Golperjogot

Golperjogot

ভিলেন – থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 46 | Romance Love Story

ভিলেন পার্টঃ৪৬
Mona Hossain

মেঘলার গলা শুনে আকাশ সেখানে গেল নাবিল,ছোট মা সহ আরও অনেকেই গিয়েছে।

মেঘলা মাটিতে বসে কাঁদছে দেখে আকাশ অবাক হল।

আকাশঃ তোকে ত ঘরে যেতে বলেছিলাম তুই এখানে কি করছিস?মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাইয়া বলে কান্নার আওয়াজ বাড়িয়ে দিল।

আকাশঃ সমস্যা কি এভাবে বসে থাকার কারন কি?

নাবিলঃ আরে হয়েছেটা কি সেটা ত বল? কাঁদছিস কেন?

আকাশ আর নাবিলে কথার পর
মেঘলা নিজের পা দেখাল।

আকাশঃ ওয়াও এই না হলে আমার হবু বউ অসাধারন তুমি এমন কিছু করতে পারো ভাবতেই পারিনি খুব ভাল করেছো এত জন্য তোমাকে আমি গিফট দিব।

নাবিলঃ কি সব বলছিস ও এটা ইচ্ছা করেছে নাকি?কিরে মেঘলা ইঁদুরের ফাঁদ তোর পায়ে আটকাল কি করে?

মেঘলাঃ আমি রুমে যাচ্ছিলাম না দেখে এটার উপড় পা দিয়ে ফেলেছি কাঁদতে কাঁদতে জবাব দিল মেঘলা।

মেঘলার পায়ে ফাঁদটা খুব শক্তভাবে আটকে আছে। পা থেকে রক্ত পড়ছে দেখে নাবিল অস্থির হয়ে গেল।

অবাক করা বিষয় যার এই মুহুর্তে সবচেয়ে বেশি অস্থির হওয়ার কথা ছিল তার এই ব্যাপারে কোন রিয়েকশান নেই সে মানে আকাশ অস্থির এর বদলে এটা নিয়ে উপহাস করছে।
মেঘলা ছল ছল চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।তার ধারনা ছিল না আকাশ এমন করতে পারবে।

আকাশ কিছু না বলে চলে যেতে চাইল।
নাবিলঃ আকাশ কোথায় যাচ্ছিস?

আকাশঃ সারাদিন অনেক কষ্ট করেছি ভাই এখন আর প্যারা নিতে পারছি না একটু বিশ্রাম নিব তাই রুমে যাচ্ছি।

নাবিলঃ এমন গাছাড়া ভাব কি করে দেখাচ্ছিস?এটা খুলে ত দিয়ে যা….

আকাশঃ এসব আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।

নাবিলঃ ও তোর গার্ল্ফ্রেন্ড আকাশ তবুও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না?

আকাশঃ এর পর আর গার্লফেন্ড থাকবে কিনা সেটা নিয়ে আমার ভাবতে হবে। আমি প্রেম করতে চেয়েছি কোন বাচ্চাকে মানুষ করার মানুষের দায়িত্ব ত নেই নি বুঝেছিস। কোন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী আমার প্রেমিকা হতে পারে না।কথাগুলি বলে আকাশ চলে গেল। মেঘলা অবাক হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।

আকাশ চলে যাওয়ায় দায়িত্ব টা নাবিলের ঘাড়ে এসে পড়ল।
নাবিলঃ এভাবে তাকিয়ে থাকার কিছু নেই রাগ করাটা স্বাভাবিক। ও তোকে কত দেখে রাখবে নিজের ও ত একটু হেলদুল থাকা প্র‍য়োজন নাকি?দেখি পা বের কর সত্যিই তুই যা করিস না মেঘলা একেবারে অসহ্যকর।

নাবিল যেই পায়ে হাত দিল মেঘলা চিৎকার করে উঠল।কারন পায়ে আরও লাগল।

নাবিলের হাত কাঁপছে কি করে এটা খুলবে বুঝতে পারছে না…ফাঁদটা খুলতে হলে এটা প্রথমে আরও চেপে বসবে তারপর খুলবে এটাই সিস্টেম।

নাবিল আর একটু সহ্য কর প্লিজ বলে আবার খুলার চেষ্টা করল মেঘলা আবারও চেঁচিয়ে উঠল।

মেঘলার চিৎকারের সাথে সাথেই আকাশের গলা ভেসে আসল।
আকাশঃ এই বাসায় দেখছি আর থাকা যাবে না।উফফ নিজের বাসায় ও একটু শান্তি নেই অসহ্যকর। নাবিল আমি খুব ক্লান্ত আমাকে একটু ঘুমাতে দে প্লিজ।বাসা টা কোন রংমঞ্চ না তাই এসব ন্যাকামি এই মুহুর্তে বন্ধ কর আমার অসহ্য লাগছে (ধমক দিয়ে)

নাবিলঃ আজব ব্যাপার এটার আবার কি হল…??
মেঘলার এই অবস্থায় তার নাকি ঘুম পাচ্ছে(মনে মনে)

-দেখছিস ত আকাশ রাগ করছে কাঁদিস না প্লিজ একটু সহ্যকর এখনি খুলে যাবে।

মেঘলাঃ আ আমার লাগছে ভাইয়া…কথা টা শেষ করার আগেই আকাশ এসে হাজির হয়ে গেল।

আকাশঃ লাগবে না তো কি করবে শুনি? লাগুক আরও বেশি লাগুক আচ্ছা তুই কি অন্ধ? যে এটাকে দেখিস নি নাকি বাচ্চা যে বুঝিস নি এটা পায়ে লাগলে কি হতে পারে..??

মেঘলাঃ চুপ একদম চুপ তুই আর একটাও কথা বলবি না।

আকাশঃ কেন বলব না কেন হ্যা?

