Golperjogot

Golperjogot

ভিলেন নাকি লাভার – পর্ব ৬ | মনা হোসাইন

আকাশ গাড়ি থামাতেই হিয়া গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে চলে গেল।আকাশ বোঝতে পারলো না কি হচ্ছে বিষয়টা, হিয়া কি তাহলে পালাচ্ছে?কিন্তু পালিয়ে যাবে কই?এসব ভাবতে ভাবতে সামনে তাকিয়ে যা দেখলো তাতে তার পায়ের রক্ত মাথায় উঠে গেছে, রাগে সে গাড়ির স্টেয়ারিং এ জুড়ে আঘাত করলো

এরি মধ্যে হিয়া দৌড়ে গিয়ে একটা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে,আকাশের মাথা কাজ করছে না মনে মনে ভাবছে হিয়া এত সাহস পেল কোথা থেকে?আমার সামনে অন্যছেলের সাথে মাখামাখি করছে….??দূর থেকে দেখছে আকাশ, দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে হিয়া আকাশের নামে অভিযোগ করছে তাও কেঁদে কেঁদে। ছেলেটি হিয়াকে শান্তনা দিয়ে বললো ফিরে যেতে হিয়া রাজি হচ্ছিল না অনেক বোঝানোর পর হিয়া ফিরে আসছে, আকাশ তখনো গাড়ির মধ্যে থেকে তাকিয়ে দেখছে আকাশ গাড়ি থেকে নামে নি ছেলেটির কাছেও যায় নি কিংবা হিয়াকেও ডাকে নি কারন সে জানতো ছেলেটি হিয়াকে তার কাছেই পাঠাবে কারন ছেলেটি আর কেউ না আরিয়ান…!!!

হিয়া কাঁদতে কাঁদতে গাড়িতে এসে বসতেই আকাশ গাড়ি সার্ট দিল ফুল স্পিডে গাড়ি চলছে কারন আকাশ সময় নস্ট করতে চায় না।গাড়ি এসে বাড়ির সামনে থামতেই,

হিয়াঃআকাশ আমাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দিলো,গাড়ি থেকে বাসার সামনের রাস্তায় চিটকে পড়লাম আমি, দাঁড়ানোর আগেই আকাশ আমার চুলের মুটি ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে,আমি এখনো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারি নি তাই রাস্তায় পড়ে থাকা পাথরের সাথে ঘষায় আমার হাত পা ছিলে গেছে,সেদিকে আকাশের কোনো খেয়াল নেই সে তার সর্বশক্তি দিয়ে আমাকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার চেস্টা করছে।আমি ব্যাথায় চিৎকার করছি কিন্তু সে চিৎকার যেনো আকাশের কানে ডুকছে না।টানতে টানতে ঘরে নিয়ে যেতেই সব কাজের লোকেরা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে,মিসেস রহমান এসে বল্লেন স্যার কি করছেন আপনি…???

Short Story

চুপ একদম চুপ সবাই বাসা থেকে এক্ষুনি বেড়িয়ে যান একটা শব্দও উচ্চারন না করে বেড়িয়ে যান এই বলে চিৎকার করে উঠল আকাশ।সবাই ভয়ে চলে গেল।

হিয়াঃভয়ে আমার গলা শুকিয়ে গেছে,আকাশ এর আগেও আমায় মেড়েছে কিন্তু এত রাগ করতে আমি কখনো দেখি নি।আজ যেন এক অন্য আকাশ কে দেখছি যার রুপ ভয়াবহ…হিয়াঃআমার সাথে এমন কেন করছেন?

আকাশ এক হাতে আমার গাল চেপে ধরে বললো জানিস না কেন?অনেক ন্যাকামি করেছিস আর না বলেই জিন্স থেকে ব্যাল্ট টা খুলে হিয়াকে মারতে শুরু করলো আমার ঠোঁট ফেটে রক্ত পড়ছে কারন ব্যাল্ট টা এলোপাতাড়ি আমার সারা শরীরে একের পর এক আঘাত করে চলেছে কয়েকটা আঘাত ঠোঁটের উপড় ও পড়েছে।ব্যাথায় আমার সারা শরীর নীল হয়ে গেছে। ফর্সা শরিরে ব্যাল্টের আঘাত গুলোর নীল রং প্রমান করেছে সব রক্ত জমাট বেঁধে গেছে।

আকাশঃযদি তর চামড়া টা খুলে শরীর থেকে ফেলে দিতে পাড়তাম তবে শান্তি পাইতাম তুই আমার সামনে অন্য ছেলের সাথে মাখামাখি করিস?একবারো বুকটা কাঁপলো না তর?সাহস পেলি কোথায়? কি দেইনি আমি তোকে তবে কেন নিজের শরীরকে অপবিত্র করলি? জবাব দে… আকাশের চোখ অসম্ভব লাল হয়ে আছে সে যেনো নিজের রাগ কিছুতেই কন্ট্রোল করতে পাড়ছে না।

হিয়াঃএইটুকু ভুলের এত বড় শাস্তি মনে মনে ভাবছি।আমি ইতিমধ্যে কাঁপতে শুরু করেছি বাঁচার সব আশা ছেড়ে দিয়েছি এই বাড়িতে আর কেউ নেই আমাকে বাঁচানোর মত, আর আকাশের আঘাত করার গতি কিছুতেই কমছে না বরং সময়ের সাথে বেড়েই চলছে।

