আকাশ।

আমি বসে বসে কাঁদতে লাগলাম ঝালে কাঁদছি নাকি অনাকাঙ্ক্ষিত ছেলের স্পর্শ পেয়ে তার জন্য কাঁদছি বোঝতে পাড়ছিনা।

আকাশঃ বের হয়ে এসে বললো এখানে বসে কি করছো?ঘরটা কে পরিষ্কার করবে শুনি।

১০ মিনিটের মধ্যে ঘর পরিষ্কার দেখতে চাই ধমক দিয়ে বললো আকাশ।

হিয়াঃআমি কেন ঘর পরিষ্কার করবো বলার সাথে সাথেই আকাশ চুলের মুঠি ধরে বললো আমি যা বলবো তোর তাই করতে হবে আর বাকি রইল বাবা মা সেটার ব্যবস্থাও আজ করে ফেলব।
এটা বলে বাইরে থেকে দরজা লক করে বললো ঘরে ফিরার আগেই যেন ঘর পরিষ্কার হয়ে যায়।

হিয়াঃ এতগুলি কাজের লোক থাকতে আমাকেই কেন কাজ করতে হবে? কিন্তু কিছুই করার নাই আবার যদি খারাপ কিছু করে তার ভয়েতে ঘর গোছানো শুরু করলাম।
কিছুক্ষন পর আকাশ ঘরে এসে বললো রাতের ফ্লাইটে বাবা মা uk যাচ্ছেন রেডি হয়ে নাও ওদেরকে ছাড়তে এয়ারপোর্টে যেতে হবে।

হিয়াঃ কিন্তু ওদের তো যাওয়ার কথা ছিল না তাহলে কেন যাচ্ছেন?

আকাশঃ তোমার বাড়াবাড়ি করার কারনে যাচ্ছেন,বিড় বিড় করে বললো। আমি পাটিয়ে দিচ্ছি বলে হা হা করে হেসে দিলেন,আমার সব প্লেন যে আকাশ বোঝে গেছে সেটা বোঝতে বাকি রইল না...

আকাশঃকানের কাছে মুখ এনে বললো সুইটহার্ট তুমি এখনো কচি খুকি, আকাশ কে জব্দ করা তোমার মত পিচ্চির কাজ না।যাও রেডি হয়ে নাও

সবাই মিলে এয়ারপোর্টে গেলাম বাবা মাকে বিদায় দিচ্ছি আর আমার বুক ফেটে কান্না পাচ্ছে কারন আমি জানি এরপর আমার সাথে কি কি হতে পারে বাঁচার শেষ আশ্রয়টুকুও চলে যাচ্ছে।

হিয়াঃআন্টি আপনারা চলে যাচ্ছেন আমি থাকব কি করে কাঁদো কাঁদো সুরে বল্লাম।

চিন্তা করিস না মা আকাশ তোকে সময় দিবে আমি বলে দিব ওকে, বলতে বলতে আমার মাথায় হাত বুলিয়া দিল আকাশের মা।
ওদেরকে বিদায় দিয়ে,
আকাশ আর আমি গাড়িতে করে ফিরে আসছি।গাড়িতে বসে বসে আকাশ বললো,
তুমি কি যানো তুমি যে একটা মাথা মোটা....???

হুয়াঃ হঠাৎ এমন কথা বলছেন কেন?

আকাশঃতুমি আমার হাত থেকে বাঁচার জন্য বাবা মার সাথে একটু বেশিই মিশে গেছো।ওরা ভাবলো আজ তুমি ওদের জন্য কাঁদছো।নিজের অজান্তেই তুমি ওদের মনে জায়গা করে নিয়েছো,এরপর আমি যখন তোমায় মুক্তি দিব ওরা তোমাকে ছাড়তে চাইবে না সেটা কি তোমার জন্য ভাল হবে?এরপর যাই করবা আগে ৩ বার ভাববা তারপর করবা ঠিক আছে?

হিয়াঃ হুম মাথা নিচু করে বললো কিছুক্ষন পর হিয়া বললো থামুন থামুন গাড়ি থামান প্লিজ।

আকাশঃহয়ত কিছু দরকার তাই আর কিছু না ভেবে গাড়ি থামালাম তারপর যা দেখলাম তার জন্য আমি একদমি প্রস্তুত ছিলাম না...

পড়ুন  মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ১১ | মোনা হোসাইন
পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top