মেঘলাঃ যে ছেলে প্রেমিকার বিপদে মুখ ঘুরিয়ে চলে যেতে পারে তেমন প্রেমিক আমার দরকার নেই।

আকাশঃ তোর ত ভাগ্য ভাল মুখ ঘুরিয়ে চলে গেছি ৪টা থাপ্পড় মারি নি..

মেঘলাঃআমি এত ব্যাথা পেয়েছি তাও আমাকে বকছিস?

আকাশঃ বকবে না ত কি করবে কোনদিন আমাকে বুঝেছিস তুই?

মেঘলাঃ এখানে বুঝার কি আছে? আমি ব্যাথা পেয়েছি তাতে তোর কিছু যায় আসে না এটাত সবাই বুঝেছে।

আকাশঃ ওকে চুপ করতে বল নাবিল তানাহলে এখন ওর কি অবস্থা করব নিজেই জানি না।

নাবিলঃ আহ তোরা কি শুরু করেছিস? এখন ঝগড়া করার সময়…??আগে এটা খুল তারপর একজন আরেকজনের সাথে অনন্তকাল ধরে ঝগড়া করিস।

আকাশঃ না কেউ খুলবি না ও এভাবেই বসে থাকবে এটাই ওর শাস্তি।সর সবাই এ ঘর থেকে বের হ বলতে বলতে আকাশ সবাইকে বের করে দিতে থাকল।

নাবিলঃ আকাশ তোর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে নাকি..?? রক্ত পড়ছে দেখতে পাচ্ছিস না..??

আকাশঃ পাচ্ছি তাতে আমার কিছু যায় আসে না বলে নাবিল কে জোর করে বের করে দিল।তারপর নিজেও বের হয়ে এসে ঘরে দরজা আটকে দিল।

মেঘলাঃ কি করছিস ভাইয়া দরজা খোল আমার সত্যি খুব ব্যাথা করছে…

নাবিলের মাঃ কি করছিস এসব আকাশ পাগল হয়ে গিয়েছিস নাকি.?

ঈষানঃ আকাশ ফাঁদ টা অন্তত খুলতে ত দে তারপর যা মন যায় করিস এটা যন্ত্রনাদায়ক।

নাবিলঃ বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে আকাশ এটা কোন ধরনের ভালবাসা মেয়েটা ব্যাথায় ছটফট করছে তুই নিজে ত হেল্প করছিস এই না আমাদের ও দিচ্ছিস না।

আকাশঃ উফফ তোরা ঘ্যানঘ্যান বন্ধ করবি?

মেঘলাঃ এমন করিছিস কেন ভাইয়া?দরজাটা খোল প্লিজ (কাঁদতে কাঁদতে)

আকাশঃ আর একটা শব্দ মুখ থেকে বের হলে গলা টিপে দিব। একদম চুপ মেঘলা(ধমক দিয়ে)

নাবিলঃ মা মরা মেয়েটার সাথে তুই এমন করতে পারছিস আকাশ? ও যদি ভুল করে থাকে তার শাস্তি অন্যভাবে দিস এভাবে কেন?

আকাশ এবার প্রচন্ড রেগে গেল সামনে থাকা ফ্লাওয়ার ভাস টা ছুড়ে ফেলে দিয়ে বলল তোর কাছে কে বেশি ইম্পর্টেন্ট মেঘলা নাকি আমি..??তুই যদি ওর কাছে যেতে চাস আমি নিজের ক্ষতি করব তুই কি সেটা চাস?

নাবিলঃ আকাশ….!!!

আকাশঃ….

নাবিল এবার এসে আকাশ কে জড়িয়ে ধরল,
নাবিলঃ আমার কথাটা একটু বুঝার চেস্টা কর ভাই আমি জানি তুই রাগ করেছিস কারন ও না দেখে পা দিয়েছে ওর আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।কিন্তু আমরা তো অনেক সময় সব জেনেও ভুল করে ফেলি তাই না?মেঘলাও করে ফেলেছে এবারের মত মাফ করে দে প্লিজ।

আকাশঃ হুম তুই ঠিক বলছিস বলে আকাশ দরজার দিকে এগিয়ে গেল নাবিল খুশি হল ভাবল আকাশ দরজা খুলে দিবে কিন্তু আকাশ নাবিলকে অবাক করে দিয়ে দরজার কাছে গিয়ে দরজা না খুলে পাশের দেয়ালে স্বজোরে পাঞ্চ করল।

নাবিল দৌড়ে গিয়ে আকাশ কে ধরল।
নাবিলঃ কি করলি এটা..?? ও গড রক্ত বের হচ্ছে তো

আকাশ নাবিলের কাছ থেকে হাত টা ছাড়িয়ে নিয়ে বলল আকাশ নিজের কথার নড়চর করে না বল্লামি তো তোদের যার যার ইচ্ছা ওর কাছে যেতে পারিস বলে দরজা খুলল।

মেঘলা সবি শুনল আর দেখল আকাশের হাত থেকে রক্ত পড়ছে

মেঘলাঃ না না না কারোর আসার দরকার নেই আমি ঠিক আছি… চোখ মুছতে মুছতে

নাবিল কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না। একদিকে মেঘলার কষ্ট অন্যদিকে আকাশের জেদ।
নাবিলের মেঘলার জন্য কষ্ট হলেও সে আকাশের কষ্টও মানতে পারবে না তাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।
বাসার সবাই আকাশের ব্যাবহারে স্বম্ভিত হয়ে গেল।

ঈষানঃ এমন প্রেমিক আমি জীবনে প্রথম দেখলাম বাবা মেঘলার কি কপাল বাবলেই গায়ে কাটা দিচ্ছে।

চলবে….!!!

Leave a Comment