ভিলেন পার্টঃ ৫৯
Mona Hossain
পরের দিন আকাশ অফিসে যাওয়ার কিছুক্ষন পরেই মেঘলা অফিসে গেল।
আকাশ নিজের রুমে কাজ করছিল মেঘলা আকাশের কাছে যেতে চাইলে জেনি এসে মেঘলাকে বাঁধা দিল তাতে মেঘলা ক্ষেপে গেল
জেনিঃ তুমি হটাৎ অফিসে…?স্যার ব্যাস্ত আছেন পরে এসো।
মেঘলাঃ তুমার সাহস দেখে অবাক না হয়ে পারছি না তুমি আমাকে পরে আসতে বলছো…??
জেনিঃ তুমি অফিসে কেন এসেছো আমি জানি মেঘলা কি স্যারকে পাহারা দিতে তাই না? কিন্তু কোন লাভ নেই তুমি সারাদিন বললেও স্যার আমার পাশেই থাকবেন।
মেঘলাঃ যতসব আজাইরা কথাবার্তা তোমার পাশ থেকে আমি ওকে সরাতে চাইব কেন ফালতু কথা রেখে সরো ত সামনে থেকে বলে জেনিকে সরিয়ে দিয়ে মেঘলা আকাশের রুমে ঢুকে গেল।
আকাশঃ আরে মেঘলা তুই..?? স্কুলে যাস নি? কিছু কি হয়েছে? হটাৎ অফিসে আসলি যে…
মেঘলাঃ আমি আসাতে কি তোর খুব অসুবিধে হল…??
আকাশঃ ম্যাডামের মেজাজ খারাপ হয়ে আছে মনে হচ্ছে.. আচ্ছা আয় বস শুনি কার সাথে কি করেছিস।
মেঘলাঃ সবসময় কি আমিই কিছু করি অন্যরা কেউ আমার সাথে কিছু করে না?
আকাশঃ কে কি করেছে বল এখনী তার শিরশ্ছেদ নিব।
মেঘলাঃ ফাযলামি বাদ দে এখন চল আমার সাথে।
আকাশঃ কোথায় যাব…??
মেঘলাঃ কয়ফত দিতে হবে..?
আকাশঃ উফফ ভাল করে কথা বলতে পারিস না…সবসময় জেদ এইটুকুন একটা মেয়ে এত জেদ রাগে কোথায় সেটাই বুঝি না
মেঘলাঃ আচ্ছা যেতে হবেনা।
আকাশেঃ আরে আরে মেরি জান আমি যাব না বল্লাম নাকি দশটা না পাঁচ টা না একটাই বউ।
মেঘলাঃ কে কার বউ ফালতু কথা বলবি না আমি তোর বোন।
আকাশঃ হি হি হি সেটা সময় হলেই দেখা যাবে
আকাশ মেঘলাকে নিয়ে যেই রুম থেকে বের হল জেনি এসে সামনে দাঁড়াল।
জেনিঃ স্যার কোথাও যাচ্ছেন..??
মেঘলাঃ হুম যাচ্ছে ফিরতে দেড়ি হবে।
কিরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন চল
জেনিঃ কিন্তু স্যার ১২ টায় ত আপনার কনফারেন্স আছে গেস্ট রা ইতিমধ্যে চলে এসেছে। নাবিল স্যারো নেই আপনিও চলে গেলে কিভাবে হবে।
আকাশঃ ও গড আমি ত ভুলেই গিয়েছিলাম। থ্যাংকস জেনি মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।
জেনিঃ এটা আমার ডিউটি থ্যাংকস দিয়ে ছোট করবেন না প্লিজ।
আকাশঃ আচ্ছা তুমি নিজের কাজে যাও।
জেনি চলে গেল।
আকাশ মেঘলার কাছে এসে বলল,
আমি যদি কাল তোকে ঘুরতে নিয়ে যাই তুই কি রাগ করবি…??
