Golperjogot

Golperjogot

ভিলেন – থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 50 | Romance Love Story

ভিলেন পার্টঃ ৫০
Mona Hossain

আকাশঃ আমাকে অফিসে যেতে দিলি না ঠিক আছে তাই বলে কি তুই তোর কাজগুলিও করবি না?

মেঘলাঃ আমার আবার কিসের কাজ? পায়ে ব্যাথা নিয়েও আমাকে কাজ করতে হবে?

আকাশঃ হ্যা অবশ্যই,যেকোন পরিস্থিতেই তোকে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে হবে।আমি মাকে চ্যালেঞ্জ করেছি তুই ভাল রেজাল্ট করবি। এখন তুই যদি সেটা না পারিস আমার মাথা নিচু হয়ে যাবে। তাই এখন তুই পড়তে বসবি।

মেঘলাঃ এ্যা….না না আমি এখন পড়ব না…

আকাশঃ চুপ একদম চুপ। চুপচাপ পড়তে বস।

মেঘলা মুখ গুমরা করে বলল পড়তেই হবে…??

আকাশঃ হুম…

মেঘলাঃ তাহলে তুই পড়িয়ে দে…

আকাশঃ আচ্ছা চল পড়তে বসবি।

মেঘলাঃ এখানে পড়ব না নিচে যাব…

আকাশঃ নিচে…??

মেঘলাঃ অদ্ভুত আবদার…আচ্ছা চল নিয়ে যাচ্ছি।

আকাশ মেঘলাকে কোলে করে নিচে নিয়ে গেল।

মেঘলাঃ আচ্ছা ভাইয়া তুই তো অনেক টাকার মালিক তাই না? তাহলে আমার পড়াশুনা করার কি দরকার…??আমাদের বিয়ে হয়ে গেলে এসব পড়াশুনা দিয়ে কি হবে?

আকাশঃ বেশি কিছু হবে না শুধু তোর বাচ্চা গুলি মুর্খ হবে এই আর কি।

মেঘলাঃ এই না না মুর্খ হবে কেন তুই ওদের পড়াবি।

আকাশঃ সোসাইটিতে তোকে মা হিসেবে পরিচয় দিতে ওদের লজ্জাবোধ হবে সেটার কি হবে?

মেঘলাঃ উফ যতই যুক্তি দেই না কেন তুই ঘুরেফিরে সেই পড়াতেই চলে আসবি তাই না..??

আকাশঃ বকবক বন্ধ করে পড়া শুরু কর বলে আকাশ মেঘলার হাতে বই তুলে দিল।

মেঘলা বই গুলি একটু নেড়েচেড়ে দেখল তারপর পাশে রেখে দিয়ে বলল এখন আর পড়ব না।

আকাশঃ আর পড়বি না মানে??৷ তুই ত পড়িসই নি।

মেঘলাঃ এই ত পড়লাম।

আকাশঃ বইয়ে চোখ বুলালেই যদি পড়া হত তাহলে ত ভালই ছিল।

মেঘলাঃ এখন আর না প্লিজ।

আকাশঃ ঘুরেফিরে সেই একই কথা পড়ব না তাই না..??

মেঘলাঃ পা ব্যাথা করছে পড়ব কি করে?

আকাশঃ ধান্দাবাজি বাদ দিয়ে পড়।

মেঘলাঃ প্রমিজ একটু পর পড়ব এখন ছেড়ে দে প্লিজ।

আকাশঃ উফফ মেঘলা রাগাস না তো

মেঘলা আকাশের হাতে বই দিয়ে বলল তুই পড়িয়ে দে।

আকাশঃ আচ্ছা বেশ দে…

মেঘলাঃ আমি কি তোর কাঁধে একটু মাথা রাখতে পারি?

আকাশঃ না পারিস না এটা রোমাঞ্চ করার সময় না।

মেঘলাঃ রোমেঞ্চ কে করতে চাইল এভাবে বসতে পায়ে চাপ লাগছে তাই বল্লাম।

আকাশঃ আচ্ছা তাহলে রাখ।

আকাশ মেঘলাকে পড়াচ্ছে মেঘলা শুধু হুম হুম করছে।কিছুক্ষন পর সেই হুম হুম ও বন্ধ হয়ে গেল।

আকাশঃ কিরে শুনতে পাচ্ছিস..??

