Golperjogot

Golperjogot

রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 10 – বাংলা রোমান্টিক গল্প

Ragi Sir Jokhon Devil Husband

Sadia Afrin { Part 10 }


রাফি স্যার : বুঝতে দাও। ভুল বুঝা থেকে ভালোবাসার সৃষ্টি হবে ইনশাআল্লাহ।
নিলিমা : বেস্ট অফ লাক স্যার।
রাফি স্যার : থ্যাংক ইউ।

রাফি স্যার উপরে চলে গেলো।

আমি সবার সাথে কথা বলছি। তখন মা মানে রাফি স্যারের মা আমাকে বললো,

মা : বউ মা রাফি কোথায়?
আমি : রাফি স্যার মনে হয় উপরে গেছে।

আমার কথা শুনে মা আমার মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আমি কিছু বুঝতে না পেরে মাকে জিজ্ঞেস করলাম,

আমি : কি দেখছেন মা?
মা : তুমি রাফি কে স্যার বলে কেনো ডাকছো?

আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না।

আমি : ইয়ে মানে না মানে…..

তখনই রাফি স্যার এসে বললো,

রাফি স্যার : আমার স্টুডেন্ট উনি।
মা : মানে?
রাফি স্যার : মানে আমি কয়েক বছর আগে যেই ভার্সিটিতে শিক্ষকতা করতাম সেই ভার্সিটির স্টুডেন্ট ছিলো।
মা : ওওও
রাফি স্যার : হুম
মা : শোনো মা এখন তো তুমি রাফির বউ। এখন তোমার ওকে স্যার ডাকার দরকার নাই বুঝছো।
আমি : ঠিক আছে মা।

তারপর মা চলে গেলো। আমি চলে যেতে নিতেই স্যার আমার সামনে এসে দাঁড়ালো।

আমি : কি?
রাফি স্যার : কি?
আমি : সেটাই তো জিজ্ঞেস করছি। কি?
রাফি স্যার : কিসের কি?
আমি : পথ আটকালেন কেনো?
রাফি স্যার : আমার বউয়ের পথ আমি আটকেছি তাতে তোমার কি?

আমি : সরুন সামনে থেকে।
রাফি স্যার : না
আমি : সরুন বলছি
রাফি স্যার : না

আমি আর কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে চলে যেতেই রাফি স্যার আমাকে হেঁচকা টান দিলো। আমি পড়ে যেতে নিতেই স্যার আমাকে ধরে ফেললো। আমি স্যারের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। স্যারও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। রাফি স্যারের চোখের দিকে তাকিয়ে আমি সারাজীবন কাটিয়ে দিতে পারবো। হুঁশ ফিরতেই আমি স্যারের থেকে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ালাম।

আমি : শুনুন আপনি আমাকে এভাবে হুট হাট টাচ করবেন না।
রাফি স্যার : কেনো?
আমি : না মানে না।

পড়ুন  বেকার ছেলে – Bangla Premer Golpo Part 1 | Bekar Sela

আমি বলেই চলে গেলাম ভাবি মানে নিলিমার কাছে। অনেক সুন্দর ভাবে অনুষ্ঠান শেষ হলো। ভাইয়া ভাবি বাকি সবাই চলে গেছে। ভাইয়া বলে গেছে কালকে আমাদের বাসায় যেতে। আমার খুব খুশি লাগছে কালকে আমাদের বাসায় যাবো।

উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে মোবাইল নিয়ে খাটের এক পাশে বসে ফেসবুকে লগইন করলাম। তখনি রাফি স্যার আসলো। এসে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আমার অপর প্রান্তে বসে। সে লেপটপ নিয়ে কাজ করতে বসেছে। আমি পাত্তা না দিয়ে ফেসবুক চালাচ্ছি।

আমার একটা খারাপ অভ্যাস আছে। যদি মোবাইল আমার হাতে থাকে তাহলে কোনো কিছুর দিকে মন থাকে না আমার। প্রায় ১ ঘন্টা পর রাফি স্যারের ডাকে হুঁশ ফিরে।

রাফি স্যার : সারাদিন শুধু মোবাইল চাপলেই চলবে নাকি কাজ টাজও করতে হবে?
আমি : এখন কি কাজ?
রাফি স্যার : যাও রান্না করতে যাও।
আমি : রান্না তো হয়ে গেছে।

তখনই মা আসলো,

মা : রাফি,
রাফি স্যার : মা তুমি? কোনো দরকার?
মা : অনেক রাত হয়েছে সবার খাওয়া দাওয়া শেষ। তোরা দুজন খেতে চল।
রাফি স্যার : হে আসছি।
মা : আফরিন মা তুমিও আসো।
আমি : জ্বী মা।

তারপর দুজনেই নিচে গেলাম। রাতের খাবার সেরে আবার উপরে চলে আসলাম।

রাফি স্যার : তোমার ফোনটা দাও
আমি : আমার ফোন কেনো দেবো?
রাফি স্যার : আমি দিতে বলছি তাই দিবা।
আমি : না আমি দেবো না।
রাফি স্যার : আমি দিতে বলছি তো।
আমি : আমি দিবো না বলছি না।