মেঘলা না বোধক ইশারা করে চলে গেল।
আকাশঃ পাগলিটা রাগ করেছে জানি কিন্তু আমারও তো কিছু করার নেই তবে প্রমিজ করছি কাল সারাদিন তোকে নিয়ে ঘুরব তখন নিশ্চুই আর রাগ করে থাকতে পারবি না।
।
।
।
সারাদিন অফিস শেষে আকাশ আর জেনি একসাথেই বাসায় ফিরছিল হটাৎ আকাশ গাড়ি থামাল।
জেনিঃ কি হয়েছে স্যার থেমে গেলেন যে…
আকাশঃ সারাদিনে মেঘলাকে অনেক বার ফোন করেছি মেঘলা ফোন ধরে নি তারমানে রাগ করে আছে। কোন গিফট না নিয়ে গেলে আমার সাথে কথা বলবে না। মেঘলা খুব অভিমানি আজ ওর রাগ ভাংতে আমার বেহাল দশা হবে সিওর। আচ্ছা তুমি একটু অপেক্ষা করো আমি এখনী আসছি।বলে আকাশ চলে গেল।
জেনিঃ মেঘলা মেঘলা আর মেঘলা… কি আছে এই মেয়েটার মাঝে যে অন্যদিকে চোখেই যায় না আপনার?সারাদিন আপনার পাশে থাকি একটা বারও কি আপনার চোখে পড়ে না (মনে মনে)
আকাশ একটা চকলেট বক্স নিয়ে বাসায় ফিরল।
আকাশ বাসায় ঢুকেই মেঘলাকে ডাকতে লাগল।
ছোটঃ মেঘলা ত বাসায় নেই
আকাশঃ বাসায় নেই মানে কি? রাত ৯ টা বাজে এখন ও কোথায় গিয়েছে?
ছোট মাঃ এখন কোথাও যায় নি সকালে গিয়েছিল এখনো ফিরে নি।
আকাশঃ এখনো ফিরে নি মানে?ও ত আজ স্কুলেও যায় নি সারাদিন ধরে ও কি করছে…?? রাতের বেলা বাইরে থাকা যাবে না এটা কি ও জানে না…??
ছোট মাঃ এত কথা না বলে ফোন করে দেখ না কোথায় গেল।।
আকাশ ২ বার ফোন দেয়ার পর মেঘলা ফোন ধরল।
আকাশঃ হ্যালো মেঘলা কোথায় তুই?
মেঘলাঃ রাস্তায় আছি বাসায় আসছি।
আকাশঃ ও আচ্ছা আয় তাহলে
বলে ফোন কেটে আকাশ গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামল।
ঘড়িতে ১০ বেজে গিয়েছে।কিন্তু মেঘলা এখনো ফিরে নি।
আকাশ আবার মেঘলাকে ফোন দিল।
আকাশঃ কি রে কোথায় তুই?
মেঘলাঃ উফফ বল্লাম না রাস্তায় এত বিরক্ত করিস কেন আর ফোন দিবি না। বলে ফোন কেটে দিল।
আকাশঃ আমার দুঃচিন্তা করাটা তোর বিরক্ত লাগছে..?? খুব বার বেরেছে তাই না? আজ একবার বাসায় আয় তোর হবে।
কিন্তু মেঘলা কোথা থেকে ফিরছে যে এতক্ষন লাগছে..??
প্রায় ১০ঃ৩০ এ বাসার সামনে এসে গাড়ী থামল।
গাড়ী থেকে নীরব আর মেঘলা একসাথে নামল দেখেই আকাশের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।
মেঘলাঃ নীরব ভিতরে চলো একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর যাবে।
নীরবঃ না আজ না অন্যদিন আসব কেমন।
মেঘলাঃ আচ্ছা সাবধানে যেও গিয়ে আমাকে জানিও
নীরবঃ আচ্ছা।
মেঘলাকে নামিয়ে দিয়ে নীরব চলে গেল।
দৃশ্যটা আকাশের জন্য যথেষ্ট আপত্তিকর তাই মেঘলা ঘরে ঢুকার আগেই আকাশ বাইরে গিয়ে মেঘলাকে টানতে টানতে ভিতরে নিয়ে আসল।
মেঘলাঃ কি হচ্ছে টা কি..??
আকাশঃ আমিও সেটাই জানতে চাচ্ছি হচ্ছে টা কি এত রাতে তুই নীরবের সাথে কেন?
মেঘলাঃ ওর সাথেই সারাদিন ছিলাম তাই এখনো আছি।
আকাশঃ মেঘলা….