মেঘলার সাড়া নেই।

আকাশঃ কাকে পড়াচ্ছি আমি? এত ঘুমিয়ে গিয়েছে এই না হলে মেঘলা..?? ফাঁকিবাজ কোথাকার।
কি আর করা যাবে চলুন ম্যাডাম বুঝেছি আপনি এখন পড়বেন না বলে আকাশ কোলে নিয়ে মেঘালাকে মেঘলার রুমে রেখে সে নিজের ঘরে গেল।

মেঘলা ঘুমের অভিনয় করছিল আকাশ চলে যেতেই উঠে বসে পড়ল এরমধ্যেই নিলিমা মেঘলার ঘরে আসল।এসেই মেঘলাকে ধমকাতে লাগল

নিলিমাঃ তুমি কাজ টা মোটেও ভাল করলে না মেঘলা…

মেঘলা অবাক হয়ে বলল কি করেছি আমি…???

নিলিমাঃ আকাশকে তুমিই তো বলেছো আমাকে যেন বাসা থেকে বের করে দেয় তাই না…??

মেঘলা খুব অবাক হয়ে বলল ভাইয়া তোনাকে চলে যেতে বলেছে…?? কই আমি ত জানি না কিছু…
ও এমনেই যা খুশি বলতে থাকে একটু পরেই ঠিক হয়ে যাবে তুমি ওর কথা ধরো না ত…কিন্তু চলে যেতে কেন বলেছে..??

নিলিমাঃ এই একদম ন্যাকামি করবে না আমি চলে যাচ্ছি ঠিকি কিন্তু একটা কথা কান খুলে শুনে নাও আকাশ আর তুমি কোনদিন এক হতে পারবে না আমি তোমাদের এক হতে দিব না কিছুতেই না বুঝেছো।বলে নিলিমা চলে যেতে লাগল।

মেঘলাঃ আরে আপু আমার কথাটা একটি বার শুনে যাও আমি সত্যিই জানি না কি হয়েছে ভাইয়ার সাথে যদি তোমার ঝামেলা হয়ে থাকে আমি ওকে বুঝিয়ে বলব।শোন প্লিজ যেও না

নিলিমা রাগে চলে যাচ্ছে দেখে মেঘলা তাড়াহুড়োয় পায়ে ব্যাথার কথা ভুলে গেল তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে নেমে দাঁড়াল কিন্তু দাঁড়াতেই ব্যাথা অনুভব করল আর পড়ে গেল।

মেঘলার চিৎকার শুনে আকাশ তাড়াতাড়ি মেঘলার ঘরে আসল।

মেঘলা কাঁদোকাঁদো হয়ে নিচে বসে আছে। আঘাত পেয়ে পা থেকে আবার রক্ত বেরিয়ে ব্যান্ডেজটা ভিজে রক্তে লাল হয়ে গিয়েছে মেঘলাকে এই অবস্থায় দেখে আকাশের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।

মেঘলার চিৎকারে বাসার অন্যরাও সেখানে এসেছে।মিলি গিয়ে মেঘলাকে তুলতে চাইল কিন্তু আকাশ এসে মিলির কাছ থেকে মেঘলাকে ছাড়িয়ে নিয়ে ঠাস ঠাস করে ২ টা থাপ্পর মেঘলার গালে বসিয়ে দিল।

মিলিঃ এটা কি করলে ভাইয়া এমনেতেই ব্যাথা পেয়েছে কোথায় জিজ্ঞাস করবে কিভাবে পড়ে গিয়েছে তা না করে উল্টে মারলে..??

আকাশঃ কিভাবে পড়েছে সেটা আমার দেখার বিষয় না পড়ে গিয়েছে সেটাই বিষয়… আর প্রশ্ন..??সে তো করবই তবে কিভাবে পড়েছে সেটা জিজ্ঞাস করবনা কেন পড়ে গেল সেটা জিজ্ঞাস করব বলেই মেঘলার চুলের মুটি ধরে টেনে ধরে বলল কেন পড়লি জবাব দে….তুই না ঘুমাচ্ছিলি তাহলে নিচে আসলি কি করে?

আকাশের রাগি চেহারা দেখে মেঘলা ভয় পেয়ে গেল।

আকাশঃ আমাকে তোর মানুষ মনে হয় না তাই না..?? আমার হাতে ব্যাথা তুই জানিস তবুও আমি তোকে কোলে করে নিয়ে গিয়েছি যেখানে যেতে চেয়েছিস সেখানেই নিয়ে গিয়েছি। আমার কতটা কষ্ট হয়েছে সেটা তোর চোখে পড়ে নি তাই না? নিজেই যদি হাঁটতে পারবি তাহলে আমাকে কষ্ট করালি কেন?আমার কষ্টের কোন দাম নেই তাই না? বলি পাশে থাকা ফুলদানিতে স্বজোরে আঘাত করল আকাশ।
গতরাতে আকাশ ইচ্ছাকরে হাতে ব্যাথা পেয়েছিল সেই হাতেই আবার আঘাত করায় হাত দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করল।আকাশ নিজের হাতের বেন্ডেজটা টেনে খুলে ফেলল।তাতে হাত থেকে আরও বেশি রক্ত পড়তে লাগল।

মেঘলাঃ ক ক ক কি করছিস ভাইয়া .. এমন করিস না প্লিজ…বলে যেই আকাশের হাত ধরতে গেল আকাশ আবার মেঘলাকে থাপ্পড় মারতে চাইল কিন্তু মেঘলা ভয় পেয়েছে থেকে থেমে গেল।

মেঘলা কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।আকাশ এত রেগে যাবে বুঝতে পারে নি সে..

