স্কুল জীবনের প্রেম
M.T Minhaz { Part – 07 } END
বাসাই বসে আছি হঠাৎ করে সাজিদ ফোন দিয়ে বললো……….
সাজিদঃ মিনহাজ লগডাউন আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।আমিঃ বলিস কি।সাজিদঃ হুম, স্কুল মনে হয় এই বছর আর খোলা হবে না।আমিঃ কি আর করার আমাদের কপালে যা লেখা তাই হবে, পরিস্থিতি মেনে নিতে হবে, তা নাহলে নিজেদের বিপদ।সাজিদঃ হুম
Emotional Love Story
আমিঃ আগে নিজেদের জান বাঁচাই, কারন করোনার ভাইরাসের অবস্থা দিন দিন ভয়ংকর হচ্ছে,আল্লাহর কাছে দোয়া কর।সাজিদঃ হুম
কিছুক্ষন কথা বলে ফোন রেখে দিলাম।
তারপর মিমকে ফোন দিলাম,
আমিঃ কেমন আছিস।মিমঃ মোটামুটি ভালোই তুই?আমিঃ এই তো কোন মতে ভালো, কি করছিস।মিমঃ বন্ধুদের সাথে গ্রুপে আড্ডা দিচ্ছি, তুই?আমিঃ একা একা বসে আছি বউ নেই তাই (মজা করে)মিমঃ আহারে বেচারা বউয়ের অভাবে মরে যাচ্ছে।
আমিঃ তুই একটা বউ খুঁছে দে?মিমঃ আমি পারবোনা, তুই খুঁজে নে?আমিঃ তোর মতো বন্ধু থাকলে আমার বউ খুঁজতে হবে,মিমঃ আগে বল কাওকে পছন্দ করিস নাকি।আমিঃ হঠাৎ করে এই প্রশ্ন কেন?মিমঃ এমনেই।আমিঃ না কাওকে পছন্দ করি না।মিমঃ ওহ
কিছুক্ষন কথা বলে ফোন রেখে দিলাম
এভাবে কেটে গেলো ৫ মাস…..
কিন্তু করোনার অবস্থা দিন দিন ভয়ংকর হচ্ছে,এই ৫ মাসে সবার সাথে ফোনে কথা হয়েছে, একটা কথা বুঝতে পারছিনা মিম আগের চেয়ে বেশী আমাকে কেয়ার করে, তার আচরন দেখেই বুঝা যাই আমাকে ভালোবাসে, কিন্তু এটা সম্ভব না, কারন একদিন এই স্কুল ছেড়ে চলে যেতে হবে, তারপর তো আমাকে না পেয়ে অনেক কষ্ট পাবে সে, এসব মনে মনে ভাবতে লাগলাম।
Sad Story Bangla
এবাবে কেটে গেলো আরো ১ বছর।
এবার করোনার অবস্থা আগের চেয়ে কম, শিক্ষামন্ত্রি বলেছে ১২ই সেপ্টেম্বর স্কুল খোলে দিবে, আজ ১ তারিখ,,,,
হঠাৎ করে ফোনে তাকিয়ে দেখি মিম কল দিয়েছে, তারপর রিসিভ করলাম,
আমিঃ কেমন আছিস।মিমঃ ভালো, তুই?আমিঃ আমিও ভালো।মিমঃ ১২ তারিখে স্কুল খোলা জানিস তো।আমিঃ হুম।মিমঃ ১২ তারিখ একটা কথা বলবো তোকে,আমিঃ ওকে।
Related Story
এভাবে কিছুক্ষন কথা বলে ফোন কেটে দিলাম, সাজিদের সাথেও এখন কথা বললাম.. দেখতে দেখতে ১২ তারিখ এসে গেলো,
আজ স্কুলে যাচ্ছি, তাই সাজিদকে ফোন দিলাম, কয়েকবার দিতেই রিসিভ করলো…
আমিঃ রেডি হয়েছিস নাকি।সাজিদঃ হুম।আমিঃ রাস্তাই ওয়েট করিস আমার জন্য।সাজিদঃ আমি এখন আমার বাড়িতে আছি,আমিঃ ওহ, তাহলে তোদের বাড়ির সামনে দাড়া আমি আসছি।সাজিদঃ ওকে
ফোন কেটে দিয়ে মিমকে ফোন দিয়ে স্কুলের গেটের সামনে আমার জন্য ওয়েট করতে বলেছি।
তারপর রেডি হয়ে বেরিয়ে পরলাম, সাজিদদের বাড়ির কাছে আসতেই দেখলাম সাজিদ রাস্তাই দাড়িয়ে আছে। তারপর আমি আর সাজিদ কথা বলতে বলতে স্কুলে চলে আসলাম। স্কুলে এসে দেখলাম গেটের সামনে মিম দাড়িয়ে আছে। আমি যেতেই….
