Golperjogot

Golperjogot

লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ৩৭/অন্তিম পর্ব থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

Lover Naki Villain

Mona Hossain { Part 37/ Last Part }

নাবিল মেঘলাকে কোলে নিয়ে বাইরে যাচ্ছে সেই ফাঁকেও আকাশ গ্যারেজে থেকে গাড়ি বের করে গেইটের সামনে অপেক্ষা করছে।মেঘলার নিথর শরীরটা কোলে করে নিয়ে আসছে নাবিল…আকাশ অপলক দৃষ্টিতে মেঘলার দিকে তাকিয়ে আছে।নাবিলের পিছু পিছু অন্য সবাই আসছে।কিন্তু সেখানে সবাই থাকলেও ইরার উপস্থিতি নেই। তবে আপাতত ইরাকে নিয়ে ভাবার মত সময় কারো কাছে নেই। সবার দৃষ্টি জুরে আছে শুধু মেঘলা।।কিন্তু মেঘলাকে নিয়ে গাড়ির কাছে যাওয়ার আগেই নাবিল হটাৎ থমকে দাঁড়াল।সে মেঘলার দিকে একবার তাকিয়ে,মেঘলাকে কোলে রেখেই চিৎকার করে মাটিতে বসে পড়ল আর ডুকরে কেঁদে উঠল।নাবিলের থমকে যাওয়া দেখে আকাশের হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে মনে হচ্ছে।তার হৃদস্পন্দন যেন বন্ধ হয়ে গেছে।কি হয়েছে জানতেআকাশ নাবিল কে জিজ্ঞাস করতে চাচ্ছে ,কিন্তু আকাশের মুখ থেকে কোন শব্দ বের হচ্ছে না।সে এই দুঃসংবাদ সহ্য করতে পাড়বে না…কিন্তু নাবিলের অবস্থা দেখে বোঝা যাচ্ছে বিশাল কিছু একটা ঘটেছে….নাবিল এতক্ষন বেশ স্ট্রং ছিল আকাশ সহ অন্যদের শান্তনা দিচ্ছিল সে। কিন্তু এখন নাবিলেই বেশি ভেংগে পড়েছে সে মাটিতে বসে কান্না করছে আর চিৎকার করে বলছে না।এটা হতে পাড়ে না….কিছুতেই হতে পাড়ে নাআমি মানি না এসব মিথ্যা…. এই দৃশ্য দেখার আগে তুমি আমাকে অন্ধ করে দিলে না কেন? কিভাবে সহ্য করব এসব….খোদা তুমি এত অবিচার করতে পাড়ো না।নাবিলের মা এসে বলল নাবিল তুই কি পাগল হয়ে গেছিস ওকে হাসপাতালে নিতে হবে এখন কাঁদার সময় না।নাবিল মুখ তুলে তাকিয়ে মেঘলার ঘাড়ের একটা কাটা দাগ তার মাকে দেখাল যা দেখে নাবিলের মাও চিৎকার করে বলে উঠল নাদিয়া…..নাবিল ও আমার নাদিয়া… ??নাবিলঃ হুম মা ওই আমাদের হারিয়ে যাওয়া নাদিয়া। যাকে আমি রাস্তায় ফেলে দিয়েছিলাম।আকাশের বাবা অবাক হয়ে বলল কি বলছিস এসব নাবিল?নাবিলঃ হুম আংকেল আমার যখন ৫ বছর তখন নাদিয়া হয়।নাদিয়া ছোট বলে সবাই নাদিয়াকে আদর করত। মা আর আমার পাশে ঘুমাত না আমাকে খায়িয়ে দিত না সারাদিন ওকে আদর করত তাই আমি ওকে সহ্য করতে পাড়তাম না।সুযোগ পেলেই মারতাম ও এতই ছোট ছিল কথা বলতে পাড়ত না সেই সুযোগে আমি নাদিয়াকে মারতাম।এমনকি একদিন আমি ওকে কোলে নিয়ে ইচ্ছা করেই সিড়ি থেকে ফেলে দিয়েছিলাম।