মেঘলাঃ এই আমাকে ধমকাবি না আমি তোর ধমককে ভয় পাই না।
আকাশঃ তা পাবি কেন পাখা গজিয়েছে তো
মেঘলাঃ পাখা গজানোর কি আছে আমি ত বাইরের কোন ছেলের সাথে যাই নি নিজের বরের সাথেই গিয়েছি।
আকাশ এবার নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারল না ঠাস করে মেঘলার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিল।
আকাশ মেঘলার মুখ চেপে ধরে বলল কি হয় তোর আবার বল…
আকাশের চেঁচামেচি তে বাসার সবাই এসে হাজির হল।
আকাশঃ ভালভাবে বলছি সারাদিন কি করেছিস বল…নীরবের সাথে মিলামিশা আমার পছন্দ না তুই জানতি না? তবুও গেলি কেন?
মেঘলা আকাশের কথার জবাব না দিয়ে আকাশকে অবাক করে দিয়ে সবার সামনে ঠাস করে আকাশ কে একটা থাপ্পড় মারল তাতে আকাশের সাথে সাথে সবাই অবাক হয়ে গেল।
নাবিলের মাঃ এটা তুই কি করলি মেঘলা…??
আকাশের মাঃ দেখ আকাশ দেখ দুধ কলা দিয়ে কাল শাপ পোষেছিস তুই। কিরে মেঘলা তোর এত সাহস হয় কি করে আকাশের গায়ে হাত তুলিস?
জেনিঃ সত্যিই তো যার টাকায় থাকো খাও তার গায়ে হাত তুলতে বুক কাঁপল না? অনেক অকৃতজ্ঞ দেখেছি তোমার মত দেখি নি।
জেনির কথা শেষ হওয়ার আগেই মেঘলা আবার আকাশকে থাপ্পড় মারল।
জেনিঃ কি সর্বনাশ…আন্টি আপনারা এসব কি করে মেনে নিচ্ছেন? এই তুমি এসব কি করছো একজন আশ্রিতার এত সাহস মানায় না মেঘলা।
মেঘলাঃ কে আশ্রিতা…??আশ্রিতা আমি না তুমি,
তুমি আর তোমার আকাশ ২ জনেইবআশ্রিতা বুঝেছো…??
আমি কোন দুঃখে আশ্রিতা হতে যাব? এখানে উপস্থিত সবাই জানে এই বাড়ির এক তৃতীয়াংশ আমার মায়ের নামে। মা সব কিছুর ভাগ নিলেও বাসার ভাগ টা নেয় নি সেই হিসেবে আমি ত কেবল একটা রুমে থাকি আর কে কার টাকায় খায় বললে? তোমার প্রেমিক মানে আকাশের টাকায় আমি খাই …?? যদি তাই ভেবে থাকো তাহলে বলব ভুল ভাবছো আমি এই ছেলের টাকায় খাই না বরং ওই আমার টাকায় চলে।তুমি না জানলেও এখানকার সবাই জানে আকাশের স্থাবর অস্থাবর সব কিছুর মালিক একমাত্র আমি. তাই আমি আমার নিজের টাকাতেই খাই বরং আকাশ যে টাকা দিয়ে তোমার সাথে ফস্টি নস্টি করে,সেটা আমার কাছ থেকে নেয়া।আকাশ আমার অফিসের একজন কর্মচারী ছাড়া আর কিছুই না।
আকাশঃ যাক বহুদিন পর মেঘলা জোর গলায় কথা বলছে আমার উপড় অধিকার দেখাচ্ছে দেখে মনে হচ্ছে যেন সেই আগের মেঘলা।কিন্তু জেনি আর আমাকে নিয়ে কিসব আবল তাবল বকছে
(মনে মনে)
মেঘলাঃ বিশ্বাস না হলে জিজ্ঞাস করো তোমার প্রেমিক কে… একটা কথা শুনো ওকে বিয়ে করলে তুমি শুধু ওকেই পাবে তাছাড়া এক কানা কড়িও পাবে না।
জেনিঃ তোমি পাগল হয়ে গিয়েছো মেঘলা তাই যা ইচ্ছে তাই বলছো।
মেঘলা এবার আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল আর থাপ্পড় খেতে না চাইলে তোর প্রেমিকার মুখ বন্ধ করতে বল।
আকাশঃ এসব তুই কি বলছিস ও আমার প্রেমিকা হতে যাবে কেন?
মেঘলাঃ ফস্টি নস্টি করতে পারবি আর আমি বলতে পারব না?
আকাশঃ আমার সহ্যের সীমা পেরিয়ে যাচ্ছে মেঘলা। কথা না ঘুরিয়ে সরাসরি বল নীরবের সাথে যোগাযোগ রেখেছিস কেন? কোন সাহসে ওর সাথে বেড়াতে গেলি?