মিমঃ কেমন আছিস।আমিঃ ভালো, তুই কেমন আছিস।মিমঃ তোকে ছাড়া ভালো থাকতে পারি কিভাবে (বিরবির করে)আমিঃ কি বললি?মিমঃ কই কিছু না।
আমিঃ কিছু একটা বলেছিস।মিমঃ আরে না, হতেও পারে তোর মনের ভুল।আমিঃ হুম।মিমঃ চল ক্লাসে।
তারপর আমি আমার ক্লাসে চলে আসলাম মিম চলে গেলো তার ক্লাসে।
Sad Love Story Bangla
ক্লাসে এসেই…
মমিনঃ কেমন আছিস।আমিঃ ভালো তুই কেমন আছিস।মমিনঃ ভালো।রুপালিঃ তা আমাকে তোরা ভুলে গেলি মনে হয়।আমিঃ আরে তোদের কি করে ভুলে থাকি বল, তোরাই হলি আমার একমাত্র বেস্টফ্রেন্ড।রুপালিঃ হুম।সাজিদঃ কেমন আছিস তোরা।মমিন আর রুপালিঃ ভালো।আমিঃ মমিন তুই সাজিদের পকেট চেক কর।মমিনঃ কেন?আমিঃ সেটা কিছুক্ষন পর দেখতে পাবি।
তারপর মমিন সাজিদের পকেট চেক করা শেষে বললাম…
আমিঃ কত টাকা পেয়েছিস।মমিনঃ দোস্ত ৪০০৳ পেয়েছি।আমিঃ সাকিবকে খবর দিয়ে চল রেস্তোরেন্টে।সাজিদঃ কি শুরু করেছিস তোরা।আমিঃ তোমরা গোপনে প্রেম করবা আমরা জানবো না, তা কি করে হয়।মমিনঃ সাজিদ প্রেম করছে মানে,আমিঃ রুপালি তুই কিছু বলবি নাকি আমিই বলবো।
রুপালি লজ্জাই চুপ করে আছে।
আমিঃ থাক তোদের আর কিছু বলতে হবে না। আমিই বলি, সাজিদের মোবাইলে একদিন মেসেঞ্জার চেক করে দেখলাম রুপালির সাথে অনেক গুলো মেসেজ করেছে, আর ভয়েস ও ছিলো তাই মেসেজ গুলো আর ভয়েস গুলো শুনলাম, তারপর বুঝলাম তাদের মধ্যে রিলেশন আছে।
মমিনঃ বলিস কি?আমিঃ হুম।সাজিদঃ মাফ করে দে।রুপালিঃ সরি তোদেরকে না জানানোর জন্য।আমিঃ সমস্যা নাই, এবার রেস্টুরেন্টে।
তারপর সাকিব আর সাথে মিম সহ চলে গেলাম রেস্তোরেন্টে। খেয়ে বাসাই চলে আসলাম, আজ ক্লাস করতে মন চাচ্ছে না তাই।
তারপর মিমকে ফোন দিলাম,
মিমঃ কি হয়েছে।আমিঃ কিছু না, তুই সেদিন বলেছিলি ১২ তারিখ আমাকে একটা কথা বলবি, আজ কিছুই বললি না।মিমঃ এখন না পরে একসময় বলবো।আমিঃ ওকে।
তারপর ফোন কেটে দিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।
৬ মাস পর………
আজ আমাদের এস.এস.সি পরিক্ষা, তাই রেডি হয়ে বোর্ডে চলে যাচ্ছি পরিক্ষা দিতে।
এই ৬ মাস কারো সাথে ভালোভাবে কথা বলতে পারিনি পড়াশুনার চাপে, এমন কি মিমের সাথেও না।
বোর্ডে এসে পরিক্ষা দিতে লাগলাম, দেখতে দেখতে সব পরিক্ষা শেষ হলো, আল্লাহর রহমতে ভালোই হয়েছে পরিক্ষা। ২ মাস স্কুল বন্ধ তাই বাসাই বসে বন্ধুদের সাথে গ্রুপে আড্ডা দিয়েই দিন চলে যাচ্ছে।
২ মাস পর…….