তখন ও এই ব্যাথাটা পেয়েছিল ৩ টা সিলাই লেগেছিল ছোট্ট নাদিয়ার।নাবিলের কথা শেষ হওয়ার আগেই আকাশ নাবিল কে ডাকলআকাশ দূর থেকে নাবিলকে ডাকতেই নাবিল মেঘলাকে নিয়ে চলে গেল।এদিকে আকাশের বাবা নাবিলের মাকে জিজ্ঞাস করল আপনাদের মেয়ে হারাল কিভাবে?নাবিলের মাঃ নাবিল আর নাদিয়াকে নিয়ে আমরা মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলাম বাসায় ফিরার সময় গাড়িতে নাবিল নাদিয়াকে কোলে নিতে চেয়েছিল নাদিয়ার বয়স তখন কেবল ৭ মাস। আমরা গাড়ির সামনে বসেছিলাম নাবিল নাদিয়াকে নিয়ে পিছনে বসে ছিল। আর রাস্তায় আসতে আসতে আমার চোখ লেগে যায় আমি ঘুমিয়ে যাই। ওর বাবা নাকি গাড়ি থামিয়ে রাতের খাবার কিনতে গিয়েছিল সেই ফাঁকে নাবিল নাদিয়াকে রাস্তায় রেখে চলে আসে।নাবিল নাদিয়াকে হিংসা করত তাই এমন করেছিল পড়ে যদিও নাবিল নিজের ভুল বোঝেছিল কিন্তু নাদিয়াকে আর পাওয়া যায় নি আমরা অনেক খোজেছিলাম পুলিশ কেস ও করেছিলাম কিন্তু নাদিয়াকে পাওয়া যায় নি।আকাশের বাবাঃ আমিও মেঘলাকে রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিলাম।তখন অবশ্য আপনাদের সাথে পরিচয় ছিল না দেখুন একেই শহরে, এত কাছে থেকেও নিজের মেয়েকে চিনলেন না আর আজ এত সংকট মুহুর্তে ওর পরিচয় পাওয়া গেল।সবি নিয়তির লিখা।আকাশের মা নাবিলের মা কে শান্তনা দিয়ে বলল কাঁদবেন না ভাবি মেঘলার কিছু হবে না চলুন আমরা হাসপাতালে যাই।।।।।।এদিকে নাবিল এসে মেঘলাকে নিয়ে গাড়ির পিছনে বসল আকাশ ড্রাইভ করছে।নাবিলঃ আকাশ জানিস মেঘলা কে?আকাশঃ এখন জানার প্রয়োজন মনে করছি না।নাবিল তবুও বলল ও আমার একমাত্র ছোট বোন আকাশ যার কথা আমি তোকে বলেছিলাম।আকাশঃ কি বলছিস নাবিল এই তোর হারিয়ে যাওয়া বোন যার জন্য তুই নিজেকে অপরাধী ভাবিস, এখনো চোখের জল ফেলিস?নাবিলঃ হ্যা আকাশ আমি ওর জীবনটা নস্ট করে দিয়েছিলাম ওকে যে খুজে পাব কোনদিন ভাবি নি। আজ যখন পেলাম ওর এই অবস্থা….আকাশঃ একেই বলে রক্তের টান তুই খেয়াল করেছিস নাবিল মেঘলা তোকে খুব বিশ্বাস আর ভরসা করে…নাবিলঃ হ্যা লক্ষ্য করছি।আজকেউ আমার হাত ২ টি ধরে বলছিল ভাইয়া আমি বাঁচতে চাই…আজ যদি কিছু হয়ে যায় আমি বাঁচব না আকাশ।এতদিন পর পেয়েছি ওকে আর হারাতে পাড়ব না।আমি না জেনেও ওকে অনেক পছন্দ করতাম তাই যখন শুনলাম ওর কিডনী লাগবে সবার আগে মাথায় আসল কিডনী পাওয়া না গেলে নিজে কিডনী দিব তাও ওকে বাঁচাব।আকাশ ফুল স্পীডে গাড়ি চালাচ্ছিল হটাৎতেই একটা ছেলে হেলতে দুলতে গাড়ির সামনে চলে আসল আকাশ কোন রকমে পাশ কাটিয়ে গেল।