Golperjogot

Golperjogot

ভিলেন পর্ব 71 - প্রেমের গল্প | Romantic Premer Golpo

ভিলেন পর্ব 71 – প্রেমের গল্প | Romantic Premer Golpo

ভিলেন পার্টঃ৭১
Mona Hossain

রাতে আকাশ সত্যিই নিজের হাতে রান্না করে মেঘলাকে খায়িও দিল।



পরদিন সকালে আকাশ ঘুমাচ্ছে। তখন মেঘলা উঠে গিয়ে স্কুলের জন্য রেডি হয়ে আকাশ কে ডাকতে লাগল।

মেঘলাঃ কিরে এতক্ষন ধরে ডাকছি উঠ…

আকাশ চোখ খোলে ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে বলল,
কি হয়েছে ষাড়ের মত চেঁচাচ্ছিস কেন আর এত সকালে উঠেছিসই বা কেন?

মেঘলাঃ আজব তুই ত দেখছি সব ভুলে গিয়েছিস স্কুলের দেড়ি হয়ে যাচ্ছে যে খেয়াল নেই? তো তাড়াতাড়ি উঠ।

আকাশঃ কিসের স্কুল..??

মেঘলাঃ তোর কি স্মৃতি শক্তি লোপ পেয়েছে নাকি?

আকাশ বিছানা থেকে নামতে নামতে বলল
-না আমি টিকি আছি আসলে তোকে বলতে ভুলে গিয়েছি তোর আর স্কুল যেতে হবে না।

মেঘলাঃ মানে কি…??

আকাশঃ মানে হল আজ থেকে তোর পড়াশোনা বন্ধ। খাবি আর ঘুমাবি এইটুকুই তোর কাজ।

মেঘলাঃ কিন্তু কেন?

আকাশঃ আমি বলেছি তাই। যা শুয়ে পর ১০ টার আগে ঘুম থেকে উঠা নিষেধ তোর।

মেঘলাঃ কিসব যাতা বলছিস?

আকাশ মেঘলাকে আলতো করে ধরে বিছানায় বসিয়ে আকাশ মেঘলার হাত ২ টি ধরে নিচে বসল।

আকাশঃ মেঘলা তুই তো আমায় ভালবাসিস তাই না?

মেঘলা অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল,

মেঘলাঃ তোর কি হয়েছে রে কাল থেকে দেখছি মন খারাপ করে আছিস বল না কি হয়েছে..??

আকাশঃ আমি এসব কি করছি না না মেঘলাকে দুর্বল করে দিলে চলবে না মনে মনে ভেবে আকাশ নিজেকে সামলে নিয়ে মেঘলার গাল টেনে বলল তুই আমাকে ভালবাসিস তাহলে আমার কথা কেন শুনবি না হ্যা..?? তোর শরীর ভাল নেই, দুর্বলতা কাটতে সময় লাগবে তাই স্কুল যেতে হবে না আর স্কুল গিয়ে হবে টাই বা কি? তোকে তো আর আমি বাইরে চাকরি করতে দিব না। তাই পড়াশুনার দরকার নেই।তুই শুধু আমার কথা মেনে চলবি তাহলেই হবে।

মেঘলাঃ অদ্ভুত।

আকাশঃ ঘুমিয়ে পড় সময় হলে আমি ডেকে দিব।

মেঘলাঃ পাগল কোথাকার।

আকাশঃ প্রতিদিন তো ঘুমের পাহাড় নিয়ে শুয়ে থাকিস আজ কি হল?

মেঘলাঃ আমার ঘুম পাচ্ছে না।

আকাশ চল তাহলে নাস্তা করবি।
আকাশ মেঘলাকে নিয়ে নিচে গেল।

খালা খাবার এনে টেবিলে রাখল।
খাবার দেখে মেঘলা অবাক হলো।
মেঘলাঃ কিসব রান্না করেছো? ব্রেকফাস্টে ভাত কে খাবে? আর ভাতের সাথে শাখ পাতা ছাড়া কিছুই ত দেখতে পাচ্ছি না। এসব কি খালা?

খালাঃ বাবায় তো কইল এসব রান্না করতে,উনি যা যা বলছে তাই করেছি।

মেঘলাঃ আজব এসবের মানে কি?