মেঘলাঃ তুই কোন অধিকারে আমার কাছে কয়ফত চাস হুম…?? আমি কার সাথে যাব কি করব তার কয়ফত তোকে দিতে হবে কেন?
আকাশঃ আমার তোর উপড় কিসের অধিকার,আমি তোর কি হই দেখতে চাস? দেখাব? বলে আকাশ মেঘলার দিকে এগুতেই মেঘলা পিছিয়ে গিয়ে বলল তুই কি আমাকে কয়ফত দিস তাহলে আমি কেন দিব?
নাবিলের মা মেঘলাকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে বলল চুপ কর মেঘলা কি করছিস তুই? আকাশকে রাগালে ও কি কি করবে তুই ভাল করেই জানিস কেন মার খেতে চাইছিস…?
মেঘলাঃ ছোট মা আমি ওকে থাপ্পড় মারলাম সেটাই সবার চোখে পড়ল প্রথমে যে ও আমাকে মারল সেটা তোমাদের চোখে পড়ল না? আকাশ সবসময় অন্যায় করে যাবে যখন ইচ্ছা আমাকে মারবে এটাই বুঝি নিয়ম?
ও মেয়ে এনে নিজের বাসায় রাখতে পারবে দিন রাত ২৪ ঘন্টা একটা মেয়ের সাথে থাকতে পারবে
তাতে কোন দোষ নেই তাই না…?
আকাশ মেঘলাকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে নিল।
আকাশঃ মেঘলা জেনির সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।
মেঘলা এবার ভিডিও টা বের করে আকাশের সামনে রাখল আর বলল যার সাথে তোর কোন সম্পর্ক নেই তার সাথে যদি এমন করতে পারিস তাহলে যার সাথে আমার বাকদান হয়েছে তার সাথে আমি রাত কাটাতে পারি না কেন..??
আকাশ ভিডিও টার দিকে একবার দেখে জেনির দিকে তাকাল কিন্তু কিছু বলল না।
আকাশ রাগ কন্ট্রোল করে মেঘলাকে বুঝানোর চেস্টা করতে লাগল।
আকাশঃ মেঘকা এটা যাস্ট একটা এক্সিডেন্ট।
মেঘলাঃ এক্সিডেন্ট…?? ভালই বলেছিস।কি সাংঘাতিক এক্সিডেন্ট রে। কিন্তু এক্সিডেন্টে তো মানুষ ব্যাথা পায় তোকে দেখে ত মনে হচ্ছে তুই মজা পাচ্ছিস।
আকাশ দাঁতে দাঁত চেপে বলল আমি তোকে পড়ে সবটা বলব।
মেঘলাঃ তার দরকার নেই শোন তোর টা এক্সিডেন্ট হতে পারে কিন্তু আমি মিথ্যা বলতে শিখি নি তাই আমার টা এক্সিডেন্ট না আমি ইচ্ছে করেই নীড়বের সাথে গিয়েছিলাম।
আকাশঃ কিন্তু কেন? তুই আমাকে প্রশ্ন করতে পারতি জানতে চাইতে পারতি কি হয়েছিল তা না করে তুই…
মেঘলাঃ কার কাছে জানতে চাইব…?? যে জানত আমি কারো সাথে রুম শেয়ার করি না জেনেও যে আমাকে অন্য একজনের সাথে বেড শেয়ার করতে বাধ্য করেছিল..?? আমি অন্ধকার ভয় পাই, যেনেও যে আমাকে অন্ধকারে থাকতে বাধ্য করেছিল তাকে জিজ্ঞাস করব…???
কিই বা জিজ্ঞাস করব সব তো নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছি জিজ্ঞাস করার কি দরকার?
আকাশঃ মেঘলা আমার কথাটা একটু শোন উপড়ে চল আমি তোকে সব খুলে বলব।
মেঘলাঃ অনেক শুনেছি সুযোগও দিয়েছি আর না।এবার তুই কান খুলে শুনে রাখ আমি আর তোর সাথে থাকতে চাই না আমার সাথে তোর যা যা সম্পর্ক ছিল আজ সব কিছুর ইতি টানলাম।
আকাশঃ তারমানে তুই যাবি না…??