নাবিলঃসাবধানে চালা আকাশ…আকাশ হটাৎ করেই গাড়ির ব্রেক চাপল।নাবিলঃকি হয়েছে আকাশ গাড়ি কেন থামালি?আকাশ গাড়ির গ্লাসের মধ্যে মেঘলার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে তারপর বলল হাসপাতালে যাব না তাই….নাবিলঃআকাশ এটা মজা করার সময় নয়….তুই না যেতে চাইলে যাস না আমাকে যেতে দে।আমি একাই নিয়ে যাব ওকে।আজ যদি নিজের কিডনী দিয়ে ওকে বাচাতে হয় আমি তাই করব।আকাশঃ গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল তোর কি মনে হয় মেঘলা সত্যিই অসুস্থ? বা অজ্ঞান হয়েছে?নাবিলঃ আকাশ তোকে কিক মারতে ইচ্ছা করছে এখন এসব ফাউল প্রশ্ন করার সময়? অজ্ঞান হয় নি তো কি নাটক করছে?আকাশঃ নাটক করছে না আবার অজ্ঞান ও হয় নি অন্য কিছু হয়েছে সন্দেহ টা আগেই হয়েছিল এখন রাস্তার ছেলেটাকে দেখে ক্লিয়ার হল…নাবিলঃ আকাশ তুই পাগল হয়ে গেছিস ওই ছেলের সাথে মেঘলার কি সম্পর্ক?আকাশঃ অনেক সম্পর্ক আছে,গাফলা আছে বোঝেছিলাম কিন্তু এতবড় গাফলা সেটা বোঝি নি…বলে আকাশ গাড়ি ঘুরিয়ে নিল।নাবিল রেগে গিয়ে বলল আকাশ মেঘলার কিছু হয়ে গেলে তোর হয়ত কিছু যাবে আসবে না কিন্তু ও আমার একমাত্র বোন….আকাশঃ ধুর শালা চুপ থাক।নাবিলঃখুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে আকাশ আমার সাথে মারামারি করার ইচ্ছা থাকলে করিস আমার আপত্তি নেই কিন্তু আগে ওকে হাসপাতালে নিতে দে।আকাশঃ যাক বাবা ক্ষেপছিস কেন মেঘলাকে বিয়ে করার পর তো তুই শালাই হবি অগ্রিম বল্লাম রাগ করিস কেন?বলতে বলতে,আকাশ একটা রেস্টুরেন্ট এর সামনে গিয়ে গাড়ি থামাল।নাবিল অবাক হওয়ার সাথে সাথে রেগেও যাচ্ছে।আমরা এখানে কি করছি আকাশ? তুই এত হার্টলেস কবে হলি? একটা মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে আর তুই রেস্টুরেন্ট এ এসেছিস?আকাশঃ অপেক্ষা পড়ে একটা মজার জিনিস দেখাব বলেই গাড়ির চাবি নিয়ে চলে আকাশ।নাবিল মেঘলাকে নিয়ে যখন নেমে যেতে চাইলতখন ২টা বোতল নিয়ে হাজির হল আকাশ।এসেই মেঘলাকে ডাকতে লাগল আকাশ।নাবিল আর সহ্য না করে আকাশকে থাপ্পড় মারল।আকাশঃ আহ ডিস্টার্ব করিস কেন?মেঘলা কি আমার কেউ না নাকি?আর কি আমার ভাই রে…এসেছে দরদ দেখাতে দুধের বাচ্চাকে রাস্তায় রেখে চলে যায় পড়ে আবার বোনের বিএফ কে বুদ্ধি দেয় বোনকে রেপ করতে এখন আবার দরনাবিলঃ সেসব পরিস্থিতির শিকারব হয়ে কত ছিলামআকাশঃ এখনো পরিস্থিতির শিকার হয়েই কিছুক্ষন থাকনা দেখ কি হয়?মেঘলা আমার কলিজা বোঝেছিস?নাবিল আর কিছু বলল না।আকাশ একটা বোতল থেকে পানি নিয়ে মেঘলার মুখে পানি ছিটা দিল সাথে সাথে মেঘলা মিটমিট করে উঠল নাবিল অবাক হল।