স্কুলে যাচ্ছি রেজাল্টা আনতে, স্কুলে এসে দেখলাম সবাই এসে পরেছে তাই আমি গিয়ে বললাম…
আমিঃ কেমন আছিস তোরা।সবাইঃ ভালো তুই কেমন আছিস।আমিঃ ভালো, আর সাজিদ কখন আসলি।সাজিদঃ দুলাভাইয়ের বাড়ি থেকে এইমাত্র আসলাম।মমিনঃ আচ্চা চল অফিসের রেজাল্টা নিয়ে আসি।আমিঃ হুম চল।
তারপর অফিসে চলে আসলাম, রেজাল্ট শুনে খুব খুশি হলাম, কারন আমিই সবার প্রথম হয়েছি তাই।
Also Read
Bangla Premer Golpo
আমরা সবাই মিলে আড্ডাই বসে পরলাম, কিছুক্ষন পর একটা ছোট মেয়ে আমার হাতে কাগজের টুকরা দিয়ে চলে গেলো, কাগজ খুলে দেখলাম ‘নদীর পাড়ে আয়’ লেখা টা দেখেই বুঝে ফেললাম মিমের কাগজ। তাই সবার কাছ থেকে বিদায় জানিয়ে নদীর পাড়ে চলে গেলাম, গিয়ে দেখি মিম মন খারাপ করে বসে আছে, তার মন খারাপের কারন টা আমি খুব ভালো করে জানি।
আমি গিয়ে মিমের সামনে দাঁড়ালাম, দেখলাম মিমের চোখে পানি, সেটা দেখে আমারো কষ্ট হচ্ছে, নিজেকে সামলিয়ে বললাম…..
আমিঃ তুই কাদঁছিস কেন?মিমঃ না এমনেই, তোকে একটা কথা বলার ছিলো।
আমিঃ আমি জানি তুই কি বলবি, তুই আমাকে ভালোবাসিস সেটা প্রথম থেকে খেয়াল করেছি, আমি জানি একদিন এই স্কুল ছেড়ে চলে যেতে হবে তোকে যদি এতদিন ভালোবাসতাম তাহলে আজ অনেক কষ্ট পেতি আমি চাইনা তুই কষ্ট পাস।
মিমঃ আমার জন্য তোর মনে একটু ভালোবাসা জন্মাইনি।আমিঃ না (মিথ্যা বললাম, যদিও মনে মনে ভালোবাসতাম)মিমঃ ভালোবাসতে হবে না শুধু বন্ধুত্বের মধ্যে রাখিস আমাকে ( একটু কেঁদে কেঁদে)আমিঃ হুম।মিমঃ তোকে একবার জরিয়ে ধরতে পারি বন্ধু হিসেবে,আমিঃ ওকে
মিম আমাকে জরিয়ে ধরলো আমি ধরলাম কিছুক্ষন পর ছেড়ে দিয়ে বললাম….
আমিঃ দোস্ত আমার একটা কথা রাখতে পারবি।মিমঃ হুম বল।আমিঃ আমি চাই তোকে লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে হবে।মিমঃ রাখবো।আমিঃ মন খারাপ করিস না, দেখবি তোর জীবনে আমার চেয়ে ভালো কেও আসবে, যে তোকে সারাদিন ভালোবাসবে।মিমঃ (নিশ্চুপ)
আমিঃ চিন্তা করিস না, নিয়তি যদি চাই আবারো আমাদের দেখা হবে।মিমঃ হুম।আমিঃ ভালো থাকিস,মিমঃ তুই ভালো থাকিস।
তারপর সেখান থেকে চলে আসলাম, কিছুদূর আসার পর পিছনে তাকিয়ে দেখলাম মিম সেখানে বসে কান্না করছে, এটা দেখে আমার অনেক খারাপ লাগলো সাথে সাথে নিজেও কান্না করে দিলাম