মেঘলাঃ যাব তবে উপড়ে নয় বাইরে।
আকাশঃ ও আচ্ছা বেশ তো একটু অপেক্ষা কর।
ছোট মা এখানে ত বাংলা সিনেমা হচ্ছে না তাহলে তুমারা দাঁড়িয়ে কি দেখছো? রাত হয়েছে সবাই ঘুমাতে যাও।
আকাশ রেগে আছে তাই কেউ কথা না বাড়িয়ে চলে যেতে চাইল।
মেঘলাঃ ছোট মা যেও না প্লিজ তোমরা চলে গেলে ও আমাকে মারবে…
আকাশ চোখ গরম করে বলল মিলি নেহা দাঁড়িয়ে আছিস কেন উপড়ে যা।
সবাই বুঝল আকাশ এখন এখানে কাউকে এলাও করবে না।তাই সবাই চলে গেল।
আকাশ মেঘলা কাছে যেতে যেতে বলল হুম এবার বল কি জানি বলছিলি চলে যাবি তাই না…??
মেঘলাঃ এদিকে আসছিস কেন কাছে আসবি না বলছি আমি কিন্তু কেঁদে দিব।
আকাশঃ ভয় দেখিয়ে লাভ নেই তুই কাঁদলে আমার কি…?এখন আর আমার খারাপ লাগে না।পাখা গজিয়েছে তো তাই না…??
মেঘলাঃ কাছে আসবি বলছি না আসছিস কেন? আমাকে যেতে দে।মেঘলা প্রায় কেঁদে ফেলেছে
আকাশঃ আহা হা জান তুমি কাঁদছো কেন তুমার ত মুখে বুলি ফোঁটেছে কান্না তোমাকে মানায় না।
মেঘলাঃ এ্যা এ্যা…
আকাশঃ আরে চুপ কর মারব না হাজার হোক একটাই বউ আমার। আচ্ছা এতকরে চাইছিস যখন একটা সুযোগ দিচ্ছি আমি তোকে ১ মিনিট সময় দিব এর মধ্যে যদি দরজা ক্রস করতে পারিস তাহলে তুই মুক্ত আমি আর বাঁধা দিব না।
সাথে সাথে মেঘলার মুখে হাসি ফুটে উঠল
মেঘলাঃ হি হি হি দরজা পর্যন্ত আমার ৫ সেকেন্ড লাগবে।
আকাশঃ পারেও বটে এই কান্না আবার এই হাসি কবে যে বড় হবে পাগলিটা।
মেঘলাঃ সময় শুরু এখন।
আকাশঃ আরে দাঁড়া দাঁড়া আমার কথা ত এখনো শেষ হয় নি, শর্ত টা শোন যেতে পারলে তো ভাল না যেতে পারলে তোর বাড়ির বাইরে যাওয়া বন্ধ রাজি..??
মেঘলা একটু ভেবে বলল আচ্ছা রাজি তবে এই ১ মিনিটে তুই আমার শরীরে টাচ করতে পারবি না
আকাশঃ কত বুদ্ধি মাথায় আচ্ছা যা ওকে এটাও মেনে নিলাম।
মেঘলাঃ বাহ এবার আর আমায় আটকায় কে..??শুরু কর ১,২,৩ বল।
আকাশঃ আচ্ছা নে সময় শুরু এখন।
মেঘলা যেই দৌড় দিতে যাবে আকাশ মেঘলার চুল ধরে ফেলল।
মেঘলাঃ আরে হারামী চুল ধরে রাখলে যাব কি করে…??
আকাশঃ তা আমি কি জানি তুই বলেছিস শরীরে টাচ করা যাবে না আমি তো করি নি দেখ আমি তোর থেকে ১০ ইঞ্চি দূরে আছি।
মেঘলাঃ ভাল হচ্ছে না ছাড় বলছি আমার লাগছে।
আকাশঃ সো সরি মাই ডেয়ার বউ তোমার সময় শেষ।
মেঘলাঃ তুই চিটিং করেছিস এসব মানি না আমি চলে যাব।
আকাশঃ তাই নাকি এতই সহজ…??
মেঘলাঃ হুম…
আকাশঃ মেঘলা অনেক হয়েছে এখন আমার কথাটা একটু শোন প্লিজ।
মেঘলা ২ হাতে নিজের কান চেপে ধরে বলল
না না না আমি কিছু শুনতে চাই না।
আকাশঃ ওকে তুই যেহেতু শুনতে চাস না ঠিক আছে শুনিস না আমিও বলব না তবে এটা শোনে রাখ আমি যতদিন না চাইব তুই আমার কাছে থেকে দুরে যেতে পারবি না।
আর একটা কথা আজ থেকে এই বাসার দরজা তোর জন্য বন্ধ। এখন থেকে কোন কারনেই বাসার বাইরে যেতে পারবি না তুই।
তোর পড়াশোনা বন্ধ।আর হ্যা আমার যার সাথে যা ইচ্ছা করব তুই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবি কিন্তু তুই কারো সাথে কথা পর্যন্ত বলতে পারবি না।
মেঘলাঃ মগের মুলুক পেয়েছিস নাকি যে তুই যা বলবি সেটাই হবে?