আকাশ মেঘলার মুখ খুলে অন্য একটা বোতল থেকে একটু পানি ঢেলে দিল সাথে সাথে মেঘলা ডেকুর তুলল আর তার জ্ঞানও ফিড়ে আসল।নাবিল হতবাক হয়ে বলল কি হল এটা…??আকাশ হাসতে লাগল আর কিছু বলল না।মেঘলা চোখ মেলে বলে উঠক আমি বেঁচে আছি?আকাশঃ না মরে গেছিস তোকে পরকালে পৌছে দিতে এসেছি আমি আর নাবিল।মেঘলা বোকার মত তাকিয়ে আছে সাথে নাবিলআকাশ হাতের বোতল টা এগিয়ে দিয়ে বলল পানি খা।মেঘলাও হাতে নিয়ে মুখে দিল কিন্তু সাথে সাথে নাক ছিটকে ফেলে দিলে চাইল আকাশ আগেই বোঝেছিল মেঘলা এটা খাবেনা তাই মুখে দেওয়ার সাথে সাথেই আকাশ মেঘলার মুখ চেপে ধরল।মেঘলা বাধ্য হল বিশ্রি পানি টা গিলতে।আকাশঃ যা এবার বমি কর আমি নাবিলের সাথে একটু কথা বলি।মেঘলার সত্যি সত্যি বমি পাচ্ছে সে গাড়ি থেকে নেমে বমি করতে লাগল।নাবিলঃ কি হচ্ছে এসব আকাশ? তুই ওকে কি খাওয়ালি?আকাশঃ মেঘলার সাথে কেউ একটা জঘন্য গেম খেলেছে নাবিল।মেঘলা প্রায়েই অস্বাভাবিক ভাবে যেখানে সেখানে হুট হাট ঘুমিয়ে যেত। আমার সন্দেহ হয়েছিল কিন্তু পড়ে ভেবিছিলাম কাজ করে ক্লান্ত হয়ে হয়ত ঘুমিয়ে যায় কিন্তু এখন বোঝলাম ওকে কেউ নিয়মিত ড্রাগস দেয়। যার ফলে ওর এই অবস্থা।দেখ লেবুপানি খেয়ে কেমন বমি করছে? এখুনি সব নেশা কেটে যাবে।নাবিলঃ তার মানে ও অসুস্থ নয়?আকাশঃ একদমি না….আরে যে মেয়ে ১ মাস পর মরে যাবে সে কি করে এত মার সহ্য করে? কিভাবে সারাবাড়ির কাজ করে? আর ওকে যখন আমি জোর করছিলাম আমি অনুভব ছিলাম ওর কি পরিমান শক্তি…এটা কোন অসুস্থ মেয়ের হতেই পাড়ে না।অসুস্থতার কথা বলে ইমোশনাল করে,কেউ ওকে আমার কাছ থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল খুব সম্ভবত এটা আমার ভাবির কাজ।উনি ইরার সাথে আমার বিয়ে দেওয়ার জন্য মেঘলাকে কাজে লাগিয়েছে।বিয়ে হওয়ার পর যদি মেঘলা জানতে পাড়ত ও সুস্থ তাহলে তখন আমার বা মেঘলার কারোরেই কিছু করার থাকত না।আমার ইরার সাথেই থাকতে হত।এটার প্ল্যানেই করছিল কেউ।আর মেঘলা যাতে নিজেকে অসুস্থ ভাবে তার জন্য ওকে নিয়মিত ড্রাগস দেওয়া হয়ত।দাঁড়া মেঘলা আসুক তাহলেই জানা যাবে।কিছুক্ষন পর মেঘলা আসল,মেঘলাঃ আপনি কি কখনো ভাল হবেন না সারাজীবন ভিলেন থাকবেন? কি খাইয়েছেন বমি করতে করতে জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে…আকাশঃ দেখ নাবিল নেশা কেটে গেছে আর ম্যাডামও নিজের ফরমে ফিড়ে এসেছে।নিজের জগরাটে রুপ প্রকাশ করতে শুরু ক…মেঘলাঃ ওই একদম গলাটিপে দিব।