রাফি স্যার আমার এক হাত মুচড়ে ধরে অন্য হাত থেকে ফোন নিয়ে নিলো।

আমি : আমার ফোন।
রাফি স্যার : চুপ করে দাঁড়াও। এখনি দিয়ে দেবো।

তারপর ফোনে কি জানি করলো। আমাকে দেখতে দিলো না। তারপর পর আমার হাতে ফোন দিয়ে বেলকুনিতে চলে গেলো।

আমি ফোন হাতে পেয়ে সব চেক করলাম। কই তেমন কিছুই তো দেখতে পাচ্ছি না।

কিছুক্ষণ পর সমানে মেসেজ, রিয়েক্ট আর কমেন্ট আসছে। সবাই আমাকে Congrats জানাইতেছে।

ছেলেরা নানা রকম সেড পোস্ট করছে। কিছু কমেন্ট এরকম,

; ভাবছিলাম আপনাকে প্রপোজ করবো তার আগেই ছ্যাকা খেয়ে গেলাম।
; আপনি মজা করে এই পোস্ট করছেন তাই না? আপনার বিয়ে হতে পারে না।
; জীবনে প্রথম একজনকে মন থেকে ভালোবাসিলাম আর তাকে মনের কথা জানানোর আগেই অন্য কারো হয়ে গেলো।

পড়ুন  হ্যাকার সিনিয়র বউ – রোমান্টিক গল্প পর্ব 1 | Hacker Senior Bou

আরো নানা রকম কমেন্ট।

আসলে রাফি স্যার ফেসবুকে আমার রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস মেরিড কইরা দিছে তাই আমার ফ্রেন্ডলিস্টের সবাই একটু অবাক হয়ে গেছে।

আমার মনে মনে খুব খুশি লাগছিলো। তখনই স্যার আমাকে ডাক দিলো।

আমি : ডাকছেন কেনো?
রাফি স্যার : আমার জন্য কফি নিয়ে আসো।
আমি : এখন?
রাফি স্যার : হে এখন।

মনটা খুব খুশি তাই বেশি কথা না বলে রান্না ঘরে চলে গেলাম। আমি আবার রান্নার "র" ও পারি না। তবে কফিটা আমি খুব ভালো করেই বানাতে পারি।

যেই একবার আমার হাতের কফি খাবে সে বারবার আমার হাতের কফি খেতে চাইবে। আমি কফি বানিয়ে স্যারের জন্য নিয়ে গেলাম।

আমি : এই নিন
রাফি স্যার : দাও

রাফি স্যার একটু খেয়েই উঠে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো।

রাফি স্যার : এটা কি বানিয়েছো?
আমি : কেনো কফি।
রাফি স্যার : কফি সেটা আমিও দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু কফিতে চিনি দাও নাই কেনো?
আমি : আমি তো চিনি দিয়েই আনলাম।
রাফি স্যার : তুমি খেয়ে দেখো একটুও চিনি দাও নাই এতে।

আমি কিছু না বলে স্যারের হাত থেকে কফি নিয়ে একটু চেখে দেখলাম।

আমি : মিষ্টি তো ঠিকই আছে।

স্যার আমার হাত থেকে কফির মগ নিয়ে বললো কই দেখি তো?

তারপর স্যার আমার হাত থেকে কফি নিয়ে একটু খেয়ে বললো

রাফি স্যার : হে এখন ঠিক আছে।

আমি কিছুই বুঝলাম না। আগে বলছে চিনি হয় নাই এখন বলছে ঠিক আছে। কি আজব লোক।

তারপর আমি রুমে গিয়ে ফোন নিয়ে বসে পরি। ফোন টিপতে টিপতে কখন যে ঘুমিয়ে পরি নিজেই জানিনা।

সকালে ঘুম থেকে উঠে তো আমি অবাক। আমি আজকেও স্যারের বুকে শুয়ে আছি। স্যারও খুব শক্ত করে আমাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। আমি তো ঘুমের ঘোরে আম্মু পাশে থাকলে জড়িয়ে ধরি না। আমি তো চুপ করে শুয়ে থাকি। ছড়িয়ে ছিটিয়ে বেহুশের মতো ঘুমানো অভ্যাস আমার নেই। তাহলে আমি স্যারের বুকে গেলাম কি ভাবে?

আমি আর বেশি কিছু না ভেবে স্যারের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে নিচে আসলাম। বাসায় কেউ নেই সব মেহমান চলে গেছে। বাসায় শুধু আমি রাফি স্যার মা আর একটা কাজের বুয়া আছে।

পড়ুন  মুখোশ সিজন ২ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ৭ | মোনা হোসাইন

মা রান্না করছে বুয়া মাকে সাহায্য করছে। আমি মায়ের কাছে গেলাম।

আমি : মা
মা : আরে আফরিন মা তুমি এতো সকালে রান্না ঘরে কেনো? নতুন বউ রান্না ঘরে কি? যাও রুমে যাও।
আমি : আমি আপনাকে হেল্প করি।
মা : না তুমি রুমে যাও।
আমি : না মা প্লিজ।

মা : তুমি রান্না পারো?
আমি : না তবে আপনার থেকে শিখে নেবো।
মা : ঠিক আছে মা তোমাকে আমি নিজের হাতে রান্না শিখাবো।

Click Here For Next :চলবে

Writer :- Sadia Afrin

Leave a Comment

Home
Stories
Status
Account
Search