Golperjogot

Golperjogot

মুখোশ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ১৯ | মোনা হোসাইন

ভোরের আলো ফুটে উঠেছে,রাজের এখন আর কান্না পাচ্ছে না।তার চোখে এখন আর পানি নেই বরং আগুন জ্বলছে প্রতিশোধের আগুন।
সারারাত ধরে অনেক মজা করেছো রুহি আর না পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকো আজ তুমি বোঝবে রাজ কে আর সে কি করতে পাড়ে….!!!
আজ আমিও দেখতে চাই তোমাকে কে বাঁচাতে পাড়ে?তুমি যদি আমার না হও আমি তোমাকে অন্য কারোর হতেও দিব না প্রমিজ।

ভোর হলেও শীতের সকাল হওয়ায় চারদিক কুয়াশায় মোড়া কারোর ঘুম এখুনো ভাংগে নি।কিন্তু রাজ এসবের পরোয়া না করেই বের হয়ে গেল রুহিকে খোঁজতে।
রাজ বের হয়েছে ঠিক সে মুহুর্তে রুহিও তার রুমের দিকে আসলো। রুহিকে দেখেই রাজের মেজাজ আরো খারাপ হয়ে গেল।

রাজঃ বাহ কি বুদ্ধি তোমার রুহি,সবাই ঘুমানোর পরে বের হয়ে কেউ জাগার আগেই ফিরে এসেছো কাউকে কিভাবে ঠকাতে হয় তোমাকে দেখেই তো শিখা উচিত (মনে মনে)
রুহি যেন বোঝেও না বোঝার ভান করে বলল আপনি এখানে? আমার রুমে কি করছিলেন?রুহির ঠোঁটের কোণে হাসির ঝলক রাজের চোখ এড়ালো না।

রাজ আর কিছু না বলে রুহিকে টানতে শুরু করল।

রুহিঃআরে কি হয়েছে?এভাবে টানাটানি করছেন কেন?

রাজঃ তোকে পবিত্র করতে টানাটানি করছি।

রুহিঃ মানে কি?

রাজ এবার থেমে গিয়ে রুহির দিকে তাকিয়ে বলল অনেক কিছুর মানে তো আমিও জানি না তাই বলে আমি এত লাফাই নাকি?তাহলে তুই এত ছটফট করছিস কেন?একদম চুপ থাকবি বলেই আবারো রুহিকে টানে হিছড়ে নিয়ে যেতে লাগল আর

কিছুক্ষনের মধ্যেই রাজ নিজের গন্তব্যে পৌছাল। রাজের গন্তব্য হোটেলের সুইমিং পুল। সেখানে পৌছে রাজ রুহিকে কিছু বোঝতে না দিয়ে এক ধাক্কায় পানিতে ফেলে দিল।
রুহি এর জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। রুহি কিছু বলার আগেই রাজ তাকে ধাক্কা দিয়েছে।

হাড় হিম করা ঠান্ডা,কুয়াশা মোড়া সকাল আর পুল টাও বেশ গভীর আশেপাশে কেউ নেই।

রাজ হাসছে আর ভাবছে এবার বোঝ কষ্ট পেতে কেমন লাগে?যতক্ষন না আমি বলব
তুই উঠতে পাড়বি না এই ঠান্ডা পানিতেই থাকতে হবে।

রাজ রুহির এই অবস্থা দেখে বেশ তৃপ্তি পাবে ভেবেছিল কিন্তু ১ মিনিটেই রাজের সব কিছু এলোমেলো হয়ে গেল যখন দেখলো রুহি পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে।

রাজঃ আরে আমি কি ডুবে যাওয়ার জন্য বলেছি নাকি ঠান্ডা লাগার জন্য ফেলেছি তো এত অভিনয় করছো কেন? হাবুডুবু খাওয়া বন্ধ করো।

কিন্তু রুহি একবার পানিতে ভাসছে আর ডুবছে
রুহির অবস্থা দেখে রাজ ভয় পেয়ে গেল কারন রুহি ক্রমেই পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে….

রাজঃকি ব্যাপার রুহি এমন করছে কেন?কি হয়েছে ওর? তবে কি ও সাঁতার পাড়ে না?