আকাশঃ না বাবা আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা? যে আপনাকে আপনার ভাইয়ের সামনে কিছু বলব? আমি কিছু বলি নি।নাবিল কেঁদে দিল।মেঘলাঃ ভাইয়া কাঁদছেন কেন?আকাশ মেঘলাকে সব খুলে বলল।মেঘলা দৌড়ে গিয়ে নাবিল কে জড়িয়ে ধরে বলল আমি তাহলে জারজ নই আমারো পরিচয় আছে?নাবিলঃ তুই আমার একমাত্র ছোট বোন নাদিয়ানাবিল,মেঘলা ২ জনেই কাঁদছে।নাবিলঃ তুই আমায় ক্ষমা করে দে নাদিয়া আমি সেদিন না বোঝে যে অন্যায় করেছিলাম তার পড়ে আমাকে ক্ষমা করাটা কস্টকর জানি,তবুও ক্ষমা পাড়লে করে দিস আমাকে।মেঘলাঃ তুমিও তো তখন অনেক ছোট ছিলে তাই তোমার উপর আমার কোন অভিযোগ নেই।তোমার জন্যই আমি আকাশ কে পেয়েছি।সেদিন আমি না হারালে কি আকাশ কে পেতাম?আকাশঃ আমি তো এটা ভেবে পাচ্ছি না নাবিল না হয় ভুল করেছিল তাই কাঁদছে ওর হয়ত হালকার উপড় ঝাপসা ভাবে তোর কথা কিছু মনে আছে কিন্তু তুই কেন কাঁদছিস মেঘলা?তোর তো ওকে নিয়ে কোন স্মৃতিই মনে নেই তাহলে বোকার মত কাঁদছিস কেন?মেঘলাঃ মা বাবা ভাইকে পেয়েও আমি তাদের সাথে বেশিদিন থাকতে পাড়ব না তাই…আকাশঃ আরে তাই তো তুই তো মরে যাবি ভুলেই গিয়েছিলাম।আচ্ছা মেঘলা তুই যে মরবি এটা কোন ডাক্তার বলেছে তোকে?মেঘলাঃ কেন ডাঃ আহমেদআকাশঃ ডাক্তারের কাছে কে নিয়ে গিয়েছিল?মেঘলাঃবিপাশা ভাবি নিয়ে গিয়েছিল।আকাশঃ ওয়াও গ্রেট তা কয়টা ওষধ দিয়েছে?মেঘলাঃ ১ টাআকাশঃ ওষধ টা না খেলে খারাপ লাগে আর খেলে ঘুম পায় তাই না?মেঘলা অবাক হয়ে বলল অপনি কি করে জানলেন?আকাশঃ হারামজাদি তোর কোন অসুখ করে নি তুই এতদিন ধরে ড্রাকাস নিয়েছিস বোঝেছিস? ইচ্ছা করছে থাপ্পড় মেয়ে সব কয়টা দাঁত ফেলে দেই।ভাবি তোকে বোকা বানাল আর তুই বোকাও হলি হাহ কপাল আমার….মেঘলাঃ তারমানে আমার কোন অসুখ নেই? আমি মরব না?আমার কিছু হয়নি?নাবিলঃ না হয় নি.মেঘলাঃ এটা সত্যি?আকাশঃ কারোর বড় কোন অসুখ হলে না সে বিছানা থেকে উঠতে পাড়ে না। কিডনীর সমস্যা হলে কিডনী যন্ত্রনা করত শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিত তোর ত সেসব কিছুই হয় নি তাহলে অসুস্থ কেমনে হোস? যদিও আমি শিওর তবুও ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব কাল।মেঘলাঃখুশি লাগছে….আকাশঃ আমার রাগ উঠছে,তোকে বলেছিলাম না যাই ঘটুক আমাকে বলবি তাহলে এটা কেন বল্লি না?মেঘলাঃ আপনি কস্ট পাবেন তাই বলিনি।নাবিলঃ হুম নাদিয়া এটা খুব অন্যায় করেছে এর জন্য শাস্তি পাওয়া উচিত।আকাশঃ তোর কি মনে হয় ছেড়ে দিব? বাসায় গিয়ে প্রথমে প্রমান বের করব তারপর ভাবিকে বাসা থেকে বের করব ভাবি আর ইরা ২ জন কেই পুলিশে দিব তারপরে ডাঃ আহমেদের ব্যবস্থা করব আর সবশেষে মিস মেঘলার পালা….