আকাশঃ মিলি ওর পায়ের বেন্ডেজ টা বদলে দিস তো…বলেই চলে যাচ্ছিল।
কিন্তু পিছন থেকে মেঘলা বলে উঠল

মেঘলাঃ ভাইয়া….. যাস না প্লিজ ভুল আমি করেছি আমাকে শাস্তি দে নিজেকে কষ্ট দিস না প্লিজ।

আকাশঃ আমার কথা যদি তুই ভাবতি তাহলে আমার আজ এই অবস্থা হত না মেঘলা। নিজের মার সাথে যুদ্ধ করতে হত না। যে বয়সে বাবা মার আদরে থাকার কথা ছিল বন্ধুদের সাথে মজা করার কথা ছিল সেই বয়সে মানুষের গ্যারেজে কাজ করতে হত না।

মেঘলাঃ এসব কি বলছিস ভাইয়া..??

আকাশঃ ঠিকি বলছি আচ্ছা মেঘলা বুকে হাত দিয়ে একটা কথা বলতো তুই আমাকে কখনো একটু শান্তি দিয়েছিস..??
ছোট থেকে তুই যেমন আমাকে বর জানতি আমিও তো তোকে বউ হিসেবেই জানতাম,ভালবাসতাম।শুধু ন্যাকামি পারতাম না জন্যে তুই আমারেই সামনে একের পর এক ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছিস একটা বারের জন্যেও আমার কথা ভাবিস নি রাতে কেঁদে কেঁদে বালিশ ভিজিয়েছি তুই কোনদিন সেই চোখের জলের হিসেব নিস নি।
তাই নিজেই নিজেকে শান্তনা দিয়েছি নানাভাবে মন কে বুঝিয়েছি তোর কাছ থেকে ছেলেটাকে কিভাবে সরানো যায় সেই প্লেন করেছি।

সব কিছুর পরেও যখন তোকে নিজের করে নিতে চাইলাম তখন তোর বাবা আমার ঘাড়ে যোগ্যতার বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। শুধুমাত্র তোকে আপন করে পাওয়ার জন্য তোর বাবার কথা মত নিজের দেশ,বন্ধু বান্ধব সব আপনজনদের ছেড়ে একরাতের মধ্যে বিদেশে পাড়ি দিয়েছি।যাওয়ার পর জানতে পারলাম যার জন্য এত কিছু করলাম সেই অন্য জনের সাথে এনগেইজমেন্ট করে নিয়েছে। হাজার মাইল দূর থেকে শুধু চোখের জল ফেলা ছাড়া আমার তখন কিছুই করার ছিল না।সেই সময় আমার কি অবস্থা হয়ছিল যাওয়ার পর একটা ফোন করেও খোঁজ নিস নি।

মেঘলাঃ ভাইয়া আমাকে জোর করে বিয়ে দেয়া হয়েছিল বিশ্বাস কর।

আকাশ শান্ত গলায় বলল করলাম বিশ্বাস….আর কিছু..???

মেঘলাঃ তুই এখনো রেগে আছিস…

আকাশঃ হা হা হা আমার আবার রাগ… আমার রাগের দাম কখনো কারো কাছে ছিল নাকি যে রাখ দেখাব?

মেঘলাঃ যতকিছুই বল আমি তোকে ভালবাসি ভাইয়া এতে কোন মিথ্যা নেই। আমি তোকে ছাড়া কাউকে কখনো ভালবাসি নি।এসব অভিনয় ছিল।

আকাশঃ চুপ একদম চুপ মিথ্যুক।
আমাকে কি বাচ্চা মনে হয়?আমি বাচ্চা নই মেঘলা আমাকে এসব বুঝাতে আসিস না তোর শেষ ব্রেকাপের দিন তুই ৬ তলা থেকে লাফ দিতে চেয়েছিলি আমি সময়মত না গেলে সেদিনি মারা যেতি।আমি কোনকিছুই ভুলি নি মেঘলা তাই শাখ দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করা বাদ দে।