পড়ুন  Heart Touching Romantic Love Story Valobashi Dujone Part 8

আকাশঃ এত কথার কি আছে যা সামনে আছে তাই খা।

মেঘলাঃ তোর ইচ্ছে হলে তুই খা আমি এসব খাব না।
খালা যাও ত আমার জন্য ব্রেড জ্যাম নিয়ে এসো

আকাশঃ মেরে তক্তা বানিয়ে দিব।এসবেই খেতে হবে তাড়াতাড়ি খা বলছি আজ থেকে এসবেই খাবি নিজের দিকে তাকিয়ে দেখ কি হাল হয়েছে তোর।

খালাঃ আম্মা খাইয়া দেখো মজা লাগব আমরা গ্রামে ত এসবেই খাই।

মেঘলার ইচ্ছে না থাকলেও আকাশ জোর করে মেঘলাকে খাওয়ালো।



সেই থেকে শুরু যতই দিন যাচ্ছে মেঘলা ততই অসুস্থ হয়ে পড়ছে আর তাতে আকাশ যেন মেঘলার প্রতি কঠোর হয়ে যাচ্ছে।কঠোর বললে ভুল হবে আকাশ মেঘলার প্রতি একটু বেশিই নজর রাখতে শুরু করেছে মেঘলার নিজের কোন স্বাধীনতা নেই বললেই চলে।
মেঘলা কখন কি করবে কতক্ষন ঘুমাবে কি খাবে কি খাবে না সব আকাশ ঠিক করে দেয়। চার্টের বাইরে কিছু করলেই আকাশ চেঁচামেচি করে।

প্রথম প্রথম মেঘলা প্রতিবাদ করলেও এখন আর কিছু বলে না।প্রতিদিনের মত আজও সকালে উঠেই আকাশ খালাকে বলল মেঘলাকে দুধ দিতে।

আকাশঃ খালি পেটে ওষুধ আছে না? ওষুধ টা তাড়াতাড়ি খেয়ে দুধ টা খেয়ে নে আমি গোসল করে আসছি।

মেঘলাঃ হুম আচ্ছা।

আকাশ ওয়াশরুমে গিয়েও টাওয়াল নিতে এবার ফিরে আসল আর এসে যা দেখল তাতে আকাশের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।
আকাশ দেখল মেঘলা জানলা দিয়ে ওষুধ ফেলে দিচ্ছে।

আকাশঃ ওয়াও এই না হলে মেঘলা…

মেঘলা আকাশ কে দেখে চমকে উঠল।
মেঘলাঃ ত ত তুই এখানে কেন শাওয়ার নিতে যাস নি?

আকাশঃ আমার কথা বাদ দে তুই এখানে কি করছিস সেটা বল।

মেঘলাঃ যাক বাবা দেখেনি…(মনে মনে)
কককিছু না তো…

আকাশ মেঘলার কাছে এগিয়ে গিয়ে জানলা দিয়ে তাকাল নিচে পড়ে আছে অনেকগুলি ট্যাবলেট।

আকাশঃ বাহ খুব ভাল… তারমানে তুই সারামাস আমাকে মিথ্যে বলেছিস ওষুধ খাওয়ার বদলে ফেলে দিয়েছিস?

মেঘলা কি বলবে বুঝতে না পেরে আমতা আমতা করে বলল তুই তো বলেছিস আমার কিছু হয় নি তাহলে ওষুধ না খেলে কি হয়।

আকাশঃ কিছুই হয় না। আয় এদিকে আয় বলে আকাশ মেঘলাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে টেবিলে রাখা ফলের কাছে নিয়ে গেল।

মেঘলাঃ এখন কি ফল খাওয়াবে নাকি? তাও ভাল আমি ত ভেবেছিলাম আমাকে আর আস্ত রাখবে না(মনে মনে)

আকাশ মেঘলার পিছনে দাঁড়িয়ে টেবিলের সাথে মিশিয়ে দিল যাতে মেঘলা নাড়াচাড়া করতে না পারে তারপর বাম হাত টে চেপে ধরে মেঘলার ডান হাতে ফল কাটার ছুরি দিল।

পড়ুন  মুখোশ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ২০ | মোনা হোসাইন

মেঘলাঃ কি করব? ফল কাটব?