নাবিলঃ হুম এতে আমিও বাধা দিব না।চল এখন বাসায় যাই।আকাশঃ হুম চল তুই ড্রাইভ কর…নাবিল ড্রাইভ করছে….আর বলছে আকাশ জানিস তুই না খুব বুদ্ধিমান মেঘলা ড্রাকস নিয়ে এমন করেছে আমি তো ভাবতেই পারিনি।ভেবেছিলাম সত্যিই অসুস্থ।আকাশঃ থাক পাম দিয়ে আর ফুলাইস না।নাবিলঃ কিন্তু এখন যদি মেঘলার এটা নেশা হয়ে গিয়ে থাকে তখন?আকাশঃ মারের ভয়ে ভুত পালায় আর নেশা ভুলাতে পাড়ব না কি যে বলিস?মেঘলাঃ আমাকে মারবেন?আকাশঃ অবশ্যই ভুল করলে কোন কথা নেই সোজা মাইর।আকাশ মেঘলার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে বললইসস খুব জোরে কামড় দিয়েছিলাম তাই না…??এদিকে আয় দেখি…মেঘলাঃ উফফ কি করছেন এসব? ভাইয়া আছে তো…আকাশঃ ওই শালা থাকলেই বা কি?ও তো নিজেই বুদ্ধি দিয়েছে তোকে রেপ করে বিয়ের জন্য রাজি করাতে…নাবিলঃ আমি কি এখনো মানা করছি নাকি?তুই পাড়লে এখুনি করে ফেল।আমার কোন আপত্তি নেই।আমি তো আকাশ কে চিনি, আকাশ হয়ত খুন কর ফেলতে পাড়বে কিন্তু কোন মেয়ের সম্মানে হাত দিতে পাড়বে না।নাবিলঃ আকাশ তোর মনে নেই আমি বলতাম আমার একটা বোন থাকলে তোর কাছে বিয়ে দিতাম।মেয়েদের থেকে দূরে থাকত তাই এতটাই পছন্দ করতাম ওকে।এখন তো বোন ও পেয়ে গেলামআকাশঃ মনে আছে….কিন্তু জানিস নাবিল তোর মত বন্ধু পাওয়াটা সত্যিই ভাগ্যের বিষয়। আজ তুই না থাকলে সব ওলট পালট হয়ে যেত।।গল্প করতে করতে ৩ জন মিলে বাসায় আসল।আর এদিকে বাসার সবাই এদের হাসপাতালে খোজে না পেয়ে নিরাশ হয়ে বাসায় এসেছে।।আকাশরা ঘরে ঢুকতেইমেঘলাকে সুস্থ দেখে সবাই খুব অবাক হল।।নাবিল মেঘলাকে তার মা বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল তারা মেঘলা কে খুজে পেয়ে খুব খুশি।আকাশের বাবাঃ আজ আমি খুব খুশি মেয়েটা এতদিনে তার পরিচয় পেল। কিন্তু আফসোস একটাই মেঘলার অপারেশন….আকাশঃ আরে বাবা টেনশন করো না কিডনী পাওয়া গেছে…আকাশের বাবাঃ আলহামদুলিল্লাহ কিন্তু কে সেই ব্যাক্তি?আকাশঃ কেন আমাদের ইরা….কথাটা শুনে সবাই আকাশ থেকে পড়ল…বিপাশাঃ ইরা কেন কিডনী দিবে?আকাশঃ ওমা দিবে না কেন সেটা বলো? তোমাদের বাবার যে পরিমান লোন হয়েছে উনি সেসব পরিশোধ না করতে পাড়লে উনার সোসাইড ছাড়া কোন উপায় নেই। পাওনাদার রাও ছাড়বে না উনাকে।টাকার জন্য কবে কে মেরে দিবে জানতেও পাড়বে না।এখন তুমি বলো কাকে বাঁচাতে চাও বাবা নাকি ইরা?আর আমি এতদিনে ইরাকে যে পরিমান টাকা দিয়েছি আমিও সেগুলির জন্য মামলা করব…তোমার বাবা সেগুলি দিতে ফিরত দিতে পাড়বে তো?