Golperjogot

Golperjogot

মুখোশ সিজন ২ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ৫ | মোনা হোসাইন

#মুখোশ
#সিজন_২
#পার্টঃ৫
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

রাজ পিউয়ের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছিল বেশ কিছুক্ষন।
তারপর আবার অফিসে ফিরে গেল।
আগামীকাল তাদের একটা বড় প্রজেক্ট এর ডিল হওয়ার কথা।অফিসের সবাই সেটা নিয়ে ব্যাস্ত পিউ নতুন হওয়ায় তাকে কোন দায়িত্ব দেওয়া হয় নি তাই সে চলে গেছে।
রাজ খুব মনোযোগ দিয়ে সব ডিটেল চেক করে পেপার সাবমিট করলো।
তারপর একটা রেস্টুরেন্ট এ গেল মিটিং এর জন্য সারাদিন সে রোজ কে নিয়ে ব্যাস্ত থাকায় কোন কাজেই করা হয় নি সব কাজ শেষ করতে করতে বেশ রাত হয়ে গেল।প্রায় ১২ টা বাজে।

রাজ একদম ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরছে,
রাজ নিজেই ড্রাইভ করে এসছিল হঠাৎ রাজের চোখে পড়ল পিউ একটা ড্রিংকস বার থেকে ড্রিংক্সের ক্যান হাতে হেলে দুলে বের হচ্ছে কিছুটা বাজে ধরনের ড্রেস পড়েছে সে।পিউ এর সাথে কয়েকটা বখাটে ছেলেও আছে।
পিউ হেসে হেসে কথা বলতে বলতে ছেলেগুলির সাথে গাড়িতে উঠে পড়ল।
দৃশ্যটা দেখে রাজ হতবাক হয়ে গেল।

রাজঃএই মেয়েটা কি করছে এসব? এতগুলি বাজে ছেলের সাথে এমন বিশ্রি ড্রেস পড়ে কোথায় যাচ্ছে তাও এত রাতে?

রাজ পিউয়ের গাড়িকে ফলো করতে শুরু করল।
কিন্তু গাড়ি ক্রমোশ শহর ছেড়ে বেড়িয়ে নিজর্ন রাস্তার দিকে এগিয়ে চলেছে ঘড়ির কাটা পাল্লা দিয়ে ১ টার ঘরে পৌছে গেছে।

রাজ এর ব্যাপার টা মোটেও ভাল লাগছে না রুহি নিশ্চিত বিপদে পড়তে যাচ্ছে।হঠাৎ রাজের মাথায় চিন্তা ঢুকল ওরা গাড়ির ভিতরে রুহির সাথে কিছু করছে না তো?
রাজের মাথা খারাপ হয়ে গেল সে গাড়িটাকে ওভারটেক করে নিজের গাড়ি দিয়ে রাস্তা আটকে দিল।গাড়ি থামতেই রাজ নেমে দাঁড়াল।
অন্য গাড়ি থেকে পিউ ও নেমে দাঁড়াল।তার কোন বিপদ হয় নি বরং বেশ খুশ মেজাজে আছে সে।

পিউঃ কি ব্যাপার আপনি এখানে কি করছেন? আমাদের রাস্তা আটকালেন কেন?আমি এখন আপনার অধীনস্ত কর্মচারি নই।

রাজঃ অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,রুহি তুমি এত রাতে এতগুলো ছেলের সাথে কোথায় যাচ্ছ?

পিউঃ হা হা করে হেসে বলল তার কইফত কি আপনাকে দিব নাকি।

বাই দা ওয়ে বেবি লাইফ ইজ ফুল অফ এনজয়।আমরা সামনের একটা রিসোর্ট এ যাচ্ছি পার্টি আছে আমরা প্রায়েই যাই তুমি চাইলে আমাদের সাথে জয়েন করতে পারো। লটারি তে যাকে পাবে সারারাত তার সাথে কাটাতে পাড়বে লেটস গো ডেয়ার…..!!!