এখন কি বলা উচিত মেঘলার জানা নেই তাই চুপচাপ চোখের জল ফেলতে লাগল।

আকাশঃ তোর মধ্যে যেটা ছিল সেটা ভাল লাগা ভালবাসা না…কিংবা হয়ত ভালই বেসেছিলি কিন্তু সেই ভালবেসে কি লাভ বলতে পারিস? যে ভালবাসার কোন সুখ নেই শুধুই টেনশান আর প্যারা আছে তুই সবসময় আমাকে প্রেসার দিয়েছিস। ছোট ছোট কারনে নিজের ক্ষতি করতে চেয়েছিস এমনকি সোসাইড পর্যন্ত করতে চেয়েছিস। ২ টা বছর আমি কখনো শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি মেঘলা সবসময় একটা ভয় কাজ করত এই বুঝি কোন খারাপ আসবে যখন তোর হাসপাতাল থেকে ফোন আসত বুক কেঁপে উঠত হাঁত কাঁপত ফোন ধরতে ভয় করত।কাউকে মন থেকে ভালবাসলে তার জন্য কেমন অনুভুতি হয় তুই সেটা কোনদিন বুঝবি না কারন তুই ত ভালবাসার মানেই জানিস না।

তোকে আমি যা যা বলেছি কোনদিন শুনিস নি। নিজের যা মন চায় তাই করেছিস। অথচ আমি…জীবনের সবটা ভাল সময় তোর জন্য ব্যায় করেছি।

এমন হয়েছে ফাইনাল ম্যাচ খেলতে মাঠে যাচ্ছি সেই মুহুর্তে ফোন করে ডেকেছিস আমি মাঠে না গিয়ে তোর কাছে গিয়েছি। রাত ২ টা বাজে ফোন করে ডেকে নিয়ে হোস্টেলের সামনে দাঁড় করিয়ে রেখেছিস। ঠান্ডার মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রেখে নিজে আর আসিস নি।কখনো আবার হারিয়ে গিয়েছিস সারাদিন খোঁজাখুঁজি করে যখন আমার প্রায় পাগল অবস্থা তখন আলমারি থেকে বের হয়ে বলেছিস তুই সারাদিন সেখানে ছিলি তুই কি আদো জানিস ভালবাসার মানুষের জন্য কতটা টেনশান হয়? না জানিস না জন্যেই এমন করতে পারতি।একের পর টেনশান।

আজ আমি তোর কাছে হাত জোর করে অনুরোধ করছি মেঘলা আমাকে এবার মুক্তি দে আমি আর পারছি না রে… সবাই ভাবে আকাশ এমন কেন? ছোট ছোট বিষয়ে এত রাগ কেন দেখায়?
এমনকি গায়েও হাত তুলে মায়া দয়া বলতে কি কিছুই নেই ওর? কিন্তু আকাশের মনে যে কত কথা জমে আছে কেউ কোনদিন খোঁজ নিয়ে দেখে নি।
আমিও তো রক্তে মাংসে তৈরি মানুষ আমারও একটা মন আছে ইচ্ছা আছে কোনদিন আমার কোন ইচ্ছা পূরনের চেষ্টা করেছিস কিংবা জানতে চেয়েছিস আমি কি চাই..??

যেদিন আমি থাকব না সেদিন বুঝবি আকাশ কি ছিল তোর জীবনে? আল্লাহ না করোক তোর যেন কোন দিন এটা মনে না হয় যে তুই চাইলেই ওকে একটু শান্তি দিতে পারতি…

মেঘলাঃ ভাইয়া…..

আকাশঃ আমি মেঘলা নই এমন কিছু করব না যাতে বেঁচে থাকার চান্স থাকবে।

নাবিলের মা আকাশ আর মেঘলাকে একা কথা বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য সবাইকে নিয়ে চলে গেলেন।

মেঘলা কিছু না বলে নিজেই নিজের বেন্ডেজ চেঞ্জ করতে লাগল।বেন্ডেজ করে শেষ করে

মেঘলাঃ হয়েছে….??

আকাশ জবাব দিল না।

মেঘলাঃ এখন তো নিজের হাতে বেন্ডেজ কর প্লিজ।আমি আর তোর কথার অবাধ্য হব না।

আকাশঃ সবসময় তো আমাকে প্যারা দিস এবার দেখ না নিজের ঘাড়ে পড়লে কেমন লাগে বলে সোফায় বসে পড়ল।হাত থেকে টপ টপ করে রক্ত পড়ছে।

মেঘলাঃ আমি…

আকাশঃ চুপচাপ বসে বসে দেখ কথা বলবি না বললে বাইরে চলে যাব।

মেঘলাঃ শেষবারের মত মাফ করা যায় না…??

আকাশঃ না….

চলবে…!!!

Leave a Comment