কিন্তু ইরা কিডনী দিলে আমক সেসব কিছুই হবে না।একটা সুযোগ দিতে পাড়ি ইরা একা দিতে না পাড়লে তুমি আর ইরা ২ জন মিলে দাও।বাবার জন্য এইটুকু পাড়বা না?কালকেই অপারেশন আমরা সব ব্যবস্থা করে এসেছি। এই দেখো এপয়েন্ট করে এসেছি।বিপাশা হাসপাতালের কাগজ দেখে ভয়ে মুখ ফসকে বলে ফেলল এটা কি করে সম্ভব? মেঘলার তো কিছু হয় নি।আকাশঃ তাই নাকি?তাহলে বাকিটা তুমই বলো।বিপাশাঃ হ্যা টাকার জন্যই আমি আর ইরা এই প্লেন করেছিলাম। বিশ্বাস করো টাকার দরকার না হলে এমন করতাম না।ভেবেছিলাম একবার বিয়েটা হয়ে গেলে সব বলে দিব।আকাশঃ তাই বলে একটা মেয়ে কে তোমরা ওষধের নাম করে ড্রাকস দিলে…???যা করেছো তো করেছো তাই এখন ২ বোন মিলে একটু মামা বাড়ি থেকে ঘুরে এসো। নাবিল পুলিশ ডেকে বিপাশা আর ইরাকে ধরিয়ে দিল।মেঘলাঃ ওদের ক্ষমা করে দেওয়া যায় না?আকাশঃ না যায় না।চিন্তা করিস না আংকেলের সব ঋন আমি শোধ করে দিব কিন্তু এরা একটু শাস্তি পেয়ে আসুক।নাবিলঃ হয়েছে এবার মেঘলাকে নিয়ে ঘরে যা তুই।মেঘলার উপড় দিয়ে অনেক দখল গিয়েছে।আকাশঃ হুম ঠিকি বলেছিস মেঘলা চল।আকাশ মেঘলাকে নিয়ে যেতে যেতে ফিসফিস করে বলল তখন যেটা পাড়ি নি এখন ঠিক পাড়ব…মেঘলাঃ উহু বিয়ের আগে এসব হবে না।আকাশ মেঘলাকে ঘরে নিয়ে গিয়ে বলল মেঘলা চোখ বন্ধ কর তো….মেঘলা চোখ বন্ধ করতেই আকাশ একটা রিং পড়িয়ে দিল।মেঘলা চোখ খোলে বলল এটা তো আমার সেই আংটি টা সেদিন যে ডোবায় ফেলে দিয়েছিলেন…??আপনার কাছে আসল কি করে?আকাশঃ হুম অনেক খোঁজার পর পেয়েছি কিন্তু আর একটা পাই নি।মেঘলাঃ আমিও একটা পেয়েছি অন্যটা পাই নি।আপনি দাঁড়ান আমি নিয়ে আসছি বলে মেঘলা নিজের ঘরেএ দিকে দৌড় দিল আকাশ ও পিছু পিছু গেল।মেঘলা রিংটা দিতেই আকাশ হেসে মেঘালাকে টেনে এনে কপালে চুমু এঁকে বলল কি করে ২ জনের এত মিল… এত অপমানের পরেও তুই যে রিং খোজতে যাবি স্বপ্নেও ভাবি নি।মেঘলাঃ এই যে মিস্টার আমি ভালবাসতে পাড়িকিন্তু আপনাকে দেখে বোঝার উপায় নেই আপনি ভালবাসছেন নাকি ভিলেনি করছেন তাই মাথার মধ্যে সব সময় একটা গভীর প্রশ্ন ঘুরাপাক খায়…আকাশঃ কি প্রশ্ন?মেঘলাঃ আপনি আসলে কি?লাভার নাকি ভিলেন?আকাশ আর মেঘলা ২ জনেই হেসে দিল

সমাপ্ত​​​​​​​

 

Writer :- মোনা হোসাইন

2 thoughts on “লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ৩৭/অন্তিম পর্ব থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন”

    • আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।গল্পের জগত এর সাথেই থাকবেন

      Reply

Leave a Comment