রাজ তাড়াতাড়ি পানিতে ঝাঁপ দিল।সে রুহির কাছে যেতেই রুহি রাজ কে ঝাঁপটে ধরল রুহির চোখে মুখে মৃত্যু ভয়ের চাপ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।

রাজ বোঝল রুহি সাঁতার পাড়ে না।নিজের উপড় খুব রাগ হল রাজের আর একটু হলে কি করতে যাচ্ছিলাম আমি? এটা ভেবেই রাজের শরীরে কাঁটা দিচ্ছে, কিন্তু রুহিকে সামলাতে রাজ শান্তনা দিয়ে বলল কিচ্ছু হয়নি জান আমি আছি তো বলে রুহিকে নিয়ে রাজ সাঁতরে উপড়ে আসলো।রুহি রাজকে আখঁড়ে ধরে আছে।
ঠান্ডার রুহির হাত পা জমে গেছে ঠোঁট নীল রং ধারন করেছে আর সাঁতার না জানায় বেশ পানি খেয়েছে বেচারি। রুহির অবস্থা বেশ খারাপ।কথা বলার মত অবস্থায় সে নেই।

রাজ রুহিকে কোলে নিয়ে রুমে গেল। একজন স্টাফ কে ডেকে রুহির জামা বদলে দিল।রাজ অস্থির হয়ে গেছে কি করবে বোঝতে পাড়ছে না।রুহি ভিষনভাবে কাঁপছে।রাজ রুহির মাথে মুছে দিল তারপর কম্বল টেনে রুহির গাঁয়ে দিল আর বিড়বিড় করছে,

রাজঃ স্টুপিড,ইডিয়েট,ডিসগাষ্টিং একটা মেয়ে সারাদিন পকপক করতে পাড়িস আর ফেলে দেওয়ার সময় এটা বলতে পাড়লি না যে আমি সাঁতার পাড়ি না।এখন কি হবে?নিজেকে নিজেই খুন করে ফেলতে ইচ্ছস করছে।

রুহিকে তুলতে গিয়ে রাজ যে নিজেও ভিজে গেছে সেদিকে তার খেয়াল নেই। রাজের চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে ঠান্ডায় তার গোলাপি ঠোঁট জোরা নীল হয়ে গেছে কিন্তু সেটা খেয়াল করার সময় রাজের নেই সে রুহিকে নিয়ে ব্যাস্ত অস্থির হয়ে রুহির পায়ে তেল মালিশ করতে রাজ।

ঠিক তখনি রাজকে অবাক করে দিয়ে রুহি উঠে বসে রাজের মাথা মুছতে শুরু করল।

রাজ অবাক দৃষ্টিতে রুহির দিকে তাকাল।
রুহির ঠোঁট ২ টি অস্মভব রকম কাঁপছে বেশ কষ্ট করে কাঁপাকাপা কন্ঠে রুহি বলল আমাকে তুলতে গিয়ে নিজেও যে ভিজে গেছো সেদিকে খেয়াল আছে?তোমার তো ঠান্ডা লাগছে।

রাজ অবাক হয়ে গেল কিন্তু রুহি টেনশান করছে দেখে রাজ রুহিকে শান্তনা দিয়ে বলল আমি কি মেয়ে যে আমার এত ঠান্ডা লাগবে?

রুহিঃ তোমার ঠান্ডা লাগছে কি লাগছে না সেটা তোমার নিল হয়ে যাওয়া ঠোঁটেই প্রমান দিচ্ছে।
এটা বলেই রুহি নিজের কাঁপা কাঁপা ঠোঁট ২ টি রাজের ঠোঁটে চেপে দিল।
রাজের কাল রাতের রাগ রুহিকে বাঁধা দিতে চাইলেও রাজের মন বাঁধা দিতে চাচ্ছে না কারন এই প্রথম রুহি নিজে থেকে রাজকে আদর করছে।
রুহি রাজের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট বুলাতে বুলাতে রাজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
রাজের মনে হচ্ছে এ যেন অমৃত সুখ যা সে আগে কখনো অনুভব করে নি।রুহির ফেলা প্রতিটি নিশ্বাস রাজের মাঝে আন্দোলন তুলছে।রাজ এক অজানা নিশায় হারিয়ে গেল।
রাজ মনে মনে ভাবছে এই কয়দিনে তো রুহিকে কতবার কিস করেছি কই কখনো তো এত ভাল লাগে নি আজ কি হল আমার?রুহিকে বাধা দিতে চেয়েও পাড়ছি না কেন? রুহি তুমি কি জাদু যানো?
রুহি ঠোঁট ২ টি ছাড়িয়ে নিয়ে রাজকে টেনে নিয়ে রাজের বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল।রাজো তাকে জড়িয়ে ধরল।
রুহি রাজের বুকে চোখ বন্ধ করে শুয়ে শুয়ে শান্ত ভাবে বলল,
রাজ আমার পাশে সাগর পায়ে খালি পায়ে হাঁটতে যাবে?
রাজ নিজের অজান্তেই বলে ফেলল তুমি চাইলে নিশ্চুই যাব… রাজ নিজের উপড় কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলেছে তাই রুহির উপড় রাগ দেখাতে পাচ্ছে না।

এসব কি রুহির চাল নাকি সত্যি ভালবাসা দেখার জন্য পড়ের পার্টে চোখ রাখুন

Leave a Comment