আকাশ মেঘলার ঘাড়ে মুখ রেখে বলল না…বলেই ছুরিটা মেঘলার হাতের মাঝখানে রেখে নিজের হাত দিয়ে মেঘলার হাতে চেপে ধরল।সাথে সাথে ধারালো ছুরিতে মেঘলার হাত কেটে গিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করল।
আকাশ মেঘলাকে আঁশটে পিশটে ধরে রেখেছে মেঘলা এক চুল পরিমানও নড়তে পারছে না।ইতিমধ্যে মেঘলার হাত কেটে রক্ত আকাশের হাতকেও ভিজিয়ে দিয়েছে আকাশ চোখ বন্ধ করে আছে দেখে মনে হচ্ছে যেন সে মেঘলার রক্ত ঝরাটা অনুভব করছে মেঘলা আকাশের এমন শান্ত নিষ্টুরতা দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছে মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই তার ধ্যান ভেঙে গেল আর চেঁচিয়ে উঠল।

মেঘলাঃ কি করছিস রক্তে পুরো টেবিল ভেসে যাচ্ছে দেখতে পাচ্ছিস না?

আকাশের নো রেস্পন্স

মেঘলাঃ আমার লাগছে ভাইয়া

আকাশ চোখ বন্ধ রেক্ষেই বলল লাগুক…

মেঘলাঃ আমি অসুস্থ ভুলে গিয়েছিস?ছাড় প্লিজ

আকাশঃ…..

মেঘলাঃ আমি সত্যিই ব্যাথা পাচ্ছি ছেড়ে দে ছুরিটা পুরো কেটে বসে গিয়েছে।

আকাশঃ তো আমার কি হয়েছে..?

মেঘলা বুঝতে পারল আকাশ রেগে আছে তাই নিরুপায় হয়ে অনুরোধ করতে লাগল।
কিন্তু কোন অনুরোধেই আকাশ কান দিচ্ছে না।

মেঘলাঃ আমার ভুল হয়ে গিয়েছে আর কখনো ওষুধ ফেলব না ছেড়ে দে প্লিজ…

আকাশ চোখ খুলে মেঘলাকে ছাড়ল।

আকাশঃ আর কখনো আমার কথা না শুনলে এর ফল কি হবে বুঝতে পেরেছিস নিশ্চুই?

মেঘলাঃ ত ত তুই এমন টা করতে পারলি….??

আকাশঃ আমি আরো অনেক কিছুই পারি যেমন ইস্ত্রী গরম করে….

মেঘলাঃ থাম ছি ছি ছি…..

আকাশঃ কোন সাহসে ওষুধ ফেললি…??

মেঘলাঃ তুই তো আমাকে সত্যিটা বলিস নি তাহলে আমি ওষুধ কেন খাব…??

আকাশ চোখ পাকিয়ে বলল মানে কি?

মেঘলাঃ আমার কি হয়েছে সত্যিটা বল তুই কেন আমাকে ডাক্তারের কাছে যেতে দিস না আমার শরীর দিন দিন খারাপ কেন হচ্ছে?

আকাশঃ তারমানে তুই এই জন্যস ওষুধ খাস নি…??

মেঘলাঃ আমি সত্যিটা জানতে চাই আমি জানতাম এমনি এমনি তুই বলবি না।আমার কি হয়েছে বল।

আকাশঃ শরীর খারাপ হওয়ার কারন তুই ওষুধ খাস নি।
আর কিছু হয় নি।

মেঘলাঃ মিথ্যে বলছিস তুই আমার পেটে অসহ্যকর যন্ত্রনা হয় তোকে অনেকদিন বলেছি তুই পাত্তা দিস নি এটা স্বাভাবিক কোন অসুখ হতেই পারে না।
আমাকে যদি সত্যিটা না বলিস আমি ওষুধ খাব না।

আকাশঃ বলব না ক্ষমতা থাকে তো জেনে নিস। আর ক্ষমতা যদি থাকে তাহলে ওষুধ না খেয়ে থাকিস দেখব কেমন পারিস।