আকাশঃ সে তুই যাই ভাবিস আমি যা বল্লাম সেটাই হবে এই ব্যাপারে তুই যতই বাড়াবাড়ি করবি নিয়ম ততই কড়াকড়ি হবে মনে রাখিস।
মেঘলাঃ আকাশের বাচ্চা….
আকাশঃ আমার মেজাজ খারাপ হয়ে পারে এমন একটা শব্দও মুখ থেকে বের হলে কথা বলার মত অবস্থা রাখব না।
মেঘলাঃ😠😠😠
আকাশঃ ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে না থেকে ঘরে যা….
মেঘলাঃ তোকে আমি খুন করব।
আকাশঃ আবার….???
মেঘলাঃ ক্যারেক্টর লেস ছেলে একটা। নিজেকে কি ভাবিস হ্যা? তুই একাই রাজা বাকি সবাই তোর প্রজা..??তুই যা বলবি তাই শুনবে
আকাশঃ তুই যে ভাল কথার মেয়ে না জানতাম। চল অনেক সহ্য করে ফেলেছি আর না।
মেঘলাঃ ছাড় বলছি যাব না আমি তোর সাথে।খারাপ ছেলে ছাড়।
আকাশঃ তুই যাবি তোর ঘাড় যাবে।
আকাশ মেঘলাকে টানতে টানতে উপড়ে নিয়ে ঘরে ঢুকিয় বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিল।
মেঘলাঃ দরজা খোল বলছি,
হারামি,বদমেজাজি,সাইকো খোল বলছি নাহলে জুতা খোলে মারব। লুচ্চা ছেলে কোথাকার।
আকাশ দরজার বাইরে থেকে,
আকাশঃ আমি কিন্তু সব শুনতে পাচ্ছি বকা দিতে ইচ্ছে করলে দিতে পারিস কিন্তু ক্যারেক্টার নিয়ে কথা বললে তোর কপালে দুঃখ আছে।
মেঘলাঃ দরজা খোল বলছি
আকাশঃ আগে বল মাথা ঠান্ডা করে আমার কথা শুনবি..??তাহলে খুলে দিব।
মেঘলাঃ তুই খুব ভাল ব্রেইন ওয়াশ করতে পারিস সেটা আমি জানি।
নিশ্চুই বলবি আমি নিশা করেছিলাম তাই ভুল করে এসব করে ফেলেছি।ক্ষমা করে দে শুন এসব ন্যাকামি তে আর কাজ হবে না।
আকাশঃ তুই কি আমার কথা শুনবি নাকি বন্ধ করে চলে যাব..??এক থেকে ৩ গুনব এর মধ্যে রাজি না হলে সত্যি সত্যি চলে যাব কিন্তু…
১
২
মেঘলাঃ শুনব শুনব খোল প্লিজ।
আকাশঃ গুড গার্ল
আকাশ দরজা খুলতেই মেঘলা আকাশের দিকে একটা ব্যাগ ছুড়ে মারল।
আকাশঃ 👿👿
মেঘলাঃ এটা আমার রুম এখানে আনি আমার বরের সাথে থাকব তুই তোর প্রেমিকার সব জিনিস পত্র তোর রুমে নিয়ে রাখ।আজ থেকে জেনি তোর সাথে তোর ঘরে থাকবে।বলে মেঘলা দরজা লাগিয়ে দিল।
আকাশঃ তোর কপালে দুঃখ আছে আজ তোর খাওয়া বন্ধ।
মেঘলাঃএই যা তো,তোর কাছে কে খেতে চেয়েছে? তোর মুখ দেখতে চাই না বিদায় হ এখান থেকে।
আকাশঃ আচ্ছা আমিও দেখব আমাকে ছাড়া তোর কি করে চলে।
আকাশ এবার জেনির কাছে গেল।
আকাশ জেনির মুখোমুখি দাঁড়াল।
জেনির বুঝার বাকি রইল না যে তার কপালে দুঃখ আছে।
.
.
চলবে…!