রাজ রেগে গিয়ে ধমক দিয়ে বলল ল্যাংগুয়েজ ঠিক করো রুহি কিসের বেবি আর কি বলছো এগুলা।

পিউঃ ধোয়া তুলসি পাতা কিছুই যেন বোঝে না।ন্যাকামি ছাড়েন তো। আর কে এই রুহি আমি পিউ আমার যা মন চায় তাই করি। রাতে সুন্দরী দের স্বাদ নিতে চাইলে আসতে পাড়ো না হলে রাস্তা থেকে সরো।আমাদের মুড অফ করে দিও না।
ইউ নো আই এম সো এক্সাইডেট। আজ কে পাবে আমায়? হো হিজ দ্যাট গাই?মাতাল কন্ঠে কথা বলছে পিউ।

রাজের মেজাজ পুরুটাই বিগড়ে গেল।ছেলেগুলো রুহির দিকে খারাপ নজরে তাকাচ্ছে বারবার।

রাজঃ আর যাই হোক এটা আমার রুহি হতে পাড়েনা রুহি আমাকে ছেড়ে বিয়ে করতে পাড়ে কিন্তু নিজের স্বামি কে ছেড়ে কারো সাথে বেড শেয়ার কিছুতেই করতে পাড়ে না।আর ও যে রিসোর্টের কথা বলছে সেখানে সত্যিই লটারি হয় রাজ সেটা জানে।

ও পিউ হোক বা রুহি তাতে আমার কিছু যায় আসে না ।সে কারোর স্ত্রী, সবচেয়ে বড় কথা ও রোজের মা ওকে রক্ষা করা আমার দায়িত্ব অন্তত রোজের জন্য হলেও আমাকে কিছু একটা করতে হবে।
রাজ আগে থেকেই গুন্ডা টাইপের ছিল সময়ের সাথে সে কিছুটা শান্ত হলেও মারামারি ভালই পাড়ে সে এসে রুহিকে টানতে শুরু করল।ছেলেগুলি এগিয়ে আসতে দেখে রাজ নিজের সুরক্ষার জন্য রাখা গান টা বের করে ফ্রি ফায়ার করল।
ছেলেগুলি গাড়ি নিয়ে পালিয়ে গেল।

রাজঃ সারারাতে এখানে কোন গাড়ি আসবে বলে মনে হয় না ইচ্ছা করলে এখানে থাকতে পাড়েন অথবা আমার সাথে ফিরতে পাড়েন।

পিউ কিছু না বলে গিয়ে গাড়িতে বসল।

পিউঃ আমার সারাটা রাত মাটি করে দিলেন।এতক্ষনে হয়ত আমি কারোর বিছানায় থাকতাম সব শেষ করে দিলেন।

রাজঃআপনি ড্রাংক্ট হয়ে আছেন কিছু বলে লাভ নাই যানি তবুও বলছি নিজের স্বামির কথা ভাবুন আর নাই ভাবুন, রোজের এই ছোট্ট মুখটার দিকে একটু তাকায়েন প্লিজ।

পিউ এর মুখে আর কোন কথা নেই। রাজও চুপ।

বাকি রাস্তা কেউ কারো সাথে কোন কথা বলল না।
রাজ এখন নিশ্চিত এটা আর যেই হোক রুহি নয়
তাই তার খারাপ লাগছে না।

দেখতে দেখতে গাড়ি এসে আহমেদ ভিলার সামনে থামল।
পিউ গাড়ি থেকে নেমে গেল।
পিউ রাজকে বিদায় জানতে হাত তুলল।
পিউ এর হাতের দিকে তাকিয়ে রাজের চোখ ছানাবরা হয়ে গেল।সে যা দেখল তাতে রাজের বেঁচে থাকার সব ইচ্ছা শেষ হয়ে গেল।
রাজ স্পষ্ট দেখতে পেল পিউ এর হাতে রুহির চুড়ির সেই কাটা দাগগুলি।
পিউ কয়েক বার হাত নেড়ে ভিতরে চলে গেল কিন্তু
রাজের এখন সেন্সলেস হওয়ার অবস্থা। কেউ যেন তার বুকে হাতুড়ি পিঠা করছে।

রাজঃ রুহি……..আমার রুহি এত নিচে নেমে গেছে ছেলেদের সাথে পার্টিতে যায়?এক এক দিন এক এক ছেলের সাথে বেড শেয়ার করে?
তাও সে বিবাহিতা একটা মেয়েও আছে।এই দৃশ্য দেখার জন্যই কি আমি বাঁচে আছি।

রাজ যেন ২২০ ভোল্টের শকট খেল।
রাজের হাত পা কাঁপছে সে আর নিজের মধ্যে নেই। সারা শরীর হিম হয়ে আসছে। নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে তার কারন এই আঘাত টা শুধু তার মনে নয় ব্রেইনেও লেগেছে।
,
,
,
,
চলবে…!!!

Leave a Comment