পড়ুন  বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব ২৩ রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন

বলে আকাশ এড বক্স আনতে চলে গেল।
আকাশ এসে মেঘলার হাত বেঁধে দিল তারপর জোর করে ওষুধ খায়িয়ে দিল এরিমধ্যে নাবিল আসল।

নাবিলঃ আসতে পারি..??
নাবিল কে দেখে মেঘলা মুখ ঘুরিয়ে নিল।

আকাশঃ আরে নাবিল আয় আয়…

নাবিলঃ কি ব্যাপার মেঘলা গাল ফুলিয়ে বসে আছিস কেন?

মেঘলাঃ এতদিন পর মনে পড়ল বেঁচে আছি নাকি মরে গেছি একবার জানতেও ইচ্ছে করেনি?

নাবিলঃ আকাশ থাকতে তুই মরবি না জানি… তাই আসি নি।

মেঘলাঃ সেই আশাতেই থাক দেখ আকাশ আমার হাত কেটে কি করেছে?

নাবিলঃ এসব কি আকাশ..??

আকাশঃ করেছি যখন কারন তো নিশ্চুই আছে পরে বলব।এখন বল তোর কি খবর..??

নাবিলঃ বিন্দাস এখানে আসার কারন টা বলি নেহাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে মার কড়াকড়ি হুকুম মেঘলাকে যেন নিয়ে যাই।

আকাশঃ ও শুধু মেঘলা আমাকে না?

নাবিলঃ কান টানলেই মাথা আসবে…

আকাশঃ পারিস ও… তা ছেলে কি করে..??

নাবিলঃ কি আর করবে বাবার বিজনেস দেখাশুনা করে তবে এখানে না uk তে বিয়ের পর নেহাকেউ নিয়ে যাবে

মেঘলাঃ সবাই প্রেম করতে পারে শুধু আমিই পারলাম না শুধুমাত্র এই জল্লাদ টার জন্য পারলাম না।

আকাশঃ থাক তোর প্রেম করে কাজ নেই

নাবিলঃ ঝগড়া শুরু করিস না প্লিজ চল বেরিয়ে পরি।বাসা ভর্তি মেহমান চলে এসেছে এরপর গেলে নিজেদের ঘর আর পাবি না।

আকাশঃ এখনী কিসের মেহমান?

নাবিলঃ বলতে পারিস বিয়ে এক প্রকার ঠিকঠাক নেহারেই পছন্দের ছেলে সোস্যাল মিডিয়ায় পরিচয় এখন বিয়ে করতে দেশে এসেছে।কাল এনগেইজমেন্ট এই সপ্তাহেই বিয়ে।

মেঘলাঃ কি বলিস..??

নাবিলঃ হ্যা ছেলেটা ভালই খোঁজ খবর নিয়েছি।

আকাশঃ তাত বুঝলাম কিন্তু নাবিল তুই কি বিয়েটা করবি না?

নাবিলঃ করব না কে বলল দেখ না নেহার বিয়েতেই মেয়ে পটাব।

আকাশঃ কিন্তু…

নাবিলঃ ধুর রাখ ত তোর কিন্তু ফিন্তু বাসায় কত কাজ জানিস তাড়াতাড়ি চল।

আকাশঃ হুম চল

মেঘলাঃ আমি যাব না

নাবিলঃ মানে কি…??

মেঘলাঃ মানে আমি কাউকে জানাতে চাই না আকাশ আমাকে বিয়ে করেছে।যদি ওই বাসায় আকাশ আমার সাথে স্বামি স্ত্রীর আচারন না করে তাহলেই আমি যাব তাছাড়া না।

আকাশঃ বেশ ত তাই হবে চল

মেঘলাঃ এত সহজে রাজি হয়ে গেল ব্যাপার কি…??

আকাশঃ তুই মেঘলাকে নিয়ে যা আমি একটু পর আসছি নাবিল…

নাবিলঃ তুই কোথায় যাচ্ছিস?

আকাশ মেঘলার দিকে তাকিয়ে বলল একটা ইম্পর্টেন্ট কাজ আছে সেরেই আসছি যা তোরা।



চলবে..!!

 

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top