চোখে আর কিছু দেখতে পাচ্ছি না সব কেমন ঝাপসা হয়ে আসছে, মনে হচ্ছে আমি বোঝি এবার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে চলেছি।

অনেক্ষন পর ক্লান্ত হয়ে আকাশ আঘাত করা থামিয়ে হন হন করে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল,আমি ফ্লোরে পড়ে আছে উঠে বিছানায় যাওয়ার শক্তি তো দূর, চোখ মেলে তাকানোর শক্তিটুকুও হাড়িয়ে ফেলেছি।জীবনের কাছে হার মেনে নিলাম

উপড় ওয়ালার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি কারন আমি আর বাঁচব না সেটা আমি বোঝে গেছি….কিন্তু কি ছিল আমার অপরাধ? আর কে এই আকাশ কেন করলো আমার সাথে এমন? প্রশ্ন গুলোর উত্তর মিলাতে পারলাম না এটাই আমার আফসোস থেকে গেল,আর বাবা তোমার কাছে কি আমার কোনই মুল্য ছিল না টাকার জন্য আমায় নিশ্চিত মৃত্যর মুখে ঠেলে দিতে পাড়লে…??? আমি তোমাকে কখনো ক্ষমা করব না। শেষ ভরসা ছিল আরিয়ান সেও আমাকে ফিরিয়া দিয়েছে ছি… এর নাম বন্ধুত্ব?না আমিও আর বাঁচতে চাই না,এই পৃথিবীতে আমাকে ভালবাসে এমন কোন একটা ব্যাক্তিও নাই কার জন্য বাঁঁচব আমি…???

হিয়াঃনা আমিও আর বাঁচতে চাই না,কেন বাঁচব আমি,কার জন্য বাঁচব?আমাকে কেউ ভালবাসে না, কেউ নাই আমার কথা গুলি অস্পষ্ট কন্ঠে বলতে বলতেই চারদিক ঘন অন্ধকার হয়ে গেল হিয়ার…..,,,,,,পর দিন সকালে আরিয়ান আকাশের বাসায় আসলো।ঘরে ঢুকতেই আরিয়ানের দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা,কাজের লোকেরা এক পাশে জড়সড় হয়ে দাঁডিয়ে আছে ঘরের চারদিকে জিনিসপত্র ছড়ানো চিটানো…

ঘরের মেঝেটা রক্তে ভেসে যাচ্ছে এসব দেখে আরিয়ান ধমকে গেল,আরিয়ানঃমিসেস রহমান এসব কি,কখন হলো,কিভাবে হল? আপনারা কোথায় ছিলেন?

মিসেস রহমানঃগতকাল রাতে স্যার ম্যাডামকে মারতে মারতে ঘরে ঢুকেন তারপর আমাদের সবাইকে বের করে দেন তার পর কি হয়েছে আমরা কেউ কিছুই জানি না।এসব শুনে আরিয়ান চিৎকার করে মাটিতে বসে পড়ল,

আরিয়ানঃ না এটা হতে পাড়ে না আকাশ তুই এটা কিছুতেই করতে পারিস না হিয়ার কি দোষ ছিল….কেন মেরে ফেললি ওকে কেন কেন কেন…..কাঁদতে কাঁদতে কথা গুলো বলছে আরিয়ান মিসেস রহমান আরিয়ানকে শান্তনা দিচ্ছেন স্যার কিছু হয়নি আপনি শান্ত হন।

আরিয়ানঃআমি কি করে শান্ত হব আন্টি?কাল রাতে একটা নিষ্পাপ ফুটফুটে মেয়ে আমার কাছে সাহার্য্য চেয়েছিল ভয়ে আমার বুকে মুখ লুকিয়ে ছিল আর আজ সে নেই…আমি ওকে সাহার্য্য করি নি বরং একটা জানুয়ারের হাতে তুলে দিয়েছি কি করে ক্ষমা করব নিজেকে।আকাশ তুই কেন এমন করলি…. ??

আরিয়ান এর প্রশ্নের কোন উত্তর নেই,কারন উত্তর যার দেবার কথা সেই তো নেই।

আরিয়ানঃআকাশ কোথায় আন্টি?

মিসেস রহমানঃসকালে বাসায় এসে দেখি বাইরের গেইট,দরজা সব খোলা কেউ নেই বাসায় আর আকাশ স্যার কোথায় গেছেন তাও জানি না।আরিয়ানঃতারমানে হিয়াকে মেরে ও পালিয়ে গেছে….পালিয়ে তুই বাঁচতে পারবি না আকাশ আমি তোকে ছাড়ব না হিয়ার প্রতিটা কষ্টের শোধ আমি নিব…..

Related Story

রফিক সাহেবকে(হিয়ার বাবা) ফোন দিয়ে আরিয়ান সব খুলে বললোরফিক সাহেব যেনো বেঁচে থেকেও মরে গেছেন একটা মাত্র মেয়ে তার খুব আদরের তিনি ভেবেছিলেন আকাশ হিয়াকে খুব ভালবাসে তাই হিয়াকে আকাশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন কিন্তু এসব শুনে তিনি যেন পাথর হয়ে গেছেন।

আরিয়ানঃনা আমার বসে থাকলে চলবে না আকাশ কে আমার খুঁজে বের করতেই হবে গতকাল রাতে কি এমন হয়েছিল আমাকে জানতেই হবে এই বলে আরিয়ান আকাশকে খুজতে বের হল…..

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

Leave a Comment